র‌্যাবই ওই সাতজনকে তুলে নিয়ে যায়

লিখেছেন লিখেছেন সত্যবাদী সৈনিক ১৮ মে, ২০১৪, ১২:৫১:১১ রাত

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় তৃতীয় দফায় সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুেকন্দ্রের ভেতরে রেস্ট হাউসে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এই গণশুনানি চলে।

সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ৩১০ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হলেও ১৯৮ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে তদন্ত কমিটি। এদিকে তদন্ত কমিটির কাছে সাতজনকে অপহরণের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাপড় ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, র‌্যাবই নজরুলসহ সাতজনকে তুলে নিয়ে গেছে।

রোববার বেলা তিনটায় জেলা সার্কিট হাউসে চতুর্থ দফায় সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের কর্মীদের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

আজ গণশুনানিতে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় কয়েক শ নারী-পুরুষ সাক্ষ্য দিতে বিদ্যুেকন্দ্রের ভেতরে রেস্ট হাউসের সামনে জড়ো হন। তদন্ত কমিটি বেলা ১১টা থেকে রেস্ট হাউসের দোতলায় সাক্ষ্য নেওয়া শুরু করেন।

সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার মাহমুদ আলীর (৬৫) সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেন সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী। সাক্ষ্য দেওয়া শেষে মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের জানান, নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম একজন ভালো লোক ছিলেন। ঘটনার দিন র‌্যাব পরিচয়ে নজরুলসহ সাতজনকে উঠিয়ে নেওয়ার পর কারা তাঁদের হত্যা করল, তাদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তিনি। প্রশাসন ইচ্ছা করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারে। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে আরও জানান, ৪০ বছর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিদেশ থেকে দেশে এনে বিচার করতে পারলে নজরুলসহ সাত খুনের আসামিদের কেন এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি সরকার।

মিজমিজি এলাকার বৃদ্ধ আবদুল খালেক সাক্ষ্য দিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি নূর হোসেনের লোকজন নজরুলকে মারতে এসে এলাকায় তাণ্ডব চালায়। পরে নূর হোসেনই নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। সেই মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে নজরুল অপহূত হন। তাঁর দাবি নূর হোসেনই র‌্যাব দিয়ে নজরুলসহ সাতজনকে অপহরণ করিয়ে খুন করেছে।

বন্দর থানা এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্যে ওই দিনের (২৭ এপ্রিল) ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। সাক্ষ্য দিয়ে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ২৭ এপ্রিল মেয়ের পরীক্ষা শেষে তাকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড দিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে রাস্তায় র‌্যাব-১১-এর দুটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র‌্যাবের সদস্যরা তাঁকে ধমক দিয়ে চলে যেতে বলেন। ওই সময় অন্য দুইটি গাড়ি থেকে কিছু লোককে র‌্যাবের গাড়িতে জোর করে তোলা হচ্ছিল। এ সময় কয়েকজনের হাতে পিস্তল ছিল, যা দিয়ে তাঁদের মাথায় আঘাত করতে দেখা গেছে। র‌্যাবই নজরুলসহ সাতজনকে তুলে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি। মো. শহীদুল ইসলামের ধারণা, র‌্যাব চেকপোস্ট বসিয়ে অপরাধীদের তল্লাশি করছে। পরে তিনি গণমাধ্যমে নজরুলসহ সাত জনকে অপহরণের বিষয়টি জানতে পারেন।

নিজের বিবেকের তাড়নায়ই শহীদুল ইসলাম সাক্ষ্য দিতে এসেছেন বলেও জানান। নিহত নজরুল ও নূর হোসেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় নেই।

তদন্ত কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তদন্তের স্বার্থে শুনানির বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র‌্যাবসহ তদন্তের স্বার্থে যে কাউকে কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

সুত্র: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/218557/%E2%80%98%E0%A6%B0%E2%80%8C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%87_%E0%A6%93%E0%A6%87_%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A7%87_%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%87_%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87_%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E2%80%99

বিষয়: বিবিধ

৯৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File