জমিদার বাড়িতে গড়ে ওঠা মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে একদিন
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ১৮ মে, ২০১৬, ০১:২৪:৪১ দুপুর
সাধ্য সীমিত থাকায় দেশের নানা প্রান্তে ভ্রমণ খুব একটা হয়ে ওঠেনি। এখন সাধ্য কিছুটা হলেও সময় সায় দেয়না। সপ্তাহান্তে একটা ছুটির দিন আসলেও কোথাও গিয়ে এতো অল্প সময়ে পোষায় না। গত শুক্রুবারের আগের শুক্রুবার একটা বিশেষ ট্রেইনিংয়ের কাজে দল বেধে গিয়েছিলাম নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ ‘মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে’। গেঁয়ো একটা কলেজ এতোটা চোখ জুড়ানিয়া হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। হ্যাঁ, দেশ বিভাগের সময় হিন্দু জমিদার গোবিন্দ চন্দ্র ব্যানার্জির ফেলে যাওয়া নান্দনিক বাড়িটিতেই গড়ে উঠেছে কলেজটি।
কলেজের মূল গেইট। তার সামনেই ইয়া বড় মাঠ। দেখলে চক্ষু শীতল না হয়ে পারেনা।
মূল গেইটের একটু ভেতরে জমিদার বাড়ির মন্দির
গেইটের পাশেই গাড়ি রেখে সকালের নাস্তা করতে হোটেলে ঢুকে চোখ ছানাবড়া। চতুর্পার্শে নীতিকথা আর নীতিকথা।
কলেজের দ্বিতীয় গেইট
কলেজের সামনে পুকুর। যার চতুর্পার্শ্বেই ঘাট।
নামাজ রুম। খুবই ভালো লেগেছে নামাজের জন্য আলাদা জায়গা দেখে। জানিনা, কেউ নামাজ পড়ে কিনা।
ছাত্র সংসদ। কলেজ ঘুরে এবং লোকজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ছাত্র সংসদের কার্যক্রম আছে, তবে এক পেশে। যাই হোক, তারাই নাকি আবার থানা, জেলা পর্যায়ের রাজনীতিতে নাম লেখায়।
ছাত্রদের কমনরুম। দেখে থমকে যাই। সব জায়গায় দেখলাম মেয়েদের জন্য কমনরুম, আর এখানে ছাত্রদের জন্য! লেখা যাই থাকুক, এটা আসলে মেয়েদেরই কমন রুম।
জমিদার বাড়ির অন্দর মহলের গেইট। ছুটির দিন হওয়ায় ভেতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। বারান্দা শো দেখেই মন ভরালাম।
গেইটের ফাঁক দিয়ে ভেতরের অংশ ক্যামেরা বন্দী করলাম
জমিদার বাড়ির পেছনের অংশ। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো আরকি।
ধ্বংস প্রায় কিছু ভবন। এর পাশেই আরেকটি ভাঙ্গাচোরা ভবন আছে, যেখানে কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা থাকে।
জমিদার বাড়ির আরও একটা গেইট
ভেতরের পুকুরে যাওয়ার গেইট। কেমন যেন গা ছম ছম করা ভূতুড়ে অবস্থা
ভেতরের পুকুর। লোক মুখে শোনা যায়, জমিদার বাড়ির মহিলারা এই পুকুরে গোসল করতো। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কেউ উঁকি ঝুঁকি দিলে জমিদার তাদের চোখ উপড়ে ফেলতো।
যে চিপা গলি ঢাকার শহরেও দেখিনি, তার দেখা মিলল সেখানে
পাশেই আরেকটা জমিদার বাড়ি
ভূতুড়ে সিঁড়ি
কলেজ, এই জমিদার বাড়িটি সম্পর্কে অনেক অনেক কিছু জানার ছিল, কিন্তু কলেজ বন্ধ ছিল বিধায় ছাত্র শিক্ষক কাউকে না পেয়ে জানা থেকে বঞ্চিত হতে হল।
তারপরেও ঘুরে ঘুরে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলেছি, চেষ্টা করেছি এ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিতে। ১৯৪৭ সালের আগে ভারত পাকিস্তান ভাগের আগে আগেই হিন্দু এই জমিদার পালিয়ে দেশ ত্যাগ করেন। এলাকাবাসীর দাবি, হিন্দু রাজা ছিল খুবই অত্যাচারী। জমিদার বাড়ির আশপাশ দিয়ে কেউ ছাতা মাথায় দিয়ে যেতে পারতোনা। এছাড়াও অনেক অত্যাচারের কথা লোকমুখে শোনা যায়।
সত্যিই দিনটি ছিল আমার জন্য অনেক অনেক আনন্দের। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। তিনি আমায় এতো সুন্দর স্থানটি ভ্রমণ করার তাওফীক দিয়েছেন।
বিষয়: বিবিধ
২১৬৪ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাহলে নেহায়েৎ আপনার চাহিদা ষোলকলায় মিটিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকার পাশেই, এক ঘণ্টার রাস্তা। চাইলেই তো ঘুরে আসতে পারেন।
আপনার চাহিদা বুঝেই আলোতে নিয়ে আসলাম!
আপনাকেও ধন্যবাদ হে শোকাহত বিবাহিত যুবক
আরব দেশে তো যাইনি, তাই সেখানকার সাথে এখানকার তুলনা করতে পারছিনা।
আমরা দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেয়ে নিজেকে এগিয়ে নেওয়াতে ব্যস্ত বেশি।
আপনার অনেক অনেক ভালো লেগেছে জেনে আমিও খুব খুশি হলাম।
আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুন।
কলেজ এবং জমিদার বাড়ি সম্পর্কে জানার খুব ইচ্ছে ছিল, কিন্তু কলেজ বন্ধ থাকায় কোন শিক্ষক কিংবা ছাত্রের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি। তাদের কথা পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য মনে না হওয়াতে পোস্টে তুলে আনিনি।
আপনার সংগ্রহে প্রয়োজনীয় তথ্য থাকলে একদিন কষ্ট করে এ বিষয়ে একটা পোস্ট দেওয়ার অনুরধ থাকল।
ঠিকই বলেছেন। বেশ বড়ই
আপনি রাস্তা চিনিয়ে দিচ্ছেন? ভালো ভালো। মানব কল্যাণে নিয়োজিত হতভাগা হতচ্ছাড়া।
আমনেরেও ধন্যবাদ
কারও জন্য সামান্যতম উপকার করতে পারার যে কি আনন্দ, তা বলে বুঝানো যাবেনা।
ইনশাআল্লাহ। সব ঠিক থাকলে হবে।
প্রোফাইল পিক পরিবর্তন করে ফেলুন। আপনি বাদে অন্য যেকোনো কিছুর ছবি দিন
আপা, আসলেই কি এত্তো ধন্যবাদ দিয়েছেন? হিসেব রাখছেন কেমন করে? আমার ছোট্ট কপালে মিলিয়ন মিলিয়ন থ্যাঙ্কস আছে, ভেবে যে কূল কিনার পাইতেছিনা.
আল্লাহ্ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দিক.
সালাম শুনে আবার হয়রান হয়ে যাইযেন না
, আল্লাহ
বলেছেন, তোমরা বেশি বেশি সালামের প্রচলন কর, তাই, সালাম জানাই,
আপনি হয়রান, বিরান, তেহরান হলে চোখ কান বন্ধ রাখেন।
আমার এক ভাবীর কাছে মুড়াপারার গল্প শুনেছিলাম,, তাদের বাড়ী ঐ খানে।
আজ ও তা গল্প ই রয়ে গেল, কারন ছবি গুলো দেখতে দিচ্ছে না ব্লগ।
ব্লগের মেহমানদারি খুব একটা সুবিধার না,
আজ দরজা বন্ধ করে রাখে, কাল জানালা বন্ধ করে রাখে,
এখন লেখা দেখতে দিচ্ছে কিন্তু ছবি দেখা যাচ্ছে না।
কি যন্ত্রণা
হয়রান হলেই কি, আপনি তো বেজানী!
কিন্তু এই সালাম তো আমি শুনতে পাইনা!!!!! কিতা করতাম আমি!
মাথায় বায়ুচারা হয়েছে নাকি, খালি চুল ছিড়তেছেন!
ইশ, আপনার সাথে আগে যোগাযোগ করে গেলে তো আপনার ভাবিদের বাসায় বড় বড় দেশি রাতার রান চাবায়ে চিবায়ে বাক্কা করি খাইতাম।
লেখাটা পোস্ট করার দুই দিন পর্যন্ত ছবিগুলো ছিল, তারপর থেকে হাওয়া! আমী কিতা করতাম গো!
কি মেহদানদারী করবে, মেহমানের সাথে চেনা অচেনা দুর্বৃত্তরা এসে ঝামেলা পাকায়, তাই দরজা বন্ধ থাকে। বুইঝতেন হাইচ্ছেন নি।
থাক আর চুল ছিড়ার দরকার নাই। ভবিষ্যতে যা আবার বিয়ে দেওয়া লাগবে না, এই কথা আপনি হলফ করে বলতে পারেন না। তাইনা।
দেখলাম
আপনার কমদামী মোবাইল এ তোলা ছবি, কম খারাপ হয় নি।
""লেখা যাই থাকুক, এটা আসলে মেয়েদেরই কমন রুম। ""
কিভাবে নিশ্চিত হলেন, :
অবশ্য আপনারা জ্ঞানি মানুষ," ক" দেখলে বুঝে নেন " কলকাতা " হবে, পৃথিবীতে ক দিয়ে আর কোন শব্দ হয় না কিনা।
"
প্রত্নতত্ত্ব বিদদের সাহায্য নিয়ে জেনেছি, ত্র এবং ব এর মাঝে একটি আকার ছিল, পরে তা ক্ষয় হয়ে গেছে।
জাস্ট ভ্রমণের ভন ভন শব্দ শুনছি।
ভ্রমণের শব্দ যদি ভন ভন হয়, তাহলে মাছির শব্দ শুনতে কেমন ঘুম?
এটা অনুমান নয়, সত্যিকার অর্থেই অনেক জমিদার এ দেশ ছেড়ে চলে গেছে।
ছবিগুলো এখন শো করছে। দেখে নিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন