১৪ দলের গাজা সফর না ভ্রমণ না অন্যকিছু
লিখেছেন লিখেছেন বোরহান উদ্দিন রুবেল ১৯ জুলাই, ২০১৪, ০১:৫৩:২২ রাত
১৪ দলের গাজা সফর না ভ্রমণ না অন্যকিছু
বোরহান উদ্দিন রুবেল
১৯৪৮ সালে মধ্যপ্রাচ্চে একটি ক্যান্সারের জন্ম হয় তার নাম হল ইসরাইল । এই দেশটির আয়তন খুব বেশী না হলেও এই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রের মধ্যে একটি । আরববিশ্ব ইসরাইলের সাথে যতবার মুখিমুখি হয়েছে তারা প্রতিবারই শোচনীয় পরাজয় বরন করেছে । আর এই ইসরাইল দ্বারা যারা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফিলিস্তিনের নাগরিকরা । নিত্য-নৈমিত্তিক কাজের মতো সাম্রাজ্যবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনের মানুষের উপর নিয়মিত হামলা করে যাচ্ছে । ৮ জুলাই হল তাদের নিয়মিত হামলার একটি অংশবিশেষ যেই হামলায় ইতিমধ্যে ২৫০ জনের বেশী মানুষ শহীদ হয়েছে যার অধিকাংশই শিশু । এই হামলার বিরুদ্ধে পৃথিবীর সকল মুসলিম দেশসহ অনেক অমুসলিম দেশেও বিক্ষোভ হয়েছে । বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম একটি মুসলিম দেশ । কিন্তু হতাশা অথবা দুঃখের বিষয় হল অন্যান্য দেশের তুলনায় সচেয়ে কম প্রতিবাদ হয়েছে যে দেশে সে দেশটির তালিকায় বাংলাদেশ সবার আগে আসবে । তার মানে এই নয় যে বাংলাদেশের মুসলমান যারা আছেন তাদের অন্তর ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য কাঁদেনা বরং তার মূল কারন হল বাংলাদেশে এখন এমন একটি সরকার এখন ক্ষমতায় যারা মানুষের অন্তরে বেধনাতাকে বিক্ষোভে পরিনত করতে দেয়নি । তাতেও বাংলাদেশের মানুষের মনে হয়তো কোন ক্ষোভ জন্মেনি কারন তারা জানে তাদের বর্তমান সরকার ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসী । কিন্তু তারা যখন দেখে গাজার মানুষের পক্ষে বিক্ষোভ করতে গিয়ে সরকারের পা চাটা বাহিনির হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছে অথচ তারাই নাকি আবার গাজায় প্রতিনিধি দল পাঠাবে গাজার মানুষদের সহমর্মিতা জানাতে তখন আবেগে বাঙ্গালী মুসলমানের মনের অজান্তেই ক্ষোভ জন্ম নেয় । কারন তারা দেখে বাংলাদেশের এমন কয়েকটি দলের জোট ইসরাইলের প্রতি ঘৃণা আর গাজার প্রতি সহমর্মিতা জানাতে যাচ্ছে যারা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উপর রাতের অন্ধকারে গণহত্যা চালিয়েছে , ক্ষমতায় থাকার জন্য দলীয় ক্যাডার ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষীবাহিনী দ্বারা এ দেশের মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি করেছে আর বাড়িঘরগুলো ঘুরিয়ে দিয়েছে , যারা নিরিহ মানুষকে অপরাধী করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে আর দলীয় লোকদের ফাঁসির কাষ্ঠ থেকে মুক্তি দিয়েছে , ভারতীয় সিমান্তবাহিনি দ্বারা নিয়মিত বাংলাদেশী হত্যা হচ্ছে অথচ তার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করছেনা । অথচ সেই ১৪ দল যখন এমন ঘোষণা দেয় তাও আবার এমন একজন ব্যেক্তির মাধ্যমে যিনি এইসব কাজে ছিলেন অগ্রগামি তখন মনে প্রশ্ন জাগে তারা কি সফরে যাবে নাকি ভ্রমনে যাবে কারন সচরাচরতো এই সুযোগটা পাওয়া যায় না বা যাবে না কারন ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশের এমন কোন প্রয়োজন হয় না যে সফরে যেতে হবে । আরেকটা কারন হল যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে আর রাশিয়া ফিলিস্তনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছে যেহেতু আওয়ামীলীগ এখন রাশিয়ার সাথে তাই তারা যাবেন । আর আরেকটি কারনতো সবার জানা তাহলো ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমানদের ভোট পাওয়ার নীতি । যে কারনে বরাবরই তারা ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে তারা প্রতিনিয়তই ধর্ম ব্যাবসা করে থাকে । ইসরাইল ফিলিস্তনিদের উপর গুলি করছে আওয়ামীলীগও করছে , তারা বাড়িঘর ধ্বংস করেছে আওয়ামীলীগও করছে (সাতক্ষীরায় ), তারা শিশুদের হত্যা করছে আর আওয়ামীলীগও (হেফাজতের ) শিশুদের হত্যা করেছে । এগুলো হল তাদের মধ্যে মিল আর অমিল হল ফিলিস্তনিদের উপর যারা হামলা করেছে তারা ইহুদী আর বাংলাদেশের মুসলমানদের উপর যারা হামলা করেছে তারা হল নামের মুসলমান । ১৪ দলের ফিলিস্তিনিদের সহমর্মিতা যেন এক ধরনের স্ববিরোধীতা ।
বিষয়: বিবিধ
১০৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন