আমিরাত নয়, রাশিয়া!

লিখেছেন লিখেছেন ওয়াচডগ বিডি ২৪ মে, ২০১৪, ০২:১৯:২৬ রাত

২০২০ সালে বিশ্ব বাণিজ্য মেলা বসবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে। তাও প্রায় ছয় বছর বাকি। এ মেলা আয়োজনের দাবিদার ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ আরও তিনিটি দেশ। যথাক্রমে রাশিয়া, ব্রাজিল ও তুরস্ক। আয়োজক একজন এবং, দাবিদার চারজন। সঙ্গত কারণে ভোটাভুটির প্রয়োজন দেখা দিল। বিশ্ব যেহেতু আওয়ামী চেতনায় সংক্রামিত নয় তাই চাইলেই ৫ই জানুয়ারির কায়দায় নির্বাচন করে তৈল সমৃদ্ধ দেশ আমিরাত অথবা প্রাক্তন পরাশক্তি রাশিয়ার পক্ষে মেলা বসানো সম্ভব ছিলনা। ভোট হবে গোপন ব্যালটে। কে কোন দেশকে ভোট দিল তা সনাক্ত করা সম্ভব ছিলনা। তবে এই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দিল পৃথিবীর একটা দেশ...আমাদের জননী জন্মভূমি বাংলাদেশ। হাসিনা সরকারের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলার সাত বছর আগে ঢোল বাজিয়ে ঘোষণা দিলেন...তোমরা যাকে খুশি দাও, আমরা কিন্তু দেব পূর্ব ইউরোপের দেশ রাশিয়াকেই। আদম ব্যবসা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা যোগান দেয়ার অন্যতম প্রধান উৎস। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে বাংলাদেশিরা নিজেদের ভাগ্য সন্ধানে ব্যস্ত। এবং দিন শেষে রক্ত পানি করে যা কামায় তার সিংহভাগই দেশে পাঠায় স্বজনদের দেখভাল করার দায়িত্ব হিসাবে। পাঠকদের মনে করিয়ে দেয়ার দরকার নেই পৃথিবীর কোন কোন দেশ বাংলাদেশিদের জন্য নিজেদের শ্রমবাজার খুলে দিয়েছে। বলাই বাহুল্য মধ্যপ্রাচ্য এবং আরব আমিরাত তার অন্যতম।

রাশিয়াও আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো দিয়েছিল। দেশটার অর্থনৈতিক বাস্তবতা তৃতীয় বিশ্বের দেশ বাংলাদেশের চাইতে খুব একটা শক্ত অবস্থানে নেই। স্বভাবতই ভাগ্যের সন্ধানে বাংলাশিরা রাশিয়ায় ভিড় জমায় না। তবে অবস্থানচ্যুত কিছু ভাগ্য সন্ধানী স্বদেশীকে মস্কো অথবা সেন্ট পিটার্সবার্গে দেখা যায় না তা সত্য নয়। সোভিয়েত যুগের কিছু বাংলাদেশি দেশটায় অবস্থান করছে বৈবাহিক সূত্রে। বাকিরা দেশটাকে ব্যবহার করছে পশ্চিম ইউরোপে পাড়ি জমানোর ট্রানজিট হিসাবে। এক কথায়, সমসামিয়ক রাশিয়া কেবল বাংলাদেশেরই নয়,পৃথিবীর কোন দেশের অর্থনীতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে অক্ষম। আমাদের মত রুশরাও পশ্চিম ইউরোপ সহ উন্নত দেশ সমূহে বৈধ অবৈধ পথে ভাগ্য সন্ধানে ব্যস্ত। দুবাই শহরের হোটেল গুলোতে রুশ পতিতাদের ভিড় তারই অংশ। হাজার হাজার বাংলাদেশি কাজ করছে আমিরাতে এবং দিন শেষে সম্ভব শেষ পেনিটা পর্যন্ত দেশে পাঠানোর চেষ্টা করছে। অথচ ছয় বছর যে মেলা বসবে তার ভোট দিলাম রাশিয়াকে। তাও উন্মুক্ত ঘোষণার মাধ্যমে। রহস্যটা কোঠায়?

শেখ হাসিনার ভাল চাননা এমন কেউ কেউ সরাসরিই বলছেন রহস্যের চাবি লুকিয়ে আছে রাশিয়ার সাথে সম্পাদিত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র-চুক্তির কমিশনে। এবং চাবিটার মালিক খোদ প্রধানমন্ত্রীর তনয়। প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি চৌধুরানীর মতে রাশিয়াকে ভোট না দিলে প্রতিবেশী ভারত নাখোশ হত। আর ভারত নাখোশ হলে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভুবন খ্যাত ফলাফলও বিপদের মুখে পড়ত। ভোট দেয়ায় ফলাফল যা হবার তাই হল। আমিরাতের রাজতন্ত্র বেজায় নাখোশ, যার প্রতিফলন দেখা গেল দেশটার শ্রমশক্তি আমদানিতে। একই মেলার অবকাঠামো নির্মাণে সাড়ে তিন লাখ শ্রমিক আমদানির প্রতিশ্রুতি দেয়া হল হিন্দু রাষ্ট্র নেপালকে। কারণ নেপালের ভোট গিয়েছিল আমিরাতের বাক্সে। অথচ ভোটের আগে আমিরাতের প্রতিনিধি ঢাকায় এসে ভোটের বিনিময় হিসাবে এই সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশ হতে নিয়োগের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন।

শোনা যায় দিপু মনি পরকীয়ায় জড়িয়ে সবকিছুতে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন। রাশিয়াকে ভোট দেয়ার পেছনে সেটাও নাকি একটা কারণ ছিল। সে যাই হোক, মনিজী কার সাথে কোথায় কি করবেন সেটা উনার ব্যক্তিগত ব্যপার। তবে বিশ্ব-মেলার ভোট পর্বে রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে যে ক্ষতি করে গেছেন তার মূল্য পরকীয়া দিয়েও পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয়না। ভ্যালারে মনি বেচে থাক চীরকাল!!!

বিষয়: বিবিধ

১১৬৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

225284
২৪ মে ২০১৪ সকাল ০৫:৪৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
২৪ মে ২০১৪ দুপুর ০২:০০
172521
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : আপনার ভালো লাগা প্রেরনা হয়ে থাকলো।
225313
২৪ মে ২০১৪ সকাল ০৯:১৪
দ্য স্লেভ লিখেছেন : তারা যেখানে স্বার্থ আছে বুঝেছে সেখানে গেছে....এসব ঘটনায় অবাক হওয়ার কিছু নেই....তারা এসবই করে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File