বৈশাখ নিয়ে কিছু প্রশ্ন, উত্তর মিলবে কি?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ০৬ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:৪৫:৩৩ রাত
আর মাত্র সাপ্তাহ খানিক বাকি, ঘনিয়ে আসছে বাঙ্গালীর প্রাণের (বস্ত্র হরণের) উৎসব। আশাকরি কেউ ভুলে যাননি, মানুষ গড়ার কারখানায় যে অমানুষও তৈরী হয়, তারই বহিঃপ্রকাশ এই বৈশাখি উৎসব।
জ্বী, হ্যাঁ। গত বছরের কথাই বলছি, স্বামী ও সন্তানের মাঝ থেকে আমাদেরই বোনকে টেনে হিঁচড়ে উলঙ্গ করেছে যেসব হায়েনারা, তারাই আজ "তনু" ইস্যুতে রাজপথ গরম করে চলছে। নিজেদেরকে মানবতার মহান রক্ষক হিসেবে জাহির করছে। (যাকে সহজ বাংলায় বলে "ভূতের মুখে রাম রাম")
বছর ঘুরে আবারো দরজার কড়া নাড়ছে সংস্কৃতি নামের সেই অপসংস্কৃতির দিনটি। ব্যবসায়ীরা ব্যবসার লোভে এক একটি দিনকে হাই লাইট করে যাচ্ছে, আমার দিশে হারা বাঙ্গালী অমনি হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। দ্বীন ও ঈমানের কথা ভুলে গিয়ে মুর্তিপুজকদের বেশে সপেদিচ্ছে নিজেকে বেদ্বীনের হাতে।
কেউ বা মদে মাতাল হয়ে সর্বস্ব বিলিয়ে দিচ্ছে। কেউ বা নর্তকীর পিছে ঢেলে দিচ্ছে অর্থ কড়ি, কেউ বা পান্তা ইলিশের পেছনে ছুড়ছে, যেন তার বাপ দাদা চৌদ্দগোষ্ঠীও কোন দিন পান্তা ভাত আর ইলিশ দেখে নাই। অথচ গ্রামের সাধারণ দরিদ্র কৃষকদের সারা বছরেরই সাথি এই পান্তা আর আলুভর্তা। শখ করে হলেও মাঝে মাঝে ইলিশের স্বাদ নিতে ভুলে না।
আচ্ছাঃ এই বৈশাখে কেন নির্দিষ্ট একটি ধর্মের ধর্মীয় প্রতিকের আনাগোনা? যেমনঃ যেমন মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে, উলুধ্বনী দিয়ে, শাখা বাজিয়ে, মঙ্গল কলস সাজিয়ে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। পহেলা বৈশাখের মিছিলাদিতে ঢোলের ব্যবহার, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাতি, ঘোড়া ও কচ্ছপের প্রতীক এবং বিভিন্ন ধরনের মুখোশ সম্বলিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাতে-মুখে, গালে আল্পনা এঁকে লাল পাড়ের সাদা শাড়ী, খোপায় হলুদ গাদা ফুলের মালা, হাতে শাখা চূরি পরা তরুণীদের উচ্ছলতা এবং বিদ্যাসাগরীয় চটি জুতা, বঙ্কিম চন্দ্রের কোঁচা, শরৎচন্দ্রের চাঁদর কাঁধে ফেলে তরুণদের প্রাণময় উচ্ছ্বাস, মুসলিম মহিলাদের সিঁথিতেও সিঁদুর, গলায় পুঁতির ও গজোমালা, হাতে শাখা ধারণ প্রভৃতি।
ধর্মীয় সংখ্যা গরিষ্টের কথা না হয় বাদই দিলাম, যদি বাঙ্গালীদের উৎসব হয় তবে তো শাপলাফুল, দোয়েল পাখি, কাঠাল, ইলিশ ইত্যাদির প্রতিক নিয়ে মিছিল হতো! কিন্তু তা না হয়ে কেন একটি বিশেষ ধর্মের আদপ্রান্ত অনুস্বরণ?
আজ 'আবদুল লতিফ নেজামী' সাহেব এই বৈশাখী সংস্কৃতি নিয়ে দারুন এক রহস্য উন্মোচন করলেন। যদিও আমি তার রাজনৈতিক আদর্শ সম্পর্কে জানি না, কিন্তু উনি যে তথ্যগুলো দিলেন, তা যাথাযথ মনে হলো।
মুসলিম জনগণকে বৈশিষ্ট্যহীন করার লক্ষ্যে এ অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে অনেকের ধারণা।
তিনি বলেন, বাংলা সনের প্রথম মাস ছিল অগ্রহায়ণ অর্থাৎ অগ্র (প্রথম) + হায়ন (বছর) =অগ্রহায়ণ। পহেলা বৈশাখ নয়। কিন্তু বাংলা সনের ষষ্ঠ মাস বৈশাখকে বছরের প্রথমে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে একটি সম্প্রদায়ের চরক পূজার দিনে। কথিত আছে এই দিনটিতে হযরত ইব্রাহিমকে (আ.) অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষপে করা হয়। তাছাড়া বাংলা সন হিজরী সনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রবর্তিত হয়েছে বিধায় বাংলা নববর্ষ আমাদের বহুদিনের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
বাংলা নতুন বছরের গণনার রীতি প্রবর্তিত হয় মোঘল সম্রাট আকবরের আমলে ১৫৫৬ অব্দ মোতাবেক হিজরী ৯৬৩ চান্দ্র সনকে সৌর সনে রূপান্তরের মাধ্যমে। এ রূপান্তরে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন সম্রাট আকবরের শাহী দরবারের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেহ উল্লাহ সিরাজী। কিন্তু মঙ্গলঘট, মঙ্গল প্রদীপ, মাঙ্গলিক প্রতীক অঙ্কন প্রভৃতি আমদানি করা বিশেষ ধর্মীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন আচার-রীতির আগ্রাসনে পহেলা বৈশাখের চেতনাকে ভিন্নমুখী করা হচ্ছে। এই আগ্রাসন পরিচালিত হচ্ছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির স্বাভাবিক বিবর্তনকে বাধাগ্রস্ত করে একটি স্বাধীন জাতির স্বাতন্ত্র্যবোধকে ধ্বংস করার জন্যে।
যেসব পশু-পাখী নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়, তাও এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের পরিপন্থী। কেননা সংখ্যালঘু একটি জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাস মোতাবেক পেঁচা মঙ্গলের প্রতীক ও লক্ষীর বাহন, ইঁদুর গণেশের বাহন, হনুমান রামের বাহন, হাঁস স্বরসতীর বাহন, সিংহ দূর্গার বাহন, গাভী রামের সহযাত্রী, সূর্য দেবতার প্রতীক ও ময়ূর কার্তিকের বাহন।
নিজামী সাহেবের এ কথাগুলো কিন্তু ফেলে দেওয়ার মত নয়। এর ভিতরে অবশ্যই লুকিয়ে আছে কোন রহস্য, যা দিয়ে মুসলিম প্রজন্মকে সংস্কৃতির নামে ঠেলে দেওয়া হয়ে হিন্দুত্বের দিকে।
মঙ্গল শোভা যাত্রার নামে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড। কবে যে মুসলমানদের হুশ হবে????
বিষয়: বিবিধ
২২৩৫ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
৯০ কোটি মুসলমান শুধু সংখ্যায়, কামে নয়। তাই এই ৯০ কোটিরাই রং তামাশায় মেতে উঠে।
১৬ কোটি জনসংখ্যাকে ৯০ কোটি মুসলমান বানিয়ে দিলেন?
মাথামুন্ডু কি ব্লগে আছে? নাকি বিয়ের জন্য মেয়ে পটানোর তালে আছেন?
৯০ শতাংশ
হেতি বেডি তখন মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনাইয়া এখন তামাশা দেখাইতেছে , মুণ্ডু কেমনে ঠিক থাকে!
আলহামদু লিল্লাহ পরিবারের সবাই ভালো, খুব ভালো। বেশি বেশি দোয়ার মুহতাজ।
আপনাদের প্রতি আন্তরীক সালার ও দোয়া রইল। জাযাকুমুল্লাহ।
মূলত এটি কি! যাচাই করার মানসিকতাও হারিয়ে ফেলছে, আনন্দ করা গেলেই হল।
সুন্দর বলেছেনঃ আমি বাংগালী না, আগে মুসলিম পরে বাংলাদেশী।
শুকরিয়া।
দাওয়াতী কাজ বেশি বেশি করা দরকার। শুকরিয়া।
সুন্দর কিছু যুক্তি,
আসলে তো শাপলা, দোয়েল নাই কেনো??
পেচা যদি মঙল বয়ে আন তে পারে,
তাহলে বিজ্ঞান নিয়ে এত্ত ঘাটাঘাটির কি দরকার!!
সব পেচার হাতে ছেড়ে দিলে ই তো হয়
আপনার যুক্তিও চমৎকার। মূলত হিন্দু সংস্কৃতি মুসলিমদের খাওয়ানো হচ্ছে।
সৃষ্টাকে বাদ দিয়ে সৃষ্টির কাছে মাথা নোয়ানো শিখাচ্ছে।
আমার ব্লগে প্রথম সাক্ষাৎ মনে হচ্ছে। অনেক অনেক শুকরিয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন