অন্যরকম অনুভূতি ২/৩
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ০৬ এপ্রিল, ২০১৫, ১১:১৭:৪৩ রাত
প্রথম পর্ব এখানে পাবেন Click this link
মেয়েটির বাবা বাড়ীতে গিয়ে নিকতাত্মীয়দের সাথে আলোচনা করলেন, উনাদের পরিবারের প্রায় সকল সদস্য উচ্চ শিক্ষিত, তাবলীগী জামাআতের সাথে জড়িত থাকায় আমল আখলাক ও পর্দা মেনে চলা, নামায রোজা ও ধর্মীয় বিধিবিধান মেনেই চলতেন। মেয়েটির বাবা ও বড় ভাইয়ের দাড়িওয়ালা চেহারা দেখলে যে কেউ মনে করবে বড় আলেম।
দুদিন পর জানালেনঃ আলহামদু লিল্লাহ আমাদের দ্বিমত নেই, আপনারা মেয়ে দেখতে আসতে পারেন। শুক্রবারে আব্বু আলোচনা শুরু করলেন। রবিবারে আমরা মেয়ে দেখার অনুমতি পেলাম। মঙ্গলবারে যাওয়ার কথা দিলাম।
উল্লেখ্য যে, এই মেয়েটির জন্য উচ্চ শিক্ষিত ও জেলাশহরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বড়লোকও বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন (আত্মীয়ের মধ্যে), এ টু জেড উঠান খরচসহ সবই বহন করার অঙ্গীকার করেছিলেন, কিন্তু মেয়েটির বাবা লোভকে প্রশ্রয় না দিয়ে সততার পরিচয় দিলেন, নিজেদের ধার্মীক মেয়েটির জন্য একজন আলেম ও ধার্মিক ছেলের অপেক্ষায় ছিলেন বলে তাদেরকে না করে দিলেন। আমাদের পাশের বাড়ীর এক দুবাই প্রবাসী বড়লোক প্রস্তাব দিয়ে অনেক চেষ্টা করেও মেয়ের বাবাকে রাজী করাতে পারেন নি। আসলে নসীব বলতে হবে, যার ভাগ্য যেখানে আছে, সেখানে তাকে যেতেই হবে।
মঙ্গলবার জোহরের নামাজের পর আব্বু ফোন করলেন, ৩টার আগেই আমার জুমআর মসজিদে উপস্থিত হইবি। তাড়াতাড়ি খানা খেতে বসলাম, খানা কি আর গলদকরণ করা যায়? সামান্য খেয়ে জামা কাপড় পরে তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ বলে রাওয়ানা দিলাম। ঠিক সাড়ে তিনটায় ঐ এলাকায় পৌছলাম।
বাড়ী থেকে আম্মা, আব্বু, ছোটবোন, নানা, নানী, মামা এরা সবাই একসাথে এলেন। মামা প্রথমেই এক ধমক দিলেনঃ তুই কি একটু ভালো কাপড় ও জুতা পরে আসতে পারলি না? নতুন জায়গায় যাচ্ছি, তুই এখনো সেকেলেই রয়ে গেলি।
অতঃপর বাড়িতে গেলাম। ঘরে সোফায় পশ্চিম মুখি হয়ে বসলাম, নাস্তা পর্ব শেষ করে আব্বু, নানা ও মামা বাহিরে চলে গেলেনে। ছোট বোন ও আম্মা মেয়েটিকে আমার সামনে নিয়ে আসলেন, প্রথমে সালাম দিলেন অতঃপর সামনা সামনি একটি চেয়ারে বসালেন।
আমি সালামের জবাব দিলাম, তখন আমার হার্টবিট অনেকটা বেড়ে যেতে লাগলো, এই প্রথম কোন অপরিচিত যুবতি মেয়ের সামনে সরাসরি বসা। প্রথমে কিছুক্ষণ অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম, আমার বোন পাশেই বসল। মেয়েটি নিরবে নিচের দিকে চেয়ে আছে।
মনে মনে ভাবছিলাম, কি বলে কথা শুরু করবো। কি বা জিজ্ঞাস করবো। ছোট বোন বললঃ ভাইয়া কিছু বলেন না! অনেক ভেবে বললামঃ আপনার কি নাম? নিম্নসূরে উত্তর পেলাম........... পড়া লিখা?............................টেষ্ট পরীক্ষা দিয়েছি, ফাইলান পরীক্ষা দেওয়া হয় নাই। কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করতে পারেন? জ্বি আলহামদু লিল্লাহ, সূরায়ে ফাতেহা একটু তেলাওয়াত করুনঃ আউযু বিল্লাহি........... মাশা আল্লাহ এখন যেতে পারেন।
ছোট বোনকে বললাম এক টুকরো কাগজে তার ঠিকানাটা লিখে দিতে বল। লিখে নিয়ে আসলাে। আম্মা জিজ্ঞাস করলেনঃ কিরে তোর কি খেয়াল? বললামঃ আমার যা জানার জেনেছি, ভালো লেগেছে, অভ্যন্তরীণ ব্যাপারগুলো আপনারা দেখেন। যেমন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, আচার ব্যবহার, মেয়েটির হাত পা, মাথার চুল ইত্যাদি। আম্মা বললেন সব ঠিক আছে, তোর পছন্দ হয়েছে কিনা? তাই বল। বললাম ঠিক আছে।
চলবে.......
বিষয়: বিবিধ
১৪৯১ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক স্মার্ট
ভীষণ ভালো লাগলো।
পরের পর্বের অপেক্ষায়। আমার অ্যান্টিমনির জন্য ছালাম ও জান্নাতি ফুলের জন্য অনিঃশেষ দোয়া ও শুভেচ্ছা।
শিখে রাখলাম।
অনেক কিছু জানলাম শিখলাম । ধন্যবাদ ভাইয়া ।
আপনার লেখা পড়তে পড়তে আর একটি ভাবনা এলো মনে। বিয়ের আগে যে থাকে শত সাধনায় পাওয়া সম্পদ , বিয়ের পরেই তার প্রতি অধিকাংশের মন কেন এত বদলে যায় ! আশা করি , আমাদের মুহতারামা উম্মে জান্নাত তার ঔশ্বর্য নিয়ে এখনো আপনার ঘর ও হৃদয়ে সমানভাবেই রাজত্ব করে যাচ্ছেন !
শুভকামনা রইলো আপনাদের দুজনের জন্যই !
আসলে সবাই তো উপরের লেভেল দেখেই বিয়ে করে, অভ্যন্তরীন ও বাস্তবতা ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। তাই হয়তো বদলে যায়।
আলহামদু লিল্লাহ, উম্মে জান্নাত ঠিক আগের মতই আছেন। আমি কখনো তাকে তুমি বা তুই বলে সম্বোধন করার সাহস পায়নি, প্রয়োজনও হয়নি এ পর্যন্ত। আমাদের দো'জাহানের মঙ্গলের জন্য দোয়া প্রার্থী। আপনার জন্য অনেক অনেক সালাম ও শুভেচ্ছা রইল।
এমন কথা সব মেয়ের বাবাই বলে থাকেন!!!! এতে এক ধরণের আত্মতৃপ্তি আছে।
আরো অনেক কথাই বলার ছিল, কিন্তু ইচ্ছে হচ্ছে না!!!! যারা দুষ্টমি বুঝে না, তাদের কি বলতে গিয়ে কি বলে আবার কষ্ট দিয়ে ফেলি!
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আমার জানামতে আপনার সাথে ব্লগে দুষ্টামী আমার থেকে বেশী কেউ করে নাই, তাতে যদি আপনি মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন আমি ক্ষমা প্রার্থী, আর আমি কখনো আপনার কথায় বা আচরণে কষ্ট পায়নি বরং উৎসাহ পেয়েছি। আমার প্রিয় ব্লগারদের মধ্যে আপনি একজন, যদিও এখন প্রিয়তে এ্যড করা যাচ্ছেনা সিষ্টেম সমস্যার কারণে। আপনাকে অনেক ভালোবাসি, মনথেকে ভালোবাসি। প্লিজ আপনার কি বলার ছিল মনখুলে বলতে পারেন, আমি অপেক্ষায়.....
পাজিতো আমি খুব দুষ্টামি করেই বলি!
ধীরে ধীরে পড়ছি আর ভালোলাগায় আপ্লুত হচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ আপনাকে অনেক উত্তম নিয়ামত দান করেছেন! দুনিয়া ও আখিরাতেও আপনারা একসাথে সফরসংগী হোন, জান্নাতের বাগানে আরোহী হোন এই শুভকামনা রইলো!
জাযাকিল্লাহু খাইর!
আপনাদের আগমনই আমার প্রেরণা, আগ পর কোন কথা নয়।
আপনার দোয়ার সাথে আমিও বলছিঃ আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন। আল্লাহ তায়ালা এই দোয়াটি আপনার জন্যও কবুল করুক। অনেক শুকরিয়া আপু মনি।
আপু আপত্তি না থাকলে একটি কথা, আপনার ছেলে মেয়ে কয়জন? দুলাভাই কি করেন? জানতে ইচ্ছে হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন