একি করছেন আমাদের হুজুরেরা ?
লিখেছেন লিখেছেন মুসাফির মাহফুজ ২৯ মে, ২০১৪, ১০:২৯:২৮ রাত
০১.আমি এখন বাসায় বসে ওয়াজ মাহফিল শুনছি ।মেরাজ ও মহিউদ্দিন চিশতির জন্মবার্ষীকি উপলক্ষে ওয়াজ । হুজুররা কথায় কথায় উর্দু শের বলতেছেন। আমার আফসোস হচ্ছে যে কেন আমাদের দেশটি পাকিস্তান থেকে আলাদা হইয়া গেল । আন্তত এক থাকলেতো আজকের হুজুরদের আলোচনা সহজে বুঝতে পারতাম ।
০২.আমি বুঝতে পারছিনা কেন হুজুররা আজ কুরআনের আয়াতের উদ্ধৃতি না দিয়ে কবিদের কথা বলছেন? কি ফায়দা পান তারা ? কিবা শরিয়াতের নির্দেশ এটি ?কেন তারা আমাদের কে আল্লাহর কালাম শুনা থেকে বিরত রাখছেন ? এটাকি শয়তানের কোন চাল নয় ? আমরা কি মক্কার সেই কাফেরদের দৃশ্য দেখছিনা যারা বলত “তোমরা কুরআন শুনলে সেখানে গন্ডগোল বা বাধার সৃষ্টি করো, আশা করা যায় তোমরা সফল হবে ”তাদের সেই ফর্মুলা কি এটি নয় ? যখন কুরআনের বাহকগন নিজেরাই কুরআন বাদ দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কিস্সা কাহিনী দ্বারা ওয়াজ করে বেড়ান তখন আমরা কেন এটা বলবো না যে তারাই আমাদের কে কুরআন বুঝা ও শোনার পথ থেকে দূরে রাখছেন ?
০৩. হুজুররা আলোচনায় আমাদেরকে ইমানের পরিচয় ও অলি হওয়ার বৈশিষ্ট এমন ভাবে উপস্থাপন করছেন যে মনেহচ্ছে উহা অর্জন করা আমাদের জন্যে কেবল দূরুহ ই নয় বরং অসম্ভব । তারা অলি হওয়ার জন্যে হয়তো আধহামের মতো জংগলে যেতে হবে, নয়তো ওয়েস কুরুনীর মতো মুখের সব দাত ভেঙ্গে ফেলতে হবে, আবার অনেকে বলছে শাহজালালের মতো নৌকাহীনে নদী পার হতে হবে । সকাল সন্ধা জিকির নয় বরং ২৪ ঘন্টা জিকির আজকারে কাটাতে হবে ।
০৪. এই হুজুরগন যখন অলিদের নাম বলেন তখন আমি খুবই কৌতুহলী হয়ে উঠি । কিন্তু আমার আফসুস যে তাদের অলির তালিকায় কোন একজন নবীর নামতো নেই , বরং একজন সাহাবীর নামও নেই । এমনকি একজন তাবেয়ীর নামটাও খুজে পাওয়া যায় না । তাহলে কি তাদের মধ্যে কি আল্লাহর কোন প্রিয় বান্দা নেই । আল্লাহর সব প্রিয় বান্দাকি পরবর্তী সময়ে এসেছেন ?
০৫. তারা যে অলিদের কিস্সা কাহিনী বলেন তার অধিকাংশই হল এমন যা স্ববিরোধী ও কুরআন-হাদিসের সাথে স্বাংঘর্ষিক । যেখানে নবীর নামেও মিথ্যা হাদিস আমাদের সমাজে প্রচলিত সেখানে কিভাবে অলীদের জীবন ও কারামত সম্পুর্ন সত্য ও বিশ্বাসযোগ্য সুত্রে আমাদের কাছে এসেছে ?আমরা যখন কুরআন ও হাদীস দ্বারা ইসলামকে বুঝতে যাই তখন মনে হয় ইসলাম আমাদের এই জীবনে পালন ও বাস্তবায়ন সম্মত কিন্তু যখন তাদের মুখে অলীদের কথা শুনি তখন মানে হয় যে উহা পালন করা কোনভাবেই সম্ভব নয় ।
০৬. আমরা যদি একটু সাহস করে কুরআনের আলোকে ঐসব অলীদের কে মুল্যায়ন করতে যাই তাহলে তাদের অধিকাংশ কাজই ছিল কুরআনের সাথে সাংর্ঘষিক । তাহলে কি ঐসকল অলীওলারা ভুল ছিলেন নাকি তাদের কে আমাদের কাছে অতিমানবীয় করে তুলে ধরা হেয়েছে ?
০৭. সত্যকি এটি নয়যে, ঐসকল সত্য ন্যায় মানুষগুলোর নামে আমাদের সমাজের আলেম নামে একটি অংশ যে মিথ্যা ও অলিক কথা প্রচার করে দুনিয়ার সামান্য আয় রোজগার করার ধান্ধা করছে তারা তা থেকে ছিলেন সম্পুর্ন পবিত্র ।তারা তো কুরআন ও হাদিস অনুসারে তাদের জীবনী পরিচালনা করে গেছেন ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু উর্দ ভাষার শের প্রসঙ্গে যা বলেছেন সেখানে বলতে হয় যে , আসলে শের বলাটা দোষের কিছু নয় যদি তা ব্যখ্যার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় -কারণ আমরা অনেক সময় কিছু বুঝাতে গিয়ে প্রয়োজন সাপেক্ষে অন্য ভাষার কোন বাণী বা কবিতার আশ্রয় নেই । কিন্তু ভুলটা হচ্ছে সেখানে, যখন কুরানের আয়াতের পরিবর্তে শুধু শেরনির্ভর ওয়াজ করা হয় ।
আর আপনি কুরান শোনার ক্ষেত্রে শোরগোল সৃষ্টি সম্পর্কে যা বলেছেন তা আলেমদের সম্পর্কে এভাবে বলাটা অনুচিত । কারন, আলেমরাই হচ্ছেন কুরানের ধারক-বাহক ।
আশা করি আমি যা বলতে চেয়েছি তা আপনি বুঝতে পেরেছেন । আল্লাহ্ আপনাকে আরো সুন্দর করে লেখার তাওফীক্ব দান করুন ।
০২,ঐ আয়াতের মুল উদ্দেশ্য হল তারা যারা কুরআনের পথে বাধা তৈরী করত। তাহলে আজ যারা কুরআনের কাছ থেকে দুরে রাখছে তারা কেন সেই অপরাধে সাব্যস্ত হবেনা ?
০৩,আমি সকল অালেমকে বলছিনা বরং তাদের কথা বলছি যারা এমনটা করেন ।
এটও খুব একটা অপ্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে করি না :
জুম্মার সময়ে খুতবা শোনা ওয়াজিব । এই খুতবা আরবীতে হয় বিধায় আমরা বাংলা ভাষীরা ম্যাক্সিমামই বুঝতে পারি না । ফলে খুতবা না শোনে অনেকে বিভিন্ন আলাপে মশগুল থাকি বা এদিক ওদিক চেয়ে থাকি ।
ব্যাপারটা(খুতবা) বাংলায় হলে কি দোষের হবে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন