গরম ও শীতে আজব দুনিয়া
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ১২ জুন, ২০১৫, ০১:৩১:২৬ রাত
মিডলইস্ট জুড়ে চলছে আগুনের গোলা (মানে গরমের মাত্রা More then 48 ডিগ্রি সেলসিয়াস।) গরম সে কি গরম, এক মুহুর্তও সহ্য করার মত নয়, দুপুরে বিরতির সময় অফিস থেকে রুমে আসতে ১০ মিনিট সময় লাগে। এই ১০ মিনিটেই শেষ, মনে হয় শরীরের চামড়া জ্বলে যাচ্ছে।
যারা মরুভূমিতে এই কঠিন গরমে বিল্ডিং কন্ট্রাক্শনে কাজ করে, তাদের যে কি কষ্ট হয়। জামার ভিতরের অংশ এক কালার আর বাহিরের অংশ অন্য কালারের হয়ে যায়। মানে হাত পা চেহারা কালো হয়ে যায়। কারো কারো শরীর অতিরিক্ত ঘামানোর কারনে জামার কোনায় লবন জমে যায়। এতে অনুমান করা যায় কেমন গরম পড়ছে।
সাপ্তাহ খানিক আগে ভারতে নাকি তাপমাত্রা ৫২ডিগ্রি ছিল, এতে তিন দিনের ব্যবধানে প্রায় ২০০০ লোক মারা যায়।
মাঝে মাঝে ভাবনায় হারিয়ে যাই: যেদিন সূর্য মাথার উপরে আসবে, সেদিনটা কেমন হবে! আচ্ছা জাহান্নামের আগুন না জানি কি কঠিন হবে! যদি মৃত্যু নামক জিনিস জাহান্নামে থাকতো, তবে এক ন্যনো সেকেন্ডেই প্রাণীকুল মারা যেত। আল্লাহ তায়ালার কাছে পানাহ চাই। মহান প্রভূ আমাদের হেফাজত করুক।
শীত কালে ইউরোপ ও আমেরিকানরা আরবদেশ বেশী ভ্রমন করে, কারণ তাদের দেশ বরফে ঢাকা থাকে। আরবদেশগুলো তখন হালকা ঠান্ডা বাতাসে আন্দোলিত থাকে। মরুভূমিতে কিছুটা শীত পড়লেও শহর ও মফস্বল এলাকায় তেমন একটা শীত পড়ে না।
গমরকালে আরবরা ইউরোপ ও আমেরিকায় ভ্রমনে যায়। কারণ তখন ইউরোপ আমেরিকায় বসন্তকাল চলে। আরবদেশে তখন লূ-হাওয়া বয়ে যায়। কথাগুলো আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরায়ে কুরাইশে বর্ণনা করেছেন।
আরবরা সেই যুগেও গ্রীষ্ম কালে সিরিয়া সফর করতো। কারণ উত্তরের দেশ হওয়াতে তাতে গরম কম পড়তো, আর শীত কালে ইয়েমেন সফর করতো, কারন দক্ষিনের দেশ হওয়াতে তাতে শীত কম পড়তো, তাছাড়া ব্যবসা বানিজ্যের ও কারণ ছিল।
ভারত উপমহাদেশর দেশের কাওমী মাদরাসাগুলোর শিক্ষা বর্ষ রমজান টু রমজান। এছাড়া আমাদের দেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে জানুয়ারী টু ডিসেম্বর শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন হলেও আরবদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা গরমকাল কেন্দ্রিক হয়। আগস্টের শেষের দিকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়, জুনের মাঝামাঝিতে আনুয়্যাল এক্সামিনেশান এর মাধ্যমে শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়। প্রায় দু'মাস ছুটি থাকে। এ সময়টি আরবরা ভ্রমনে কাটায়।
এখন আসা যাক ভিন্ন এক প্রাকৃতির কথা। দঃ আফ্রিকায় আমার এক বন্ধু ব্যবসা বানিজ্য করে, আজ তার সাথে কথা বলে তো আমি অবাক। প্রথমে তাকে একটু অসুস্থ মনে হল।
কারণ জিজ্ঞেস করতেই বললঃ এখানে এখন শীতকাল চলছে, শীতের প্রকোপ এতো বেশী যে, রাস্তার পাশের খানাখন্দকগুলোর পানি সম্পূর্ণ বরফ হয়ে গেছে। ছোটখাট খাল বিল শুকিয়ে গেছে। টেপের পানি বরফ হয়ে যায়, প্রথমে টেপের উপর কিছু গরম পানি দিতে হয়, তারপর পানি সরবরাহ শুরু হয়।
আরো বললঃ আমি ডাবল টাউজার পরেছি, দুটি কোট গায়ে দিয়েছি, মাফলার ও রুমাল দিয়ে গলা ও চোখ মুখ বেঁধেছি, তবুও শীতে আমার নাক কান সব বন্ধ হয়ে আছে, গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।
মনে মনে ভাবতে লাগলামঃ ইয়া আল্লাহ! তোমার কত ক্বুদরত, একই সময় একদিকে যেমন আগুনের গোলা জ্বালাতে পার, অপরদিকে বরফে আচ্ছাদন করতে পার। সত্যিই তুমি মহান রব।
বিষয়: বিবিধ
২৪৪৪ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকেও ধন্যবাদ
আমাদের এখানেও গরম ৩০+ চলছে! বাসায় থাকলে তেমন সমস্যা হয় না কিন্তু বের হলে অনেক কষ্ট হয়!মনে হয় রাস্তার পিচ ভেদ করে আগুন আসছে!
জাহান্নামের দুটি শ্বাসমাত্র শীতকাল ও গরম কাল! এতেই আমাদের কি কাহিল ও করুন অবস্থা! কিয়ামতের দিনের কথা কি চিন্তা করা যায়? আর অনন্তকালের জাহান্নাম?
আল্লাহ আমাদের জাহান্নাম থেকে আশ্রয় দান করুন!
উপলব্ধিমূলক চমৎকার পোস্টের জন্য শুকরিয়া!
প্রচুর পানি পান করুন, ফ্রেশ ফ্রুটস এবং ঠান্ডা খাবার খান!
আপনার দোয়ার সাথে আমীন, শেষ আদেশটি পালনের চেষ্টা চালিয়ে যাব ইন শা আল্লাহ।
অনেক অনেক শুকরিয়া আপি মনি।
রাত অনেক হয়েছে, এখনো ঘুমান নাই!
রাতে সাধারণত আমার ঘুম হয় না
আরব দেশগুলোতে কঠিন গরম চলছে, অথচ দক্ষিন আফ্রিকায় বরফ পড়ছে। আল্লাহ তায়ালার আজীব ক্বুদরত।
একটু হলে দোষ কি কন
পৃথিবির উত্তর ও দক্ষিন দুই গোলার্ধে বিরাজ করে দুইরকম ঋতু সবসময়। আমরা বিষুব এলাকার কাছাকাছি অঞ্চল এর লোক একটু কম টের পাই। কিন্ত এই প্রচন্ড গরম ও প্রচন্ড শিতই আমরা সহ্য করতে পারিনা।
অনেক ধন্যবাদ সবুজ ভাই।
আপনার ছবিগুলো যা দিয়েছেন না !
অনেক অনেক শুকরিয়া আপি।
সুন্দর পোস্টের জন্য. ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন