মুসলমানের কান্ড দেখে অবাক ও ব্যথিত হলাম
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ১৩ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:৪৯:৩৬ দুপুর
ভাইয়া! আমরা যারা প্রবাসে থাকি, তারা তো দুনিয়া উপার্জনের জন্য বছরের পর বছর ধরে বিদেশে পড়ে থাকি, খুব কম সংখ্যক লোকেরাই বছর বা দুবছরে একবার স্ত্রী সন্তান ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করতে পারলেও বেশির ভাগই চার পাঁচ বছর পরপর দেশে যায়। কেউ কেউ আছেন ৮/১০ বছরেও দেশে যাওয়ার তাওফীক হচ্ছে না।
আমাদের ব্যাপারে সহীহ হাদীস থেকে কিছু বলুন প্লিজ।
মানে স্ত্রী সন্তান আত্মীয়দের ছেড়ে এভাবে বছরের পর বছর বিদেশে পড়ে থাকাটা কেমন, সহীহ হদিস কি বলে।
তাবলীগের প্রথম কথাটিই হচ্ছে : আমরা চোখে যা কিছু দেখি বা না দেখি, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া সবই মাখলুক। মাখুলক কিছুই করিতে পারে না আল্লাহ ছাড়া। আল্লাহ তায়ালা সবই করিতে পারেন মাখলূক ছাড়া। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত সর্বশেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল।
এটাই তাবলীগ জামাতের মৌলিক শিক্ষা বা আকিদা। এখানে আপনাদের শায়েখগন আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত বা সালাফদের আকিদার খেলাফ কি পেলেন?
তাবলীগ জামাতের দোষ খুজতে গিয়ে এ সকল শাইখগন প্রায় সময় সহীহ হাদিসকেও অস্বীকার করে বসেন। পাকিস্তানের তাবলীগ জামাতের আমীর বিশিষ্ট আলেম মাওলানা তারীক জামীল সাহেবকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন এক শায়খ, বিশ্বাস না হলে এই ভিড়িওটি দেখতে পারেন, জবাবসহ দেওয়া আছে। Click this link
সাধারণ মানুষ তাবলীগ জামাতে বের হন নিজে ইলমে দ্বীন শিখার জন্য, দৈনিক রুটিনে অন্তত ৫ঘন্টা কিতাবী তালীম করতে হয় (মুনতাখাব হাদীস ও ফাজায়েলে আমাল)। কমপক্ষে ১ ঘন্টা সূরা কেরাত ও আদইয়ায়ে মাসনূনাহ এর মাশক করা হয়। প্রাক্টিক্যাল সালাতের রিহার্সলে করা হয়। প্রত্যেকটি জামাতে একজন দ্বীনি জ্ঞ্যান সম্পন্ন আমির নিযুক্ত আছেন, সবাইকে তাকে অনুস্বরণ করে চলে হয়।
আল্লাহর রাস্তায় দ্বীনি কাজে বের হওয়া অবশ্যই ইবাদাত। এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ তারা সেখানে ঈমান ও আমল শিখবে, সাধারণ মানুষদের নামাযের দিকে আহবান করবে।
চল্লিশ দিন বা ১২০ দিনের ব্যপারে কিছু কথা বলতে চাই। দুনিয়ার প্রত্যেকটি শিক্ষা ব্যবস্থার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম কানুন থাকে। যা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমান লাগে না। যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ৫ বছর, নার্স কোর্সে চার বছর, অভিজ্ঞ্য ডাক্তার হতে হলে ৩বছর, ৫বছর ইত্যাদি দীর্ঘ মেয়াদী শিক্ষা ব্যবস্থায় নিজেকে নিয়োজিত করতে হয়।
স্বয়ং মদীনা ইউনিভার্সিটিতে তাখাসসুস ফিল হাদীস, তাখাসসুস ফিত তাফসীর, তাখাসসুস ফিল ফিকহ ওয়াশ শারীয়াহ কোর্সেরও জন্য বিভিন্ন মেয়াদের কোর্স চালু রয়েছে।
আচ্ছা, এখানে শায়খদের প্রশ্ন আসে না কেন যে, সাহাবায়ে কেরামগণ তো এভাবে কোন স্বল্প মেয়াদী বা দীর্ঘ মেয়াদী কোর্স করেন নি! শুধু তাবলীগীদের একচিল্লা ৪০দিন, আর তিনচিল্লা ১২০দিন নিয়ে মাথা ব্যথা কেন??????
অথচ এসব মেয়াদ ছাড়াও অনির্দিষ্ট সময়ের জন্যও তাবলিগে যাওয়া কোন দোষের কিছু নয়। যেমন আমি ৩দিন ১০দিন ২০দিন এর জন্য গিয়েছি। তাবলীগে এসব মেয়াদ হল কর্মপদ্ধতি।
তাবলীগের নেসাব মুনতাখাব হাদীস ও ফাজায়েলে আমাল ২০০৯সাল এডিশনের মধ্যে কোন মাওয়ু হাদীস নেই। আমি চ্যলেঞ্জ করতে পারবো। সবগুলো হাদীস হয়তো সহীহ, নয়তো হাসান লিগাইরিহী বা যয়ীফ। যে কয়টি যয়ীফ হাদীস আছে তা কিন্তু কোন সহীহ হাদিসের সরাসরি এন্টি নয়।
হ্যাঁ অবশ্যই ফাজায়েলে আমালে আগেকার কিছু নেককার বান্দাদের কিচ্ছা বর্ণিত আছে, যেগুলো ঈমানের অংশ নয়। সত্যি হলেই কি! মিথ্যা হলেই কি!
তদুপরি বলি: মানুষ বলতে ভূলের উর্ধে নন। তাই ভূল হওয়া স্বাভাবিক। নসীহাহ হলো ভূলগুলো শুধরে দেওয়া, এটাই একজন মুসলিমের কর্তব্য। না জেনে না বুঝে শুধু শোনা কথায় তাবলীগী জামাতকে গালি দেওয়া বা বিরোধীতা করা আহাম্মকি ছাড়া আর কিছু নয়।
আজকের লিখাটি এজন্য লিখলাম যে, মুসলমান নামক এক ব্লগার তাবলীগ জামাতের কর্ম পদ্ধতির ভূল নিয়ে একটি পোষ্ট দিলেন, তাতে উনি অনেক কথাই বলেছেন। আমি তাতে মন্তব্য করে পোষ্ট করার সময় দেখলাম আমাকে ব্লক করেছেন। অনেকটা ব্যথিত হলাম। জানি না ব্লক করার কারণ কি? হবে হয়তো আমার মধ্যে খারাপির কিছু পেয়েছেন।
এখানে উনার পোষ্টের লিংক দিলাম। Click this link
যেহেতু উনার ব্লগে মন্তব্যটি করতে পারিনি, তাই পোষ্ট আকারে সবাইকে জানালাম। আলহামদু লিল্লাহ উনার প্রতিটি জবাব আমি দিতে প্রস্তুত।
মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ রইল। সংশোধন করার উদ্দেশ্যে আলোচনার আহবান রইল।
বিষয়: বিবিধ
২৪০০ বার পঠিত, ৩৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা চোখে যা কিছু দেখি বা না দেখি, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া সবই মাখলুক।
কোরআন কি মাখলুক?
অনেকেই পেছাল বাড়ানোর জন্য পিপড়ার আতুড়ি কত ফুট লম্বা জিজ্ঞেস করে। এরকম প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে সবাই বলে যে ভাই উদ্দেশ্যে ভাল হলে কি তিনি এরকম প্রশ্ন করতেন?
কিতাবাকৃতিতে কুরআন মাখলুক হতে পারে, কিন্তু কুরআনের বাণি, যা প্রকৃতপক্ষে কুরআনই, আল্লাহর কালাম ও সিফত। কুরআনকে মাখলুক হিসেবে গণ্য করা মু'তাজিলা আক্বিদার অন্যতম অংশ।
আমার পীরসাহেব চিল্লা দেয়া ছাড়া ইদানিং মুরীদ বানান না। মুরীদ হতে চিল্লা শর্ত।
কোথাও না থাকলে কি হবে আমাদের চিল্লা দিতেই হবে। এটা সওয়াবের কাজ।
জ্ঞানের কথা ভাইয়ের কাছে আমার একটি প্রশ্ন ছিল অনেক আগের করা, আপনি এটির উত্তর এখনো দেন নাই। আমি কিন্তু এখনো অপেক্ষায় রয়েছি।
আশা করি উত্তর পাবো। প্রশ্নটি এখানে আবার রিফিট করছিঃ
হাবিবুল্লাহ ভাইয়ের একটি পোষ্টে আপনি মন্তব্য করেছিলেনঃ
আমি প্রশ্ন করেছিলাম:
দুঃখের বিষয়, জ্ঞানী থেকে এখনো উত্তরটি পাই নাই।
এবার কি উত্তরের আশা করতে পারি????
শুকরিয়া জনাব।
এখানে মু’মিনদেরকে জীবিত এবং অবিশ্বাসীদেরকে মৃত বলা হয়েছে। এ আয়াতে অবিশ্বাসীদেরকে ক্ববর বাসীর সাথে তুলনা করে আল্লাহ বলেন, “শোনার ব্যাপারে উভয়েই সমান’। অবিশ্বাসীরা দৈহিকভাবে শোনে; কিন্তু, সত্য কথা শোনে না। তারা একেবারে ক্ববর বাসীদের মত, যেমন ক্ববর বাসীরা বধিরত্বের শেষ সীমায় পৌছেছে, তারা কিছুই শোনে না।
(তাফসীরে তাবারী ২১/৩৬ পৃঃ এবং কুরতুবী লিখিত আল-জামী, ১১/২৩২ পৃ)
যে উত্তরটি দিয়েছেন তাও আবার ব্যখ্যার দাবী রাখে, কারণ হাদীসের মধ্যে আছেঃ মাইয়্যেত দাফনের পর স্বজনদের ফিরে যাওয়ার জুতার আওয়াজ শুনতে পায়।
এবার আসি আসল কথায়ঃ
প্রশ্ন ছিলঃ মৃতব্যক্তিরা কাউকে শোনাতে পারা বা না পারা নিয়ে, আপনি উত্তর দিলেন মৃতব্যক্তিকে শোনানো বা না শোনানো নিয়ে। আপনিই বলুন উত্তরটি কি জ্ঞানের কথা অনুযায়ী হয়েছে????
পোষ্টটি আবার দেখার জন্য এখানে লিংক দিলাম, হয়তো প্রশ্নটি আপনার বুঝে আসবে। Click this link
সঠিক উত্তর পাওয়া পর্যন্ত আমি কিন্তু আপনার পিছু ছাড়ছি না।
থাকলে একটু জানান।
আমি আবারো আপনার কথাটি রিপিট করছিঃ আপনি লিখেছেন: জবাব চাই প্লিজ........
এলমেলো কথা আপনি বানাচ্ছেন মুরীদহুজুর।
আপনি উত্তর চেয়েছেন আমি উত্তর দিয়েছি-আপনি হাদীস দেখালেন-আমি একটা হাদীস চেয়েছি। এলমেলো তো আপনি করতেছেন!!
আপনি হাদীস দেখালেই তো আমি ভুল প্রমানিত হয়ে যাই! কেননা কবরে কথা বলবে আর মানুষ তা শুনবে এরকম একটা হাদীসি যথেষ্ট!
এভাবে কুরআনের নাম নিয়ে মানুষকে ধোকা দিলেন জনাব! (এসব মিথ্যাচারের জবাবে আল্লাহই যথেষ্ট)
আমি তো কোথাও বলিনি যে, মৃতরা মানুষকে শোনায়!। আমি বলে থাকলে স্ক্রীনশট দিয়ে জাতিকে দেখাতে পারেন।
এসব ফালতু জ্ঞান থেকে সঠিক জ্ঞানের পথে ফেরাই প্রকৃত জ্ঞানের কাজ। আল্লাহ আমাদের মাফ করুক।
আমি যা বলেছি তার স্বপক্ষ্যে কোরআনের আয়াত দেখিয়েছি।
এর পর আপনি বলেছেন: [যে উত্তরটি দিয়েছেন তাও আবার ব্যখ্যার দাবী রাখে, কারণ হাদীসের মধ্যে আছেঃ #মাইয়্যেত #দাফনের পর স্বজনদের ফিরে যাওয়ার জুতার #আওয়াজ শুনতে পায়।] এর দারা আপনি মোড় ঘুড়াতে চেয়েছেন আমার দেয়া আয়াতের।
তাই আপনাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে,আপনি একটি হাদীস দেখান যেখানে বলা আছে, মৃত কথা বলে আর দুনিয়ার মানুষ শুনতে পাবে।
তাহলেই হয়ে যায়।
এজন্যই আপনাকে বলেছি: ডাক্তার দেখান চোখে সমস্যা থাকলে। অথবা আবার পড়ুন।
حسبى الله نعم الوكيل কোন মূর্খের সাথে তর্ক করছি মনে হয়। এখানে শেষ করতে চাই। سلاما سلاما
এই বৃহৎসংখ্যাক সাধারণ মানুষ, যারা কালেমা পর্যন্ত জানে না, তাবলীগের বদৌলতে সামান্য কিছু ইসলামের কথাবার্তা ও আমল শিখেছে, তাদের তো কোরআন হাদিসের রেফারেন্স দেওয়ার মত যোগ্যতা নেই। তাই অন্তত আলেমদের রেফারেন্স দিয়ে মানুষদের কিছু ঈমান ও আমলের কথা বলার চেষ্টা করে।
আলেম ও ইসলামীক ব্যক্তিত্বরা যদি এই বৃহৎ জনসাধারণের মাঝে আসতো, নিজেদের প্রতিভা দ্বারা এই সকল সাধারণ মানুষদের ঈমান আমল ঠিক করার ব্যপারে চেষ্টা চালাতো, অবশ্যই তারা আরো উপকৃত হতো।
গঠনমূলক মন্তব্যটির জন্য শুকরিয়া।
তাবলীগে যায় না, তারা কি সবাই নিজেদের পরিবারকে ঠিক করতে পেরেছেন? কুরআন হাদিসের আলেম হয়েও তো অনেক জন পরিবার ঠিক করতে পারে না, তাই বলে কি তার আলেম হওয়াটা বেকার?
শরীয়ার ব্যাপারে কোরআন হাদীস ও সাহাবায়ের কেরামের উদৃতি তালাশ করা যেতে পারে, কিন্তু কর্মপদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে, যেমন বর্তমান যুগের মাদরাসা শিক্ষাসহ সকল কর্মপদ্ধতিই একেকটা কাঠামো বা ভিত্তির উপর পরিচালিত হয়।
কিন্তু এগুলো সাহাবায়ে কেরামের যুগে এভাবে ছিল না। জানি না আপনাকে বুঝাতে পেরেছি কি না।
সাবলিল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া।
me, Many Bangladesh people joined with them.In my area, I am only Muslim, rest of them Charistan.They did not go to them.
@ স্বপন ভাই।
আপনার উত্তরটি উপরের দেওয়া আছে, তবুও রিপিট করছি।
আশাকরি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন। শুকরিয়া।
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
জাজাকাল্লাহ খাইরান।
তাবলীগের মেহনত মহান রবের খাস রহমত।
যদিও কিছু প্রবলেম আছে! তবে ইনশাআল্লাহ যোগ্যতর লোকদের পরিশ্রমে সেটা দূর হয়ে যাবে!
একথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন যে, তাঁরা সঠিক বা ভুল যাই করুকনা কেনো কেউ অর্থের লোভে করেনা! দুনিয়ার লিপ্সায় করেনা! ব্যাবসার জন্য করেনা! নিজেদের ছাত্র দাবী করে! শাইখ বলেনা।
মুসলমানদের একতা বিনষ্ট করেনা। আল্লাহ এ জামাতকে কবুল করুন। আমীন
মোহনীয় মন্তব্য করে অন্তর নাড়া দিলেন। আমার মনে হয় দুনিয়াতে যত ইসলামী দল বা ইসলামী দাওয়া সেন্টার আছে, বেশির ভাগই অন্যের সমালোচনায় মূখর।
একমাত্র তাবলীগ জামাতকে কারো সমালোচনা করতে দেখলাম না। নিজেদের কাজ মনে করে নিজেদের পকেট থেকে খরচ করে সমালোচকদের উপেক্ষা করে অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছে দাওয়াতের মহান কাজ।
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
সুন্দর মন্তব্যটির জন্য শুকরিয়া।
শুকরিয়া কলম ধরার জন্য!
আপনার সুন্দর মতমতটির জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন