আওয়ামীলীগ তথা জননেত্রীর লাশ নিয়ে রাজনীতির কারণ
লিখেছেন লিখেছেন বোরহান উদ্দিন রুবেল ২৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৩:৩৫:২৮ দুপুর
আওয়ামীলীগ তথা জননেত্রীর লাশ নিয়ে রাজনীতির কারণ
বোরহান উদ্দিন রুবেল
বাংলাদেশের অন্যতম একটি রাজনৈতিক দল হলো বর্তমানে সরকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, যারা ৫ জানুয়ারির মতো একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছেন । এই দলটির লাশ নিয়ে রাজনীতি দেখে চুপ থাকতে পারলাম না তাই এই লেখাটি লিখতে বসলাম । বাংলাদেশে লাশ নিয়ে নোংরা রাজনীতি কবে শুরু হয়েছে তা যেমন জানা নেই হয়তোবা শেষ হবে কবে তাও আমাদের জানা নেই । কিন্তু সম্প্রতি ডঃ পিয়াস করীম ও জামায়াত ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের লাশ ও জানাজার নামাজ নিয়ে সরকার যে রাজনীতি করলো তা বাংলাদেশের মানুষের কাছে মিডিয়ার একচোখা নীতির কারণে তাদের মাধ্যমে না পৌছলেও সামাজিক যোগাযোগের কল্যাণে তা প্রতিটি মানুষকে নাড়া দিয়েছে । অথচ আমরা যতটুকু জানি একটি মানুষ তার জীবনে যাই করুক না কেন মৃত্যুবরনের পর তার লাশ সমগ্র মানব জাতির সম্পদে পরিণত হয় । আর লাশের যদি অপমান হয় তাহলে সমগ্র মানব জাতির অপমান হয় , তেমনি তা যদি সম্মানের সহিত কবরস্থ করা হয় তাহলেও সমগ্র মানবজাতি সম্মানিত হয় । প্রশ্নটা হলো যেখানে সমগ্র মানবজাতির সম্মান বা অসম্মান জড়িত সেখানেও কেন আওয়ামীলীগ লাশ নিয়ে রাজনীতি করলো বা করবে ? এর মাঝে লুকায়িত আছে আওয়ামীলীগ তথা তাদের নেত্রী শেখ হাসিনার এক প্রচ্ছন্ন প্রতিশোধ বাংলাদেশ তথা সমগ্র মানবজাতির প্রতি । আর তিনি তা ৩৯ বছর যাবত লালন ও ধারণ করেছেন । গোলাম মাওলা রনির (আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য ) একটি কলামে ইঙ্গিত করেছেন যে, শেখ হাসিনা কীভাবে প্রতিশোধ নিয়েছেন । তিনি দেখিয়েছেন যে , যে লোকটি শেখ মুজিব মরার পর সেনাবাহিনীর ট্র্যাঙ্কের উপর প্যান্ট খোলে নেচেছিল ( হাসানুল হোক ইনু ) তাকে দিয়েই তিনি শেখ মুজিবের কবরে ফুল দিচ্ছেন ও দিয়ে যাচ্ছেন । আর তা আড়াল হতে দেখে হয়তো আমাদের প্রধানমন্ত্রী মুচকি মুচকি হাসেন । অন্যদিকে চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানো মতিয়াও ফুল না দেয়া থেকে বিরত থাকলো কই । এভার আসি মূলকথায় , তা হলো লাশ নিয়ে তিনি রাজনীতি করেন কেন ? আজব ব্যাপার হলো টাও তাঁর পিতা শেখ মুজিবের সাথে সংযুক্ত । শেখ মুজিবের জানাজায় কত লোক হয়েছে তা নিয়ে সঠিক সংখ্যাটি নিয়ে মতানৈক্য থাকলেও তা ১৪ থেকে ১৮ জনের মধ্যেই উঠানামা করে । তাই আমাদের জননেত্রী ( আওয়ামীলীগ যারা করে এটা তাদের উপাধি ) শেখ হাসিনাও চান অন্য কারো জানাজায়ও যেন এর চেয়ে বেশি মানুষ না হয় আর চাইবেনই নাই বা কেন । তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান হলেন বাংলাদেশের স্থপতি , তিনি না হলে হয়তোবা বাংলাদেশ নামক দেশটি জন্ম হতোনা । যদিও হতো অন্তত ৭১ সালের মধ্যে জন্ম না হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি । তিনি না হয় পরে বাংলাদেশের মানুষকে ৭৪ সালে একটি দুর্ভিক্ষ উপহার দিয়েছে সাথে অগনিত লাশ , ৪০ হাজার মুক্তিযুদ্ধাদের হত্যা করেছেন আর সর্বশেষ উপহার দিয়েছে বাকশাল । তাই বলে তাকে এভাবে হত্যা করতে হবে (অবশ্যই যারা তাকে হত্যা করেছে তাদের উপর প্রতিশোধ নিয়ে নিয়েছেন আমাদের জননেত্রী বিডিয়ার বিদ্রোহের মাধ্যমে )। হত্যা না হয় করেছে তাই বলে জানাজার নামাজে এতো কম লোক , মাত্র ১৮ জন দিয়ে নিয়েছেন । তাই তিনি তার প্রথম প্রতিশোধটা নিলেন আঃ কাদের মোল্লার উপর তাতে তিনি সফল হলেন না । তারপর নিলেন ডঃ পিয়াস করীমের লাশের উপর । আর এই প্রতিশোধ নিতে টার্মকার্ড হিসেবে ব্যাবহার করলেন একজন ব্লগারের ভাষায় বুকের হারহীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সাহেব আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকি স্যারকে । তিনি আওয়ামিলিগের টোপে পরে হলেন বলির পাঠা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলো কলংকিতো । আর শহীদ মিনার হল তাদের পৈতৃক সম্পত্তি যাদের সম্পর্কে শেখ মুজিব বলে গিয়েছিলেন তোমাদের বাবার নামের জায়গায় আমার নাম লিখে দিও । এইদিকে বাংলাদেশের জনগন তার জানাজায় উপস্থিতি হয়ে বিশাল জানাজার যন্ত্রণা উপহার দিলেন আওয়ামি নেত্রীকে । আর অন্যদিকে অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর মেডিকেল প্রশাসনকে দিয়ে তা ঘোষণা করালো ২ ঘণ্টা পর । তারা ভাবেছিলো রাত বেশি হলে মানুষের প্রতিক্রিয়া কম হবে কিন্তু মানুষ এতো বেশি হয়েছিলো যে , পুলিশ অনেককে পরে দুক্তে দেয় নি । তার ছেলেদের বাংলাদেশী হাই কমিশন ভিসা দেয়নি , প্রখ্যাত আলেম ইউসুপ কারজাবিকেও আসতে দেয় নি । জানাজার নামাজ ঠেকাতে ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে প্রেসক্লাবে এসেছিল বংলাদেশের রাজনীতিতে ছাগলের তিন নম্বরের বাচ্চা হিসেবে পরিচিত ১৮ জন বাম সমর্থক । আর অথচ তার জানাজা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ জানাজা । যেখানে উপস্থিত ছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ । একজন রাজাকারের এতো জনপ্রিয়তা দেখে হয়তো বাংলাদেশের মানুষের কাছে চেতনা ব্যেবসায়ীদের এই ‘রাজাকার’ শব্দটির অন্তর নিহিত অর্থ পরিস্কার হয়েগেছে । চেতনা ব্যাবসায়ীদের অন্যতম একজন হল শাহরিয়ার কবির ও অমি রহমান পিয়াল তারা ২৫ অক্টোবর ২০১৪ রাতে চেতনা টিভি ৭১ গিয়ে বলেছে গোলাম আযমের জানাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ নাকি ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেনা । লক্ষ মানুষ প্রতিনিধিত্ব না করলা ১৮ জন কিভাবে প্রতিনিধিত্ব করে তা আর যাই হোক কোন মানুষের বুঝে আসার কথা নয় । অবশ্যই মিনার রশিদের ভাষায় তারাতো মানুষ না আওয়ামীলীগ । এই দিকে অধ্যাপক গোলাম আযমের জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখে হয়তো বাংলাদেশের অন্যতম সামাজিক সংগঠন বিএনপি (BNP) এর ভারবাহী মহাসচিব মির্জা ফখরুল হয়তো ভাবছে কেন যে একটি প্রেসব্রিফিং দিলাম না তার মৃত্যুতে । তবে এই লাশের রাজনীতি কতোদিন চলবে তা হয়তো বাংলাদেশের মানুষ জানেনা । আর এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ না হলে আজ পিয়াস করীম অথবা গোলাম আযমের লাশ নিয়ে করেছে কাল হয়তো আপনার বা আমার লাশ নিয়ে করবে । আর এটা বন্ধ করতে হলে তথাকথিত পরিবারতন্ত্র অথ্যাৎ দুই পরিবারের সীমানা থেকে বেরুতে হবে । তাহলে রাজনীতিতে আসবে সৎ , যোগ্য ও নৈতিকতা সম্পন্ন লোক যারা নোংরা রাজনীতির বেড়াজাল ছিন্ন আগামী প্রজন্মকে উপহার দিবে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন