মালয়েশিয়ান ফ্লাইট ১৭ এবং কতিপয় স্বৈরশাসকের ইতিবৃত্ত...

লিখেছেন লিখেছেন ওয়াচডগ বিডি ১০ আগস্ট, ২০১৪, ১০:৫৫:২৫ সকাল



সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ। ইউরোপের এ দিকটায় গ্রীষ্মের শেষ এবং শরতের শুরু। আমাদেরও শিক্ষা বর্ষেরও শুরু কেবল। এদিন ক্লাসে হাজির থাকা অনেকটা বাধ্যতামূলক। অন্যথা হলে মাসিক স্কলারশিপ সহ অনেক কিছুতে কর্তৃপক্ষের কুনজর পরার সম্ভাবনা থাকে। তাই টর্কি ও পেয়িংটনের দুমাসের শৃংখলবিহীন জীবনকে বিদায় জানিয়ে ফিরে আসতে হল। ইংল্যান্ডের সাউদ ভেভনের এ অংশের সাথে প্রেম সেই ৭০ দশক হতে। গ্রীষ্মকালীন ছুটির একটা বড় অংশ ইংলিশ রিভিয়েরায় কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এ যাত্রায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বলাটা সহজ হলেও পূর্ব ইউরোপ হতে ট্রেনে চড়ে পশ্চিম ইউরোপের এ দিকটায় পা রাখা তত সহজ ছিলনা। এ পথে মুল বাধা ছিল বার্লিন দেয়াল। পূর্ব জার্মানির বার্লিন শহরকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র বাহিনী কেন দুভাগ করেছিল এ নিয়ে অনেক তর্ক আছে। কিন্তু ঠাণ্ডা যুদ্ধের ফ্রন্টের শুরুটা যে বার্লিন দেয়াল দিয়ে তা নিয়ে কোন তর্ক ছিলনা। পায়ে হেঁটে যারা বার্লিন দেয়াল অতিক্রম করেনি তাদের বুঝানো মুস্কিল হবে ঠাণ্ডা যুদ্ধের কঠিন শীতল চেহারা। সেমিস্টারের প্রথম দিনটা যেভাবে কাটার কথা সেভাবেই কাটল। কোর্স পরিচিতি, ক্লাস রুটিন এবং ক্লাসমেটদের সাথে ভেকেশন অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। শরতের শুরু হলেও শীত ঝাঁকিয়ে বসতে সময় নেয়নি। বিশেষ করে রাতের বেলা। পৃথবীর এ দিকটায় তাই হয়, গরমকালটা চোখের পলকে বিদায় নেয়। লম্বা, বিরক্তিকর এবং ভয়াবহ শীতের প্রস্তুতি নিতে হয় পেপ্টেম্বরের শুরু হতে। অক্টোবরের শুরুতে তাপমাত্রা হিমাংকের নীচে নামতে শুরু করে এবং মধ্য শীতে তা -৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। আমাদের জীবনও থেমে যায়। মানিয়ে নিতে হয় প্রকৃতির এই নির্মমতার সাথে। ক্লাস শেষে রুমে ফিরে শুনলাম খবরটা।

সর্বহারাদের একনায়কতন্ত্র শেখা ছিল আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। এর তাত্ত্বিক সংজ্ঞা ক্লাসে ঘটা করে শেখানো হলেও তার বাস্তব গোলাপি চিত্রের সম্যক ধারণা পেতে এ রকম একটা সমাজে বাস করাই ছিল যথেষ্ট। খবর শোনা এবং তা বিশ্বাস করার একমাত্র সোর্স ছিল সরকারী মাধ্যম। এর বাইরে সবকিছু ছিল বুর্জুয়া প্রচারণা ও ষড়যন্ত্র। সোভিয়েত সমাজে বাস করে বুর্জুয়া প্রোপাগান্ডা যারা বিশ্বাস করতো তারা ছিল সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হত কথিত এসব শত্রুদের বিরুদ্ধে। খবরটার কোন প্রধান্য ছিলনা। পশ্চিমা মিডিয়ার ব্রেকিং নিউজের মত কোন নিউজ মিডিয়াতে ঠাঁই পেতনা যদিনা তাতে ক্ষমতাসীন কম্যুনিস্ট পার্টি ও তার সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য জড়িত না থাকতো। খুব অনিশ্চিত সময় পাড় করছিল সোভিয়েত শাসকরা। লৌহমানব লিওনিদ ইলিচ ব্রেজনেভের সময় শেষ হয়েছে কেবল। চেরনেনকো আন্দ্রোপভদের মত কট্টর নেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে ক্ষমতার পাদদেশে। দেশটার মানুষ এসব নিয়ে খুব একটা চিন্তিত ছিল তাও নয়। আসলে একদল-একজনের (সাধারণ সম্পাদক) দাসত্ব করতে গিয়ে গোটা জাতি পরিণত হয়েছিল যান্ত্রিক পুতুলে। যার চাবি ছিল শতকরা ৪০ ভাগ এলকোহলের ভদকায়। ৩ রুবেল ৭৫ কোপেকের পৌনে এক লিটার ভদকার বোতলকে ঘিরে আবর্তিত হোত সোভিয়েত জীবন। হোক তা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী অথবা শ্রমজীবীর দল। তবে এর মাঝে ব্যতিক্রম ছিল রুশ ইহুদিরা। অভূতপূর্ব মেধার অধিকারী এসব নাগরিকদের প্রায় সবাই ব্যস্ত থাকত পশ্চিম ইউরোপে মাইগ্রেট করার মিশনে। দেশ অথবা সমাজের ভালমন্দ নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথা ছিলনা। তাদের শয়নে স্বপনে থাকত পশ্চিম ইউরোপ হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা দুরের দেশ ইসরাইলে পাড়ি দেয়ার লালিত ইচ্ছা। কেবল তাদের সাথে আলাপ করলে বুঝা যেত পার্থক্য গুলো। সান্ধ্য খবরে জানা গেল ঘটনাটা। সাখালিনের উপর একটি মার্কিন গোয়েন্দা বিমানকে গুলি করে নামিয়ে ফেলেছে সোভিয়েত বিমান বাহিনীর একটি ফাইটার জেট। আমার মত খবর সন্ধানী তৃতীয় বিশ্বের আদমদের জন্য এ ছিল সেনসেশনাল নিউজ। কিন্তু সোভিয়েত সমাজের কোন স্তরেই এর কোন প্রতিক্রিয়া দেখা গেলনা।

গোয়েন্দা বিমান যে আসলে কোরিয়ার এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমান ছিল খবরটা প্রথম এক বছর জনগণকে জানতে দেয়া হয়নি। পশ্চিমা চাপে তারা বলতে বাধ্য হয়েছিল গোয়েন্দা বিমানে বেশ কজন মার্কিন ও কোরিয়ান গোয়েন্দা ছিল। রোববারের টিভিতে যুদ্ধ বিষয়ক এনালিস্টদের মুখ হতে শোনা গেল মার্কিন ’অপরাধের’ ম্যাগনিটিউড। তাদের অনেকের মতে কোরিয়ান বিমানের মাধ্যমে রুশ আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে মার্কিনীরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত করতে চেয়েছিল। গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল চাঁদের অন্য-পীঠে কি আছে তা জানার জন্য। মাধ্যম রেডিও। কিন্তু হায়, হতাশ হতে হল। ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি, ডয়েচে বেল্লা সহ পশ্চিমা সবগুলো রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে জ্যাম করে দেয়া হয়েছে। ইংরেজি অথবা রুশ ভাষা সহ কোন ভাষাকেই রেহাই দেয়া হয়নি। গোটা রুশ জাতিকে মিথ্যার সাগরে ভাসানো হল। কিন্তু খবর লিক হতে সময় লাগল না। গোয়েন্দা বিমান নয়, বরং কোরিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমানকে মিসাইল মেরে ঘায়েল করেছে সোভিয়েত বিমান বাহিনী। নিউ ইয়র্ক হতে আলাস্কার এংকোরেজ হয়ে বিমানটির শেষ গন্তব্য ছিল সিউল। পাইলট ও কো-পাইলট অটো-পাইলট মুডে দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। বুঝে উঠার আগে ফ্লাইট সোভিয়েত নিষিদ্ধ ফ্লাইং জোনের ১২ কিলোমিটারের মধ্য ঢুকে পরে। সেকেন্ডের মধ্যে সোভিয়েত বিমান বাহিনীর একটি জেট আকাশে উঠে যায় এবং মিসাইল নিক্ষেপের মাধ্যমে ভূপাতিত করে ফেলে কোরিয়ান বিমান। ২৬৯ জন যাত্রী ও ক্রুদের সবার সলিল সমাধি হয় জাপান সাগরে। যাত্রীদের একজন ছিল জর্জিয়া হতে নির্বাচিত মার্কিন কংগ্রেসম্যান লরেনস ম্যাকডোনাল্ড। সিআইএ’র রিপোর্ট হতে জানা যায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের থাকার কথা ছিল একই ফ্লাইটে। কোরিয়ান যুদ্ধে অংশ নেয়া মার্কিন সৈন্যদের একটা গেট-টুগেদারে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং আরও অনেকে। সাগর হতে উদ্বার করা ব্ল্যাক বক্স পর্যন্ত গায়েব করে দেয় সর্বহারাদের একনায়করা। তবে সোভিয়েত সাম্রাজ্যের পতনের ঊষালগ্নে প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়লৎসিন জাতিসংঘের কাছে হস্তান্তর করেন গুম করা ব্ল্যাক বক্স। এবং কেবল তখনই উন্মোচিত হয় ৩ রুবেল ৭৫ কোপেক মূল্যের ভদকা সভ্যতায় বেড়ে উঠা সোভিয়েত শাসকদের কালো ইতিহাস।

এ যাত্রায় কোরিয়ান নয়, নামানো হয়েছে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমান। তবে সাগরে নয়, নামানো হয়েছে পূর্ব ইউক্রেনের দনেস্ক শহরের বিতর্কিত একটি অঞ্চলে। এলাকা নিয়ে বিতর্কটাও খুব অদ্ভুত। সোভিয়েত সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শক্তিশালী প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের অনেক অঞ্চলে রুশ জাতির প্রাধান্য বাস্তব সত্য। ঐতিহাসিক ভাবে এ বাস্তবতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সোভিয়েত দেশের ১৫টি প্রজাতন্ত্রে। ঢাল-তলোয়ার বিহীন রুশ সাম্রাজ্যের অধিপতি ভ্লাদিমির পুতিন অস্ত্র দিয়ে এসব অঞ্চলের জনগণকে বলছেন তোমরা বিদ্রোহ কর এবং বলতে শুরু কর ইউক্রেনে নয়, আমরা রুশ দেশে থাকতে আগ্রহী। পুতিনকে পাশ কাটিয়ে পশ্চিম ইউরোপের সাথে সম্পর্ক করার কারণে ইউক্রেনকে শাস্তি দিতেই এ নাটক। ইতিমধ্যে রক্তের নদী বয়ে গেছে দেশটার পূর্বাঞ্চলে। এ ক্ষেত্রে পুতিন বাহিনী ১৯১৭ সালের বলশেভিক বিপ্লবের পর রেড আর্মি কর্তৃক মধ্য এশিয়া দখলের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছে। পশুত্ব রুশদের শিরা উপশিরায়। অন্তত ইতিহাস তাই বলে। সমসাময়িক চেচেন ম্যাসাকার এবং তার দখল তারই ধারাবাহিকতার ফসল। মালয়েশিয়ান বিমান ভূপাতিত করার দায়িত্ব নিয়ে রুশ এবং ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে। বাস্তবতা হচ্ছে, ওরা একই বাক্সের দুই জিন। পশুত্ব ও নির্মমতায় একজন অন্যজনকে ছাড়িয়ে যেতে সামান্যতম সময় নেয়না।

৩০শে জুন ন্যাটোর ইউরোপীয় কমান্ডার জেনারেল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন তাদের কাছে প্রমাণ আছে রুশ সৈন্যরা পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল লঞ্চ করার ট্রেনিং দিচ্ছে। খবরের সমীকরণ মেলাতে গেলে সহজেই বের করা যাবে কাদের হাতে ভূপাতিত হয়েছে মালয়েশিয়ান ফ্লাইট ১৭ এবং প্রাণ হারিয়েছে ১৫জন ক্রু সহ ২৮৩ জন যাত্রী। কথিত বিদ্রোহীদের হাতে শুরু হতে shoulder-to-air রকেট ছিল, যার উড্ডয়ন ক্ষমতা ১০,০০০ ফুটের ঊর্ধ্বে নয়। কিন্তু ট্রাক হতে ছোড়া যায় এমন সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইলের রেঞ্জ ৩০ হাজার ফুটের অনেক উপরে। নিশ্চিত ভাবে বলা যায় এমন একটা মিসাইল দিয়েই ধরাশায়ী করা হয়েছে মালয়েশিয়ান বিমানকে। এ পশুত্বের আসল আর্কিটেক্ট রুশ সেনাবাহিনী যার পেছনে শক্ত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে পুতিনের একনায়কতান্ত্রিক অসুস্থ রাজনীতি।

কথায় বলে ভ্রমরে ভ্রমর চেনে। সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা মূল্যের অস্ত্র সদাই করতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী (অ-অবৈধ) গিয়েছিলেন রাশিয়ায়। দেখা করেছেন স্বৈরশাসক পুতিনের সাথে। চুক্তি করেছেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের উপর। এসব খবর শুনতে খুব ভাল শোনায়। মনে হয় উন্নয়নের জোয়ারে ভাসতে যাচ্ছে আমাদের দেশ। কিন্তু রুশ চরিত্রের উপর যাদের সামান্যতম জ্ঞান আছে তাদের ধারণা করতে কষ্ট হয়না লিখিত চুক্তির পেছনে নিশ্চয় রয়ে গেছে অলখিত চুক্তি। এ চুক্তি দুই অবৈধ ও অসৎ স্বৈরশাসকের বুঝাপড়ার চুক্তি। চারিত্রিক দিক বিবেচনায় এই দুই নেতার উদ্দেশ্য ও বিধেয় এক ও অভিন্ন, যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী (অ) এখন বন্ধুহীন। পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যার উপর ভরসা করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারবেন। সরকার পরিবর্তনের পর প্রতিবেশী ভারতের উপরও বিশ্বাসে রাখতে পারছেন না। এ বিবেচনায় পুতিনের ব্যাপার সম্পূর্ণ আলাদা। ক্ষমতায় বসে অর্থ-সম্পদ ভাগ-বটোয়ারা করার অনন্য নায়ক এই রুশ একনায়ক।

ল অব সাবষ্ট্রাকশনের ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাসে সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গুলোকে শোয়ালে কতগুলো অদ্ভুত সাদৃশ্য চোখে পরতে বাধ্য। এই যেমন, দুই ব্যবস্থায়ই একজন স্বৈরশাসকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। দুই সমাজ ব্যবস্থার ভীত প্রতিষ্ঠিত একই ফিলসফির উপর। সমাজতান্ত্রিক স্বৈরশাসনের সমালোচক অথবা বিরোধীদের আখ্যায়িত করা হয় বুর্জুয়ায় হিসাবে এবং তাদের বিনাশের মাধ্যমে উড়ানো হয় ভবিষ্যৎ সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার ঝাণ্ডা। পাশাপাশি ধর্মভিত্তিক কট্টর রাষ্ট্র গুলোর সমালোচকদের সবাইকে বলা হয় কাফের। কাফেরদের হত্যার জন্য নাকি পুরস্কারেরও ব্যবস্থা আছে পরজন্মে। এসব অসুস্থ এবং তামাদি সূত্রের উপর টিকে আছে আজকের সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মভিত্তিক সমাজ গুলো। যার একমাত্র কাজ একজন স্বৈরশাসক ও তার পারিবারিক ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করায় দাসত্ব করা। আজকের পুতিন ও সৌদি বাদশাহদের সাথে সাদৃশ্য এখানেই। অবশ্য এ পথের নতুন পথিক হয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী (অ)... নাকে গণতন্ত্রের মুলা ঝুলিয়ে জাতিকে গাধা বানিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্য পথে। এ যাত্রায় কৌশল হিসাবে ব্যবহার করছেন জাতির মুক্তিযুদ্ধ। বুর্জুয়া এবং কাফের তত্ত্বের মত ব্যবহার করছেন জাতির এই মহান অর্জনকে। ফতোয়া দিচ্ছেন যারা শেখ পরিবারের আজীবন শাসনে বিশ্বাস করেনা তারা দেশদ্রোহী, রাজাকার এবং এ দেশের তাদের বাস করার অধিকার নেই। অত্যন্ত চৌকস কায়দায় প্রতিপক্ষকে নির্মূল করছেন। গোটা জাতিকে অসততার দৌড়ে নামিয়ে সপরিবারে মজা লুটছেন। এবং ধরে নিয়েছেন হাজার বছর ধরে চালিয়ে যাবেন পারিবারিক শাসন। এ মুহূর্তে এমন একটা শাসন অসম্ভব কিছু মনে হচ্ছেনা। কারণ অসৎ দৌড়ে বিরতি নেয়ার মত অবস্থানেই নেই জাতি। বিরতি মানেই ধ্বংস, বিপর্যয়। যা হতে উঠে দাঁড়ানোর মত শক্ত মেরুদন্ড নেই জাতির পীঠে।

খরার তাপ-দাহে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। কোন এক পড়ন্ত বিকেলে ঈশান কোনে জমা হয় একখণ্ড মেঘ। এক সময় তা রূপ নেয় সর্বগ্রাসী কালবৈশাখীতে। তারপর ধেয়ে আসে। লন্ডভন্ড করে দেয় জনপদ। উড়িয়ে আছড়ে ফেলে পুরাতন অনেক কিছু। জাতির ঘাড়ে চেপে বসা শেখ নামের ভুত উপড়ে ফেলতেও আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে আকাশের দিকে। এক সময় না এক সময় মেঘ জমবে। এবং সে মেঘ প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে উড়িয়ে নেবে শাসক নামক এসব দানবদের। সভ্যতা বিবর্তনের এ অমেঘো ধারা হতে স্বৈরশাসক পুতিন, মধ্যপ্রাচ্যের রাজা-বাদশা আর শেখ হাসিনার মত বেহায়া শাসকরা রক্ষা পাবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

বিষয়: বিবিধ

১০৯০ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

252815
১০ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:৫৪
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : কথায় বলে ভ্রমরে ভ্রমর চেনে। সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা মূল্যের অস্ত্র সদাই করতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী (অ-অবৈধ) গিয়েছিলেন রাশিয়ায়। দেখা করেছেন স্বৈরশাসক পুতিনের সাথে। চুক্তি করেছেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের উপর। এসব খবর শুনতে খুব ভাল শোনায়। মনে হয় উন্নয়নের জোয়ারে ভাসতে যাচ্ছে আমাদের দেশ। কিন্তু রুশ চরিত্রের উপর যাদের সামান্যতম জ্ঞান আছে তাদের ধারণা করতে কষ্ট হয়না লিখিত চুক্তির পেছনে নিশ্চয় রয়ে গেছে অলখিত চুক্তি। এ চুক্তি দুই অবৈধ ও অসৎ স্বৈরশাসকের বুঝাপড়ার চুক্তি। চারিত্রিক দিক বিবেচনায় এই দুই নেতার উদ্দেশ্য ও বিধেয় এক ও অভিন্ন, যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা।
অনেক দিন বিরতির পর প্রথম লেখাতেই দারুণ সুন্দরভাবেই বর্ণনা করেছেন। পড়ে খুব ভালা লাগলো। এতোদনি কোথায় আছিলেন?
ঈদ মোবারক, ভালা থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, চালিয়ে যান লেখালেখি। জাতি আপনাদের মত লেখকদের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখতে চায়।
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৪
198110
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে!
252841
১০ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৩১
আহমদ মুসা লিখেছেন : ল অব সাবষ্ট্রাকশনের ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাসে সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গুলোকে শোয়ালে কতগুলো অদ্ভুত সাদৃশ্য চোখে পরতে বাধ্য। এই যেমন, দুই ব্যবস্থায়ই একজন স্বৈরশাসকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।..............
পুরো লেখাটিই আমি মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করেছি। মন্তব্যটি করার আগে দ্বিতীয়বার চোখ বুলাইয়ে দেখেছি। যদি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগুলো বলতে মুসলিম অধ্যুষিত জনপদের উদ্দেশ্য বুঝাতে চান তবে এক্ষেত্রে আপনার কথার সাথে আমিও কিছু যোগ করতে চাই। পুজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা এবং সমাজতান্ত্রিকের প্রবক্তা উভয় গোষ্ঠীই ইসলামকে তাদের প্রধান প্রতিদন্ধী বেভেছে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশসমূহের শাসকরাও ইসলামের অনেক মৌলিক নিয়ম-কানুন নিজেদের ক্ষমতার দন্ডকে নিরাপদ রাখার জন্য হীন স্বার্থে ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে ইসলামকেই আজ প্রশ্নবিদ্ধ করার পথ তৈরী করেছে কৌতুহলী অনেক মানুষের কাছে। মুসলিম দেশের মেরুদন্ডহীন শাসকদের চিন্তা-চেতনা এবং রাষ্ট্রাচারের দর্শন হয়েছে না ঘর কা আর না ঘাট কা। কিছুটা পুজিবাদী, কিছুটা সমাজতন্ত্রী হওয়ার সাথে আবার কিছু চটকদার ইসলামী হওয়ার ভাওতাবাজীর আড়ালে আসলে ভোগ বিলাশ আর লোটপাটই যে এসব শাসকদের আসল কাজ কারবার তা বুঝার জন্য আমাদের গবেষণার দরকার নেই। এসব বিলাশী এবং কোন কোন দেশে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আখড়ে থাকা শিয়ালরা ভাল করেই জানে ইসলামের রাজনৈতিক উত্থানের পেচনে যারা আজ বুকের তরুজাতা রক্ত দিয়ে দুনিয়ার ভুকে নজীর স্থাপন করছে তারাই মূলত দুনিয়ার মানুষের জন্য সার্বজনিন এবং সামগ্রিকভাবে কল্যাণকামী। তাদের পক্ষেই সম্ভব সর্বশ্রেণীর, সর্ব ধর্মের মানুষের হক ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এসব অধিকার ও হক প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে পুজিবাদী আর সমাজতন্ত্রীর ইউনিফর্ম পরিধান করে মানুষের রক্ত শোষণ করছে, ইনসানিয়াতকে যারা আদিম যুগের গুহাবাসীদের যামানায় ফিরানোর আধুনিক পদ্ধতির প্রয়োগ করে যাচ্ছে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। তাই তারা ইসলামকে প্রধান প্রতিবন্ধক এবং একমাত্র শত্রু ভাবছে।
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৩
198109
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত!
252846
১০ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৪
কাজি সাকিব লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ পড়ে খুব ভালা লাগলো
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৫
198112
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে!
252856
১০ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৯
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৬
198114
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে ও!
252886
১০ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:৩২
বুড়া মিয়া লিখেছেন : নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্মীয় ব্যবস্থা অবশ্যই ভোগ-বিলাসের উর্ধ্বে, সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের কল্যাণে, আর পূজিবাদী-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভোগ-বিলাসে উন্মত্ত দু’দল মানুষের সাধারণ মানুষকে অলীক-অধিকারের মূলা দেখিয়ে নিজেদের ভোগ-বিলাসের ম্যান্ডেট পাওয়ার এক প্রচেষ্টা।

বর্তমানের প্রচলিত সব শাসন ব্যাবস্থার উদ্দেশ্য একই – ভোগ আর বিলাস! কেউ বা ধর্মের দোহাই দিয়ে আর কেউ বা অক্ষম-অযোগ্য মানুষকে নানারকম-অলীক-অধিকারের-প্রলোভনে ভুলিয়ে সে উদ্দেশ্য হাসিল করে নিচ্ছে, যা শাসকগোষ্ঠীর সামাজিক-রাষ্ট্রীয় অবস্থান দেখেই বোঝা যায়।

সাধারণ মানুষ যারা অধিকারের প্রলোভনে আত্নহারা হয়ে শুধু ভোট দিয়ে-ই অধিকার পেতে চায়, গতর আর মাথা খাটিয়ে নুন আর পান্তাই তাদের অধিকার হিসেবে পায়; আর চালাক-চতুর মানুষ যারা আরো এক ধাপ এগিয়ে ভোগ-বিলাসে উন্মত্ত দলগুলোর যে কোন একটার পায়রবি করে তাদের ভাগ্য সামান্য সুপ্রসন্ন হয়।

এভাবেই মনে হয় আমাদের জীবদ্দশা চলে যাবে!
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৭
198115
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : আপনাকে ও ধন্যবাদ ভাই।
252906
১০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৮
বুঝিনা লিখেছেন : জাতির ঘাড়ে চেপে বসা শেখ নামের ভুত উপড়ে ফেলতেও আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে আকাশের দিকে। এক সময় না এক সময় মেঘ জমবে। এবং সে মেঘ প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে উড়িয়ে নেবে শাসক নামক এসব দানবদের। সভ্যতা বিবর্তনের এ অমেঘো ধারা হতে স্বৈরশাসক পুতিন, মধ্যপ্রাচ্যের রাজা-বাদশা আর শেখ হাসিনার মত বেহায়া শাসকরা রক্ষা পাবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
আল্লাহ যেন তাই করেন ...
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৭
198116
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই
252950
১০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৬
শেখের পোলা লিখেছেন : অনেক গুরত্বপুর্ণ লেখাই লিখেছেন৷ প্রতিকারের উপায় বাপথের সন্ধান দেননি৷
আমার মতে বর্তমান পৃথিবীতে ধর্মের পুর্ণশাসন কোন দেশেই নেই৷ তা যত তাড়াতাড়ি আসে তাতেই মঙ্গল৷ ধন্যবাদ৷
254335
১৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৭
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File