ফুজিমোরে সিনড্রোম।।।।।
লিখেছেন লিখেছেন ওয়াচডগ বিডি ১০ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:০৩:১৬ দুপুর
পেরু নামে দক্ষিন আমেরিকার একটা দেশ আছে। একটা সময় ছিল যখন সে দেশে রাজত্ব করত ম্যানুয়েল রুবেন আবেমায়েল গুজমান রেইনেসোর নেত্রীত্ত্বাধীন সাইনিং পাথ গেরিলা দল। শ্রেণীহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের নামে হত্যা, খুন সহ দেশের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সহ দৈনন্দিন চাহিদার ভীত উপড়ে ফেলেছিল মাটি হতে। কল্পরাজ্যের ভূতের ভয়ের মত সন্ধ্যা নামতে দেশটার জনগণ ঠাঁই নিত নিরাপদ আশ্রয়ে। ঘোর অমানিশা নেমে এসেছিল দেশের ভাগ্যাকাশে। দরিদ্র, ক্ষুধা আর দুর্নীতির কড়াল থাবায় নিমজ্জিত ছিল মানুষের বেচে থাকা। এমন এক দুঃসময়ে জাতির ত্রাণকর্তা বনে দিগন্ত রেখায় উদয় হন আলবার্তো ফুজিমোরে নামের জাপানি বংশোদ্ভুত এক মানুষ। নির্মম ও কঠিন হস্তে দমন করেন বামপন্থীদের হঠকারী বিল্পব। পাশাপাশি জনগণের জন্যে নিশ্চিত করেন গণতন্ত্র তথা বেচে থাকার নূণ্যতম চাহিদা। অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে পেরুর জনগণ নেতাকে বসিয়ে দেয় সরকার প্রধান পদে। এবং এখানেই শুরু হয় ফুজিমোরের নতুন অধ্যায়। প্রেসিডেন্ট পদকে ব্যক্তিগত সম্পদ ভেবে নেমে পরেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার ষড়যন্ত্রে। ভ্লাদিমোরো মনতেসিনোসদের মত সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরেন দুর্নীতির মহাসমুদ্রে। সময়মত জেগে উঠে পেরুর জনগণ এবং ফুজিমোরেকে দেখিয়ে দেয় প্রয়োজনীয় রাস্তা। শাস্তি হতে বাঁচার জন্যে পালিয়ে যান পিতৃভূমি জাপানে। সেখানেও জায়গা হয়নি, তাই চলে আসেন পেরুর প্রতিবেশী দেশ চিলিতে। জনগণের চাপে চিলি সরকার ফুজিমোরকে তুলে দেয় পেরুর হাতে। এবং শেষ পর্যন্ত বিচারের সন্মুখীন হয়ে স্থায়ীভাবে ঠাই নেন জেলখানায়। সেখানেই পচে মরছেন বৃদ্ধ এই নেতা। জনগণকে গুজমানের সন্ত্রাস হতে উদ্ধার করে ফুজিমোরে নিজেই বনে যান নতুন গুজমান এবং জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেন জাতির বুকে। লেখকের নিজের দেখার সৌভাগ্য হয়েছে এন্ডিজের নির্জনতায় হুয়াংকা হুয়াসি নামের এক গুহায় এই নেতার বিলাসিতার ভয়াবহ চিত্র। নিজের দুঃসময়ে তিনি তুলে ধরতেন গুজমানের অন্ধকার হতে পেরুকে মুক্ত করার কাহিনী। কিন্তু এক মুক্তি পর্ব দিয়ে ঢাকতে পারেননি নিজের অপরাধ পর্ব। বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলকেও বোধহয় ফুজিমোরের সিনড্রোমে পেয়েছে এবং পাকিস্তানীদের বিদায় করে নিজেরাই বসে গেছে টিক্কা খান আর নিয়াজীর আসনে। আর চামড়া বাঁচানোর তাগাদা হতে ঘন ঘন উচ্চারণ করছেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্ব। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার কাজে এক ভৌগলিক স্বাধীনতাই যে যথেষ্ট হয়না তার প্রমাণ ইতিহাসে বিরল নয়। চাইলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে খাঁটি উপমা ব্যবহার করেছেন আপনি|ধন্যবাদ আপনাকে|
পান থেকে চুন খসবে তো গাদ্দাফী, সাদ্দাম এর ভাগ্য বরন করতে হবে, আর সব ঠিক-ঠাক চালালেই পুরো দেশ বিরুদ্ধে গেলেও – লাষ্ট-রিজোর্ট ‘ইউরোপ-এমেরিকা’ আছেই; তাই নো চিন্তা, ডু ফূর্তি পলিসি; সব হাড্ডিসার কঙ্কাল হলেও!
মন্তব্য করতে লগইন করুন