প্রিয় খাবার
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ৩১ মে, ২০১৫, ১০:৫০:৫২ রাত
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সম্মনীত ব্লগার ভাই বোনেরা, সবার প্রতি আন্তরীক সালাম রইল। ইতিমধ্যে প্রতিযোগীতার নোটিশের অনুকরণে অনেকে অনেক ধরণের খাবার তালিকা পেশ করেছেন। এ পর্যন্ত যত খাবার ম্যানু পড়লাম সব খাবারই আমার পছন্দের।
বিশেষ কোন খাবার নির্দিষ্ট নেই, সামনে যা পাই তাই খাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে যাই। মাছ ভূনা ও গোস্ত ভূনার প্রতি আমার একটু আকর্ষণ বেশী। ছাত্রজীবনে হোস্টেলে থাকাবস্থায় বাড়ী থেকে যাওয়ার সময় আম্মা প্রায় সময় মুরগী বা গরুর গোস্ত ভূনা করে দিতেন। মাঝে মাঝে গরম করে অনেক দিন পর্যন্ত খেতাম।
আমাদের গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ নেই, মানে ফ্রিজও নেই। তাই কুরবানের সময় গরুর রানের গোস্তগুলোকে বড় বড় টুকরো করে রাখা হয়, এক টুকরো ৩ইঞ্চি বাই ৩ইঞ্চি পুরো ৩ইঞ্চি। প্রথম দিন রান্নার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন আচ্ছা করে জ্বাল দেওয়া হয়। চতুর্থ দিনে মসলা ও ঝোল ছাড়িয়ে ভুনা করা হয়, এভাবে মাসাধিক কাল রাখা যায়। দু'তিন দিন পরপর একটু গরম করলেই চলে। সেই গোস্তগুলোকে আমার প্রিয় খাবার বলা চলে। এক টুকরো গোস্ত নিয়ে সারা দিন হেটে হেটে খাওয়া। চিবাতে চিবাতে শেষই হয় না, আর যে কি মজা বের হয়।
ছোটকালে লূঙ্গীর পকেট (কোচ্ছা) বানিয়ে রাস্তায় মাঠে ও পুকুর পাড়ে হেটে হেটে খেতাম। এই গোস্তগুলোকে কেটে ছোট ছোট পিজ করে টমেটো ও পিয়াজ দিয়ে রসালো ভূনা করলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খাবার মনে হয়। ছোট এক টুকরা দিয়ে অনেক পান্তা ভাত খেতাম, অনেক সময় খেতে খেতে অতিরিক্ত খাবার কারণে পেট ব্যাথা হয়ে যেত কিন্তু মজা শেষ হতো না।
বর্তমানে আমার আম্মা গরুর গোস্ত ছাড়া কোন গোস্তই খান না, তাই মাঝে মাঝে হাঁস মুরগী জবেহ করা হলেও আম্মা না খাওয়াতে আমাদের মাঝেও কোন আনন্দ নেই। সাধারণ তরকারীর মত খাওয়া হয় এতটুকু।
আরবদের খাবার আমার খুব প্রিয়, কারণ মসলা একেবারে কম ব্যবহার করা হয়, মরিচ তো একেবারেই না। সামান্য হলুদ, লবন ও লং দিয়ে আরবদের বেশীরভাগ খাবার পাকানো হয়।
গত অক্টোবরে ছুটিতে গিয়েছিলাম ২ মাস ছিলাম। অন্তত ৪০টি গৃহপালিত মুরগী ও ২০টি হাঁস সাবাড় করেছি। তন্মধ্যে ৫টি মুরগী ও ১৫টি হাঁস শাশুরীর পালিত। গৃহপালিত গরুর দুধ ডেইলী মিনিমাম ১কিলো গলধকরণ করতাম।
বাড়িতে যাওয়ার সময় ওজন ৭০কেজি থাকলেও ফিরে এসে দেখি ৭৬ কেজি। ব্লাড টেষ্ট করিয়ে দেখলাম কোলষ্টোরলের মাত্রা সীমানা পেরিয়ে। বর্তমানে ডায়েট কন্ট্রোলে আছি, আজ পাঁচ মাস হলো ভাত খেয়েছি। এখন সকালে একটু চা বিস্কুট, দুপুরে ও রাতে শুকনা ব্রাউন রুটি (আরবীতে সাম্মুন বলা হয়) ও তরকারী সাথে দুটি করে খিরা ও খাছপাতা আমার নিত্য খাবারে পরিণত হয়েছে।
সারা দিন অফিসে বসে থাকতে হয়তো! ৩দিন আগে মেপে দেখলাম ৭১ কিলোতে অবস্থান করছি। ভালই লাগছে, ৫মাসে ৫কিলো কমলো। ব্যায়ামের একদম সময় পাওয়া যায় না। রাতে ১২টার আগে সোয়া হয়ে উঠেনা তাই সকালের ঘুমটা একদমই মিস করতে পারি না। ফজর পড়ে আবার ৮টা পর্যন্ত চলে।
আমার সামনে অন্যরা ভাত খায়, আমার যে কি কষ্ট হয়। তবুও ৬০কিলো হওয়া পর্যন্ত আমার এ অভিযান চলবে ইন শা আল্লাহ। (খাদক ভাইগণ বিশেষ করে স্ল্যভ, আওন ও হ্যারি ভাই এইসব ডায়েট থেকে দূরে থাকুন)। না হয় খাদক শব্দটির অপমান করা হবে।
বিষয়: বিবিধ
২৪১৮ বার পঠিত, ৪০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কর্মজীবনের প্রথমদিক থেকে একটু একটু করে শরীর হয়েছে, এখনো কোমর ৩৪ইঞ্চির নিচে, তবে কি পেটুক বলবেন?
মডুরা বোর্ড টাঙ্গিয়ে রেখেছে প্রিয়বই প্রিয়লিখক প্রিয়খাবার ইত্যাদি বিষয়ে লিখার জন্য, তাই সবাই একটু একটু করে লিখছে আরি কি। আপনিও লিখে ফেলুন আপনার প্রিয় বিষয়ে, ধন্যবাদ।
গরুর গোশত মনে হয় বেশির ভাগ ছেলেদের পছন্দ! কোরবানীর ঈদের পর ওরকম ঝুনা গোশত আমাদের বাসায় করা হতো! আসলেই খুব টেস্ট ! চালের গুড়ি দিয়ে পিঠা বানালেও খুব মজা হয় খেতে!
দেশে গিয়ে তো ছেলের আদর আর জামাই আদর উভয়ের ফলে আপনার ওজন বেড়ে গেছে! শুধু খাওয়া কমিয়ে দিলে দুর্বল হয়ে যেতে পারেন সাথে কিছু হালকা ব্যায়াম করা ভালো! প্রচুএ সবজি খেতে পারেন! তৈলাক্ত খাবার কম খাওয়া ভালো!
ভালো লাগলো আপনার প্রিয় খাবারের বৃত্তান্ত এবং স্মৃতিগুলো জেনে!
শুভাকামনা ও সফলতা কামনা করছি!
জযাকাল্লাহু খাইর!
ইন শা আল্লাহ রামাদানের পর রাত ১১টা থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত নিয়মিত জিম করার ইচ্ছা রাখছি। আল্লাহ সহায়। জাযাকিল্লাহু খাইর!
অনেকদিন থেকে আপনার লিখা মিস করছি। নতুন কলামের অপেক্ষায়........
ভালো লাগলো ধন্যবাদ।
বড়লোক হওয়ার জন্য ডায়েট নয়, কোলষ্টোরল মাত্রাতিরিক্ত হওয়াতে ডাক্তারের পরামর্শ, তাই একটু একটু কন্ট্রোল করছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার গরুর মাংস খাওয়ার কথায় আমার নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। এই মাংসটা জ্বাল দিতে দিতে শক্ত হয়ে যেত। এবং এর মজা যে কী তা না খেলে কেউ বুঝতে পারবেনা।
স্মৃতি জাগানীয়া পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
সত্যিই অনেক শক্ত হয়ে যায়, মজা সে যে কি মজা! খেলেই বুঝা যায়। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ওহ! আপনাকে ভাই/আপু কোনটা বলে সম্ভোধন করবো? জানাবেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দুলাভাইকে বলে একদিন রেধে ফেলুন। তিন দিন পর ভূনা করে নিন। ব্যাস আস্তে আস্তে খেতে থাকুন, আর মজা করুন। অনেক শুকরিয়া মদিনাপু।
০ গত অক্টোবরে কোরবানীর ঈদ ছিল । মানে গরু ও খাসীর মাংশ কমন । তারপরেও হাঁস মুরগী ৬০ টা !!!
পুরো গ্রামের সব গৃহপালিত প্রানীকুল মনে হয় আপনার আগমনে অস্থির হয়ে গিয়েছিল ।
পুরো গ্রাম কেন! আমাদের অনেক হাস মুরগী, তাছাড়া আমি যাবো এ কারণে আগে থেকেই প্রস্তুতি ছিল। তাই কারো অস্থির হতে হয় নাই। দুটি রাজ হাঁস ও ৫টি কবুতরের কথা কিন্তু উল্লেখ করা হয় নাই।
আপনার মন্তব্যগুলো সত্যিই অনেক আনন্দ দেয়। ধন্যবাদ।
হুমম এই খাবারটা আসলেই অনেক মজার........।
সবার প্রিয় খাবার নিয়ে পড়তে পড়তে আমি এখন কনফিউজড হয়ে যাচ্ছি..........।
শুকনা গরুর গোস্ত মুড়ি দিয়েও খুব মজা।
মুড়ি দিয়ে আমিও অনেক খেয়েছি, এখনো খাই। গরুর গোস্তের ঝোল দিয়ে ঝালমুড়ি বানালে সে রকম মজা হয়।
ধন্যবাদ
ভাই আর কখনও ছুটেতে বাড়ি যেয়েন না। এবার বাড়ি গেলে পশু পাখি সবাই ধর্মঘট ডাকবে ) ) )
আপনার পিকচারটার মানে কি? আমার তো ভয় করে, হাতের মধ্যে দাঁত!
মন্তব্য করতে লগইন করুন