জুমার খুতরায় হুজুরের মিথ্যাচার :
লিখেছেন লিখেছেন মুসাফির মাহফুজ ৩০ মে, ২০১৪, ০৩:৩৩:৫০ দুপুর
আজ পবিত্র জুমার সালাত আদায় করতে গেলাম আজিমপুরের এক মসজিদে । এক বিরাট মসজিদ । কয়েক হাজার মুসল্লি সেখানে সালাত আদায় করেন। খতিব সাহেব যথারিতি আলোচনা রাখছিলেন ।উনার কন্ঠ যেমন সমধুর তেমন জোড়ালও বটে ।আলোচনার এক পর্যায়ে হঠাৎ মনোযোগ ফিরে পেলাম ।মনোযোগ হারিয়ে যাওয়ার সব থেকে বড় কারন ছিল যে, উনার আলোচনা ছিল সম্পুর্ণ কাহিনী নির্ভর । তিনি তার আলোচনার ঐ পর্যায়ে এসে একজন সাহাবীর কাহিনী বললেন ।এতেই আমার মনোযোগ আকৃষ্ট করল ।এতদিন বিভিন্ন মসজিদে কেবল ওলী আউলিয়াদের কাহিনী শুনে আসছিলাম । হঠাৎ সাহাবীদের কাহিনী !
হুজুরের কণ্ঠেই কাহিনীটি শুনুন>.
একদিন রাসুল সা: তার সাহাবীদের সামনে খুতবা দিচ্ছিলেন । তিনি বলেন যে, মানুষের ব্যবসা ,চাকরী কিংবা কাজ কর্মে তাকে খাওয়ায় না । বরং তাকে খাওয়ান স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা । মহানবীর এই কথাটা শুনে সেখানে উপস্থিত একজন সাহাবী ভাবলেন যেহেতু আ্ল্লাহ ই খওয়ান তাহলে কাজ কারবারের দরকার কি ? তিনি এই ভেবে একটি পাহাড়ে চলে গেলেন ।সেখানে গিয়ে তিনি জিকির করতে শুরু করলেন । তিনি সেখানে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ , আল্লাহ , ইল্লাল্লাহ ইত্যাদির জিকির করতে থাকলেন । ( খতিব সাহেব এই বলে আমাদেরকে ও এই জিকিরের তালিম দিলেন )
তিন দিন পার হয়ে গেল । কোন খাবারের খবর নাই । এই সাহাবীরও খাবারের প্রতি কোন অভাব বোধ করছেন না । ঘটনাটি শুনে এদিকে আল্লাহর নবী সিজদায়ে পড়ে গেলেন । তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানালেন হে আল্লাহ তোমার্ বান্দা আমার কথা বিশ্বাস করে তোমার ধ্যানে মশগুল তুমি তাকে খাওয়াও । তখন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতা জিবরিল আ: কে নির্দেশ দিলেন তাকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা কর । তিনি তখন পানির ব্যবস্থা করলেন । পানি তার কোমর পর্য়ন্ত উঠে গেল । ফেরেশতা তখন এই সাহাবীকে বললেন, ও সাহাবী তুমি পানি পান করো । তখন ঐ সাহাবী বলছেন যে আমার মহান মালিক আমাকে খাওয়াবেন আমি কেন খাইতে যাব ? তখন আল্লাহ পানিকে হুকুম দিলেন আরো উপরে ওঠার জন্যে । পানি তার বুক পর্যন্ত উঠে এল । এবারো তিনি পান করলেন না । অতপর পানি তার নাক পর্যন্ত পৌছে গেল । ফলে পানি আপনা আপনিই তার পেটে যেতে থাকল । এমন সময় আল্লাহ জিবরাইলকে বললেন তার জন্যে জান্নাত থেকে সকল খাবারের সমন্বয়ে একটি খাবার পাত্র নিয়ে তার সামনে দিতে । যখন জিবরিল তা তার সামনে দিল তখনি সে জন্নাতী খাবারের ঘ্রাণ পেতে থাকল । এইবার ঐ সাহাবী ভাবল যে মহান আল্লাহ তায়ালা তার জন্যে জান্নাত থেকে খাবার পাঠালেন তাই এখন তার খাওয়া উচিৎ। তিনি যখন এক লোকমা খেয়ে দ্বিতীয় লোকমা তুললেন তখনী আল্লাহর পক্ষ থেকে গায়েবী আওয়াজ এল “ ওহে বান্দা তুমি আমার জন্যে তিনদিন না খেয়ে থাকতে পারলে অথচ কয়েকটা সেকেন্ট অপেক্ষা করতে পারলে না ? তুমি যদি অপেক্ষা করতে তাহলে আমি তোমাকে আমার নিজ কুদরাতি হাতে তোমাকে খাওয়াইয়া দিতাম ”।
খতিব হুজুরের এই কাহিনী শুনিয়া মুসল্লিদের মাঝে সুবহানাল্লাহ পড়ার আওয়াজ শুনেতি পাইলাম । কিন্তু আমার আসতাগফিরুল্লাহ আর নায়ুযুবিল্লাহর আওয়াজ হয়তো অনেকেই শুনতে পায়নাই ।
আমার মনের কয়েকটা প্রশ্ন :
০১. সেই সাহাবীর নাম কি ? কত হিজরীতে এই ঘটনা ? কোন হাদিস গ্রন্থে এই ঘটনার বর্ণনা পাওয়া গেছে ?
০২. যেখানে কুরআন বলছে, তোমরা সালাত শেষ করে জমিনে রিজিক সন্ধানে ছড়িয়ে পড়( সুরা আজ জুমা ও আন-নেসা ) সেখানে ঐ সাহাবী কিভাবে এমনটা করলেন ?
০৩. যেখানে বিশ্ব নবী নিজে কাজ করে খেতেন সেখানে কিভাবে ঐসাহাবীর এমন কাজকে তিনি বৈধতা দিলেন ?
০৪.পাহাড়ের উপর পানি উঠে গেল তাহলে যারা পাহাড়ের নিচে ছিল তারা কিভাবে বেচে গেল ?কোন সিরাত গ্রন্থ তে একথা নেই যে মক্কা ও মদিনায় এত বড় বন্যা হয়েছিল
০৫.আল্লাহ ও তার রাসুল কিভাবে এতবড় একটি ঘটনাকে তাদের গ্রন্থে উল্লেখ নাকরিয়া পারিলেন ?
০৬. অসংখ্য সিরাত গ্রন্থ পড়লাম কোথাও তো এমন আজব ঘটনা শুনেতি পাইনাই ।
বি:দ্র; আমি এই কথা টুকু এই জন্যে পেশ করলাম যাতে সবাই বুঝতে পারি যে আমাদের আলেম শ্রেনীর একটি অংশ কিভাবে ইসলামকে বিকৃতি করছে ?
তারা কোন সাহসে আল্লহ ও তার রাসুলের নামে এমন সব কথা চালু করছেন যা সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট । তারা কি সেই কথা জানেনা যা আল্লাহ ও তার রাসুল বলেছেন । “তার থেকে বড় জালিম আর কে হতে পারে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে ( আল –কুরআন )” “যে আমার নামে মিথ্যা কথা বলল তার স্থান জাহান্নামে (আল হাদিস )”। এত ভয়ংকর আযাবের কথা জানা সত্বেও তারা কিভাবে আল্ল্হর ঘরের মিম্বারে বসে তাদের নামে এমন মিথ্যা রটাতে পারে ?
তারাতো এও জানে যে, কোন সংবাদ আসলেই তা যাচাই বাচাই না করেই বিশ্বাস করা যাবে না ( সুরা হুজরাত ) তাহলে এই সকল মিথ্যা কথা তারা কেন যাচাই না করে বলে বেড়াচ্ছেন ?
আল্লাহ আমাদেরকে এমন সব মিথ্যা বলা ও শুনা থেকে হেফাজত করুন । আমিন
বিষয়: বিবিধ
১৯৮৩ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটাকে মিথ্যাচার বলা ঠিক হবে না ।
কারণ আপনিও ঘটনাটা সত্যি কি মিথ্যা তা নিশ্চিত নন ।
আপনি জানতে চাইতে পারেন এই ঘটনাটার ব্যাখ্যা কি ?
একসময় কিন্তু সরব(মদ)পান জায়েজ ছিল।কিন্তু ওমর(রাঃ) ঘটনার প্রেক্ষিতে তা হারাম করা হয় ।
সুতরাং আপনি যদি কোন হুজুরের আলোচনার অর্ধেক শুনেন তবে বলে বেড়ান হুজুর মদ খান ঐ জন্যি মদ খাওয়া জায়েজ বলেছে তা হলে তো আপনি-ই ভুল । হুজুর ঠিক ।কি তাই নয় কি ভাইয়া ?
ঈসা(আঃ) এর সময়েও এরকম একটা ঘটনা ক্বুরআনে উল্লেখ আছে , তাহলে রাসূল (সাঃ) এর সময়ের এই ঘটনাও থাকার কথা । কারণ নবীজী কোন কিছুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে চাইলে আগে এ ব্যাপারে ওহীর জন্য অপেক্ষা করতেন ।
বয়ান করার সময় মনে হয় এমন জোশ এসে যায় যে কি বলতেছে না বলতেছে তার আর খেয়াল থাকে না।
০৭. জিবরাইল (আ) কি সাহাবাদের (রা) কাছে আসতো???
০৮. আল্লাহ গায়েব থেকে সাহাবা (রা) সাথে কথা বলছেন???
এই বিদআতি খতিবকে জদি বাম কানের পাশে একটা বামহাতে চটকানি মারতেন তাহলে হয়তো একটু শিক্ষা হতো।
কে মারবে এদেরকে? সরকারের করা উচিত কিন্তু সরকারেরই তো অন্ধ?
কষ্ট হয় এই বিদআতি গুলোর প্রতি নিজেও গোমড়া অন্যদেরকেও গোমড়া বানাচ্ছে।
ধন্যবাদ আপনার এই পরামর্শর জন্যে
আমাদের উচিত এদের সনাক্ত করা । অন্যথায় আমাদের এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা শুনে সময় নষ্ট করে যেতে হবে ।
আপনাদের সবাইকে বলছি :
যে মসজিদে আজ জুমুয়ার সালাত আদায় করতে যাচ্ছেন, সেই মসজিদ কি 'তাকওয়া'র ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত???
মসজিদ তৈরি হয়েছে সুদখোর ঘোষখোরের টাকা দিয়ে।
মসজিদের সভাপতি বেনামাজি, ঘোষখোরে!!
ﻟَﺎ ﺗَﻘُﻢْ ﻓِﻴﻪِ ﺃَﺑَﺪًﺍ ۚ ﻟَّﻤَﺴْﺠِﺪٌ ﺃُﺳِّﺲَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯٰ ﻣِﻦْ ﺃَﻭَّﻝِ
ﻳَﻮْﻡٍ ﺃَﺣَﻖُّ ﺃَﻥ ﺗَﻘُﻮﻡَ ﻓِﻴﻪِ ۚ ﻓِﻴﻪِ ﺭِﺟَﺎﻝٌ ﻳُﺤِﺒُّﻮﻥَ ﺃَﻥ
ﻳَﺘَﻄَﻬَّﺮُﻭﺍ ۚ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﻄَّﻬِّﺮِﻳﻦَ [ ٩ :١٠٨ ]
তুমি কখনো সেখানে দাড়াবে না,তবে যে মসজিদের ভিত্তি রাখা হয়েছে তাকওয়ার উপর প্রথম দিন থেকে, সেটিই তোমার দাঁড়াবার যোগ্য
স্থান। সেখানে রয়েছে এমন লোক, যারা পবিত্রতাকে ভালবাসে। আর আল্লাহ পবিত্র লোকদের
ভালবাসেন। সুরা তওবা : ১০৮
দ্বিতীয়তঃ
জুমুয়ার সালাত আদায়ের শর্ত হচ্ছে শাসক বা ইমাম উপস্থিত থাক। তবে 'শেখ হাসিনা' কি আমাদের ইমাম???
ইমাম শব্দের অর্থ নেতা। যার পেছনে নামাজ তারই অধিনে কুর'আনের বিধানে শাসন হবে সমাজ।
আর মসজিদের ইমামরা ইমামতি করে টাকা নেয়।
আল্লাহ বলেছেন, যারা আল্লাহর আয়াতকে তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করে খায় তারা দুযখের আগুন খায়। সুরা বাকারা ১৭৪।
ﺍﺗَّﺒِﻌُﻮﺍ ﻣَﻦ ﻟَّﺎ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻜُﻢْ ﺃَﺟْﺮًﺍ ﻭَﻫُﻢ ﻣُّﻬْﺘَﺪُﻭﻥَ [ ٣٦: ٢١ ]
অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন
বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথ প্রাপ্ত।
সুরা ইয়াসীন : ৩৬ ।
আওয়ামী লীগ এসব ধর্ম ব্যবসায়ীদের দিয়ে মসজিদগামী মুসল্লীদের বিভ্রান্ত করছে এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলে মেয়েদের কন্ডম ও জননিরোধ দিয়ে আমাদের ইসলাম হতে দুরে ছড়িয়ে দিচ্ছে ।
অথচ আমরা এসব শয়তানদের সাথে প্রতিরোধ সংগ্রামে অংশ না নিয়ে ফেসবুকে আহলে হাদিস মতবাদী ও সৌদি রাজতন্ত্রী বা মওদুদী বা তেতুলহুজুরীদের সাথে ঝগড়া করে সময় নষ্ট করছি ।
সবাইকে বলছি, এই আত্মঘাতি রাস্তা হতে ফিরে আসুন । সবাই সত্যিকার ভাবে ইসলামের পথে ফিরে আসুন । ইসলামবিরোধীদের সর্বত্র প্রতিরোধ ও প্রতিহত করুন ।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব মেয়ে পতিতা হয়ে গেছে তাদের ওড়না পড়িয়ে আর কুরআন শিখিয়ে সঠিক পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন ।
আর যারা পতিতাদের খদ্দের হয়ে গেছে তাদের জেনা-ব্যভিচার হতে দুরে থাকার জন্য আপনাদের বোনদের সাথে বিয়ে দিয়ে দিন ।
আশা করি সবাই আমার পরামর্শ গ্রহণ করবেন । না হলে হাসরের মাঠে দায়ি থাকবেন ।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবীন ।
বলবেন, আপনি আলোচনা করলে অবশ্যই আপনাকে গ্রহণযোগ্য রেফারেন্স থেকে কথা বলতে হবে। এরপর আমার বিশ্বাস হুজুর আগামীতে কথা বলতে গেলে আগে ভেবে নেবে।
সহমত জ্ঞাপন করলাম।
এতে ভুয়া অলি নির্ণয় করা যাবে।
আপনি কি একথা ভুলে যাচ্ছেন যে ইসলামের বিরোধীতায় শুধু কফের নেতা ই নয় বরং অনেক ধর্মীয় নেতারাও সর্বাগ্রে থাকে । ঈসা আ: এর জন্মের পরে প্রথম বিরোধীতা করেছিল হুজুর শ্রেণীর লোকেরা । বিশ্বনবীর ক্ষেত্রেও ইহুদী আলেমরাই সব থেকে বেশি বিরোধীতা করেছে ।
আমি একথা বলছি না যে এই ইমামদেরকে সোধরানো সম্ভব নয়, বরং আমি বলছি তাকে নয় বরং তাদেরকে বাচানো দরকার যারা ইসলামকে জানতো চায় মানতে চায় ।
"God gives every bird its food, but He does not throw it into its nest." -J. G. Holland
মন্তব্য করতে লগইন করুন