''নারী দিবস'' এ দিনের প্রহসন
লিখেছেন লিখেছেন আরিফা জাহান ০৮ মার্চ, ২০১৭, ১০:১৯:১৯ রাত
আজকে ৮ই মার্চ ,তথাকথিত নারী দিবস ।
সারা বিশ্বের প্রায় সবকটা দেশেই এই দিনটি যেভাবে পালন হয় আর পুরুষদের তরফ থেকে নারীদের প্রতি যে পাম্পিং শুভকামনা আর বাম্পার শুভেচ্ছা আসে; তা দেখে মনে হয় বড়ই ভাল আর সাম্যের লক্ষণ এটা !
এই দিবসটির জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী নেত্রী থেকে শুরু করে বিশেষ বিশেষ দলের বিশিষ্টগন মহান বানী প্রসব করে নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজ্যের আমলা-কামলা- চোর-বাটপার, জোচ্চোর সহ সকলের প্রতি যে উদাত্ত আহ্বান করে তা দেখে আবগে এই '' নারী দিবস'' টাকে জড়াইয়া ধরে বলতে ইচ্ছে করে'' তুমি একদিনের লাইগা ক্যান আস ! থাইকা যাও হে দিবস সকল অবলা নারীগো লগে !
কিন্ত এই ৮ই মার্চ চলে যায় । সাথে করে নিয়ে যায় এই ''নারী দিবস''টাকেও ! পেছনে রেখে যায় মিইয়ে যাওয়া বাসি শুভেচ্ছা আর শুভকামনা ।
যা শুধু ৮ই মার্চের জন্য তোলা থাকে অনেকের জন্য ।
ক্ষমতাধারী এলিটদের এই দিনে জাঁকজমক এসিরুমে আরামকেদারায় বসে নারীদের নিয়ে আওড়ানো কমন .মুখস্ত আশা .উৎসাহ-উদ্দীপনার ডায়লগগুলো কুণ্ডলী পাকিয়ে হারিয়ে যায় কফি আর পানির বোতলের পাশে রাখা মাইক্রোফোনের প্রতিধ্বনির সাথেই ।
কিন্ত শুকায়না ধর্ষিতা আমেনাদের চোখের জল !
থামেনা যৌতুকের বলি শত শামারুখদের নিথর দেহের পাশে বাতাস ভারি করা অসহায় পিতাদের আহাজারি !
হিসাব কমেনা পথেঘাটে পড়ে থাকা নির্যাতিত নারীদের বেওয়ারিশ লাশের !!
''নারী দিবস'' আসে বাড়ে আশা-উদ্দীপনা স্বপ্ন
এবং?
সেই সাথে বাড়ে নারীদের নিরাপত্তাহীনতা অবিচার ধর্ষণ হত্যাসহ সব ধরনের নির্মমতা ।
'' নারীপুরুষ সমতায় উন্নয়নের যাত্রা, বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা '' প্রহসন ছাড়া কিছুই নয় ।
নারীদের এই অবস্থাটা অনেকটা এরকম যেন সময়ের আয়নায় আমরা জাহেলি যুগের নারীদের সেই করুন অবস্থাটা দেখি ।
আসলে চরম সত্যি কথা হচ্ছে এই যে ''ইসলাম নারীদের যে সম্মান-মর্যাদা আর অধিকার দিয়েছে, সেই পথ ছেড়ে আমরা নারী স্বাধীনতার যতই বিকল্প পথ খুঁজছি ততই বৈষম্য আর অবিচারের থকথকে কাদায় ডুবে যাচ্ছি ।
'' চোরাবালির মত !
১৮৫৭ সালে জার্মান কমিউনিস্ট স্থপতি '' ক্লারা জেটকিন '' নারীর প্রতি বৈষম্য ,অমানবিকতার প্রতিবাদে নারী সম্মেলনের আয়োজন করে ।
তারই ধারাবাহিকতায় ১৯১৮ সালে থেকে এ দিনটি '' নারী দিবস'' হিসেবে পালিত হয়ে আসছে ।
আস্তে আস্তে তা বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে ।
এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়ন, অধিকার আর নিরাপত্তার জন্য কত মিছিল- মিটিং, আন্দোলন কতকিছুই ত হচ্ছে ।
কই কিছুতেই ত কিছু হচ্ছে না !
বরং সেক্সোয়াল ভায়োলেন্স, বৈষম্য, অবিচার আরো বেড়েছে ।
যেই লাউ সেই কদু !
পশ্চিমা দেশগুলোতে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের থেকে অধিক যোগ্য efficient বলা হয় ।
সত্যিই কি নারী লিঙ্গ বৈষম্য অতিক্রম করে সমান মর্যাদা পেয়েছে ?
কংলঙ্কময় অতীতের নিগ্রহ ,দমন-নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেয়েছে ?
তথাকথিত ''নারী দিবস'' কি নৈতিকতা সমৃদ্ধ সমাজ ব্যাবস্থা দিতে পেরেছে ?
সব কিছুর উত্তরেই হয় '' না '' !
বরং নারী নির্যাতন, শিশুহত্যা ,পতিতাবৃত্তি, ধর্ষণ, বিয়ে বিচ্ছেদ, লিভটুগেদার, মাদকাসক্তি, সিঙ্গেল মাদার সমস্যাগুলো পশ্চিমা সমাজকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে ।
আর এটা সংক্রামকের মত আমাদের সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে ।
ঘুনে ধরা এই সমাজের নারীদের পদে পদে লাঞ্জিত আর নিগৃহীত হওয়ার হাত থেকে মুক্তি দিতে পারে শুধু ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও তার পূর্ণ অনুসরণ ।
জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানের জন্মকে অপমানজনক মনে করা হত, জীবন্ত পুঁতে ফেলা হত ।
সেই সময় ইসলাম এল ;নারীকে দিল স্বর্গীয় মর্যাদা ।
সূরা নাহলের ৫৭-৫৮ আয়াতে কন্যা সন্তানের জন্মকে বলা হল ''সুসংবাদ'' !
যে নারীর নাম উচ্চারন ছিল লজ্জার সেক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরানের এক সূরার নাম দিলেন ''নারী''( নিসা)
কোরআনে বলা হল নারীকে পূর্ণ অধিকার দিয়ে লালনকারী পিতামাতার স্থান জান্নাতে ।
ইসলাম নারীকে দিল পিতার এবং স্বামীর সম্পত্তি থেকে সমান অধিকার।
ইসলাম নারীকে দিয়েছে মায়ের মর্যাদা ,বোনের ভালবাসা, কন্যার আদর, স্ত্রীর সম্মান ।
ইসলাম নারীকে নিরাপদের রাখার জন্য নারীপুরুষের মাঝে দিয়েছে পর্দার বিধান ।
ইসলাম ছাড়া এসব 'নারী দিবস '' ''নারী মুক্তি'' নারী স্বাধীনতা''র আদিখ্যােতায় অসহায় নারীরা হারায় তাদের নিজস্ব সত্ত্বার প্রাপ্য মর্যাদা ।
নারী স্বাধীনতার মেকি স্লোগানে বেশিরভাগ নারীরা স্বনির্ভর হয় তাদের শরীর-রুপ ফেরি করে ।
যারা আজ কোরআনের দেয়া নারী অধিকারের পথ এড়িয়ে ,উপেক্ষা করে হাফ ব্যাটারি ওয়েতে নারী মুক্তির উপায় খুঁজে ব্যর্থ হয়ে উপায় না পেয়ে পুরুষদের চৌদ্দ চৌদ্দ =আটাশগুষ্ঠি উদ্ধার করছে
তারা যদি কোরআনটাকে বুঝত ;
তাহলে নারীবাদী অভিমানি হিপোক্রেট তসলিমা দিদির মত '' ছেলেদের মত শার্টের বোতাম খোলে উদোম বুকে খোলা মাঠে শুয়ে থাকা আর পুরুষের মত পোশাক পড়ার মাঝে সমঅধিকার খুঁজত না ''।
................. (আরিফা জাহান)
বিষয়: বিবিধ
৯০০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ফাঁকা ছিল। পরে বুঝলাম, নারী দিবস।আমেরিকায় ৭০% নারী (প্রাথমিক বিদ্যালয়, থেকে উচ্চ ম্যাধমিক) পর্যন্ত শিক্ষকতায় পেশায়
জড়িত। আপনার লেখা থেকে বরং নারী নির্যাতন, শিশুহত্যা ,পতিতাবৃত্তি, ধর্ষণ, বিয়ে বিচ্ছেদ, লিভটুগেদার, মাদকাসক্তি, সিঙ্গেল মাদার সমস্যাগুলো পশ্চিমা সমাজকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আপনার সাথে একমত।
ইসলামে নারীদের জন্য যেসব সুযোগ সুবিধা দিয়েছে সেটা তারা ভালই জানে । তবে যেসব দায়িত্ব দিয়েছে সেটা এড়াতে তারা আল্লাহর আইনকে পাশ কাটিয়ে মনুষ্য আইন উপভোগ করে।
মানে - গাছেরও খাবে , তলারও কুড়াবে।
শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে করে সেই মোতাবেক নিজের প্রাপ্য পাওয়ার ব্যাপারে ওয়াকেবহাল থাকলেও দাম্পত্য ও সাংসারিক জীবন তারা শরিয়ত মোতাবেক চালায় না বা চলে না ।
শরিয়ত মোতাবেক তার যে দ্বায়িত্ব আছে সেটা এড়াতে নারী দিবসের মত বেশরিয়তী ইভেন্টকে তারা আঁকড়ে ধরে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন