৩০ নভেম্বর বিশ্ববিখ্যাত কারী আবদুল বাসীতের মৃত্যু বার্ষিকী

লিখেছেন লিখেছেন এনামুল হক মানিক ২৯ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:৫৮:১০ রাত



ক্বারী আবদুল বাসীত, এক জন স্বনামধন্য বিশ্ব বিখ্যাত ক্বারী। তাঁর সুললিত কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে বিশ্ব মুসলিম হয়েছেন বিমুগ্ধ-বিমোহীত। তাঁর হৃদয়গ্রাহী আকর্ষণীয় তেলাওয়াত শুনে ঈমানদার মুসলিম হয়ে যান আপ্লুত। ক্বারী আবদুল বাসীতের কন্ঠের সম্মোহনী শক্তিতে বিশ্ববাসী হয়ে যান মুগ্ধ। তাঁর অনন্য অনবদ্য কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে বিমোহিত হয়ে অনেক অমুসলিম ইসলাম গ্রহন করেছেন। আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শেখ ডঃ আব্দুল হালিম মাহমুদ বলেছেন, ‘‘শেখ আব্দুল বাসিতকে হযরত দাউদ (আঃ)-এর কোন বাঁশী দান করা হয়েছে।’’

ক্বারী আব্দুল বাসিত ১৯২৭ সালে মিশরের দক্ষিনাঞ্চলের ‘আরমানত' শহরের মরয়েজা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আলহাজ্ব আব্দুস ছামাদ। ক্বারী আবদুল বাসীত শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় অধ্যয়নকালেই কুরআনের বিশুদ্ধ তেলাওয়াত, তাজবীদ এবং শব্দ উচ্চারণে অত্যন্ত পরাদর্শী হয়ে ওঠেন । তাঁর আত্মবিশ্বাস, অক্লান্ত পরিশ্রম এবং শিক্ষকদের ভালবাসাও অনুপ্রেরণা তাকে ক্বিরাতের নান্দনিকতায় পৌঁছতে অনুপ্রাণিত করে। আর এতে করেই মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি সকলের নিকট পরিচিত হয়ে ওঠেন।

১৯৫০ সালে ক্বারী আবদুল বাসীত মিশরের রাজধানী কায়রোতে এসে বিভিন্ন মসজিদে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করতে লাগলেন। একদা একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে কোরআন তেলাওয়াতের জন্য ১০ মিনিট সময় দেয়া হয়। ১০ মিনিটে তেলাওয়াত শেষ করলে সমস্ত শ্রোতা মন্ডলী তাঁকে আরো বেশী সময় নিয়ে তেলাওয়াত করার জন্য অনুরোধ জানান। শ্রোতাবৃন্দের অনুরোধে তিনি দেড় ঘন্টারও অধিক সময় ধরে তেলাওয়াত করে দর্শক শ্রোতাকে বিমোহীত করে দেন। পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৫১ সালে তিনি রেডিও রেহাবে যোগদান করেন। রেডিওতে যোগদানের পর তিনি নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করতে লাগলেন এবং অচিরেই সারা বিশ্বে তিনি পরিচিতি লাভ করেন।

বিশ্বনন্দিত ক্বারী আবদুল বাসীত সৌদী আরব, আমেরিকা, মালয়শীয়া, ভারত, পাকিস্তানসহ বহুদেশে আমন্ত্রিত মেহমান হয়ে কোরআন তেলাওয়াত করে শুনান। মরক্কোর তৎকালীন বাদশা মুহাম্মদ আল খাশিস তাকে কায়রো ছেড়ে মরক্কোয় স্থায়ীভাবে চলে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

প্রখ্যাত ক্বারী আবদুল বাসীত তাঁর অসাধারণ তেলাওয়াতের জন্য অনেক পুরষ্কারে ভূষিত হন। ১৯৫৯ সালে সিরিয়া, ১৯৬৫ সালে মালয়শিয়া, ১৯৭৫ সালে সেনেগাল, ১৯৮০ সালে পাকিস্তান এবং ১৯৮৭ সালে মিশর তাঁকে পদক দিয়ে সম্মান করেন।

শেষ পর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অসুস্থ অবস্থায় ১৯৮৮ সালের ৩০ শে নভেম্বর সুমধুর কন্ঠের অধিকারী এই বিশ্বনন্দিত ক্বারী আবদুল বাসীত ইন্তেকাল করেন। তাঁর জানাযায় মুসলিম বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রদূতসহ হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহন করে।

এই ক্বারী আজ আমাদের মাঝে না থাকলেও তাঁর হাজার হাজার অডিও-ভিডিও সম্বলিত তেলাওয়াত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিড়িয়ে আছে। ইউটিউবে দেখা যায় তাঁর এক একটি ভিডিও ক্লিপ লক্ষ লক্ষ দর্শক পর্যন্ত দেখেছেন।

বিষয়: বিবিধ

২১৫০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

289714
৩০ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২৫
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : Worried Worried Worried Worried
অাল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। অামীন
০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬
234812
এনামুল হক মানিক লিখেছেন : আমিন।
289769
৩০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:২৪
মামুন লিখেছেন : ল্লাহপাক তাঁকে জান্নাতুল ফেসদাউস নসীব করুন। ওনার সম্পর্কে জানানোর জন্য আপনাকে অনেক জাজা দান করুন-আমীন। একটি অনুরোধ, এই ব্লগেই তার সুললিত কন্ঠের একটি ভিডিও নিয়ে পোষ্ট করুন।
শুভ কামনা রইলো। Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up
289784
৩০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৩৬
এ কিউ এম ইব্রাহীম লিখেছেন : আল্লাহপাক তাঁকে জান্নাতুল ফেসদাউস নসীব করুন। আমীন
289796
৩০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২৪
নিরবে লিখেছেন : অাল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। অামীন
289849
৩০ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:০০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আল্লাহপাক তাঁকে জান্নাতুল ফেসদাউস নসীব করুন। ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File