নূরের ক্রসফায়ারে আবার বিচার বঞ্চিত হবে জাতি

লিখেছেন লিখেছেন বোরহান উদ্দিন রুবেল ১০ মে, ২০১৪, ০২:২২:১৩ দুপুর

নূরের ক্রসফায়ারে আবার বিচার বঞ্চিত হবে জাতি

বোরহান উদ্দিন রুবেল

আমার বাড়ি চাঁদপুর জেলায় হওয়ার কারনে বাড়ি যেতে হলে আমাকে নারায়ণগঞ্জ , কুমিল্লা হয়ে যেতে হয় । আর আমার একটা চিরাচারিত অভ্যাস অথবা বদআভ্যাস যাই বলুন তা হল আমি রাস্তার বিলবোর্ড ও রাস্তার আশেপাশে যেই পোস্টারগুলো থাকে তা আমি ভালভাবে দেখি যে পোস্টারে কি লেখা আছে । বিলবোর্ডের রাজনীতির কারনে রাজনৈতিক পোস্টার আর বিলবোর্ড ছাড়া কিছুই দেখা যায় না । নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে যখন আমদের বাস যায় তখন যেই লোকটির পোস্টার সবচেয়ে বেশী নজরে পরে তা হল সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনের ছবি সাথে শামিম ওসমান ও আমাদের মাননীয় প্রধান্মন্ত্রির ছবি । আর বেশীর ভাগ পোস্টার গুলোতে লেখা রাজাকারদের বিচার চাই , জঙ্গিদল জামায়াতের বিচার চাই । এই লোকটার চেহারা দেখেই মনে হয় খুব বদ টাইপের লোক । আমার এই অনুমানটা সত্য হয় যখন নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের সাথে দেখি তাঁর নাম সবার আগে । নারায়ণগঞ্জের যেই সাতজন খুন হয়েছে তাদের মধ্যে একজন হল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম । তিনি গুম ( আমাদের এক মন্ত্রীর ভাষায় নিখোঁজ ) হওয়ার পর তাঁর শ্বশুর শহিদুল ইসলাম ( শহীদ চেয়ারম্যান ) গিয়েছিলেন তৎকালীন র্যা ব-১১ এর সিও ঢাকা মহানগরী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ সরকারের ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ওরফে মায়া চৌধুরীর মেয়ের স্বামী লে. কর্নেল তারেক সাঈদের কাছে খালি হাতে নয় ছয় কোটি টাকা নিয়ে । লে.কর্নেল তারেক সাঈদ তাঁকে বললেন আপনি শামীম ওসমানের সাথে কথা বলেন । এই কথাগুলো বলেছেন শহীদ চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলনে । তাঁর পর ঘটে গেছে অনেক নাটক তাঁর মধ্যে হল র্যা বের জড়িত কর্মকর্তাদের বহিষ্কার , নতুন সিও নিয়োগ ও নূর হোসেনের আস্থানায় তল্লাসিসহ আরও কত কি । এই নাটকের মূলপর্ব হয়তো দুই এক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে । নাটক যে শেষ হয়ে যাচ্ছে তা পরিস্কার হয়েছে যখন শহীদ চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলনে বলেছে যে নূর হোসেনকে যেন ক্রসফায়ারে দেয়া না হয় । যদি ক্রসফায়ারে দেয়া হয় তাহলে মায়া চৌধুরীর ছেলে , শামিম ওসমান , র্যা ব-১১ এর সিও তারেক সাঈদ , মেজর আরিফ , লে.এম এম রানারা মুক্তি পেয়ে যাবে ( বাংলা মেইল ৯ মে)। রাগব বোয়ালদের বাঁচাতে সবসময়ই চুনোপুঁটিদের মরতে হয় হয়তোবা নূর হোসেনকেও এভাবে মরতে হবে আর জাতির কাছে অস্পষ্ট থেকে যাবে নূর হোসেনদের উপরে কারা আছে তাদের উপরে আবার কারা আছে । জাতি এভাবে হয়ত আরেকটি বিচার পাবে না যেভাবে পায়নি পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির , শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির আর হলমার্ক কেলেঙ্কারির ।আর যে নূর হোসেন তাঁর বিলবোর্ডে লিখেছে জঙ্গিদের বিচার করো , রাজাকারদের বিচার করো তাহলে নূর হোসেন কি জানতো না জঙ্গি কাকে বলে নাকি সে শুধু জানত জঙ্গি বলতে শুধু জামায়াতকেই বুঝায়............! না হলে যেই গুমের কাজ সে এতদিন করে আসছে তাতে সে এগুলো লেখার কথা না । সর্বশেষ যেই কথাটা বলতে হয় তা হল যদি এতগুলো মানুষহত্যা করার শাস্তি শুধু মাত্র বরখাস্ত হয় তাহলে সবার উচিত র্যাহবে চাকরি নেয়া আর খুন করে বরখাস্ত হয়ে যাওয়া । আর যদি এমন হয় মন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ায় এই শাস্তি তাহলে সবার উচিত কোন মন্ত্রী দেখে আত্মীয়তা করা আর যদি এমন হয় সরকারী দলের লোক হওয়ায় এই শাস্তি তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আমূল পরিবর্তন দরকার আর তাঁর জন্য তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসা উচিত । তবে তা যেন আবার তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের তরুণ না হয় ।

শিক্ষার্থী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিষয়: বিবিধ

১০৭৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

219846
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৩১
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : ওরে ক্রসফায়ারেই দেয়া দরকার। এই দেশে বিচার প্রক্রিয়া অনেক সময়সাপেক্ষ। ততদিনে এই ৭ মার্ডারের কাহিনী হিমঘরে যাবে এবং পরে সে ছাড়াও পেয়ে যেতে পারে
219852
১০ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৭
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : হুম সত্যি কথা তবে নুর হোসেনকে নাকি ভারতের ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File