ঘুম নিয়ে এলো (?) রামাদান, সময় কিন্তু পার হয়ে যাচ্ছে।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ০৯ জুলাই, ২০১৫, ০৩:২১:৪৪ দুপুর
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে রামাদান প্রতি বছর আমাদেরকে তাক্বওয়ার বার্তা দিয়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো সেই তাক্বওয়া আমরা কতটুকু অর্জন করতে পারলাম
হাদীসে এসেছেঃ জিবরাঈল আঃ বললেনঃ রামাদান পেয়েও যে ব্যক্তি নিজের অতীতের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে পারে নাই, সে ধ্বংশ হোক, আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেছেন আমীন। (ইবনে খুজাইমাহ, ইবনে হাব্বান, বাইহাক্বী, তাবরানী।)
প্রিয় বন্ধুগণ! রামাদান প্রায় বিদায়ের পথে, কতটুকু পেরেছি নিজের অতীতের কৃতকর্ম ক্ষমা করাতে? পুরো মাসটি তো ঘুম, ইফতার পার্টি, সাহরী পার্টি, ফিল্ম ও ঈদের জন্য কেনা কাটায় পার করছি।
নিজেকে ধ্বংশের ধারপ্রান্ত থেকে বাচাতে পেরেছি কি? বা চেষ্টা কতটুকু করেছি, হিসাব মিলানোর সময় কিন্তু পার হয়ে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি।
রাসূলুল্লাহ সাঃ রামাদানের শেষ দশ দিনে খুব মেহনত করতেন, যা অন্য সময়ের তুলনায় অনেক অনেক গুণ বেশি। (মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাঃ রামাদানের শেষ দশ রাতে একেবারেই ঘুমাতেন না এবং পরিবারের সদস্যদের ও জাগ্রত থাকতে আদেশ দিতেন, ইবাদতে অনেক বেশি মেহনত করতেন। (বুখারী ও মুসলিম)
ইমাম নববী রহঃ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, রাসূল সাঃ এই সময়ের রাতে স্ত্রী সহবাস থেকেও বিরত থাকতেন। কারণ তাতেও সময় ব্যয় হয়।
রাসূলুল্লাহ সাঃ আমৃত্যু রামাদানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)
ইমাম নববী রহঃ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, ১০দিন ইতিকাফ সুন্নাত, যদি কেউ এর কম সময়ও ইতেকাফ করেন, তবুও সুন্নাত থেকে খালি নয়, কারণ রাসূল সাঃ এর স্ত্রীগণ ইতিকাফের নিয়্যতে মাঝে মাঝে মাসজিদে অবস্থান করতেন, মাঝে মাঝে নিজের প্রয়োজনে ঘরেও যেতেন, যেহেতু মহিলাদের জরুরত ঘরেই বেশী।
প্রিয় বন্ধগণ, এখও ৮/৯ দিন সময় আছে, যেটুকু সম্ভব হয় ইতেকাফের নিয়্যাতে মসজিদে অবস্থান করে ক্বদর তালাশ করুন। দিনে সময় না ফেলে কমপক্ষে তারাবীহ এর পর থেকে সাহরীর আগ পর্যন্ত সময়টুকু মসজিদে ইবাদাতে ব্যয় করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফীক দান করুক। আমীন।
শিরোনাম প্রসঙ্গঃ
আমার শ্রদ্ধেয় হযরতজী মুফতী শহীদুল্লাহ সাহেব ফেনবী. একদিন বয়ানে বলতেছিলেনঃ বাড়ি থেকে মাদরাসায় আসার পথে দোকানের সামনে অনেক মুরুব্বিকে দোকানে বসে থাকতে দেখলাম। সালামের পর বললাম: কেমন আছেন কি করতেছেন?
উনারা বললেনঃ এই তো...... সময় পার করতেছি, হযরত তখন বললেন মাদরাসায় চলেন, ওখানে সময় পার করবো। এরপর মাদরাসায় এনে তাদেরকে কিছু দ্বীনি কথাবার্তা শুনালেন ও ইবাদাতের দিক নির্দেশনা দিলেন।
হযরত আফসোস করে বয়ানে বলতেছেনঃ আহ! রামাদানের মত মোবারাক মাসে আমাদের মুরুব্বুরীরা সময় কাটানোর জন্য দোকানে আড্ডায়রত, অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন. "আইয়্যামাম্মা'দূদাহ, নির্দিষ্ট কয়দিন সময় মাত্র"। এ কয়দিন সময়ও আমরা আল্লাহর ইবাদাতে কাটাতে পারি না? ইবাদাতে মাশুগুল থাকলেও সময় পার হবে, বেহুদা কাজ করলেও সময় পার হবে।
আসুন ভাইয়া ও আপুরা, বাকি দিনগুলি আমরা আল্লাহর ইবাদাতে কাটিয়ে দেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দয়া করুক।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিজেরা ঈদের কেনাকাটা ও আজেবাজে বিষয়ে সময় পার করে দিই...!!!
নিজেদের জন্য যা দরকারী তা রেখেছি অবহেলায়।
সুন্দর উপকারী পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
আমরা যেন রমজানের বাকি কটাদিন রমজানের উদ্দেশ্য পুরন করতে পারি, আল্লাহ যেন তাওফীক দান করেন। আমিন।
অনেক অনেক শুকরিয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন