অন্য রকম আয়োজন
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ০৫ জুন, ২০১৫, ০৮:২৩:৪৪ রাত
আবুধাবী শহরটিকে আরব উপসাগরের দ্বীপ টাউন বলা চলে। শহরটির চতুর্পাশই পানিতে ঘেরা। চারটি ব্রিজ ও সমূদ্র পথ ও আকাশপথ ছাড়া এখান থেকে বাহিরে যাওয়ার অন্য কোন উপায় নেই।
মরুভূমির বালির মাঝে গড়ে উঠা এ যেন এক টুকরো ভূ-স্বর্গ। সূখ শান্তি ভোগ বিলাস ও মানোরঞ্জন বিনোদনসহ কোন কিছুর অভাব নেই। সকল ধর্মের সকল মতের সকল জাতের ও সকল মাজহাবের মানুষদের জন্য রয়েছে সমান অধিকার।
হাজারো কারুকার্যে গড়ে উঠেছে এখানকার প্রাসাদগুলো। আবুধাবী শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়কটি হল ইলেক্ট্রেরা স্ট্রীট। শেখ যায়েদ রোড ও বলা হয়। ইলেক্ট্রেরা রোডের মধ্যবর্তী একটি বিল্ডিংয়ের নাম আলকালিলী বিল্ডিং। গোলাকার হওয়ার কারণে রাউন্ড বিল্ডিং ও বলা হয়।
বিল্ডিংটির নিচতলা স্কয়ার হলেও উপরের দিক সম্পূর্ণ রাউন্ড করা। নিচতলায় রয়েছে এক পাকিস্তানি খাবার হোটেল, সু-প্রসিদ্ধ হোটেলটির নাম ইব্রাহিমী রেস্টুরেন্ট।
মেজ ফ্লোরে রয়েছে প্রসস্থ হল রুম, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়।
রাজশাহীর এক ঠিকাদার নতুন একটি কন্সট্রাকশন লাইসেন্স প্লাস অফিস উদ্ভোধনের আয়োজনে আজ হলরুমটি ভাড়া করেছে। আমরা কয়েক বন্ধুও এ আয়োজনে নিমন্ত্রিত হলাম। প্রবাস জীবনের এই প্রথম আমার কোন অনুষ্ঠানে যাওয়া হল, তাছাড়া এধরনের অনুষ্ঠান কেমন হয় তাও আমার জানা ছিল না, তাই আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন হওয়ায় অনুষ্ঠানটি সবার কাছে শেয়ার করার ইচ্ছা করলাম।
হয়তো অনেক দেশী ও প্রবাসী ব্লগারের এব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে, থাকতে পারে।
প্রথমে হল রুমে ঢুকে দেখলাম ষ্টেজ ও চেয়ার টেবিল সাজানো। প্রতিটি টেবিলে পানির বােতল, চা চামুচ ও কাটা চামুচ গ্লাস ইত্যাদি রাখা আছে।
কিছুক্ষণ বসলাম, আস্তে আস্তে অনেক মেহমানের আগমন, সাথে গিফটস আইটেমও। ছেলে মেয়ে পুরুষ মহিলার পদচারণায় হল মুখরিত হয়ে উঠলো।
এদিকে সময় প্রায় ৩টা ছুুঁই ছুাঁই, ক্ষীধে অবস্থা খারাপ। মন চাচ্ছে উঠে চলে যাই। একটু পরই দেখলাম একদিকে মহিলাদের লাইন, এর পেছনে পুরুষের লাইন। কিছুই বুঝতেছিনা, শুধু দেখেই চলছি।
একজন এসে বললঃ লাইনে দাড়ান। মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল, দাওয়াত দিয়ে এনে ফাইভষ্টার হোটেলে এসে খাবেরের জন্য লাইন দিতে হবে?
কিছুক্ষণ পর ভাবলাম, সবার যে আবস্থা আমাদেরও মনে হয় লাইন ছাড় উপায় নেই, পেটের জ্বালায় লাইন ধরলাম। সামনে গিয়ে দেখি একি!
লম্বা এক সারিতে সব কিছু রাখা আছে, নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী নিজ হাতে খাবার সংগ্রহ করতে হবে।
প্রথমে প্লেট নিলাম, সামনে এগুলাম এক এক করে সব আইটেম থেকে একটু একটু করে নিলাম।
প্লেট।
বিভিন্ন পদের সালাদ ও ঘি মাখন।
এক প্রকার রুটি
মুরগির বিরিয়ানী।
মুরগীর কাবাব।
সাদা ভাত ও মুরগীর ঝোল।
পোড়া মুরগীর পিস।
মুরগীর অন্যান্য আইটেম।
সাদা বিরিয়ানী ও খাসির গোস্ত।
শেষের দিকে আছে সুইট আইটেম.
পুডিং ও দধি।
রসমালাই ও সাধারণ মিষ্টি।
কয়েক পদের সুইটস আইটেম।
একেবারে শেষে কোমল পানীয়।
কোমল পানিয় ও গ্লাস রাখা আছে, যার যেটা যে পরিমান মন চায় নিজ হাতে নিবে।
স্ট্রে খালি হওয়ার আগেই ভর্তি করে দেওয়া হচ্ছে।
ইচ্ছে মতো খেলাম। পেট ব্যথা করার পর বেরিয়ে এলাম।
আমার অভিজ্ঞতা প্রিয় ব্লগারদের সাথে শেয়ার করে অনেক মজা পেলুম।
বিষয়: বিবিধ
১৬০৭ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ক্ষুধার তাড়নায় আপনার ভোজনের ব্যাখ্যা পড়ে চিন্তিত হয়েছি! এখন সুস্থ আছেন তো আংকেল?
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন এই প্রার্থনা।
ইতিমধ্যে সকালের নাস্তা ইচ্ছা করেই ছেড়ে দিয়েছি, তাই দুপুরের খাবারে দেরি হলে তো একটু কষ্ট হবেই।
আলহামদু লিল্লাহ ভালই আছি। সুস্থ আছি। আপনার প্রার্থনা মহান প্রভূ কবুল করুক। জাযাকিল্লাহ খাইরান।
লিখা ছবি সবই ভাল লেগেছে ধন্যবাদ ভাইয়া ।
আমার এই টুকিটাকি লিখার পিছনে সাইয়ারার অবদান সীমাহীন। কারণ আমার প্রথম দিকের লিখাগুলোতে আর কেউ না করলেও সাইয়ার কমেন্ট পেতাম। অনেক আন্তরীক শুভেচ্ছা।
ওয়াও
আপনাকে কিন্তু আমি দেখেছি
আপনি যে ছবি দিয়েছেন ওখনে দেখেছি
পেট ব্যথা না হলে নিশ্চয় খাওয়া ছাড়তেন না
ভাই আপনার ভাইয়া দেখে অন্যের খাওয়ার কম হয় নি তো
কারো দিকে কেউ তাকানোর সময় নেই, নিজ হাতে নিয়ে নিজে খাচ্ছে সবাই। ধন্যবাদ<:-P <:-P <:-P
একদিনের অনুষ্ঠানের কারণে দাম বাড়ার প্রশ্নই উঠে না।
ধন্যবাদ।
আনারসের মত দুটি টাওয়ার সালাম রোডের শেষে দিকে তৈরী করা হয়েছে, ঐগুলির নামই আনারস টাওয়ার।
গুগলে ঐগুলির অনেক ছবি পাবেন।
ম, আল মারিয়া সিনেমার ঐ হোটেলটি সম্ভবত এখন নাই, এখন একটি আছে ঐটার নাম চিলি রেস্টুরেন্ট। কাষ্টমার তেমন দেখা যায় না। KFC এর মত সাধারণ রেস্টুরেন্ট। অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ
কারণ অনেকে আছে টুরিষ্টে এসে লুকিয়ে লুকিয়ে কাজ করে। তাই ভেরিফিকেশনের জন্য আর কি। ধন্যবাদ।
আমার সাথে কি আপনি ফেসবুকে আছেন? না থাকলে লিঙ্ক দিলাম.রিকু পাঠান প্লিজ,,
পুরাতন মহাশয় অনেক যুগ পরে ফিরে এসেছেন, অনেক আনন্দ লাগছে। নিয়মিত হবেন, এই প্রত্যাশা রইল। জাযাকাল্লাহ খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন