যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতি আর আমাদের দুষ্ট সাকিব

লিখেছেন লিখেছেন বোরহান উদ্দিন রুবেল ০৭ জুলাই, ২০১৪, ০২:১০:৩৩ রাত

যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতি আর আমাদের দুষ্ট সাকিব

বোরহান উদ্দিন রুবেল

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক গুলো নীতি আছে আমি শুধুমাত্র একটিমাত্র নীতি নিয়ে আলোচনা করবো । তার আগে কিছু বলে নেই যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে পরাশক্তি হওয়ার পর তারা বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যে নীতি ব্যাবহার করে তা হল তারা সে দেশে কে সরকারে বসবে তা নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা শুরু করে । সরকারে কাকে বসাবে কাকে বসাবে না আর কাকে বসালে ভালো হবে আর কাকে বসালে ভালো হবে না তারা তার কিছু মানদণ্ড ঠিক করা শুরু করে । সেক্ষেত্রে তারা যে ধরনের নেতাদের বাচাই করে তারা হল যারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী তাদের তারা প্রথমে বাচাই করে । তারপর যে দিকটি দেখে তা হল জনপ্রিয় নেতা তবে তারা এমন জনপ্রিয় চায় না যাদের তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেনা । কারন তারা এই জিনিসটা খুব ভালো করে জানে যে যদি জনপ্রিয় কাউকে বসায় তাহলে সে যেকোন সময় বেঁকে বস্তে পারে । তাদের সে ব্যাপারে কিছু তিক্ত অবিজ্ঞতাও আছে । ১৯৫২ সালের ২৩ শে জুলাই মিসরীয় সেনাবাহিনীর প্রধান নাগিব ও কর্নেল গামাল নাসের এক সামরিক অভুথানের মাধ্যমে বাদশা ফারুককে উৎখাত করে । তাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের হাত ছিল । তাদের সাথে সেনাবাহিনির চুক্তি ছিল সুয়েজ খালকে তারা আন্তর্জাতিকীকরণ করবে কিন্তু গামাল নাসের ক্ষমতায় যাওয়ার পর সুয়েজ খালকে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের কিছুই করার ক্ষমতা ছিল না কারন তার জনপ্রিয়তা এতো বেশী ছিল যে তাঁকে কিছু করার মতো কোন উপায় ছিল না । ঠিক এভাবে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিব যখন বিপুল জনপ্রিয়তা পায় তখন যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে সমর্থন করবে কি করবে না তা নিয়ে দোটানায় ছিল কারন তার জনপ্রিয়তা এতো বেশী ছিল যে তাতে তারা সন্দিহান ছিল তারা তাঁকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে কি না । তাদের এই নীতির যে কারনটি ছিল তারা মনে করতো যে “ দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো ” । এবার আসি সাকিব আল হাসানের দিকে তিনি বাংলাদেশের হয়ে খেলে অনেক ভালো করছে এই কারনে আবেগপ্রিয় বাঙ্গালী ক্রিকেট প্রেমিদের কাছে তিনি দেবতার মতো । তাঁকে সবাই ভালবাসে । তিনি মানুষের ভালোবাসা পেয়ে টা নিয়ে খেলতে শুরু করলে কারন মানুষের কিছু প্রকৃতিগত অভ্যাস আছে তা হল যখন কোন মানুষ বুঝতে পারে যে এই যায়গায় তাঁকে খুব প্রয়োজন অথবা এই অবস্থানে তার একটি অবস্থান হয়ে গেছে তখন তার ভিতর কিছু অহকার চলে আসে ।আর তার মধ্যে যদি কোন নৈতিকতা বা মনুষ্যত্ব না থাকে তাহলে সে এমন কিছু কাজ করে যখন সে তার সাফল্যের পিছনের মানুষ গুলোকে ভুলে যায় অথবা ব্যাথা দিতে শুরু করে তখন তার জনপ্রিয়তার কাছে আশেপাশের মানুষগুলো অসহায়ত্ব বোধ ছাড়া কিছুই করার থাকেনা । তখন সে সাকিবের মতো ক্যামেরার সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে , অর্ধউলঙ্গ স্ত্রীকে উত্যক্ত করার কারনে দর্শককে পেটায় , দেশকে ভালো না বেসে টাকাকে ভালবাসে , দেশের মানুষের ভালবাসা টাকার বিনিময়ে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে । আবার টাকার জন্য নিজের লজ্জাশরম ত্যাগকরে ক্ষমা চায় আবার আমাদের মতো দর্শকরাই তাঁকে হিরু বানিয়ে দেই । এই রকম যদি আমাদের ক্রিকেটে জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে চলতে থাকে তাহলে কোন শৃঙ্খলা থাকবে না । আর ক্রিকেটটীম পৌঁছে যাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে । শৃঙ্খলা পিরিয়ে আনতে তাঁকে সকল ধরনের খেলা ও এ্যাডসহ অন্যান্য সকল আয়ের উৎস থেকে নিষিদ্ধ করা উচিৎ যাতে করে দেশের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত আর কোন ক্রিকেটার দেশের স্বার্থ বিরিধী কিছু বলতে বা করতে সাহস না পায় । আমাদের দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই ভালো ।

শিক্ষার্থী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিষয়: বিবিধ

১০৭৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

242439
০৭ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:৫৪
কথার_খই লিখেছেন : কথা গুলোতে যুক্তি আছে,
242496
০৭ জুলাই ২০১৪ সকাল ১০:০২
হতভাগা লিখেছেন :


কমেন্টটা সামু থেকে ধার করা।


অনিয়মের দেশে যেখানে নিয়ম ভাঙ্গাটাই নীতি সেখানে শুধু সাকিবকেই নিয়ম মেনে চলতে হয় , না চললে শাস্তি ! আর কাউকে তো এরকম পেরেশানী দেওয়া হয় না ।

''আমাদের দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই ভালো ''

০ এরকম দুষ্ট গরুতে তো সারাদেশ ভরে গেছে । কয়জনকে বাদ দেবেন ? তাহলে তো

'' ঠগ বাছতে গা উজাড় হবার জোগাড় হবে ''


এটা মনে রাখা উচিত :

'' যে গরু দুধ দেয় তার লাথিও খাওয়া যায় ''

বাংলাদেশে গুনীর কদর হয় না - ইউনূসের না , সাকিবেরও না । এজন্যই এদেশে গুনী জন্মায় না ।
242513
০৭ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:৩৯
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এক ম্যাচে সাকিব ভাল খেললে আবার প্রশংসা শুরু হয়ে যাবে.. Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File