ছেলেটির মৃত্যু থেকে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা (পর্ব-০১)
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৫৯:২৭ দুপুর
১০ পর্বের ধারাবাহিক গল্পটি 'HaqIslam' ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
অনুবাদ- গাজী সালাউদ্দিন
আহমেদ। ১৬ বছরের তরুণ। তার বাবা মা অত্যন্ত ধার্মিক। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন সন্তানদেরকে ইসলামী জীবনাচরণে অভ্যস্ত করে তুলতে। তাদের কাছে ধর্মীয় শিক্ষা আগে, পরে জাগতিক শিক্ষা।
দুঃখজনকাভে দুনিয়ার চাকচিক্য আহমেদকে গ্রাস করে ফেলে। বন্ধুদের সাথে সিনেমা দেখে, নামাজ আদায় করেনা ও মেয়েদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দেয়। আহমেদের বাবা মা সন্তানের বিপথগামী হওয়া দেখে বিচলতি হয়ে পড়ে। এক সন্ধায় তাকে নিয়ে বসে। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি আলোচনা করবে।
ভারাক্রান্ত কণ্ঠে আহমেদের বাবা ছেলেকে বলেন, “বাবা আহমেদ। তুমি জানো তোমাকে কত ভালোবাসি। তোমরা সবাই আমার সন্তান ও পরমাত্মীয়। বাবা হিসেবে আমার সর্বাঙ্গীন কামনা আল্লাহ্ যেন তোমাদেরকে সর্বদা তার স্নেহের ছায়ায় রাখেন”।
আহমেদ: আমি জানি।
বাবা: আহমেদ, লক্ষ করছি তুমি ঠিকমত স্কুলে যাচ্ছনা। এটা যদি তোমার পছন্দ না হয়, তাহলে চল, আমার সঙ্গে কাজ করবে। আমি চাইবো পরিপাটি জীবন-যাপন করবে। আল্লাহকে ভালবাসবে। তার পথে চলবে।
আহমেদ: বাবা, কোনো সমস্যা নেই। আমার বয়স মাত্র ১৬ বছর। জীবনের অনেক সময় সামনে পড়ে আছে। জেনে রাখো, অদূর ভবিষ্যতে আমি খুব ভালো কিছু করবো।
বাবা: আচ্ছা, তুমি কি তোমার নিজের জন্মের সময়টা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিলে? তোমার শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলে?
আহমেদ: না!
বাবা: যিনি তোমার সম্মতি ছাড়াই সঠিক সময়ে তোমাকে এই পৃথিবীর মুখ দেখালেন, সেই তিনিই তোমাকে প্রস্তুত হওয়ার সময় না দিয়ে অকস্মাৎ আত্মাকে কেড়ে নেবে।
আহমেদ: হ্যাঁ বাবা, আমি জানি। আমার মন বলছে আমি এখন মারা যাবোনা!
বাবা: প্রিয় বৎস, জন্মের পূর্বে তুমি জানতেনা কখন কোন সময়ে জন্মগ্রহণ করবে। এখন জানোনা কখন তাঁর কাছে তোমাকে ফিরে যেতে হবে।
আহমেদ: আমি আল্লাহ্কে ভালোবাসি এবং তিনি আমাকে ক্ষমাও করে দেবেন।
তাঁর মা আলোচনায় যোগ দেন।
মা: প্রিয় বৎস, অবাধ্য সন্তানের প্রতি বাবা মা কি সন্তুষ্ট হতে পারে, যদিও সন্তানরা বলে বাবা মায়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা আছে?
আহমেদ: না!”
মা: তাহলে যিনি সমস্ত বিশ্ব জগত সৃষ্টি করেছেন, মহা পরাক্রমশালী প্রভূ কি তাঁর এমন বান্দাদের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারেন, যারা তাঁর অবাধ্য, যদিও সে অবাধ্য বান্দা বলে সে তাঁর প্রভূকে ভালোবাসে। আল্লাহ্র জন্য তোমার ভালোবাসা প্রকাশ করো তাঁর নির্দেশিত পথে চলে এবং তাঁর রাসূল (সা ম প্রদর্শিত পন্থা অনুকরণ করার মাধ্যমে।
আহমেদ: জীবনটা এমন কেন? কেন আমাকে এটা করতে, ওটা করা যাবেনা! অধিকাংশ জিনিসকে দূরে ঠেলে একঘেয়েমি জীবন যাপন আমার ভাল লাগেনা!
আহমেদের বাবা রুষ্ট হন ছেলের এহেন আচরণে। ধমক দিয়ে বলেন, “আহমেদ! সে তোমার মা! তাকে সম্মান করে কথা বলো। আর সৃষ্টিকর্তাকেও সম্মান কর যিনি তোমাকে জীবন দিয়েছেন এবং দিয়েছেন একজন চমৎকার মা যে তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে!
আহমেদ: কিভাবে আল্লাহ্ দয়াবান হতে পারেন, যিনি মানুষকে জাহান্নামে পাঠান?
বাবা: তুমি কি এখনও বেঁচে আছো?
আহমেদ রুক্ষভাবে জবাব দিলেন, হ্যাঁ!
বাবা: তাহলে এটা কি আল্লাহ্র দয়া নয় তাঁর সম্পর্কে তুচ্ছ করে কথা বলার পরেও তিনি তোমাকে এখনও বাঁচিয়ে রেখেছেন?
আহমেদ চুপ। রাগে ফুসছে।
ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বলে, “তোমরা সব বিরক্তিকর! আমরা কেন অন্যান্য ধর্মানুসারীদের মত জীবনটাকে ষোলোকলায় উপভোগ করতে পারবোনা! আমার লজ্জা হয়, আমি মুসলিম হয়ে জন্মেছি!
বেপরোয়া তরুণ আহমেদ জানেনা সেদিন থেকে তার জীবনের শেষ দশ দিনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে যায়......
চলবে-----
বিষয়: বিবিধ
১৪২৪ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চালিয়ে যেতে চাই, আল্লাহর তাওফীক কামনা করছি।
আলহামদুলিল্লাহ! হৃদয়ছোঁয়া সুন্দর একটি অনুবাদ।
মহান দয়ালুর অসীম করুণায় তারুণ্যদ্বীপ্ত সময়েই সুন্দর অনুবাদ করার দারুণ জগৎটিকে বেঁছে নিয়েছেন মাশাআল্লাহ।
এ পথের অব্যাহত যাত্রায় উত্তরোত্তর সাফল্য ও সফলতা কামনা করি।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মূল্যায়ন শুনে খুবই প্রীত হলাম।
এ জগৎ টা আমার অসম্ভব ভালো লাগার জায়গা। আমি অসংখ্য অনুবাদ করি, তার সামান্য আসে ব্লগে। দোয়া করবেন যেনো প্রতিনিয়ত গুনগত মান বাড়িয়ে যেতে পারি। বাংলা থেকে ইংরেজি আর ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ আমার নিয়মিত জবের পাশাপাশি এক্সট্রা প্রফেশনও বলতে পারেন। তবে প্রফেশনাল হওয়ার চেয়ে ভালো লাগার ব্যাপারটা বেশি মূখ্য।
আল্লাহ্ আপনাকেও উত্তম প্রতিদানে ধন্য করুন
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ্ অনেক ভালো রেখেছেন. দুনিয়াবি চাওয়া পাওয়া খুবই কম তাই একটুও বেশিই ভাল থাকতে পারি।
প্রাণ খুলে দুয়া করবেন যেন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারি।
আমিন আমিন
জাযাকাল্লাহু খাইর
আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম রহিম ভাই।
চলার প্রচেষ্টা নিয়েই নেমেছি। সঙ্গে থাকুন।
আপনি খুব ছোটো থেকেই নামাজ পড়েন নাকি?
বাবা মা থাকবেনা, বিষয়টা ভেবে ইদানিং আমিও খুব ভেঙ্গে পড়ি। আমার আশে পাশে কারো বাবা, কারো মা, মারা যাচ্ছে, সংখ্যাটা খুব বেশিই। মা বাবা থাকবেনা, বিষয়টা ভাবতেই পারছিনা।
ধন্যবাদ সাকা ভাইয়া ।
মূল্যায়ন শুনে খুবই ভালো লাগল।
আপনাকেও ধন্যবাদ পনি।
সঙ্গে আছেন জেনেও খুশি হলাম।
আপনার ধন্যবাদ স্বানন্দে গ্রহণ করলাম।
হে প্রিয়, আল্লাহ্ আপনাকে ভালো রাখুন।
আপনার মূল্যায়ন শুনে অনুপ্রাণিত হলাম
মন্তব্য করতে লগইন করুন