যেমন দেখলাম এবারের ইউ.এ.ই ন্যশনাল ডে
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:০৮:২৫ বিকাল
গত ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ চলে গেল ইউনাইটেড আরব আমিরাতের ৪৪ তম ন্যশনাল ডে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ন্যশনাল ডে তেমন একটা ঝাকঝমক ছিল না বললেই চলে।
একে তো বিশ্ব ব্যাপি একেরপর এক সন্ত্রাসী হামলা চলছে। দ্বিতীয়ত আমিরাতের অসংখ্য সৈনিক ইয়েমেন যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তাদের শোকে আমিরাতের শেখগন স্তব্ধ হয়ে আছেন। উপরন্তু ইরান আমেরিকা চুক্তির পর বিশ্বব্যাপি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় আমিরাতের অর্থনীতিতে ধস নামা।
প্রতি বছর জাতীয় দিবসকে কেন্দ্র করে পুরো শহর ও উপশহর গুলো বর্ণিত রঙ্গে সাজে, পথঘাট থেকে শুরু করে কর্ণেশ পার্কের প্রতিটি গাছে শোভা পেত হাজারো এল.ই.ডি বাতিসহ ঝিলমিলির সমাহার।
শহুরে রাস্তার ডিভাইডারের প্রায় প্রতিটি খেজুর গাছের ইলেক্ট্রিক বাতি জানান দিতো জাতীয় দিবসের আগমনী বার্তা। ঝকমক করতো বিভিন্ন রকমের আলোকসজ্জা।
জাতীয় দিবসে সারা দিন চলতো বিমান বাহিনীর চমৎকার মহড়া।
হেলিকপ্টার শহর জুড়ে ঘুরে বেড়াত জাতীয় পতাকা নিয়ে।
বিভিন্ন সরকারী অফিস আদালতে এভাবে জমে উঠতো জাতীয় পতাকার আনন্দ উৎসব।
কত ধরনের সং সাজতো আরবরা।
প্রতিটি গাড়ি যেন নিজেদের রাঙ্গিয়ে নিত আপন চাহিদা অনুযায়ী
বিচগুলো মাতিয়ে থাকতো আপন মহিমায় নিজেদের প্রমোদ তরী আর ভ্রমন পিপাসু উৎসুক জনতা নিয়ে।
শপিংমলসহ বড় বড় এমারতগুলো সাজতো বর্ণিল রঙ্গে
পার্কের রেস্তােরাগুলোও সরগরম হয়ে উঠতো।
আরবদের সাথে প্রবাসীরাও আনন্দ উৎসবে মেতে উঠতো।
এক মিশরীর হাতে গাড়ী সাজানোর স্টিকার ও বর্ণিল রঙ্গের ফিতা।
কিন্তু এবারের আয়োজনে যেমন কমতি ছিল, তেমনি আনন্দ উল্লাসে ছিল ভাটা। শহীদদের শোক সামলাতে যেন ব্যস্ত ছিল পুরো আমিরাত বাসী।
তাই বলে একেবারে ঝিমিয়ে যায় নি আনন্দের দিনটি। তবে অনেকটা সতর্কতায় পার করেছে এবারের জাতীয় দিবস। সি,আই,ডি ও আইন শৃংখ্যলা বাহিনী ছিল বেশ তৎপর। না জানি কেউ আবার বোমা ফাটিয়ে কলঙ্কময় করে দেয় আমিরাতের গর্বিত ইতিহাস।
লাগাতার তিনদিনের ছুটি পেয়েছিলাম, বুধ বৃহঃপতি ও শুক্রবার। সবটাই মােটামুটি ঘুমিয়ে পার করেছি। গভমেন্ট কোম্পানীগুলো পেয়েছিল লাগাতার পাঁচদিন। অনেকেই দেশে গিয়ে উপভোগ করেছেন এই দিনগুলো।
প্রতি বছর এই দিনগুলোতে প্রচুর পর্যটক আসে ইউ.এ.ই তে। ইউরোপের ঠান্ডা থেকে মুক্তিপেতে ইউরোপিয়ানরাই বেশি আসেন। ভ্রমন ও হল, জাতীয় দিবস ও দেখা হল, সাথে সাথে শীতের দিনগুলোও এখানে ভালো ভাবে উপভোগ করা গেল।
আবার কয়েকদিন পরই আসছে ইংরেজী নর্ববর্ষ। ঐ দিনটিতে পৃথিবীর সবচাইতে বেশী উৎসব আমেজ দেখা যায় এই দেশটিতে। ইউরোপ আমেরিকান সহ প্রায় পৃথিবী সকল দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক ছুটে আসেন দুবাইতে নিউ ইয়ার উদযাপন করতে। সব মিলিয়ে এ দেশ পর্যটন খাতে প্রচুর আয় করেন। যা দেশের মোট আয়ের দশমাংশ বলা যায়।
বিশ্বজুড়ে তেলের দাম কমে যাওয়ায় এখানে জীবন যাত্রায় কিছুটা ব্যয় বেড়েছে। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেমন বেড়েছে ট্যাক্স ও লাইসেন্স ও ভিসা পতাকার খরচ, তেমনি সাধারণ প্রবাসীরাও রুম ভাড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে গুনতে হচ্ছে একটু বেশি এ্যমাউন্ট।
আজকের জন্য ইতি টানলাম।
বিষয়: বিবিধ
১৫৩০ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Anti.......
মার্সিদিস ব্যন্জ কিনতে ওদের দু মাসের বেতনই যথেষ্ঠ।
যেমন আয় তেমনই ব্যায়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আর আরবরা কিন্তু সাবাই বিলাসী নয়। ১০% ধরে নিতে পারেন। বাকিরা কিন্তু সাধারণের মতই জীপন যাপন করেন। হয়তো খু্ব গরীব লোক আরবে তেমন নেই বিধায় আমাদের চোখে কেবল ধনীদের বিলাসিতাই দেখা দেয়। ধন্যবাদ আপু।
প্লিজ, কারো দিকে আর তাকিয়ে থাকা নয়, কেউ আসুক অথবা নাই আসুক, আপনি আসছেন, লিখছেন, ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করছেন, এটাই নিশ্চিত করুন!
উনি কিন্তু আমার প্রিয় ব্লগার, তবে ওনার উপস্থিতিও তেমন নয়। মাঝে মাঝে আপনার মত একটু ঢু মারেন আর কি।
ভালো কিছু উপহার দিতে পারি আর না পারি, তবে উপস্থিতি নিয়মিতই।
হয়তো মাঝে মাঝে প্রবীণদের সাক্ষাৎ পাবো, এ আশায় নিয়মিত যাতায়াত থাকেই।
ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের মানুষ কেমন জানতে হলে যেমন খালেদা হাসিনাকে বিচার করে জানা সম্ভব নয়, তেমনই আরবদের প্রকৃত অবস্থা জানাও কিন্তু রাজাদের অবস্থা বিচার করে সম্ভব নয়।
শুকরিয়া।
আর আরবরা কিন্তু সাবাই বিলাসী নয়। ১০% ধরে নিতে পারেন। বাকিরা কিন্তু সাধারণের মতই জীপন যাপন করেন। হয়তো খু্ব গরীব লোক আরবে তেমন নেই (সরকার অসহায় গরীবদের যথা সম্ভব সহযোগীতা করেন) বিধায় আমাদের চোখে কেবল ধনীদের বিলাসিতাই দেখা দেয়। ধন্যবাদ আপু।
পুরাতন জায়গায় কি আবারো ভিজিট করতে মন চায় না আপু! একবার দেখে যান না, পুরাতন সেই স্মৃতিময় জায়গা গুলো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন