কুধারণা পোষণকারী ও সন্দেহ বাতিকেরা এক সেকেন্ডের জন্যও স্বস্তিতে থাকতে পারেনা
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ১৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০৯:৪৪:১৮ রাত
বলছি, এক ধনাঢ্য নারীর কথা। উনার ছিল একজন ড্রাইভার, দুই বুয়া এবং পার্সোনাল সেক্রেটারি।
বাচ্চাদেরকে নিজেই স্কুলে আনা নেওয়া করেন। মাঝেমধ্যে কাজ থাকলে ড্রাইভারের সাথে বুয়া অথবা পিএসকে পাঠান। একদিন অন্য কাজ থাকায় বুয়াকে পাঠালেন। তাদের ফেরার কথা তিনটার মধ্যেই, অথচ ৫ টা বেজে যাওয়ার পরেও আসার নাম গন্ধ নেই। ড্রাইভারকে ফোন দিলে বলে জ্যাম।
বিশ্বাস হয়না। এতক্ষণ জ্যাম হওয়ার কথা নয়। সন্দেহ দানা বেধেঁ উঠে। এক পর্যায়ে নিশ্চিতভাবে ধরেই নেন, ড্রাইভার বুয়াকে নিয়ে ফস্টিনস্টি করছে! কিন্তু অবশেষে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে যাবেন, তাই রাস্তা তিন ঘণ্টা আটক ছিল।
আরেকদিন, অনেক খোঁজ করেও হাতের মোবাইল না পেয়ে পিএসকে সন্দেহ করলেন। কেননা, কিছু আগেই পিএস ঘর থেকে বেরিয়েছে, আর তখনই মোবাইল হাওয়া! কিন্তু পরে মোবাইল আলমিরার যে জায়গায় রাখা ছিল, সেখানেই পাওয়া গেছে।
গ্রামের বাড়ি যাবেন, তাই যাওয়ার সময় বুয়াকে ঘরে রেখে গেলেন। ফিরে দেখেন, সার্ফেক্সেলের বোতল নাই। যার মানে নিশ্চিত বুয়াই ওটা চুরি করেছে! কিন্তু তাও পরে ঘরে পাওয়া গেল। শুধু নির্দিষ্ট জায়গা বদল হয়েছে।
মশার ওষুধ খুজেঁ পাওয়া যাচ্ছেনা। ঘরে বুয়া ছিল একা। সুতরাং বুয়াই নিয়েছে! কিন্তু সেটাও পরে ঘরে পাওয়া যায়। মনের ভুলে যেখানকারটা সেখানে না রেখে অন্য জায়গায় রেখেছেন। না পেয়ে দোষ চেপেছেন বুয়ার উপর।
উনার ধারণা, ড্রাইভার তেল চুরি করে, আর গ্যাস বিলে করে হেরফের। বুয়ারা মশলা চুরি করে, তাই ওসব তালাবদ্ধ থাকে। পিএস টাকা এদিক ওদিক করে। কিন্তু কখনো কাউকে হাতে নাতে ধরতে পারেনি। তবু সন্দেহ, কুধারণা চলতেই থাকে।
উনি ভাবেন, শতভাগ ফ্রেশ তিনি, আর বাকি সবাই ফরমালিনের বিষে আক্রান্ত।
বলছি, সন্দেহ বাতিক এবং কুধারণা পোষণকারী ব্যক্তিরা কখনোই স্বস্তিতে থাকতে পারেনা। কোন ব্যক্তি যদি উপলব্ধি করত, কুধারণা কত বড় পাপ এবং নিকৃষ্ট মানুসিকতা, তাহলে না জেনে না বুঝে অন্ধকারে ঢিল ছুড়তনা।
এইসব মানুষেরা একদিন কাউকে প্রশংসা বৃষ্টিতে ভেজাতে পারে, আবার পরদিনই পারে অপমান অপদস্হ করতে। খুব সহজে পারে কাউকে চরিত্রবান উপাধি দিতে, পরদিনই পারে মিথ্যা অপবাদ দিতে।
তাদের কথায় তেজ থাকে, বারুদের মত জ্বলে উঠে, কিন্তু কাউকে সারাজীবন আপন করে নেবার মত কোমলতা থাকেনা। অথচ নিজের পছন্দ অপছন্দকে অন্যের পছন্দ অপছন্দে পরিণত করার জন্য এই কোমলতা, আন্তরিকতা যে বড় প্রয়োজন, সেটা তারা বুঝেনা।
যে যাই ধারণা করুক, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই জানে কার মনে কি আছে। এই ক্ষমতাটুকু আল্লাহ্ নিজের হাতে রেখেছেন। বান্দাকে দেননি। তাই এক বান্দা শুধু কুধারণার উপর ভিত্তি করে অপর বান্দা সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা অথবা অপবাদ দেওয়ার ক্ষমতা রাখেননা।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫২ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সন্দেহ এক ধরনের অসুখ তাই অসুস্থ্য মানুষ স্বস্তিতে থাকবে কি ভাবে !!
আর একটা কথা লিখাটা পড়ে মনে হল লিখাটা শেষ হয়নি কিছু একটা বাকী রয়েছে ।
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সন্দেহ করা যায়, কিন্তু অহেতুক সন্দেহ বিরক্তিকর।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আল্লাহর রাসূল উত্তম বলেছেন, সত্যিই অধিকাংশ কুধারণা মিথ্যা হয়ে থাকে। সেজন্য পরিবেশ নষ্ট করার মত কুধারণা করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকা উচিৎ।
জানিনা সেদিন রাতে নফল নামাজ পড়েছেন কিনা, তবে দোয়া করেছি।
আমার কেন জানি ভয় লাগেনি. ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব হয় মাত্র কয়েক সেকেন্ড, এই সময় চাইলেও ক্ষতি থেকে বাচান খুব একটা সম্ভব নয়। এর চেয়ে ভালো দ্রুত তাওবা পড়ে নেওয়া।
খুব ই সৌন্দর্য ময় লিখা
কিন্তু কাউকে লিখলেন নাকি!!!
আহারে সন্দেহের বেড়াজালে পোলাডা অতিস্ট
ধন্যবাদ সুন্দর মূল্যায়নের জন্য।
হ্যাঁ, উদ্দেশ্য করেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন