প্রবাসীদের শুক্রবার, কিছু আনন্দঘন মুহুর্ত
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ১৩ জুন, ২০১৫, ০৭:৫৮:২৫ সন্ধ্যা
যারা প্রবাসে থাকেন, তাদের প্রায় সকলেই শুক্রবার কে ঘুমের দিন হিসেবেই পালন করেন। আমিও কিন্তু এর ব্যতিক্রম নই
৫টায় উঠে ফজর নামাজ আদায় করে পুণঃরায় ঘুমের প্রস্তুতি নিয়ে বেড সিটে ঝাপ দেই। ৯টা বা ১০টার দিকে উঠে কিছুক্ষন বাড়িতে ফোনালাপ, নেটালাপ, ভাইবারালাপ, ইমুয়ালাপ, স্কাইপালাপ শেষ করে জুমআর প্রস্তুতি।
নামায শেষে খাবার খেয়ে রুমমেটদের সাথে ঘন্টাখানিক সুখ-দুঃখ বিনিময়ের পর আবার সেই ঘুম। বিকেলে উঠে আসরের পর হালকা চা নাস্তা, কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি, বন্ধু মহলে দেখা সাক্ষাত। মাগরীবের পর নেট জগতে কিছুক্ষণ বিচরণ।
এশারের নামাজের পর খানা খেয়ে নেট দুনিয়ায় ব্যস্ত থাকা, রাত ১২টার পর শোয়ার প্রস্তুতি। যারা নেট জগত বুঝে না, তারা টিভিতে নাটক ও খবর দেখে সময় পার করে।
এ হল বেশির ভাগ প্রবাসীদের শুক্রবারের দিনলিপি। যারা ওভার টাইম বা পার্সোনাল যব করেন, তারা একটু ভিন্ন। কিছু কোম্পানীতে শুক্রবার ও বাধ্যগত ডিউটি করতে হয়, তারাও এ জুমাবার দিনলিপির বাইরে।
অনেক প্রবাসী আছেন যারা শুক্রবার কুরআন তেলাওয়াত করেন, এরা ১১টায় মসজিদে চলে যান। আযান পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন।
গতকাল শুক্রবারটা আমার একটু ভিন্নভাবে কেটেছে। ফজরের পর আর ঘুমানো হয়নি। কিছুক্ষণ বাড়িতে কথা বলার পর নুডুলস পাকাইলাম, পেটপুরে খেলাম। কাচা মরিচগুলোর সে কি জ্বাল! অনেক্ষণ হু হা করলাম।
কিছু সময় ব্লগে কাটালাম। আব্দুর রহীম ভাইয়ের কথা মনে পড়লো। দেখা হয়েছে অনেক দিন হল। হোয়াটসএ্যাপে বার্তা আদানপ্রদান হলো, দু'জনই একই মসজিদে জুম'আ পড়লাম। নামাজের পর প্রায় ঘন্টাখানিক ব্লগ ও ব্লগার সম্পর্কিত আলোচনা করলাম। নাস্তা হাতে নিয়ে বিদায় নিলাম।
রুমে গিয়ে খাবার খেতে বসে তো অবাক! প্রতি শুক্রবারে গরুর গোস্ত পাকানো হয়, কিন্তু আজকে রসাভূনা করে কোয়েল পাখি পাকানো হয়েছে, জনপ্রতি একটি পাখি, সাথে পাতলা ডাল। রুটি দিয়ে খেলাম।
একটু ঘুমানোর ইচ্ছে ছিল, কিন্তু বাড়ির মিসকলে তা আর হয়ে উঠেনি। কথা চলল ঘন্টাখানিক। কিছুক্ষণ পর ফোন পেলাম, কয়েকজন বন্ধু এসেছে আজমান থেকে। তাদের সাথে পুরো বিকেল ঘুরে ফিরে কাটালাম। মাগরীবের নামায পড়ে সেই ঐতিহ্যবাহী ইব্রাহীমী হোটেলে খাসির পায়া ও খাসির গোস্ত দিয়ে রুটিসহ নাস্তা পর্ব শেষ করার আগেই এক সম্মানীত ব্লগারের ফোন পেলাম।
তাড়াতাড়ি নাস্তা সেরে বন্ধুদের থেকে বিদায় নিয়ে ব্লগার ভাইয়ের পানে সাড়া দিলাম। কয়েকজন অনলাইন এক্টিভিষ্ট ব্লগার বন্ধুদের মিলন মেলায় পরিণত হল। সে কি আনন্দ ঘটে গেল। রোডের পাশে ঘাসের উপর বসে মনখুলে অনেক্ষণ কথপােকথন হল। এশা' সালাতের আজানের মধুর সূরে সম্বিত ফিরে পেলাম, সালাত আদায়ে মসজিদ পানে ছুটলাম।
নামায শেষে প্রায় দু'ঘন্টা আলোচনার অজানা আনন্দে হারিয়ে গেলাম। অনলাইন জগতে পরিচয় ও আলাপন, জীবনে কখনো দেখাশুনা হয় নাই ,অথচ মনে হতে লাগলো বহুদিনের পরিচিত, মনের কোনে জমা করে রাখা কিছু স্বপ্নের মানুষের সাথে সাক্ষাত হল। দু'একটি সেলফিও হয়ে গেল।
নাস্তা পর্ব শেষান্তে ভবিষ্যতে আবার দেখার প্রত্যাশা নিয়ে বিদায় হলাম/নিলাম।
বিষয়: বিবিধ
১২৪১ বার পঠিত, ৪১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জান্নাতের বাবা আমার ভাইয়া ভাল ব্লগার হয়ে যাচ্ছেন । ধন্যবাদ ভাইয়া ।
তবে আমার সহজ সরল স্বীকারোক্তি হলঃ ছোট্টবোনের উৎসাহেই আমার এই টুকটাক আঁকাআকি। ধন্যবাদ
বৃহষ্পতিবার রাতে হায়দারাবাদী বিরিয়ানি পাক করেছিলাম। শুক্রবার সকালে ঘুমনর আশায় বেশ রাত করেই ঘুমলাম। সম্ভবত ১টার পরে। ওমা ৩টায় ফজরের নামায পড়তে উঠে দেখি মেসেজ! সকাল ৮ঃ৩০টায় প্রগ্রাম আছে।
ফজর পরে ৫টায় ঘুমিয়ে ৭টায় উঠে প্রগ্রামে গেলাম।
ভাবলাম জুমার পরে কসর আদায় করব কিন্তু ঘুম এলনা।
ঠিক আছে কোন ব্যাপার না। আসর পড়ে ঘুমাব। আসর পরে ঘুমের প্রস্তুতি নিতেছি অমনি ক্রিং ক্রিং...। কিরে ভাই? ভাই ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে। ফলে ঘুমের ১২ট।
সন্ধ্যায় আবার ইউনিটের প্রগ্রাম।
সব মিলিয়ে প্রগ্রাম শেষ করতে করতে রাত ১০ঃ৩০ খেয়ে দেয়ে বিছানায় যেতে যেতে রাত ১১টা।
আমার মত এমন বেউকুফের সংখ্যাও এই প্রবাশে কম না।
আমরাও মাঝে মাঝে হায়দারাবাদের বিরিয়ানি কিনে খাই। সত্যিই এক মজার জিনিস।
লোভ নিয়ে অপেক্ষা করতে নেই, চট জলদি খেয়ে পেলুন।
আপনার ওখানে কি বন্ধুবান্ধব নেই! সত্যিই একা বুঝি! পুটির মা কোথায়?
অষ্ট্রেলিয়াপু, মাঝে মাঝে বকরীর পায়া পাক করে খাবেন। দেখবেন বরফের শীত অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। আওন ও স্লেভ ভাইয়াকে দাওয়াত দিতে ভূলবেন না কিন্তু। দেখুন লাইন দিয়ে অপেক্ষায়.......
শুক্রবার তো ভালই ঈদ ঈদ করে কাটালেন, ফ্রেন্ডস ছিল বাট ফ্যামিলি ছিলনা ওটা হলে সোনায় সোহাগা হয়ে যেত.....।
মন্তব্য করতে লগইন করুন