আরব গাল্ফ তথা শিয়া সম্প্রদায়
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:৩৬:৪২ দুপুর
শিয়া সম্প্রদায় আরব গাল্ফের প্রতিটি দেশেই কম বেশি আছে, তবে তারা সক্রিয় নন, নিজেদের অবস্থানে জীবন সংগ্রামেই ব্যস্ত।
আরব আমিরাতের শিয়ারাও এর ব্যতিক্রম নয়, তাদের মসজিদ ভিন্ন, আযান ভিন্ন ও অন্যান্য ইবাদাত কিছুটা ভিন্ন হলেও আমিরাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই, সাধারণ নাগরিকদের মতো তারাও সুযোগ সুবিধা পেয়ে সন্তুষ্ট।
শিয়াদের সাপ্তাহীক কিছু তা'লীমের ব্যবস্থা আছে, সেখানে বেশিরভাগ মহিলারা সাপ্তাহের একদিন জড়ো হয়, আলী (রাঃ) হাসান হুসাইন (রাঃ) এর জীবনীসহ শিয়া সম্প্রদায়ের ইমামদের জীবনী ও কর্মধারা আলোচনা করা হয়, এটি কিন্তু আমিরাত সরকারের কঠোর গোয়েন্দা নজরদারীর ভিতরেই হয়ে থাকে।
কারন মধ্যপ্রাচ্যের আরবকান্ট্রিগুলো শিয়াদের যথেষ্ট ভয় পায়, বিশেষ করে ইরানের কারনে। কারণ যদি শিয়াদের উপর কোন প্রকার জুলুম নির্যাতন আসে, ইরান সাথে সাথে এ্যাকশান নিবে। এ কারেনেই বিশেষ করে GCC দেশগুলো সর্বদা সতর্ক থাকে।
শিয়াদের গোড়ার দু'একটি কথা যা না বললে নয়:
সাবাই বা শিয়া সম্প্রদায়: ইবনে সাওদা নামে খ্যাত আবদুল্লাহ ইবনে সাবা এর অনুসারীরা শিয়া নামে পরিচিত। সে ছিল ইয়েমেনে জন্মগ্রহণকারী এক নারীর গর্ভজাত ইহুদি সন্তান। প্রত্যাবর্তনবাদী ধর্ম বা শিয়াইজম তার হাতেই গড়ে ওঠে। খলিফা উসমান (রাঃ) এর হত্যায় তার ভূমিকা ছিল প্রধান।
আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদের বর্ণনামতে, ইহুদি বিশ্বাস "দাউদ বংশে ত্রাণকর্তার আবির্ভাব হবে", মানব রূপে ভগবানের আবির্ভাব বিষয়ক ভারতীয় ধর্ম বিশ্বাস, যীশুর আবির্ভাব সংক্রান্ত খৃষ্টানদের বিশ্বাস এবং রাজ বংশীয় রাজপুরুষদের প্রতি পারসিকদের ধর্মীয় পবিত্রতা আরোপ ইত্যাদি বিভিন্ন চিন্তার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে তার ধর্ম বিশ্বাস।(আল আবকারিয়াতুল ইসলামিয়্যাহ পৃ. ৯৭১)
"আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া", "আল-আবকারিয়াতুল ইসলামিয়াহ", "তারিখে তাবারী" সহ নির্ভরযোগ্য ইসলামি ইতিহাসের গ্রন্হগুলিতে তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
খৃষ্টানদের স্বভাব যেমন ঈসা (আঃ) কে প্রভূ মনে করে তার কাছে সাহায্য চাওয়া, শিয়াদেরও একই অভ্যাস, হযরত আলী (রাঃ) এর নিকট সাহায্য চাওয়া।
ইয়াহুদিরা যেমন মারইয়াম বিনতে ইমরান কে যেমন যিনার তোহমত দিয়েছিলো, তেমনি এই শিয়া গোষ্ঠির মূল হোতা মুনাফিকরাই হযরত আয়েশা (রাঃ) এর ব্যাপারে যিনার তোহমত লাগিয়ে ছিল।
ইয়াহুদিদের অারেকটা অভ্যাস এই শিয়া সম্প্রদায়ের মাঝে সর্বদা বিদ্ধমান, তা হল সুযোগ ফেলেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এদের প্রধান কাজ।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইসলামের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত মুসলিমদের পরস্পরে যে সকল যুদ্ধ বিগ্রহ ঘটেছে, সবের মুলে এই শিয়াদের হাত রয়েছে।
আজকের এই লিখার মূল বিষয় হল: সম্প্রতি ইয়েমেনে GCC কান্ট্রিগুলোর জোটবদ্ধ হামলা নিয়ে।
গত কয়েক বছর ধরেই ইরান পরিকল্পনা করছে কিভাবে মিডলইষ্টের ভূস্বর্গ GCC দেশগুলোতে অশান্তির দাবানলে ছোড়া যায়, সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা ইয়েমেনকেই বেচে নেয়, কারন ইয়েমেন ভৌগোলিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে, দক্ষিণ পশ্চিমে আফ্রিাকার দেশগুলো অবস্থিত, যেগুলোতে সর্বদা গৃহযুদ্ধ লেগেই আছে, কিছু কিছু এলাকা সন্ত্রসীদের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে, যেমন সোমালিয়া ও ইথিওপিয়া। যেখান থেকে অর্থের বিনিময় সহঝে অস্ত্র কেনা যায়।
দ্বিতীয় লোহিত সাগরের প্রবেশদ্বার, সৌদী আরবের বেশিরভাগ বিজনেস ঐ সাগরকে গিরেই। তাছাড়া সুইজখালের কল্যানে ইউরো এশিয়ার প্রধান সমুদ্র পথ এখন লোহিত সাগর।
এসকল বিশেষ সুবিধার কারনে শিয়ারা ইয়েমেনকে দখল করতে অনেক আগ থকে পরিকল্পনা করে। ইয়েমেনের দক্ষিণের শহর "হুতা" থেতে শিয়া সম্প্রদায়ের অনেক শিক্ষিত যুবককে ইরান আমন্ত্রণও জানায়, বিশেষ পদ্ধতিতে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে তৈরী করে।
সময় সুযোগ খুজে তারা বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দু রব্বিহ মানসূর হাদীর এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাদের দেশ ত্যাগে বাধ্য করে। বেচারা সৌদীতে এসে আত্ম রক্ষা করেন।
এঘটনায় সৌদীসহ GCC কান্ট্রির টনক নড়ে, যেভাবে শিয়ারা ইয়েমেনের ক্ষমতা দখল করতে যাচ্ছে, তাতে GCC দেশগুলোও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, যা ক্যান্সার আকারে ধারণ করবে, তাই তারা জোটবদ্ধ হয়ে এই হুতি তথা শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে, এতে GCC এর অনেক অর্থ ও সৈন্য ক্ষয় হলেও অন্তত হুতি বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। প্রেসিডেন্টও তার আগের স্থানে ফিরে যান।
ইতি মধ্যে GCC ইয়েমেনের ধ্বংসপ্রাপ্ত ও যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর উন্নয়নের প্রকল্প হাতে নেয়, আগষ্টের শেষ জুম'আ তে আরব জনগনের প্রতি ইয়েমেনিদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে।
ঠিক এ হুমুর্তে গত সাপ্তাহের শেষ দিকে এক সেনাছাউনি ও অস্ত্রের গোড়াউনে বোমা মেরে ৬০জন GCC সৈন্য হত্যা করা হয়। তন্মেধ্যে আমিরাতের ৪৫জন সৌদীর ১০জন ও বাহরাইনের ৫জন।
এঘটনার আমিরাত সরকার তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষনা করেন, নিহতদের শহীদ হিসেবে ঘোষনা করে শহীদদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের প্রতি সহানুভূতির দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। শহীদদের সন্তান ও স্ত্রীদের যতদিন পর্যন্ত কর্মক্ষম ও চাকুরী বা ব্যবসা বানিজ্য না হয় ততদিন তাদের বিলাসি জীবন যাপনের যাবতীয় খরচ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে উন্মুক্ত করে দেন।
এক অদম্য আরব জাতি।
সহায়ক সূত্রঃ প্রিয় ব্লগার ঘুম ভাঙ্গাতে চাই এর ব্লগ থেকে।
বিষয়: বিবিধ
৩০৭৫ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শিয়ারা প্রকৃত অর্থেই কোন মুসলিম নয়। শিয়া একটি ফেরকার নাম। যা থেকে বাহাই, ইসমাইলিয়া সহ আরো বহু ফেরকার সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের সাথে ইহুদীদের শত্রুতা অন্য কারণে, সেটা ইসলামের কারণে নয়।
ইরানের বাদশাহ বখতে নাসের জেরুজালেম ধ্বংস করে, সকল ইহুদীদের গোলাম বানিয়ে বাগদাদে নিয়ে আসে। সেখানে তাদের বিনাঅর্থে শ্রমে লাগায়। ইহুদীরা ইরানীদের হাতে এভাবে শত বছরের নির্যাতনের কথা আজোও ভুলেনি। আবার ইরানীরা সে কথা মনেও করিয়ে দেয়। সেখান থেকে ইরানী আর ইহুদী শত্রুতা আজো লেগে আছে।
শতাধিক বছর পর নবী ওজায়ের (আঃ) সেই ইহুদীদের বাগদাদ থেকে মুক্ত করে আনে। সে জন্য ওযায়ের (আঃ) কে ইহুদীরা আল্লাহর পুত্র বলে। আবার ওযায়ের (আঃ) কে ইরানীরা সমালোচনা করে। সে জন্য ইরানী-ইহুদী শত্রুতা লেগেই আছে।
বিশ্বজয়ী সেই ইরানীদের অহংকার ওমর (রাঃ) মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে ইসলামকে বিজয়ি করে। হাজার বছরের ঐতিহ্য আবুবকর ও ওমর (রাঃ) এর কঠোর প্রচেষ্টায় চিরতরে শেষ হয়ে যায়। ইরানীরা সেই সময় চোখ বুঝে মেনে নিলেও তারা ইসলামের কর্তৃতে ইরানী স্রামাজ্যের পতনের কথা ভুলে যায়নি। তাই তারা বারবার ইসলামকে দুর্বল করতে চেয়েছে। তাদের প্রচেষ্টায় ইসলামে পীর বাদ, মাজার পূজা, মুর্শীদ বাদ সহ সকল শিরকী কাজ চালু হয়েছে...... বহু হাজার কারণ আছে ইরানীদের সাথে আরবের, আবার ইরানীদের সাথে ইসলামের সংঘাত লেগে যাবার। এই সংঘাত কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হবেনা........ অনেক ধন্যবাদ
শিয়াদের মতে হযরত আলী (রাঃ)ও তার পরিবারসহ জনাকতেক সাহাবী ছাড়া সকল সাহাবীই নাকি মুরতাদ (নাউযুবিল্লাহ)
আল্লাহ তায়ালা বিশ্বের মুসলিমদের এমন জঘন্য আকিদা থেকে রক্ষা করুক।
গালি দেয়া কি মুসলিমের কাজ?
তা ছাড়া যে বিষয়ের লিখা, সে বিষয়ে মন্তব্য করলে আমি কেন? কোন ব্লগারই আপনাকে খারাপ কিছু বলবে না।
কিন্তু প্রতিটি কথায় বা মন্তব্যে যদি ভিন্নমতালম্বীদের ব্যঙ্গ করা হয়, তাকে তো কেউ ভালো চোখে দেখবে না।
আমি আপনার প্রথম দিকের লিখাগুলো নিয়মিত পাঠক ও মন্তব্যকারী ছিলাম। তা আপনি ভালো করেই জানেন, কিন্তু যেদিন থেকে দেখলাম আপনি শুধু হানাফী মাযহাবের সমালোচনায় ব্যস্ত, সেদিন থেকে আপনার লিখা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। মনে অনেক ব্যথা থাকলেও আপনাকে কথনো কটু কথা বলিনি।
কিন্তু সেদিন ঠোটকাটা ভাইয়ের ব্লগে পোষ্টের মূল বিষয় এড়িয়ে আপনি যখন ব্যঙ্গাত্তক মন্তব্য করলেন। তখন আমিও তার কথাটি রিপিট করলাম এজন্য যে, আপনার মতাদর্শ ভিন্ন হতে পারে, তাই বলে অন্য মতাবলম্বীদের প্রতিটি মন্তব্যে হেয় করা মোটেও ঠিক হচ্ছে না, এ কথাটি আপনার দৃষ্টিগোচর হওয়ার জন্যই।
আপনি তো জ্ঞানী মানুষ, তাই হয়তো বুঝতে সক্ষম হবেন যে অন্যকে সম্মান দিলে নিজের সম্মান কমে না, বরং বাড়ে।
আমার ব্লগে আসার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, শুকরিয়া।
আমার পীর আছে আমি তার কথা বলি এতে তো কারো সমস্যা হওয়ার কথা নয়! আপনার নাই সেটা আপনার ব্যাপার।
আমি ঠোটকাটার কোন পোস্টে কমেন্ট করিনি। বরং ঠোটকাটাই অন্যর পোস্টে কমেন্ট করেছে।
আপনিও জ্ঞানী মানুষ আপনিও জানেন অন্যকে গালি দেয়া মুনাফেকি! তার পরেও সুর মিলালে এখন সেটা আপনার চিন্তা করা উচিত।
আমি ভুল বললে আমাকে ধরিয়েদিন। মুমিন তো আয়নার মতো! এখানে মতাদর্শ মাযহাব টানার কি আছে? আমি দলিল দিলে দলিল ভুল হলে দেখিয়ে দিন?
কিন্তু ভুলেও গালি দিবেন না। মাইন্ড ইট।
আমি আপনাদের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোন কিছু লিখি না। আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে লিখি। আপনার কাছ থেকে গালি আশাকরা আমার পক্ষ্যে আকাশ কুসুম।
আল্লাহ তায়ালা সূরা লোকমানে বলেছেনঃ ولاتصعر خدل للناس অথচ আপনি প্রতিটি মন্তব্যে এমনটি করে যাচ্ছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ قل هاتوا برهانكم إن كنتم صادقين সত্যবাদীদের কাছে আমরা তো রেফারেন্স চাইতেই পারি, অথচ আপনি কোত্থেকে কার কাহিনী লিখে যাচ্ছেন, আর বার বার লিখছেন: রেফারেন্স চাওয়া গোস্তাখী। জ্ঞানী মানুষ থেকে এ ধরনের কথাগুলো কথনো কাম্য নয়।
স্পষ্ট করে বললেই পারেন যে, এ সমস্ত কথাগুলো ঈমান আক্বিদা বা কোরআন হাদীসের বিরোধী।
কোরআন বিরোধী কারা ও মুনাফেকদের চরিত্র কার কাছে আছে, একটু বিবেচনা করে দেখবেন।
মাইন্ড ইট, কোন মানুষ জন্মের সময় কারো বিরোধী হয়ে জন্মে না, তার কাজকর্মই তাকে বিরোধী বানায়। ধন্যবাদ
আর চেশি কিছু বলতে চাইনা।
মন্তব্যের জন্য শুকরিয়া।
ইয়াহুদিদের অারেকটা অভ্যাস এই শিয়া সম্প্রদায়ের মাঝে সর্বদা বিদ্ধমান, তা হল সুযোগ পেলেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এদের প্রধান কাজ। এই কথাটি আমরা মুসলিমরা ভুলে যাই!
জাযাকাল্লাহু খাইর।
মুসলিমদের অধঃপতনের মূলে এই একটি বিষয় খবই গুরুত্বপূর্ণ।
অতীত থেকে শিক্ষা না নেওয়া ও অতীত ভুলে যাওয়া।
জাযাকাল্লাহ খাইর
অমুসলিমরা সংখ্যার বিচারে কিছু কুলাঙ্গারকে বেছে নিয়ে মুসলমানদের উপর লেলিয়ে দেয় যা আমরা যুগে যুগে ইতিহাস থেকে দেখতে পাই।
আপনার লেখাটি খুবই ভালো লাগলো, ধন্যবাদ।
গঠনমূলক মন্তব্যটি খুইব ভালো লেগেছে। অনেক অনেক শুকরিয়া ভাইজান।
অনেক উপদলে বিভক্ত শিয়াদের দু'এক দল ছাড়া বাকী ইসলামের গন্ডিভুক্ত নয়!
আক্বিদায় কুফর-শিরকের পর্যায়ে!
শিয়ারা ইসলামের প্রভূত ক্ষতি সাধন করেছে এবং করছে!
আল্লাহ হেদায়েত দান কারী!!
আপনার পুরাতন একটি পোষ্ট পড়ে শিয়াদের সম্পর্কে আমার অনেক জানা হলো। এখানের আপনার কিছু উদৃতিও দিয়েছি।
আমার মনে হয় বর্তমান বিশ্বে ইয়াহুদি নাসারা থেকেও শিয়ারাই মুসলিমদের বড় দুশমন। আল্লাহই ভালো জানেন, সুন্দর মন্তব্যটির অনেক অনেক শুকরিয়া।
পৃথিবীর অন্য কোন দেশের কথা বাদ দিলেও আমাদের দেশের শাসকরা কিভাবে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মুসলিম মেরেছে এবং মারছে? সুতরাং শিয়ারা কি করছে না করছে তার চাইতে আরো কাছের, আমাদের সুন্নীরা সন্নীদেরকে কি করছ তা খতিয়ে দেখাও উচিৎ।
আমাদের দেশে যেটা চলছে তা হল মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দাদাদের খুশি করা যাবে, আর ক্ষমতা দাদারাই পাকাপোক্ত করে দেবে।
কিন্তু শিয়া সুন্নির ব্যপারটা সম্পূর্ণ ভিন্ন. নিচে কিছু প্রমান উল্লেখ করছি....
রাসূল (সাঃ) শিয়াদের ব্যাপারে আলী (রাঃ) কে ভবিষ্যৎবাণী করে বলেছিলেন,
"হে আলী! তোমার মাঝে ঈসা ইবন মারিয়ামের উদাহরণ রয়েছে, ইয়াহুদীরা তার প্রতি এমনই বিদ্বেশ পোষণ করেছিল যে, তারা তার মা কে পর্যন্ত অপবাদ দিয়েছিল। পক্ষান্তরে নাসারাগণ তার প্রতি এমনই ভক্তিপোষণ করেছে যে, তারা তাকে ঐ মর্যাদায় সমাসীন করেছে করেছে যার উপযুক্ত তিনি নন।
হাদিসটি হারিস ইবনে হাসীরাহ হতে, তিনি আবু সাদিক হতে, তিনি বারীয়া ইবন নাজিদ হতে, তিনি হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন।
“হযরত আলী (রাঃ) মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বললেন: সাবধান! ২ শ্রেণীর লোক আমাকে কেন্দ্র করে হালাক হবে। সীমাতিরিক্ত ভক্তি পোষণকারী (শিয়া), যে আমার এমন প্রসংসা করবে যা আমার মাঝে নেই, দ্বিতীয়ত: এমন বিদ্বেশ পোষণকারী (খারেজী) যে আমার প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে। শুনে রাখ, আমি নবী নই, আমার প্রতি কোন ওহী নাজিল হয়না, তবে আমি আল্লাহর কোরান ও তার নবীর সুন্নতের উপর যথাসম্ভব আমল করি। সুতরাং আল্লাহর আনুগত্যের যে আদেশ আমি তোমাদের করি পছন্দ হোক বা না হোক সে ব্যাপারে আমার আনুগত্য করা তোমাদের কর্তব্য।(তথ্যসূত্র: গ্রন্হ "হযরত আলী রাঃ জীবন ও খিলাফত" লেখক: সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী। বইটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকেও প্রকাশ হয়েছে বাংলা অনুবাদ করেছেন মাওলানা আবূ তাহের মেসবাহ)”
পরবর্তীতে তাদের মাঝে নানান শিরক প্রথা, চরম সুন্নী বিদ্বেশি মনোভাব, কোরান হাদিসে স্পষ্টভাবে হারাম বলে ঘোষনাকৃত কাজগুলোকে নিজেদের জন্য হালাল করে নেয়া সহ তারা নানান বিকৃতি আসে।
নীচে কয়েকটির ব্যাপারে বর্ণনা দেয়া হল:
#মুতা বিবাহ: এটি ছিল জাহিলিয়াত আরবদের কালচার যা ৭ম হিজরীতে ইসলাম হারাম বলে ঘোষনা দেয় এবং বলা হয় মুতা বিবাহ নিকৃষ্ট কাজ, অথচ শিয়ারা মুতা বিয়েকে নিজেদের জন্য হালাল করে নিয়েছে।
#উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) এর উপর ব্যাভিচারের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ এবং ৩ খলিফাসহ প্রথম সারির সাহাবীদেরকে ইসলাম থেকে বিচ্যুত দাবি করা: পবিত্র কোরানে মহান আল্লাহ নিজে আয়েশা (রাঃ) এর পবিত্রতার ব্যাপারে সাক্ষ দিয়েছেন। সাহাবীদের ব্যাপারে সমালোচনা করতে পবিত্র কোরানে নিষেধ করা হয়েছে কারণ, ইসলামের জন্য তারা যে পরিমাণ আত্বত্যাগ-কষ্ট স্বীকার করেছেন, বিপদে যেভাবে ধৈর্যধারণ করেছেন, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতোনা। তাই যদিও তারা মানুষ হিসেবে ভুলের উর্দ্ধে ছিলেননা, কিন্তু মর্যাদায় তারা আমাদের অনেক উপরে এজন্য তাদের সমালোচনা করার মত কতটুকু অধিকার আমরা রাখি? কিন্তু দুঃখের বিষয় শিয়ারা আয়েশা (রাঃ) এর উপর ব্যভিচারের অভিযোগ আরোপ করে এবং ৩ খলিফাকে কাফির ও অন্যান্য সাহাবীদের উপর কুফরের মত ভয়াবহ অভিযোগ আরোপ করে অথচ আল্লাহ স্বয়ং পৃথিবীতেই ১০জন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন।
# ধর্মের ভিত্তি ১২ ইমাম: প্রথম ইমাম আলী (রাঃ) ও শেষ ইমাম হচ্ছেন, মাহদি (আঃ)। তাদের বিশ্বাসমতে, তিনি এখন জীবিত আসমানে অবস্হান করছেন। খুব তাড়াতাড়ি তিনি মধ্যপ্রাচ্যে আবির্ভূত হবেন এবং তাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন এবং তাদের সাহায্যে সুন্নী কাফিরদের কচুকাটা করে মক্কা-মদিনার দখল নেবেন এবং শিয়া ইমামত কায়েম করবেন। অথচ এই বিশ্বাসের কোরান-হাদিস ভিত্তিক কোন দলিল নেই।
স হীহ হাদিস গ্রহণে অস্বীকৃতি ও ৪০ পাড়া কোরানে বিশ্বাস: যেহেতু প্রথম সারির অনেক সাহাবী এমনকি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) যিনি সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারীদের মাঝে ২য় (২২১০টি) তাই এসব হাদিস তাদের কাছে অসমর্থনযোগ্য। তাদের দাবি আল্লাহর পক্ষ থেকে ১৭০০০ কোরানের আয়াত নাজিল হয়েছিল কিন্তু আয়েশা (রাঃ) সর্বপ্রথম কোরানের আয়াত গণনা করেন এবং ৬৬৬৬ আয়াতের কথা বলেন। তাদের দাবি সাহাবীরা কোরানের কাট-ছাট করে ৪০ পারা কোরানকে ৩০ পারায় রূপান্তর করে। অথচ হযরত উসমান (রাঃ) যখন কোরানকে পূর্ণাঙ্গরূপে লিপিবদ্ধ করেন এবং বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা কোরানের বিকৃত কপি পুড়িয়ে দেয়ায় তার বিরুদ্ধে অনেকে সমালোচনা করেন তখন শিয়াদের চোখে নবী, আলী (রাঃ) উক্তি করেছিলেন উসমান (রাঃ) যা করছেন আমি আলীও সেই একই কাজ করতাম।
আশা করি বিষয়টি পরিস্কার হয়েছে। সুন্দর মন্তব্যটির জন্য শুকরিয়া।
আমার কথা হলো তাদেরকে কাফের বলার ব্যাপারে যেহেতু সম্মিলিত মতামত নেই, যেমনটি কাদিয়ানীদের ব্যাপারে আছে। সেহেতু আমরা নিজেরা ওদেরকে কাফের বলার জিম্মাদারী নেয়াটা ঠিক হচ্ছে কি না।
যারা কুরআন কে চল্লিশ পারা মানে, ১০পারা হযরত ওসমান রাঃ নাকি লুকিয়ে ফেলেছেন, যেখানে হযরত আলীর রাঃ এর ব্যাপারে অনেক কথা ছিল। (নাউযু বিল্লাহ) অথচ কুরআন হেফাজতের মালিক আল্লাহ তায়ালা নিজেই।
আল্লাহ তায়ালার হেফাজত হযরত ওসমান রাঃ কিভাবে কুরআনের কিছু অংশ নষ্ট করে ফেললেন? ওসমানের রাঃ ক্ষমতা কি আল্লাহ তায়ালার থেকে বেশি হয়ে গেল???????
এ সকল কুফরী আক্বিদা শিয়াদের মাঝে বিদ্যমান।
সম্মিলিত মতামত না থাকলেও পাকিস্থানের অধিকাংশ আলেমগণ শিয়াদের কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছেন, যারা শিয়া সম্প্রদায়ের মাঝেই জীবন যাপন করেছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আল্লামা জিয়াউর রাহমান ফারুকী। আল্লামা হক্বনাওয়াজ জঙ্গীসহ অসংখ্য আলেম।
আমিরাতের শিয়ারা অনেকটা নিষ্ক্রিয়। এদের দেখে শিয়াদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে না। বাস্তবতা দেখতে সিরিয়া, ইরাকম ইরান ও পাকিস্থানী শিয়াদের দেখতে হবে।
শিয়াদের অনেক গ্রুপ রয়েছে, প্রশিদ্ধগ্রুপ বারটি। অবশ্য সবাই কিন্তু কাফের নয়, আক্বিদার ব্যবধানে এদেরকে চিহ্নিত করা হয়।
আপনার গঠনমূলক সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন