রমাদানে কিছু করণীয়
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ১৭ মে, ২০১৭, ০৯:৩৭:০৮ সকাল
রমাদান খুব নিকটে। অধিক পরিমাণে আমল করে নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ, পাপ পঙ্কিলতা মুক্ত করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি আমরা। বছর ঘুরে রমাদান আসে, যায় চলে, কিন্তু কতটুকু পারছি সে পরিশুদ্ধতা অর্জন ও সংরক্ষণ করতে। দুঃখজনকভাবে রমাদানের পরপরই ফিরে যাই সেসব পাপ-পঙ্কিলতায়। যা কিছু আমলের ধারাবাহিকতাকে নষ্ট করে দেয়, সেসব উপায়-উপকরণ বর্জন করার মাধ্যমেই আমলের ধারাবাহিকতা বছরের বাকি সময়েও ধরে রাখতে পারি। করণীয়ঃ
মোবাইল হ্যান্ডসেট থেকে অশ্লীল ভিডিও গান, মুভি ইত্যাদি, এমন কি যা কিছু আল্লাহ্র স্মরণ থেকে মনকে অন্যদিকে ধাবিত করে, সেসবও ডিলিট করে দেই। শপথ করি, রমজানের পরও মেমরি এসব থেকে মুক্ত থাকবে। এর পরিবর্তে যদি চান, রাখতে পারেন ওয়াজ, ধর্মীয় আলোচনা/লেকচার। দেখতে পুরো রমজানজুড়ে টিভিগুলোতে নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমন বৈশাখীতে লক্ষ প্রাণের সুর, দ্বীপ্ত টিভিতে সুরের দরিয়া ইসলামিক গানের রিয়ালিটি শো।
৫-১০ খতম নয়, বেশি বেশি কুরআন হাদীস, ইসলামিক বই অধ্যয়নের প্রস্তুতি নিন। পরিকল্পনা করুন, রমজান মাসে কুরআন মাজিদ সহিহ শুদ্ধ করে পড়া শিখবেন শিখবেনই! তবে অধ্যয়ন এবং তেলাওয়াত অর্থাৎ খতম দুটো একই সাথে হলে খুবই ভালো হয়।
সেহরি খেয়ে ঘুমাবেন না। ফজরের আগ পর্যন্ত কুরআন তেলাওয়া, হাদীস পড়ে কাটিয়ে দিন। তারপর নামাজে পড়ে ঘুম। রোজার মত ভোর রাতে ওঠার অভ্যাসটা রোজার পরেও করার চেষ্টা করুন। তাহাজ্জুদ পড়বেন।
আমাদের দেশটা এমন নয় যে, সবাই সচ্ছল। ঢাকা শহরের মসজিদগুলোতে বিশেষ করে বাইতুল মুকাররম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে গেলে দেখা যায়, সারাদিন রোজা রেখে টাকা পয়সার অভাবে কিভাবে লজ্জা শরম ভুলে ফ্রী ইফতার খেতে মানুষ লাইনে বসে থাকে। তাই ইফতার সেহরিতে অসংখ্য আইটেম করার সাধ আহ্লাদ বাদ দিয়ে গরীব দুঃখী মানুষদের উত্তম ইফতার ও সেহরীর ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি নিন। মনে রাখবেন, উদ্দেশ্য শুধুই আল্লাহ্কে খুশি করা, খুশি করা সেসব গরীব মানুষদেরকে। প্রদর্শনেচ্ছার রোগে যেন পেয়ে না বসে।
নতুন জামা পরে ঈদ করা ফরজে আইন নয়! সবচেয়ে সুন্দর জামাটা আয়রন করে রেখে দিন। এইবার ১০-২০ টা নতুন জামা কেনার চিন্তা বাদ দিন। পরিকল্পনা করুন, এই টাকা দিয়ে এইবার কিছু গরীব মানুষকে ঈদের জামা কিনে দেবেন।
বেশি বেশি দান খয়রাত করে দানের অভ্যাসটা করে নিন সারা বছরের জন্য। সাবধান! লোক দেখানোর জন্য নয়। সব দানই নষ্ট হয়ে যাবে।
সাবধান! রোজা রাখা, তারাবীহ পড়া, মাথায় টুপি, গায়ে পাঞ্জাবী, মুখে দাঁড়ি, হাতে তাসবীর ছড়া, ঘন ঘন মসজিদে যাতায়াত, কোনোটাই যেন রিয়া বা লোক দেখানোর জন্য না হয়। হবে একনিষ্ঠভাবে শুধুই আল্লাহ্র জন্য।
রমজানের রোজাকে উৎসবে সীমাবদ্ধ না রেখে অবশ্যই কর্তব্য ভেবে পরিপূর্ণভাবে পালন করুন।
রমজানে অন্য সময়ের তুলনায় আল্লাহ্ ভীতি কিছুটা বেশি কাজ করে, তাই মাহরাম, গায়রে মাহরাম, অর্থাৎ নারী-পুরুষ পরস্পরের সাথে মেলামেশার ক্ষেত্রে কোনটা জায়েজ আর কোনটা নাজায়েজ তার পার্থক্য বুঝুন। নয়তো, রোজা রাখবেন, আর ইফতারের সময় বান্ধবীর শরীরের সাথে শরীর ঘেষে বসবেন, কোনো কাজে আসবেনা।
রোজা মানে ইফতার, তারাবীহ এবং সেহরী নয়, বরং সার্বক্ষণিক ইবাদতের মধ্যে থাকা, এ বিষয়টি উপলব্দিতে আনুন।
আরো অনেক কিছু আছে করণীয়। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে করতে থাকুন। আল্লাহ্ সহায় হবেন। ইনশা আল্লাহ্, এসব অনুশীলন সারাবছর ইবাদতে আপনাকে ধারাবাহিক করবেই।
বিষয়: বিবিধ
১৯০৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ ১ম লাইনে নিজেকে বুঝ দিয়েছেন , ২য় লাইনে কাকে বুঝ দিয়েছেন ( ছেলেরা ১০-২০ টা পোশাক একসাথে কেনে না কখনই, ঈদের সময় হলেও)।
ইনিংসের শুরুতেই বেধড়ক পিটুনির শিকার।
মানতে রাজী নই, মেয়েরা একটু বেশি কিনলেই ছেলেরা কোনো অংশে কম যায়না, নিজের জন্য না হলেও ললনাদের জন্য!
০ ললনাদের ( মানে Buy one and get more than one !!) জন্য ।
তুম কিসমাত ওয়ালে হো, ব্রো
কপাল লাগে ভাই, কপাল
মন্তব্য করতে লগইন করুন