ছেলেটির মৃত্যু থেকে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা (পর্ব-০২)
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:৩২:২৬ সকাল
১০ পর্বের ধারাবাহিক গল্পটি 'HaqIslam' ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
অনুবাদ- গাজী সালাউদ্দিন
আহমেদ ঘুমাচ্ছে। কম্বলে নাড়া পড়ায় ঘুম ভেঙ্গে যায়।
বাবা ডাকছে, “আহমেদ! উঠো।”
এলার্ম ঘড়ির দিকে তাকাতে তাকাতে আহমেদ, “হায়রে খোদা! কি হয়েছে? এখনতো দুপুর ১ টা বাজে ডাকছ কেন!”
বাবা হতাশ কণ্ঠে জবাব দেন, “এখন ১ টা বাজে!” পাগল হয়েছ? কেউ ঘুমিয়ে নেই। তোমার কথা শোনে মনে হচ্ছে কেবলই সকাল ৬ টা বাজলো”।
আহমেদ গোঙাতে গোঙাতে বলে, “এইবার বলো, কেন জাগালে?”
বাবা: মসজিদে চল। নামাজ পড়তে যাবে। আমি চাই জীবনে অন্তত এক ওয়াক্ত নামাজের অভিজ্ঞতা তোমার হোক।
আহমেদ খেদোক্তি করতে করতে উঠে বসার চেষ্টা করে।
"দুই মিনিটের মধ্যে যদি না উঠো, গায়ে ঠান্ডা পানি ঢেলে দেব," বাবা ভয় দেখান।
রাগ নিয়েই আহমেদ ফ্রেশ হওয়ার জন্য স্নানাগারে ঢুকে।
২০ মিনিট পর আহমেদ এবং তার বাবা মসজিদের দিকে রওয়ানা হয়।
পথে আহমেদকে বাবা বলেন, “আল্লাহ্র সামনে দাঁড়ালে তোমার রাগ পাবে, আমি এমনটা মনে করিনা।”
“বাসায় থাকলে কম্পিউটারে গেমস খেলা যেতো, অথচ তার বদলে বিরক্তিকর নামাজের জন্য ১০ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে," আহমেদ শ্লেষের সাথেই জবাব দেয়।
এমন জবাবে আহত হয়ে বাবা বলেন, “তোমার কি মাথা খারাপ? কোনো নামাজই এতো দীর্ঘ সময়ব্যাপী হয়না। এমনকি এর অর্ধেক সময়ও ব্যয় হয়না!"
আহমেদ এবং তার বাবা মসজিদে প্রবেশ করেন। বাবা আহমেদকে সঠিকভাবে ওজু করার পদ্ধতি শেখায় আর আড় চোখে তাকায়।
আহমেদ অজু শেষ করে। মুখের অভিব্যক্তি দেখে মনে হয় খুব পরিশ্রম হয়ে গেছে।
বাবা ছেলে উভয়ে সামনের সারিতে গিয়ে বসে। মুয়াজ্জিন ইকামত দেয়। সবাই সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়। ইমাম নামাজ শুরু করেন। আহমেদের জন্য এটিই প্রথম প্রভূর সামনে দাঁড়ানো।
নামাজ শেষে পরম মমতায় তাকে পাশে টানে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। ছেলে নামাজ পড়ছে, এমন দৃশ্যে চোখে পানি চলে আসে। আনন্দাশ্রু। মনজুড়ে সুখানুভূতি।
আহমেদ গম্ভীর। মুচকি হেসে বাবা বলে, “মাশাআল্লাহ্, বাবা আমি কি তোমাকেই দেখছি? নামাজের চেয়ে এত উত্তম কাজ আর দ্বিতীয়টি নেই। তুমি তোমার অন্যায়ের জন্য আল্লাহর নিকট লজ্জিত?”
“না, না, না! লজ্জিত নই। বরং মোবাইলটা বাসায় ফেলে এসেছি। মৌকে কল দেয়ার কথা ছিল। ছি! কি ভাববে সে! প্রতিশ্রুতি রাখতে পারিনি”।
“কি! অজ্ঞ কোথাকার......” তাঁর বাবা অনেক কষ্টে রাগ সংবরণ করেন।
“তুমি বলতে চাইছ, বন্ধুকে দেওয়া কথা রাখতে না পারায় এত খারাপ লাগছে, অথচ সবসময় আল্লাহ্র জন্য কোনো কিছু না করেও তাঁর ব্যাপারে অনুভূতিশূণ্য হয়ে আছো? চুপ করে আছো কেন, কিছু বল! তোমাকে অথবা আমাদের কাউকেই আল্লাহ্র প্রয়োজন নেই। সুতরাং তুমি এমনভাবে কাজ শুরু কর যেন তাঁকে তোমার প্রয়োজন। কারণ একদিন তাকে তোমার প্রয়োজন হবেই।”
আহমেদের বাবা অনেকক্ষণ বাইরে এলোমেলো পায়চারী করে একটি বৃহদাকার গাছের নিচে দাঁড়ায়। জমিনের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে থাকে। আদরের সন্তানের বখে যাওয়ার আশঙ্কায় গাল বেয়ে টপ টপ করে অশ্রু মাটিতে ঝরে পড়ে।
সেদিন বাবা ছেলে কেউ কারো সাথে কথা বলেনি।
আরও দিন চলে যায়। আহমেদের মৃত্যুর আরও একটা দিন খুব নিকটে চলে আসে। আর বাকি ৯ দিন.........
চলবে------
প্রথম পর্ব দেখতে নিচে ক্লিক করুন
ছেলেটির মৃত্যু থেকে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা (পর্ব-০১)
বিষয়: বিবিধ
১২০৮ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মূল্যায়নে অনুপ্রাণিত হলাম।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
আপনার মূল্যায়ন শুনে খুবই খুশি হলাম বুবু।
ইন শা আল্লাহ্, চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়েই নেমেছি।
জেনে খুশি হলাম ভাই
সে আশায় রইলাম।
এই ভিডিওটা দেখেন। আপনার ধৈর্য্য
বাড়বে।
০ মৌ এর সাথে কি আহমেদের এফেয়ার চলতেছে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন