তাবাচ্ছুমের আবদারগুলো (আবদার-৬)

লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ২৯ মার্চ, ২০১৭, ১১:১৯:২৭ সকাল

খুব করে না হলেও মাঝে মাঝে কাউকে বই গিফট করতে পারলে ভালো লাগে। আর প্রিয় বইগুলো যদি প্রিয় মানুষগুলোকে দেওয়া যায়, তাহলে তো সে আনন্দ সীমাহীন।

আদর্শ পরিবার গঠন সংক্রান্ত মূল্যবান কয়েকটি বই কিনে ব্যাগভর্তি করে বাসায় আসি। এসে দেখি তাবাচ্ছুম খুব মনোযোগ সহকারে একটা বই পড়ছে। অবসর সময়ে বই পড়া তাঁর অন্যতম কাজ।

গলা খাকর দিলে সালাম দেয় এবং কুশল বিনিময় করে। জিজ্ঞেস করি, “কী পড়ছিলে এতো মনোযোগ দিয়ে”? জবাবে বলে, “ঘরে পড়ে থাকা বইগুলো ঝেড়ে মুছে একটু নেড়ে চেরে দেখার চেষ্টা করছি। এগুলোর মধ্যে আছে মুকছুদুল মুমেনিন, বেহেশতী জেওর, অজিফা ইত্যাদি”।

তাঁর কাজটির প্রশংসা করে উৎসাহ দিয়ে বলি, “বইগুলো পড়ছ, পড়। তবে ইসলামী বিষয়গুলোকে আরো বিস্তৃতভাবে জানার জন্য, খুঁটিনাটি দিকগুলো সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার রাখার জন্য ভালো মানের কিছু বই তোমার পড়ার দরকার”।

“আমি তো পড়তেই চাই। কিন্তু ঘরে যে তেমন কোনো বই নেই। আর আমিতো জানিনা, ভালো মানের বই কোনগুলো। আপনি কি আমাকে ভালো কোনো বই গিফট করেছেন!” ক্ষোভের সঙ্গেই বলে তাবাচ্ছুম।

ব্যাগের চেইন খুলে মুহুর্তের মধ্যে তাঁর জন্য কিনে আনা একগাদা বই কোলের উপর রেখি বলি, “ধর, তোমার জন্য। অকৃতজ্ঞ, অধৈর্য নারী!!!!!! কি ক্ষোভটাই না ঝাড়লে স্বামীর উপর!”

চাঁদটা যেন স্বয়ং তাঁর হাতে এসে ধরা দিয়েছে! আনন্দে আত্মহারা হয়ে একটার পর একটা দেখছে, পাতা উল্টাচ্ছে, ঘ্রাণ শুঁকছে। পরম তৃপ্তির দু’টি চোখ দিয়ে আমি তাকিয়ে আছিতো আছিই। এ দৃশ্য যে না দেখেছে, সে কি বুঝবে এর মর্ম!

অতঃপর ঘোর কাটে, বউ তাকায় আমার দিকে। খিক করে হেসে দেয়। দেহটাকে ঠেলে দেয় আমার বুকে। আনন্দটাকে ভাগাভাগি করে শতভাগ পরিপূর্ণ করতে চায়।

“আমি যখনই ভেবেছি আপনাকে একটা আবদার করব, আমার জন্য কিছু ভালো বই নিয়ে আসেন। অথচ বলার আগেই বই হাজির। এ যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি”, তাবাচ্ছুম বলে।

আর আমার বোঁচা নাকটা ভালো মতন টিপে দিয়ে কিঞ্চিৎ সোজা করে বলে, “আপনি এতো ভালো কেন”!

আমার বউটিও যে খুব ভালো, সেজন্য মনে মনে আল্লাহ্‌র দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করি। আমার তাবাচ্ছুমের চাওয়া-পাওয়াগুলো এভাবে চিরকালই ব্যতিক্রম হয়ে থাক........................

বিষয়: বিবিধ

১৫৯২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382458
২৯ মার্চ ২০১৭ সকাল ১১:৫৮
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : মুকছুদুল মুমেনিন, বেহেশতী জেওর, অজিফা এই বইগুলো মুসলিমদেরকে গোমরাহির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এগুলো না পড়াই উত্তম।
আমি কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রীকে প্যারাডক্সিকেল সাজিদ বইটা উপহার দিয়েছি, বইটা পেয়ে সে অনেক খুশি হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আমার ঘরে ইসলামী সাহিত্য ও কোরান হাদিসের ছোটখাটো একটা লাইব্রেরী আছে।
২৯ মার্চ ২০১৭ দুপুর ১২:০২
316090
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : হ্যাঁ, বইগুলোতে অনেক বিভ্রান্তি আছে। তাইতো আমাদেরকে বই পড়া শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ঘরের লোকজনের কাছেও সেগুলো সাপ্লাই দিতে হবে।
সাজিদ বইটা আমিও বেশ ক'জনকে উপহার দিয়েছি।
আপনার ঘরের লাইব্রেরীর কথা শুনে খুবই ভালো লাগল। কাছে হলে সে লাইব্রেরীতে সময় দিতে পারতাম।
জাযাকাল্লাহু খাইর
382468
৩০ মার্চ ২০১৭ রাত ১২:৪৩
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ!‍ খুবই ভালোলাগলো লেখাটি পড়ে। আরো লিখুন আর আপনার লেখাগুলো মানুষের সৎপথে চলার প্রেরণা হয়ে থাক সবসময়। জাযাকুমুল্লাহ্
৩১ মার্চ ২০১৭ রাত ১১:২৬
316101
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু।
আলহামদুলিল্লাহ্‌। আপনার পড়ে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
চেষ্টা থাকবে ইনশা আল্লাহ্‌
জাযাকাল্লাহু খাইর
382471
৩০ মার্চ ২০১৭ রাত ০৮:০৯
হতভাগা লিখেছেন : ক্বুরআন শরীফ পড়ুন ও তাবাচ্ছুম ম্যামকেও পড়তে বলুন , সাথে তাফসীরও ।
৩১ মার্চ ২০১৭ রাত ১১:২৮
316102
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : অবশ্যই।
যার ইসলামী বই পড়ার রুচি অর্থাৎ মান সম্মত, তাঁর তাফসীর পড়ার রুচিও নিঃসন্দেহে থাকবে
382472
৩০ মার্চ ২০১৭ রাত ০৮:১২
হতভাগা লিখেছেন : ক্বুরআন শরীফ পড়ুন ও তাবাচ্ছুম ম্যামকেও পড়তে বলুন , সাথে তাফসীরও ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File