১০০ টাকা ও এক রত্নগর্ভা মায়ের হটাৎ মৃত্যু

লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১০:৩৩:২৩ রাত

গত রমজানের ঈদে নিকটাত্মীয় প্রায় সবার মোবাইলে ১০০ টাকা করে প্রবাস থেকে ফ্লাক্সি করে ছিলাম, এমাউন্ট ছোট হোক কিন্তু হটাৎ এমন হাদিয়া পেয়ে সবাইতো বেশ খুশি। বিশেষ করে নানার বাড়িদে যেন হৈচৈ পড়ে গেল সবার মোবাইলে ১০০ টাকা করে কোত্থেকে এল? কিন্তু বড় মামী মোবাইল ব্যবহার করে না বিধায় তাকে দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণ পর আমি ফোন করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালাম, ছোট মামী বলল আমাদের মোবাইলে ১০০ টাকা করে এল কিন্তু কে দিল তাতো জানি না, আবার বড় মামী আফসোস করতে লাগলো আমি কেন মোবাইল ব্যবহার করি না, তাহলে তো আমিও পেতাম। তখন আমি বললাম বড় মামীরটা হয়তো জমা রয়েছে অচিরেই পেয়ে যাবেন, তখন তিনি বললেন তুমিই কি পাঠিয়েছ? হ্যাঁ আমি।

ঈদুল আজহায় ছুটিতে গেলাম, ৩ দিন পর মামার বাড়িতে, নাস্তা পর্ব শেষ হওয়ার পর দেখলাম বড় মামী আরো কি যেন পাকাচ্ছে, আমি পাশ্বে গিয়ে মামীর হাতে ১০০ টাকার একটা নোট দিলাম, মামী অনেক খুশি হলেন, যদিও বড় মামাতো ভাই সৌদি থাকে, অনেক টাকা পয়সা আছে, তবুও ভাগিনার হাতের মামীকে এই প্রথম কিছু দেয়া।

আমার ছোট বেলা (৭-১৪) এই ৭ বছর মামার বাড়িতেই কেটেছে, মামাদের বাড়ির পাশ্বে নূরানী মাদরাসা ও বড় মাদরাসা আছে বিধায় ওখানে থাকা ও মামাতো ভাইদের নিয়ে সকাল বিকাল পড়াশুনা ও শাষণ ইত্যাদি আমার হাতে ন্যাস্ত ছিল। তখন বড় মামী আমার জন্য অনেক খেটেছে, প্রতিদিন সকাল ৭টায় নাস্তা ও গরম ভাত রান্না করা, দুপুরের জন্য টিপিনবক্স ভর্তি করা, অতপর রাতের খাবার, কাপড় কাচা ইত্যাদি। বড়মামার তখন ৪ ছেলে ছিল, এর মধ্যে আমার ঝামেলাও মামীকে পোহাতে হয়েছে অনেক। এখন মামীর অবশ্য ৮ ছেলে ও ১ মেয়ে। ৪ জন ইতিমধ্যে আলেম হয়েছে, বাকিরাও হাফেজ ও আলেম হওয়ার পথে। ছোট মামাতো ভাইটির বয়স ৮ বছর, মাত্র নূরাণী শেষ করে হিফজ খানায় ভর্তি হল।

৬/১২/২০১৪ইং শনিবার সকাল বেলা মামী নাস্তা তৈরী করে ছেলেদের খেতে দিল, মাদরাসায় পাঠাল, অতঃপর মেঝ মামীর কাছে গিয়ে বসল, বলতে লাগলো আমার কাছে আজকে ভাল লাগতেছে না, মেঝ মামী চা বিস্কুট খেতে দিল, একটু খেল অতপর বলতে লাগলো আমাকে আমার রুমে নিয়ে চল, আমাকে সোয়াইয়ে দাও, তাড়াতাড়ি করে রুমে নিয়ে শোয়ানো হল স‌ঙ্গে সঙ্গে প্রভূর ডাকে সাড়া দিলেন, انا لله و انا اليه راجعون আমার মামীকে (আখেরাতের) রত্নাগর্ভা মা আখ্যা দেয়া যায়। আটজন ছেলে ও একজন মেয়েকে হাফেজ ও আলেম বানানো সহজ ব্যাপার নয়। আল্লাহ তাওফীক দিয়েছেন বিধায় সহজ হয়েছে। মামীর জন্য অনেক কান্না হয় আমার, আল্লাহ তায়ালা আমার মামীকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুক। আমীন।

বিষয়: বিবিধ

১২৪৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

303398
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আল্লাহতায়লা তাকে জান্নাত নসিব করুন।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৪৭
245407
আবু জান্নাত লিখেছেন : আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
303415
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:২২
যা বলতে চাই লিখেছেন : আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাত নসিব করুন। আর সন্তান পরিবারবর্গকে সবর করার তাওফিক দিন। আমিন।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:১৭
245492
আবু জান্নাত লিখেছেন : আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
303418
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৩৬
আফরা লিখেছেন : হঠাত মৃত্যু কষ্টদায়ক বেশী । উনি অবশ্যই ভাগ্য বতী যার নয়টা সন্তানই কোরানের হাফেজ ও আলেম ।
আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাত নসিব করুন। আর সন্তান পরিবারবর্গকে সবর করার তাওফিক দিন। আমিন।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২১
245494
আবু জান্নাত লিখেছেন : আল্লাহ তায়ালা সকলকে হঠাৎ মৃত্যু থেকে হেফাজত করুক। একজন রত্নগর্ভা মায়ের জন্য আল্লাহ তায়ালা আপনাদের দোয়া কবুল করুক। আমীন ছুম্মা আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
303501
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:০৮
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : উনি অনেক ভাগ্য বতী ।
আল্লাহ তায়ালা আমার উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুক। আমীন।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:১৭
245493
আবু জান্নাত লিখেছেন : আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
304721
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৩৯
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


হিংসা করার মতই ....

আল্লাহতায়ালা যেন তাঁকে হিংসা করার মতই মর্যাদা দেন..
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৩৫
246546
আবু জান্নাত লিখেছেন : হিংসা নয় ভাই, ইর্শা করার মত বলতে হবে। হিংসা যে, ধ্বংশ ঢেকে আনে। জাযাকাল্লাহ খাইর। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া
312883
০৪ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৫
০৪ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৮:১৬
253895
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতল্লাহ, আমার ব্লগে আপনার প্রথম দেখা Rose Rose শুভেচ্ছ রইল। অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File