‘টুডে ব্লগে’র আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন (এক পোস্টেই সকল পোস্ট)
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ২৭ মার্চ, ২০১৬, ০৭:০০:২৬ সন্ধ্যা
‘হয়ত বা ইতিহাসে তোমাদের নাম লেখা রবেনা
বড় বড় লোকেদের ভীড়ে
জ্ঞানী আর গুণীদের আসরে
তোমাদের কথা কেউ কবেনা
তবু হে বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা
তোমাদের এ ঋণ কোনদিন শোধ হবেনা’।
মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পেতে কোমড়ে গামছা বেঁধে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়াই যথেষ্ঠ নয়, থাকা চাই শিক্ষা-দীক্ষা, খ্যাতি, প্রভাব-প্রতিপত্তি!
আজও অসংখ্য আবাল-বৃদ্ধা-বণিতা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, স্ব-স্ব অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বুলেটের আঘাতে হয় ক্ষত-বিক্ষত। তাদের নাম কেউ মুখে উচ্চারণ করেনা, আসেনা কোন পত্রপত্রিকায়, ভাসেনা কোন টিভি চ্যানেলে, শোনায়না কোনো রেডিওতে, আলোচনা হয়না কোন সভা-সেমিনারে!
পটুয়াখালির রমিজ মিয়া (৭০), দিন মজুর। পাক সেনাদের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করেছিল। জীবন সায়াহ্নে এসে ভাতা, সার্টিফিকেট, মরণব্যাধীর চিকিৎসায় খরচ চালাতে সাহায্য পাওয়ার আশায় নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, কিন্তু কিছুই পাওয়া হলনা। এই মুক্তিযোদ্ধার সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানতে পারি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ভাত পায়না, অথচ ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কতটা ছড়াছড়ি। উনি এবং উনার স্ত্রী, উভয়কেই নিজের ব্লাড ডোনেট করে গর্ববোধ করছি।
কষ্ট করে ফসল ফলালো রমিজ মিয়ারা, অথচ ফসল উঠল অন্যের গোলায়। এমন ঘৃণ্য দৃশ্য দেখে কষ্টে, ঘৃণায় তাদের বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ হয়ে আসে।
আজ মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধের চেতনা কথায়, তর্ক-বিতর্কে, সভা-সেমিনারেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই চেতনাকে ব্যক্তিগত অথবা দলগত স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করতে দেখা যায়। আর বিশাল একটা অংশতো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টা মানেই অযৌক্তিক আবেগের তোরে ভেসে যাওয়াকে বুঝে!
বহি:শত্রুর শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতেই স্বাধীন হয়েছিল দেশ কিন্তু ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ হলে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ যে অধরাই থেকে যায়। স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করি, কিন্তু আমি ব্যক্তির প্রতিটা কাজ পরাধীনতার যাঁতাকলে পিষ্ট, অথচ আমার মাঝে লড়াকু মানুসিকতা অনুপস্থিত!
মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ তিতিক্ষা তখনই স্বার্থকতা পাবে যখন কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হব। তাদের স্তুতি গাওয়ার বদলে অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে তারা যেমন রুখে দাঁড়িয়েছিল, আমরাও তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘আমার অধিকার’, ‘দেশের অধিকার’ প্রতিষ্ঠায় প্রাণপণ লড়াই করে যাব।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অনেক অনেক শ্রদ্ধা জানিয়ে বিডি টুডে ব্লগের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ব্লগীয় কর্মসূচী হিসেবে যা থাকছে:
স্বাগত বক্তব্য, কুরআনের সংক্ষিপ্ত তরজমা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা, প্রবন্ধ, ছড়া, কবিতা, কৌতুক ইত্যাদি। যাদের উপর বিভিন্ন দায়িত্ব ইতোমধ্যেই অর্পিত হয়েছে তারা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অন্যরাও লেখা পোস্ট করুন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানবো, স্মৃতিচারণ করবো, সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবে রূপদানের প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাব।
এই কর্মসূচীর উদ্যোক্তা আমাদের সবার প্রিয় ব্লগার ভাই 'প্যারিস থেকে আমি'। আর পরিচালনায় আমি 'গাজী সালাউদ্দিন'। সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
আপনারা শিরোনামে দেখতে পাচ্ছেন, এক পোস্টেই সকল পোস্ট। হ্যাঁ, মন্তব্যের ঘরে আপনাদের সকলের পোস্ট একটি পোস্টে অন্তর্ভূক্ত করা হবে আপনার নামসহ। তাহলে আর দেরি কেন, চলুন প্রোগ্রাম শুরু করা যাক।
শুরুতেই কুরআন মাজীদ থেকে সরল অনুবাদ-
[bসূরা আলে-ইমরান ২৬-২৭'
ব্লগার মাহবুবা সুলতানা লায়লা [/b]
قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء وَتُعِزّ مَن تَشَاء وَتُذِلُّ مَن تَشَاء بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।
تُولِجُ اللَّيْلَ فِي الْنَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الَمَيَّتَ مِنَ الْحَيِّ وَتَرْزُقُ مَن تَشَاء بِغَيْرِ حِسَابٍ
তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন এবং মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। আর তুমিই যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান কর।
'উদ্বোধনী ভাষণ'
ব্লগার শেখের পোলা
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহে অ বারাকাতুহু,
এ মহতি সভার মাননীয় উদ্যোক্তা, মডারেটর, উপস্থিত ব্লগীয় মহা সম্মানিত ভাই ও বোনেরা, এবং আমার স্নেহাষ্পদ ভাতিজা ও ভাতিজীরা, সেই সঙ্গে পরিচয়হীন অসংখ্য পরিভ্রাজকগণ, সবাইকে জানাই স্বাধীনতার মাসে উষ্ণ শুভেচ্ছা৷
স্বাধীনতা একটি চির কাঙ্খিত বস্তু৷ স্বাধীনতার পরিপূর্ণ সংজ্ঞা আমরা না বুঝলেও সকলেই তা চাই৷ অতীতে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা ইসলামী স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে একটা ভূ-খণ্ড পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা তাতে সফলতা আনতে অপারগ হওয়ায় ও পারষ্পরিক বৈষম্য দূর করার প্রয়োজনে বা পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পূণরায় সংগ্রাম শুরু করে ও পার্শবর্তী দেশের সহযোগিতায় তা অর্জন করি, যার জন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, মহল বিশেষের দূরদৃষ্টির অভাবে আমাদের সেই কাঙ্খিত বস্তু আজও জিজ্ঞাসার চিহ্নের আবর্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে৷ যাই হোক আশার ভেলায় ভর করেই আমরা সেই স্বাধীনতার জন্মদিনের আলোচনায় একত্রিত হয়েছি৷
সম্মানিত বিজ্ঞ ব্লগার গাজী সালাহউদ্দীন সাহেবকে সভা পরিচালনার কাজ শুরু করতে অনুরোধের সাথেই শেষ করছি৷ ধন্যবাদ৷
'প্রবাসে স্বাধীনতা দিবস'
ব্লগার প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন
দেশকে পরিচিত করানোর জন্য প্রবাসে দেশের বিভিন্ন দিবস উদযাপন অন্যতম মাধ্যম। এছাড়া দেশের ইতিহাস জেনে রাখার জন্য বা জানান দেওয়ার জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ দিবসে অনুষ্ঠান করা জরুরি। বিশেষ করে প্রবাসী শিশুদের নিজ দেশ সম্পর্কে জানান দেওয়া অতীব জরুরী। আর সে ক্ষেত্রে জাতীয়প দিবসসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রবাসে স্বাধীনতা দিবস পালনের ক্ষেত্রে এ্যাম্বাসি এবং কনস্যুলেট অফিস নিরাপদ। প্রবাসে কমিউনিটি থেকে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। প্রবাসে শত শত কমিউনিটি রয়েছে আর সবাই নিজের করে পালন করে জাতীয় দিবস। পার্ক-রেস্তুরা -অডিটোরিয়াম যে যেভাবে পারছেন, পালন করে আসছেন স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা দিবসে শিশুদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। বিনোদনমূলক অনেক কিছুই থাকে।
কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে, দেশের মত প্রবাসেও দেশীয় সংস্কৃতির পরিবর্তে, সঠিক ইতিহাসের পরিবর্তে সরকার দলীয় সংস্কৃতি এবং ইতিহাস প্রচার করা হয়। দেশের মত ইতিহাস বিকৃতির গল্প শোনানো হয়।
সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় হচ্ছে, বিদেশী গান পরিবেশন করা হয় অনেক সময়। দেশের ইতিহাস বিকৃতি করে নতুন প্রজন্মকে যেমনটা দেশে ধোকা দেওয়া হচ্ছে, তেমনটা প্রবাসেও।
'মিছে এক স্বাধীনতা'
ব্লগার প্যারিস থেকে আমি
স্বাধীনতা তুমি দুঃস্বপ্ন বাবার মায়ের ছেড়া বস্ত্র
তুমি এখন দেশ গড়া নয় রাজনীতিরই অস্ত্র।
-
ছাত্রের হাতে পিস্তল তুমি রক্তে ভেজা ক্যাম্পাস
মানুষ গড়ার কারখানাটা আজ হয়েছে শুধুই ত্রাস।
-
মন্ত্রী এমপি আমলাদের তুমি পকেটভর্তি টাকা
রাজনীতির ঐ ভাষণ তুমি সকল বুলি ফাঁকা।
-
মধ্যরাতের টকশো তুমি জীবিকা বুদ্ধিজীবির
টিভি পত্রিকার খবর তুমি আহার সাংবাদিকের।
-
সুদ-ঘুষ স্বজনপ্রীতি তুমি দুর্নীতি প্রশাসনের
পুলিশের হাতের লাঠি তুমি বেচা-কেনা আইনের।
-
আদালতের কাঠগড়ায় তুমি হাহাকার মজলুমের
ক্ষমতাবানদের অস্ত্র তুমি সেরা অস্ত্র জুলুমের।
-
জেলখানার ভেতরে তুমি কান্না নতুন শিশুর
কিংবা আবার পরীক্ষায় সেরা যুবা তরুণ কিশোর।
-
সীমান্তে তুমি ঝুলন্ত লাশ যুবকের উলঙ্গ টর্চার
তুমি এখন বিজেপি সৈনিক নয় সাহসী বিডিয়ার।
-
ব্যবসায়ীদের বোবা কান্না তুমি চাঁদাবাজ সন্ত্রাস
দিন দুপুরে রাজপথে তুমি বিশ্বজিতের কুপিত লাশ।
-
কাবাব হওয়া একরাম তুমি বস্তাভরা লাশ নদীর
এমনতর স্বাধীনতায় আজ আমরা বোবা বধির।
-
রাজার হাতের মোয়া তুমি প্রজার লোভাতুর চোখ
গডফাদারের নেয়ামক শক্তি সাধারণের দুঃখ।
-
নির্যাতিত সম্পাদক তুমি টিভি দিগন্ত আমারদেশ
একাত্তরে পেলেও তোমায় পরাধীনতার কাটেনি রেশ।
-
ক্ষমতার পালাবদল তুমি ক্ষমতাবানের আশ্বাস
পয়তাল্লিশ পেরিয়ে গেলেও বাংলার কাটেনি দীর্ঘশ্বাস।
'স্বাধীনতা বনাম পরাধীনতা'
ব্লগার আবু জান্নাত
যদিও মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, দেখিনি মাজলুমের ফরিয়াদ ও জালিমের উল্লাস, তবুও শুনেছি, জেনেছি বড়দের কাছ থেকে, কিভাবে কি হয়েছিল।
ইংরেজ শাসনের শেষ লগ্নে অনেক চড়াই উৎরাইয়ের পর ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশকে তারা ধর্মীয় ভিত্তিতে দুটি ভাগ করে গেলেন। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠের কারণে 'ভারত' আর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের কারণে পাকিস্তান। পুর্ব বাংলাকেও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের কারণে পাকিস্তানের সাথেই থাকতে হলো, যদিও মূল পাকিস্তান থেকে দূর বহুদূর। তবুও বড়ভাই ও ছোট ভাইয়ের মত পশ্চিম পাকিস্তান আর পূর্ব পাকিস্তান হয়ে কিছু দিন ভালই কাটলো।
দু-কূলে পাকিস্তান হওয়ায় ভারতবাসী হিংসুটে হিন্দুদের ঘুম হারাম হয়ে গেল। ইসরাইলী চক্ষু নিয়ে সর্বদা দু'পাকিস্তানকে টুকরো করার জন্য উঠে পড়ে লাগলো।
কিন্তু ভাইদের মাঝেতো পৃথক করা সম্ভব নয় যদি হিংসুটে রমণী জোগার না করা যায়। নিয়ম অনুযায়ী কিছু দালালও নিয়েজিত করলো।
বিভিন্ন ইস্যুতে দু'পাকিস্তানে অনেক আন্দোলন, অনেক দাবী-দাওয়া ইত্যাদি পার হতে লাগলো। সময়ও তার গতিতে চলতে লাগলো। আরামে খেতে থাকলে নাকি গায়ে চর্বি জমে যায়। পশ্চিম পাকিস্তানেরও তাই হলো। পূর্বদের উপর ছোটখাটো জুলুম অত্যাচার শুরু করলো।
এদিকে হিংসুটে হিন্দুরা তিলকে তাল বানিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের নেতা-নেত্রীদের উস্কে দিতে থাকলো। আর একথাও বুঝিয়ে দিল যে, তোমরা গোলামীর শিকল পরে আছ। পশ্চিমারা তোমার মুনিব, তাই নিজেদের মুক্ত করতে এখনই আন্দোলনে নেমে পড়ো।
বাঙ্গালী জাতি এমনিতেই হুজুগে। ঢোলের বাড়িতে শুরু করলো পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন। এতেই পাকিস্তানী বাহিনী বাড়িয়ে দিল জুলুম অত্যাচার। অতঃপর কেন্দ্রিয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও পূর্ব পাকিস্তানের ব্যক্তিকে ক্ষমতা না দেওয়ার চূড়ান্ত যুদ্ধে রূপ নেয়। লক্ষাধিক তাজা প্রাণের বিনিময় এদেশ মক্ত হয়েছে ঠিক, কিন্তু বাঙ্গালী জাতিকে আবারো আবদ্ধ হতে হলো ভারতের গোলামীতে।
কতটুকু গোলামিতে নিমজ্জিত বাঙ্গালী জাতি, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রাষ্ট্র প্রধান থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তাদের দিকে তাকালেই বুঝা যায়, দেশতো স্বাধীন হয়নি বরং মুনিবের বদল হয়েছে।
নতুন মুনিবদের চামচামি করে খুশি রাখলেই ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হয়। যাক না দেশ রসাতলে তাতে কি! মরুক না জনগণ কাটাতারে তারে, তাতে কি! ধর্ষিতা হোক না আমার বোন তাতে কি! লুটপাট হোক না রাজকোষ তাতে কি! প্রশাসনে জেঁকে বসুক হিন্দু শকুনরা, তাতে কি! ফাঁসিতে ঝুলুক মজলুম, তাতে কি! রাতের আঁধারে চলুক গণহত্যা, তাতে কি!
প্রকৃত স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজন আরেকটি যুদ্ধ। কথা লম্বা হয়ে যাচ্ছে। হায়রে স্বাধীণতা! তুমি আজ চেতনা ব্যাপারিদের হাতিয়ার....................
'দেশ বিভাগ, স্বপ্ন-ভঙ্গ ও বাংলাদেশ'
ব্লগার তটরেখা
ছেলে বেলায় স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারী এলে তা উদযাপনে নানা ভাবে ব্যস্ত থাকতাম। দেয়াল পত্রিকা বের করা, কবিতা লিখা, কবিতা আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদী ছিল আনন্দ ও অনুপ্রেরণার উৎস্। পরবর্তীতে পরিণত বয়সে স্বাধীনতা নিয়ে কিছু লিখা বা বলা তেমন কিছুই হয়নি, তার একটি কারণ পেশাগত ব্যস্ততা। তবে বড় কারণ, সার্বজনীন স্বাধীনতা কারো কারো ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হওয়া, এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক মেরুকরণ। রাজনীতির সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই, তাই এই বিষয়ে নির্মোহ বিশ্লেষণ কোনো পক্ষকেই সন্তষ্ট করতে পারবেনা।
তবে আজ এক ভাই এর অনুরোধে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস, যা ক্ষুদ্র পরিসরেই সংক্ষিপ্ত করার তাগাদা আছে। আমি যেহেতু মুসলমান, তাই ইসলামই হবে আমার আলোচনার মানদণ্ড।
পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা আল্লামা ইকবালের প্রস্তাবনায় এই বাংলার কোনো অস্তিত্ব ছিলোনা। পাঞ্জাব, আফগানিস্তান ( উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ), কাশ্মীর ও বেলুচিস্তান এই নিয়ে তিনি পাকিস্তান নামকরণ করেন। ইকবালের আক্বীদাগত বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তিনি “Reconstruction of religious thought of Islam” নামে বই লিখেছিলেন। ইসলামের নির্মাণ ও তার পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়েছে আল্লাহর ওহীর আলোকে, রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর হাতে। এই ইসলামের ধ্যান-ধারণা কে ভেঙ্গে পুণর্নির্মান করার অধিকার কারো নেই।
মুসলিম লীগের জন্ম পূর্ব বঙ্গের মানুষের হাতে হলেও, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের নেতৃত্ব চলে আসে পরবর্তীতে কংগ্রেস থেকে আগত ইসমাইলিয়া শিয়া ধর্মালম্বী মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর হাতে। যিনি বিয়ে করেছিলেন একজন অগ্নি উপাসক পার্সী মহিলাকে এবং তাদের সন্তান সন্ততি পরবর্তীতে পার্সী ধর্মের অনুসারী হয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা ছিল এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর প্রাণের দাবী। কারণ তারা উচ্চ-বর্ণের হিন্দুদের দ্বারা সামাজিক ভাবে এমন ভাবে নির্যাতিত বা নিষ্পেষিত ছিলেন যে, একটি পৃথক মুসলমান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছিল। তাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন তাদের আশান্বিত করেছিল, তারা ইসলামের সাম্য ও ন্যায় বিচারের নীতির ভিত্তিতে সমাজ ও রাস্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই প্রকৃতির অসংখ্য মানুষের মধ্যে ছিলেন অনেক তরুণ, যুবা, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ, এদেরই একজন ছিলেন হুমায়ুন আহমেদের নানা।
বিলেতি ধ্যান-ধারণায় লালিত নেতৃ বৃন্দের হাতে যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, তা তারা কিছুদিনের মধ্যেই উপলব্ধি করেন। বিশেষ করে পাকিস্তানের হুইস্কি পায়ী জেনারেলদের হাতে ব্যাপারটি আরো খারাপ রূপ পরিগ্রহ করে।
প্রকৃত পক্ষে ইতিহাসের কোথাও শিয়া-সুন্নী মিলিত ভাবে ইসলামী শাসন ব্যাবস্থার নজীর নেই। আর এটা সম্ভবও নয়, কারণ উভয়ে বিশাসের দুই মেরুতে অবস্থান করেন। আর এর মধ্যে শুরু হয় নতুন ধরণের জুলুম নির্যাতন আর শোষণ।
মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ হতে সময় লাগেনি। কিন্তু এর মধ্যে অনেক প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ রয়েছে যারা তখনো পাকিস্তান কাঠামোর মধ্য থেকেই পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতেন।
এরই মধ্যে ১৯৭০ সালের সাধারন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ, সময়ের পরিক্রমায় ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। যা এ জাতিকে এমন একটা অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়, যেখান থেকে আর ফিরে আসার আর কোন উপায় ছিলনা (Point of no return)।
আপামর জনসাধারণ অস্ত্র হাতে তুলে নেয় প্রতিরোধ সংগ্রামে, যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ বলি। জনসাধারণের এই প্রতিরোধে সেদিন ইসলাম বিরোধী চেতনা কাজ করেনি। চেতনা ছিল নিজেদের আত্মরক্ষা ও পাকিস্তানের ভন্ড শাসক গোষ্ঠীর হাত হতে নিস্কৃতি লাভ করে, নিজেদের স্বাধীন আবাস ভূমি গঠন করা।
প্রকৃতপক্ষে ভারতের দুই প্রান্ত অবস্থিত দুই পাকিস্তানের এক থাকা কখনোই সম্ভব ছিলোনা।
জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে, ইসলাম পন্থী রাজনীতিবিদদের একটি বড় অংশ এমন একটি ভুল করে বসেন, যার প্রভাব সুদূর প্রসারী।
প্রথমত ইসলামে যখন দুই গ্রুপ মুসলমানের মধ্যে বিবাদ হবে, তখন তাদের একত্রিত করে ন্যায় ভিত্তিক মিমাংসা করে দেয়া অপর মুসলমানের জন্য কর্তব্য। যদি তাদের একটি পক্ষ মিমাংসার পরেও সীমা লংঘন করেন, তাহলে সকল মুসলমান একত্রিত হয়ে সীমা লঙ্ঘনকারীকে প্রতিহত করবে।
দ্বিতীয়ত মজলুমের অধিকার আছে, নিজের জান-মালের রক্ষার, এক্ষেত্রে একজন মুসলমান মজলুমের পাশে দাঁড়াবে, এবং জালিমকে জুলুম থেকে নিবৃত্ত করবে।
উভয় ক্ষেত্রেই ইসলামপন্থী নেতৃত্ব সঠিক অবস্থান গ্রহণে ব্যর্থ হন। তবে এটা ইসলামের ব্যর্থতা নয়।
পাকিস্তান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যর্থ হওয়ার জন্য কখনো ইসলাম দায়ী ছিলোনা। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষী একটি শ্রেণী এটাকেই পুঁজি করেন। ১৯৭২ সালে ভারত ও রাশিয়ার প্রভাবে ধর্ম-নিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মুলনীতি হিসাবে গ্রহণ করা হয়। বামপন্থি, নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষী চক্রটি এখনো ইসলামের বিরূদ্ধে তৎপর।
হুমায়ুন আহমেদের নানা ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির মেম্বার ছিলেন। হুমায়ুন আহমেদ তার এক বই এ লিখেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর মিশ্র অনুভূতি রয়েছে। তার বাবা মুক্তিযুদ্ধে নিহত হয়েছেন, অপরদিকে তার প্রিয় নানা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি তার নানার পক্ষে এই বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন যে, তারা ব্রিটিশ আমলে বর্ণ হিন্দুদের নিপীড়নে মসজিদের আজানও অনেক সময় দিতে পারতেননা। তাই তারা পাকিস্তান চেয়েছিলেন। কিন্তু যখন নিজেদের চোখের সামনে তাদের হাতে গড়া পাকিস্তান ভেঙ্গে যাচ্ছে, সেটা তারা সহ্য করতে পারেননি, তাই তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন।
যে নেতৃত্ব এই উভয় পক্ষের আবেগকে বুঝতে পারবেন এবং ইসলামকে আলোকবর্তিকা হিসাবে সাথে নেবেন, তারাই সফলকাম হবেন এবং সম্মুখে এগিয়ে যাবেন।
পরিশেষে স্বাধীনতা যুদ্ধের অগণিত নারী-পুরুষ যারা আত্নাহুতি দিয়েছেন, তাদের রূহের মাগফিরাত কামণা করছি।
'স্বাধীনতা বিষয়ক কৌতুক'
ব্লগার এলিট
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই আয়োজন করার জন্য এবং আমার মতন ক্ষুদ্র একজনকে মনে রাখবার জন্য আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ এবং সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
এমন অনেক বড় ব্লগার আছেন এই ব্লগে যে তাদের সামনে লিখতেই ভয় লাগে। তাছাড়া আমি সাহস করে যা দু-এক কলম লিখি তার সবই বিভিন্ন তথ্যমুলক। নিজে থেকে কাহিনী বা ঘটনা সৃস্টি করা, শব্দের মায়াজালে সুন্দর বর্ননা করা – এসবের সাধ্য আমার নেই। এটা জেনে বুঝেই হয়ত আমাকে কৌতুক লিখতে বলা হয়েছে, যা বানিয়ে লিখতে হয় না, সংগ্রহ করতে হয়। আমি চেস্টাও করেছি কৌতুক সংগ্রহের।
কিন্তু সমস্যাটা হল – স্বাধীনতা দিবস। এই বিষয়ে জ্বালাময়ী গল্প, কবিতা, ইতিহাস, উপন্যাস, বক্তব্য, সবই পাওয়া যায়। কিন্তু কৌতুক পাওয়া যায় না। আমাদের মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে তো কৌতুক নেই বললেই চলে। কিন্তু তাতে কি হয়েছে, গরু রচনার ভেতরে নদী রচনা ঢুকিয়ে, জোডাতালি দিয়ে কয়েকটি কৌতুক দাড় করিয়েছি। ।
- স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে সবাই তাদের বীরত্বের কাহিনী বলাবলি করছিল। এমনই এক আলোচনায় একজন বলল, আমি এক পাকিস্তানী সৈন্যের পা কেটে দিয়েছি। আরেকজন বলল, আমি একজন রাজাকারের হাত কেটে দিয়েছি। এসব শুনে অন্যেরা জিজ্ঞেস করল, তোরা দুজনের কেউই গলা কাটতে পারলি না? দুজনেই উত্তর দিল, কিভাবে কাটব? গলা তো আগেই কাটা ছিল।
- এক রাজাকার পরিবারের একজন ছেলে মুক্তি বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এটা ওই পরিবারের জন্য বড়ই অপমান জনক। রাজাকার বাবা, মুক্তিযোদ্ধা ছেলেকে ঘাড় ধরে উঠানের মাঝে নিয়ে এসে বলছে –তোর মত ছেলের বাবার আত্মহত্যা করা উচিত। এই বলে লোকটি নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকালো। ছেলেটি বলছে, বাবা আপনি আত্মহত্যা করবেন না। বাবার উত্তর “চুপ কর হতভাগা। এর পরের গুলিটা তোকে করব”।
- পাকিস্থানী সেনা অফিসারদের স্ত্রী যারা পাকিস্থানে অবস্থান করছিল তারা স্বভাবত কারনেই একটা মানষিক অশান্তির মধ্যে থাকতো। স্বামী, অন্য নারী নিয়ে রঙ্গলীলায় মত্ত এটা নিশ্চয়ই স্ত্রীর জন্য সুখকর নয়। এমনই এক স্ত্রী পাকিস্থান থেকে ফোন করেছে স্বামীর অবস্থা জানতে।
মহিলাঃ হ্যাল, কে বলছ, আসলাম?
কন্ঠঃ না, আমি নতুন কাজের ছেলে, মদন।
মহিলাঃ আচ্ছা, তোমার সাহেবকে দাও।
মদনঃ সাহেব এখন ব্যাস্ত
মহিলাঃ ব্যাস্ত মানে, কোথায় সে?
মদনঃ আজ্ঞে, তিনি তিনজন মেয়েকে ধরে নিয়ে এসে এইমাত্র রুমে ঢুকেছেন
মহিলাঃ আচ্ছা, তাই বুঝি, দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা। এই মদন, তোমাকে অনেক টাকা দিব, একটা কাজ করতে পারব? এক্ষুনি, বন্দুক নিয়ে তোমার সাহেবকে একেবারে যায়গামতন গুলি করতে পারবে?
মদনঃ সত্যই টাকা দিবেন? আচ্ছা দাঁড়ান, লাইনে থাকেন।
(এর পরে গুলি আর চিৎকার এর শব্দ পাওয়া গেল। মদন ফিরে এসে আবার ফোন ধরল)
মদনঃ হ্যা, ম্যাডাম একেবারে যায়গা মতন গুলি করেছি , স্যার মারা গেছেন
মহিলাঃ খুব ভালো, এবার তার লাশটা পেছনের সুমিং পুলে ফেলে দাও
মদনঃ এই বাড়িতে তো কোন সুমিং পুল নেই ম্যাডাম
মহিলাঃ হ্যা, বল কি? এটা কত নম্বর বাড়ি? এর ফোন নম্বর কত?
- পাকিস্থানের সেনারা তো নারীভোগ করে অস্থির। এক পর্যায়ে এই নিয়ে গবেষনা শুরু হল। দুজন উচ্চ পদস্থ অফিসার বলাবলি এ নিয়ে আলোচনা করছে। একজন বলছে সেক্স খুব আনন্দের, আরকজন বলছে না, এতে শারিরিক পরিশ্রমই বেশী। এই নিয়ে তাদের বিতর্ক তুঙ্গে। বিতর্ক দেখে একজন রাজাকার এগিয়ে এলো।, বলল, হুজুর, কি হয়ছে? ওরা একই প্রশ্ন রাজাকারকে জিজ্ঞেস করে বলল – এবার তুমিই বল কোনটা সঠিক। রাজাকার কিছুক্ষন ভেবে উত্তর দিল, স্যার – সেক্স পুরোটাই আনন্দের, একটুও কস্ট নেই। ওরা জিজ্ঞেস করল, সেটা কিভাবে? রাজাকার উত্তর দিল, কস্টের কাজ হলে তো সবসময় আমাগো দিয়াই করাইতেন, নিজে কখনো করতেন না।
- এক গ্রামে পাকিস্থানের সৈন্যের একটা গ্রুপ প্রতি সপ্তাহে মোরগ লড়াই দেখতে চাইতো। এজন্য তাদের ক্যাম্পেই এর আয়োজন হোত। মোরগ লড়াই দেখায় যে তার ছোট ছেলেটিকে নিয়ে পাকিস্থানী সেনারা মজা করে। একটি ৫০ পয়সা ও একটি এক টাকার নোট পাশাপাশি রেখে ছেলেটিকে বলে – কোনটা নিবে? ছেলেটি ৫০ পয়সা নিয়ে দৌড় দেয়। এভাবে মজা করতে করতেই ছেলেটি ক্যাম্পে পরিচিত হয়ে গেল। নতুন কোন অফিসার ওখানে এলেই তাকে ছেলেটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। বলে যে এটা আস্ত এক গাধা। বড়টা রেখে ছোট টাকাটা নিয়ে দৌড় দেয়। নিজের ছেলের নাম গাধা শুনে ছেলের বাবা খুবই আহত হল। ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কি আসলেই টাকা ছোট বড় চিন না? ছেলেটি বলল, চিনি। তাহলে কেন সবসময় ছোট টাকাটি বেছে নাও? ছেলেটি উত্তর দিল – এটা করি বলেই তো ওদের কাছে আমার এত কদর। দেখছো না, ওদেরকে বোকা বানিয়ে কত টাকা নিয়ে নিয়েছি।
- যুদ্ধের শেষের দিকে, দুইজন পাক সেনা আর একজন রাজাকার একসাথে পালিয়ে এক নদীর চরে আটকা পড়ে গেল। হটাত তারা একটা পুরাতন বোতল দেখতে পেল। সেই পুরাতন বোতল খুলতেই বেরিয়ে এলো বোতলের দৈত্য। দৈত্য বলল, এই বোতলের ভেতরে হাজার বছরের বন্দীদশা থেকে তোমরা তিনজন আমাকে মুক্ত করেছ। তোমাদের প্রত্যেকেরই একটি করে ইচ্ছা পুরন করা হবে।
১ম পাক সেনাঃ আমরা এখন খুব অসহায় অবস্থায় আছি। যুদ্ধের দরকার নেই, আমি পাকিস্থানে ফিরে যেতে চাই। (সঙ্গে সঙ্গে এক তুড়িতেই তাকে পাকিস্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।)
২য় পাক সেনাঃ আমিও পাকিস্তানে যাতে চাই। (যাদু দিয়ে করে তাকেও পাঠিয়ে দেওয়া হল)
রাজাকারঃ ওরে বাবা, আমি লোকালয়ে গেলে মানুষ আমাকে মেরে ফেলবে, আর এখানে একা একা আমি থাকতেও পারব না। ওদের দুজনকে ফিরিয়ে নিয়ে এস।
- কয়েকজন পাক সেনা আর একজন রাজাকার একটা গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে গেছে। চাবিও পাওয়া যাচ্ছে না খুলতেও পারছে না। এখন বের হবে কিভাবে? একেকজন একেক বুদ্ধি দিচ্ছে। কেউ বলছে, সামনে কাচ ভেঙ্গে বের হবে, কেউ বলছে ইঞ্জিন ভেঙ্গে বের হবে, কেউ বলছে দরজা ভেঙ্গে বের হবে। এত কিছু শুনে, রাজাকারটি বলে উঠল – আরে ভাই যা করার তারাতারি করেন। বৃস্টি শুরু হচ্ছে, ভিজে যেতে হবে, গাড়ির ছাদ নাই।
- পাক সেনার দুস্টু ছেলেকে কে যেন শিখিয়ে দিয়েছে, বড়দের কাছে সব সময় গোপন কথা থাকে। কাজেই সেটা তুমি যেনে গেছো, এই ভয় দেখালে তারা তোমাকে টাকা দিবে। ছেলেটি বাবাকে গিয়ে বলল, বাবা আমি তোমার গোপন কথা জেনে গেছি। বাবা তাকে ধমক দিলেন বটে কিন্তু চক্লেট কেনার কেনার জন্য ১০ টাকা দিলেন। এরপরে ছেলেটি মাকে গিয়ে একই কথা বলল। মা তাকে চুপ চুপ বলে হাতে ২০ টাকা ধরিয়ে দিল। ছেলেটি তো মহা খুশি। কৌশলে ভালো কাজ হচ্ছে। ঠিক সেই সময় দুধওয়ালা এলো। ছেলেটড়ি তাকে দেখে বলল – আমি তোমার গোপন কথা জানি। দুধওয়ালা আবেগপ্রবন হয়ে বলল, হ্যা, জেনে গেছিস। আয় বাবা, তোর আসল বাবার বুকে আয়।
- মুক্তিযোদ্ধারা দুইজন রাজাকারকে নৌকায় করে নিয়ে যাচ্ছিল। রাজাকারেরা তো অনেক সম্পদ কামিয়েছে। তাই তাদেরকে ছেড়ে দেবার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদেরকে টাকার লোভ দেখালো। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা কিছুতেই তাদেরকে ছাড়বে না। শেষে এক পর্যায়ে শেষ চেস্টা হিসাবে তারা তাদের টাকার বাহার দেখাতে লাগল। একজনের তার দামী চশমাটা নদীতে ফেলে দিয়ে বলল, এমন চশমা আমার অনেক আছে। আরেকজন তার দামী ঘড়িটি ফেলে দিয়ে বলল, এমন ঘডি আমার অনেক আছে। এই দেখে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার দুইটাকে হাত পা বেধে নদিতে ফেলে দিতে দিতে বলল – বিশ্বাসঘাতক আমাদের অনেক আছে।
- বাংলাদেশের একজন নেতা নরকের গেটে গিয়েই হইচই শুরু করে দিলেন। তার সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে, প্রহসনের রায় হয়েছে, ইত্যাদি বলতে লাগলেন। নরকের প্রহরীরা বলল, আপনার রায়টি পুনঃবিবেচনার পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুতই সেটা আমাদের হাতে আসবে। এর আগ পর্যন্ত আপনাকে এখানেই থাকতে হবে। কি আর করবে, নেতা নরকের ভেতরে ঢুকলেন। ভেতরে দেখলেন কি সুন্দর পরিবেশ। ফুল, পাখি, ঝরনা, খাবার,নারী, আনন্দ সবই আছে এখানে। তাহলে কি তাকে ভুল করে স্বর্গে পাঠানো হয়েছে? না, ভুল হতে পারে না, হয়ত ইচ্ছে করেই তাকে স্বর্গে পাঠানো হয়েছে আর প্রথমে মজা করে একটু ভয় দেওয়া হয়েছে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, সেখানেই থাকবেন। এর মধ্যে, মুল গেট হতে, নেতার ডাক এলো। বলা হল, আপনার রায়ের ফলাফল চলে এসেছে। তাকে থামিয়ে দিয়ে নেতা বললেন, ওসবের দরকার নেই, আমি এখানেই থাকব। ও আচ্ছা, বলে নরকের প্রহরী হলে গেল। নেতা আবার ভেতরে প্রবেশ করলেন। ভেতরে গিয়ে দেখেন, সেটা যেন অন্য এক যায়গা, চারিদিকে ঘন কালো মেঘ, আগুনের ঝড় বইছে, বড় দৈত্য আগুনের মুগুর নিয়ে সবাইকে তাড়া করছে। নেতা দৌড়ে আবার গেটে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এক মিনিট আগেও তো এখানে সবকিছু সুন্দর দেখেছি, এখন এমন কেন হল? নরকের প্রহরী বলল, ওটা ছিল “স্বপ্ন”। তার মানে? নেতা জিজ্ঞেস করল। নরকের প্রহরী বললেন, তোমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের আগে এক রকম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছ আর পরে বাংলাদেশকে বানিয়েছ আরেক রকম। আমরাও তেমন করলাম।
'আমাদের স্বাধীনতা-আমার ভাবনা'
ব্লগার ইশতিয়াক আহমেদ
মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তার নাম হল স্বাধীনতা। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার চার দশকেরও বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও আজও আমরা পাইনি প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ।
স্বাধীনতা মানে হল বাধাহীনভাবে চলতে পারা , বলতে পারা, লিখতে পারা, মত প্রকাশের সুযোগ পাওয়া ও মৌলিক সব অধিকারগুলোর সুবিধা ভোগ করতে পারা। কিন্তু আজকে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারিনা। বাধাহীনভাবে বলতে পারিনা। স্বাধীন হয়ে লিখতে পারিনা।
পাক গোলামীর জিন্জির ভেঙ্গে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান লাভ করে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
লাখো শহীদের রক্ত ও হাজারো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, লাল সবুজের পতাকা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও কি আমরা পেয়েছি প্রকৃত স্বাধীনতা?
আমরা তো চেয়েছিলাম একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। যার ওপর থাকবে না কারো কর্তৃত্ব। একে অন্যের উপর করবে না কোন অত্যাচার। পরস্পরের মাঝে ঘটবে না কোনো রক্তপাত। দেশে হবে না খুন, হত্যা,গুম , ধর্ষণ। কিন্তু এসব আজ অহরহ ঘটছে। তাহলে আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে কি পেলাম?
স্বাধীনতার অর্থ তো এটা নয় যে, কেউ সুরম্য অট্টালিকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঘুমাবে আর কেউ অনাহারে বিবস্ত্র হয়ে বাসস্থানের অভাবে ফুটপাতে মানবেতর জীবন কাটাবে !
মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী কিছু লোকের সুখ ও ঐশ্বর্যকে কোন দেশ বা জাতির স্বাধীনতা বলা যায় না।
স্বাধীনতা প্রতিটি জাতির জন্য সম্মান ও গৌরবের বিষয়। তবে স্বাধীনতার ফল যদি স্বাধীন দেশের মানুষ ভোগ না করতে পারে , তখন তা হয় অত্যন্ত বেদনা ও দুঃখের।
আমাদের স্বাধীনতা এক সাগর রক্ত আর অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। তাই তার মূল্য অনেক।
কবি শেখ ফজলুল করিম বলেন-
স্বাধীনতা স্পর্শমণি সবাই ভালোবাসে
সুখের আলো জ্বালে বুকে দুঃখের ছায়া নাশে,
স্বাধীনতা সোনার কাঠি,খোদার সুধা দান
স্পর্শে তাহার নেচে ওঠে শূণ্য দেহে প্রাণ।
বায়ান্ন আর একাত্তরে আমরা ভাষার জন্য লড়েছি,দেশের জন্য মরেছি। একসময় গাদ্দারের হাজার অপচেষ্টার পরও বাংলার পূর্বাকাশে উদিত হয়েছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য। বাংলার মানুষ দেখা পেয়েছিল নতুন ভোরের।
কিন্তু জালিমের নির্মম ছোবল থেকে দেশকে বাঁচানোর গৌরব আজ চাপা পড়ে গেছে শত মাজলুমের আহাজারি আর আর্তচিৎকারের নিচে।
তবুও তারা আশার আলো দেখার প্রতিক্ষা করছে। বাংলার অজস্র নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ উষাপানে তাকিয়ে আছে - অশ্রুসজল চোখ নিয়ে এবং বেদনাহত বুক নিয়ে সুবহে সাদেকের অপেক্ষায়য়তার নাম হল স্বাধীনতা। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার চার দশকেরও বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও আজও আমরা পাইনি প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ।
'তিক্ত জ্বালা'
ব্লগার আবু তাহের মিয়াজী
স্বাধীনতা আমার গ্রীষ্মকালের শীতল বৃষ্টিপাতা
সোহাগ করা আমার মায়ের শীতের নকশী কাঁথা
স্বাধীনতা আমার বাগানের গোলাপ ছড়ানো ঘ্রাণ
স্বাধীনতা মানে দুঃখী মানুষেরা জুড়াইবে প্রাণ।
স্বাধীনতা মানে কৃষক চাষির হাসি মাখা মুখ
ধনী-গরীব জেলে-তাতির রঙিলা সুখ।
স্বাধীনতা আমার লাল পতাকা রক্ত ঝরানো স্মৃতি
একাত্তরের মুক্তি-লড়াই সকল শহীদের কৃতি।
স্বাধীনতা মানে ভোরের পাখির কিচিরমিচির ডাক।
স্বাধীনতা মানে হৃদয় জুড়ে সেই স্মৃতি থাক।
স্বপ্ন গুলো বুকে পোষে নয়ন জোড়ে আশা
তিক্ত জ্বালা দেখতে চাইনা দেশের সর্বনাশা।
'বুকে স্বাধীনতার হাহাকার'
ব্লগার নূর আয়শা আব্দুর রহিম
স্বাধীন হয়েছি ৭১এ
সাক্ষী বাংলার পথ প্রান্তর,
স্বাধীনতার জন্য প্রিয়জন হারিয়ে
শোকে ভেসে ছিলো অগনিত অন্তর।
স্বাধীন ভাবে বলে স্বাধীন-
ভাবে চলার ছিলো অঙ্গিকার,
আজ আমরা স্বাধীন, আছে স্বাধীন পতাকা
নামে স্বাধীন বুকে স্বাধীনতার হাহাকার!
সময়ের পরিক্রমায় স্বাধীনতার স্বাদ
অনুভব করা যায় ছোঁয়া যায়না,
বুড়ো, যুব, শিশুর মাঝেও আছে
স্বাধীন অধিকার একমাত্র কান্না।
কান্নার স্বাধীনতা চাইনা
চাই হূদয় উদ্ভেলিত হাসির স্বাধীনতা,
কেন থাকবে হিংসা বিদ্ধেষ
পাড়া প্রতিবেশীদের মনে ব্যথা?
স্বদেশকে এগিয়ে নিতে হিংসা-
বিদ্ধেষ ত্যাগ করা একান্ত প্রয়োজন,
সুস্থ চিন্তার মাধ্যমে সবার স্বাধীনতা
নিশ্চিত করার জন্য চাই নিবেদিত প্রাণ।
সবার মাঝে সামাজিক ভাবে
ফিরে এলে নৈতিক স্বাধীনতা,
সমাজ হবে সুস্থ, মানুষের মাঝে
ফিরবে আন্তরিকতা মায়া মমতা।
আন্তরিকতা মায়া মমতাই তৈরি
করে দেবে স্বাধীনতার মূল চরিত্র,
স্বদেশকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলার জন্য
একতা চাই একতা, নেই অন্য কোন মন্ত্র।
'স্বাধীনতা নয়'
মাহবুবা সুলতানা লায়লা
স্বাধীনতা নয়
অমর একুশে ভাষা দিবসে
ইংলিশে গাই গান।
একদিনেই অ আ ক খ বলে
উজার করি প্রাণ।
একেই বলে বাঙালি আর
ভাষার প্রতি টান।
বাংলা ছেড়ে বছর ধরে
ইংলিশে হই মডার্ণ।
পাঞ্জাবী আর লাল শাড়িতে
একদিনই হই বাঙালি।
সারা বছর টু পিস পরে
বৈশাখে হই পান্তা ভাতের কাঙালি।
এতো খাঁটি বাঙালি নয়
বাঙালি সাজার ঢং।
বহু রঙে বহু রুপে
একদিনে সাজে সং।
ছাব্বিশে মার্চে মনে পড়ে
দিবস স্বাধীনতার।
তিনশত চৌষট্টি দিনেই
শিকল পরাধীনতার।
একদিনে আর স্বাধীনতার শ্লোগানে
লাভ কি বলো তাতে?
বাংলা ভাষা, স্বাধীনতা পাইনি
আড়াই যুগের জীবনে।
ষোলোই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
হয়েছে কি বাস্তবে বিজয়?
নাকি শুধু লক্ষ প্রাণের
হয়েছিলো রক্ত ক্ষয়?
লক্ষ প্রাণের বিনিময়েও
পাইনি স্বাধীনতা।
আড়াই যুগ পরেও তাই
ঘুচেনি মনের ব্যথা।
ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস
বিজয়-দিবস বলে।
রাজনীতিবিদদের রাজনীতি নয়
পেটনীতি যে চলে।
মুক্তি যোদ্ধারা পায়না ভাত
নকলে পায় সুবিধা।
তবু বলো কেমন করে
পেলাম স্বাধীনতা?
শ্বশুর আমার মুক্তিযোদ্ধা
সুবিধা পাবার আশে।
যুগে যুগে পালা-বদলের
ছিলো সদাই পাশে।
সবেই বলে দেব দিচ্ছি
শুধুই কথায় সান্ত্বনা।
আড়াই যুগ পরেও তারা
পেলোনা আসল সম্মাননা।
কত রাজা এলো গেলো
শুধুই চাপার জোরে।
দলীয়রা ধনী হয় তব
গরীব না খেয়ে মরে।
দুঃখ মনে শুধুই ভাবি
পাইনি স্বাধীনতা।
পাকি থেকে মুক্তি পেলেও
চলছে ভারত অধীনতা।
''শুধুই কি উদযাপন! একটু যে হিসেবও মেলাতে হয়!''
ব্লগার রঙ্গিন স্বপ্ন
স্বাধীনতা যুদ্ধে আহত, শহীদ ও জীবিত সকল বীরদের প্রতি সম্মান ও সালাম জানাই।
স্বাধীনতা আন্দোলন প্রকাশ্যে গর্জে উঠার রুপ নেয় ১৯৭০ সালের নির্বাচনকে পাকিস্থানীরা মেনে না নেওয়াকে কেন্দ্র করে। সেদিন গণদাবী মেনে নিলে জনাব শেখ মুজিবুর রহমান হতেন তৎকালীন পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী, আর সেটা হলে হয়তো ওই সময় ওই ভাবে দেশ স্বাধীন হতো কি না সেটা অনেকেই বলে থাকেন, যদিও দেশ স্বাধীন হবার লক্ষণ ও প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়েছিল বহু আগেই।
আজো একইভাবে গণদাবী উপেক্ষা করে ভোটার বিহীন ১৫৪ টি আসনে নির্বাচনহীন ৫ জানুয়ারি ২০১৪ পার করলো যেখানে শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধেই ছিল স্বাধীনতার হুঙ্কার, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতই ছিল স্বাধীনতা-সংগ্রামের ভিত্তি, সেখানে আজো সেই একই অবস্থা বিরাজমান। সমতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার ছিল স্বাধীনতার চেতনা।
অথচ আজ এখানে ব্যাংক ডাকাতি হয়, পদ্মা সেতু খেয়ে ফেলা হয়, সোনালী ব্যাঙ্কের ৪ হাজার কোটি টাকা নাই হয়ে যায়, ডেস্টিনি কেলেঙ্কারি হয়, মানুষ আগুনে ঝলসে মরে, পুলিশের গুলি চলে, নাগরিক গুম হয়, তনুরা ধর্ষিতা হয়, কারাগারগুলো ভর্তি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে। এখানে যার আছে তার আরো হয় আর যার নাই, তার বেঁচে থাকার উপায় নাই। আমরা আজো দুর্নীতিতে চ্যম্পিয়ান।
৪৫ বছর আগে বঞ্চনার শীকার, স্বাধীন হওয়া একটি দেশ আজো সুশাসন, জনমতের গুরুত্ব আর উন্নয়নের মুখ দেখলো না।দাসত্বের শৃঙ্খলায় বন্দি-ই রয়ে গেল।
রাস্তা-ঘাট নেই, ভালো স্কুল নেই, পর্যাপ্ত হাসপাতাল নেই, পুরো থানায় একটি মাত্র বিকল অ্যাম্বুলেন্স, দুর্নীতি গ্রস্থ প্রতিটি জনসেবা দপ্তর, শিক্ষা- জ্ঞান- বিজ্ঞান চর্চা অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা, কৃষক ও কৃষির উন্নয়নের অভাব, নাগরিক সুবিধার ছোঁয়া মাত্র নেই, গ্রামীণ-শহুরে বৈষম্য, বেকারত্ব, রাজনৈতিক দুবৃত্তায়ন- এ অবস্থায় ডিজিটাল ঠকবাজির মধ্য দিয়ে চেতনার বুলি আওড়িয়ে সত্যিকারের দেশ গঠন সম্ভব নয়। কিন্তু শাসকেরা যুগের পর যুগ তাই করে যাচ্ছেন।
৪৫ বছর বয়স্ক আমাদের প্রিয় মাতৃভুমিতে- কবে আমরা গণতন্ত্রে বিশ্ব দরবারে রেকর্ড করবো? কবে রাজনীতিবিদগণ দেশপ্রেমের প্রকৃত দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন? কবে দুর্নীতি দূর হবে? কবে আইনের শাসন আলোর মুখ দেখবে? কবে মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য নিশ্চিত হবে? কবে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষায়, উন্নয়নে, দারিদ্র বিমোচনে বিশ্বে রেকর্ড করবো আমরা ? সেদিন-ই হবে প্রকৃত বিজয়। নইলে যে কোন অর্জনই অর্জন নয়।
চেতনা ব্যবসা বন্ধ হোক, সত্যিকারের মুক্তি আসুক দেশে, দেশ এগিয়ে যাক উন্নয়নে- এটাই আজকের প্রজন্মের প্রত্যাশা।
'কফিল একজন মুক্তিযোদ্ধা'
ব্লগার মামুন
কফিল নামের এই মানুষটিকে আমি কর্মজীবনে গত সাড়ে তিন বছর ধরে চিনতাম। সম্প্রতি ৬০ বছর পুর্ণ হওয়াতে তাকে চাকুরি থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। এখন আমার অফিস থেকে বাসায় যাবার পথে তাকে দেখি চায়ের দোকানে বসে আছে কিংবা পীচের রাস্তা ধরে মাথা নিচু করে একা হেঁটে যাচ্ছে। আজ সবাই স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি একে অন্যকে... এই দিনটি বিভিন্ন ভাবে উদযাপন করছি। কিন্তু কফিলের মতো অনেকেই এখনো নিরন্তর অভিমান বুকে নিয়ে অনুভূতিতে তীব্র বেদনায় অন্তরীণ রয়েছে... এমন ক'জনের খোঁজ রাখতে পারছি?]
সুদৃশ্য মসজিদ। শহরের অভিজাত এলাকার অভিজাত মানুষেরা এখানে নামাজ আদায় করেন।
কফিলকেও দেখা যাচ্ছে। একেবারে শেষ সারিতে দরোজার সাথে বসেছে।
কফিল একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিল।
ওর সার্টিফিকেট যেহেতু নেই, কাগজে-কলমে সে কিভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে?
গত দুই মাস ধরে এভাবে চুরি করাই ষাটোর্ধ কফিলের একমাত্র পেশা। আগে সাধারন মসজিদে এই কাজটি করতো। কিন্তু সেখানে মানুষের পদমর্যাদাও যেমন ছোট, তাদের জুতো-স্যান্ডেল ও সেইরকম কমদামী। সচ্ছলতার সাথে সাথে পোষাক পরিচ্ছদও উঠানামা করে। এরকম মসজিদ থেকে একটি স্যান্ডেল নিয়ে চোরবাজারে সেটি বিক্রী করে পঁচিশ থেকে ত্রিশ টাকার বেশী পাওয়া যায় না। এজন্য অনেক চিন্তা-ভাবনা করে অভিজাত এলাকার মসজিদগুলোকে টার্গেট করেছে কফিল। এখান থেকে পাওয়া স্যান্ডেলের দাম অনেক বেশী পাওয়া যায়।
তবে জুতোর থেকে স্যান্ডেল ই বেশী পছন্দ কফিলের। এই বয়সে জুতো নিতে গেলে সেই অনুযায়ী পোষাক পরতে হয়। কিন্তু সেরকম পোষাক পরবার সামর্থ্য থাকলে কি আর কফিলকে এই চুরির মতো হীন কাজ করতে হয়?
ওর শিকার পদ্ধতি একেবারে সোজা সাপ্টা। জুতো রাখার বাক্সের পাশেই বসে সে দেখে এখানে কোন জুতোটি রেখে জুতোর মালিক কোথায় গিয়ে বসে। অনেক মুসল্লি ঢুকেই একেবারে দরোজার কাছে জুতো রেখে সামনের সারির দিকে এগিয়ে যায়। এদের ভেতর থেকেই একজনকে সে নির্দিষ্ট করে নেয়। আসরের নামাজের সময়টিকে সে বেছে নিয়েছে। এই সময় নামাজ শেষ হলেও মোনাজাতের পুর্বে সব ইমাম সাহেব ই তাসবীহ পড়ার জন্য কিছুটা সময় নেন। অনেকে চার রাকাত নামাজ শেষ হলে মোনাজাতের অপেক্ষা না করেই উঠে চলে যায়। কত জরুরী কাজ থাকে হয়ত এদের। কফিলও তাদের সাথে মিশে যায়। তবে যাবার সময় পছন্দের স্যান্ডেলটি সাথে নিতে ভুলে না।
কফিলের জীর্ণ স্পঞ্জের স্যান্ডেলটি খোলা আকাশের নিচে মুখব্যদান করে সিঁড়ির গোড়ায় পড়ে থাকে।
আজ বাদামী রঙের একটি স্যান্ডেল টার্গেট করেছে। এর মালিক ভদ্রলোক মধ্য পঞ্চাশের একজন। যথারীতি তিনিও কফিলের পাশে দামী স্যান্ডেলটি রেখে সামনের সারির দিকে এগিয়ে গেলেন। সাদা শুশ্রুমন্ডিত কফিল নামাজ শেষ হবার অপেক্ষায় চোখ বুজে ধ্যানমগ্ন হয়ে রইলো।
এই সময়টায় কফিল কি ভাবে?
ভাবনা চিন্তার কি আর শেষ আছে। মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখানে অবস্থানের সময়টুকুতে একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে নিয়েই ভাবতে হয়। তবে কফিল নিজে দেখেছে, মসজিদে এলে হয় ঘুম আসে না হয় রাজ্যের কথা মনে পড়ে।
এখন যেমন কফিলের মনে পড়ছে।
ওর স্মৃতি ওকে প্রচন্ড উত্তেজিত করে তোলে। চোখের সামনে ভাসে বিভীষিকাময় নয় মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধ আর আগুন। কানে বাজে গোলাবারুদের বিকট শব্দ আর অসহায় মানুষের আর্ত চিৎকার! কফিল তখন সতের বছরের। যুবকের খাতায় নাম লিখাবে লিখাবে ভাব। পঁচিশে মার্চের অন্ধকার রাতে হায়েনাদের বুলেটে যখন অজস্র জনতার প্রাণ ঢলে পড়ছিল, সে তখন শেরপুরে নিজের বাড়িতে। পরের দিন সবকিছু যখন জানলো, আরো অনেকের সাথে সেই সতের বছরের কফিলও যেন অনুভূতিতে একজন যুবকে পরিণত হল। মাকে বাঁচাতে হবে! দেশ হানাদার মুক্ত করতে হবে। সবার সাথে বর্ডার পার হয়ে ভারতে চলে গেলো। প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এলো। এরপর তো সবই ইতিহাস…
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের অতীত থেকে ফিরে আসে কফিল। ওর পাশে আরো মুসল্লি এসে বসেছে। নামাজের আরো বাকি আছে দেখে আবারো চোখ বুজে সে।
এবারে তেতাল্লিশ বছর আগের সেই ভয়ংকর দিনগুলো থেকে একটু সামনের দিনে ফিরে আসে।
যুদ্ধের পরে নিজের জমিজমা যেটুকু ছিল সেগুলো তে নতুন উদ্যমে সোনা ফলানোর জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করে। বিয়ে করে সংসারি হয়। এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসারই ছিল তার। সময়ের সাথে সাথে ছেলেমেয়ে বড় হয়। মেয়ের বিয়ে দেয়। ছেলে বাবাকে সাহায্য করে। দিনগুলো ভালই কেটে যাচ্ছিলো। ছেলের বয়স যখন বত্রিশ, হঠাৎ একদিন ভরদুপুরে ক্ষেত থেকে এসে শরীর খারাপ লাগার কথা বলে। কফিলের হাতেই সে মারা যায়। নিজের বার্ধক্যের ঐ বয়সে কফিল যেন অকূলে পড়ে দিশেহারা হয়ে যায়। ছেলের বউ একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিজের বাপের বাড়ি চলে গেলো। পরবর্তীতে সে আবার বিয়ে করে। মরার উপর খাড়ার ঘা বলে একটা প্রবাদ আছে। কফিলের জীবনে সেই কথাটি খুব কঠিনভাবে ফলে যায়। সর্বগ্রাসী নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সে স্ত্রীকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। ঘর-বাড়ি জায়গা-জমি সব হারিয়ে উপার্জনের মতো শক্তিহীন হয়ে সুদিনের নয়, কেবল বেঁচে থাকার আশায় কফিল সস্ত্রীক শহরে আসে। কিন্তু পঞ্চাশোর্ধ একজন অশিক্ষিত মানুষকে কে কাজ দিবে?
অনেক ঘুরে ফিরে শেষে একটি গার্মেন্টসে টয়লেট ক্লীনারের কাজ পায়!
চিন্তা-ভাবনা এই পর্যায়ে আসতেই চোখ খোলে কফিল। নিজের ভেতরের সর্বগ্রাসী এক আগুনে নিজেই উত্তপ্ত হয়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে নিজেরই স্বাধীন করা দেশে সে আজ মানুষের নোংরা পরিষ্কার করায় ব্যস্ত! এ ছাড়া ঐ সময়ে ওর আর কোনো পথও খোলা ছিল না। সম্মানজনক কোনো কাজই সে পাচ্ছিল না। ছোট্ট একটি ছাপরা ঘর ভাড়া নিয়ে সে নিজের বউকে সাথে করে জীবনধারণের জন্য দিনগুলো বড্ড হীনমন্যতায় ভুগতে ভুগতে কাটাচ্ছিল।
এরপর ঐ অফিসের একজন কর্মকর্তার ওর প্রতি সদয় মনোভাব দেখে সে নিজের সকল কাহিনী তাকে খুলে বলে। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিল এ কথাটি ঐ কর্মকর্তাকে জানায়। ভেবেছিল তিনি বোধহয় এ কথা জেনে অবাক হবেন। কিন্তু যে দেশে স্বাধীনতার পর স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষ অনেকগুলো বছর ক্ষমতাসীন দলের লেজুড়বৃত্তি করেছে কিংবা অংশ হয়ে থেকেছে… মহান সংসদের সাংসদ হয়েছে… তাদের গাড়িতে এ দেশের জাতীয় পতাকা শোভা পেয়েছে – সেই দেশে একজন কফিল, যে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, সে টয়লেট পরিষ্কার করবে না তো কি করবে? স্বাধীনতা বিরোধীদের আজকের এই সুদিনের জন্যই তো এক দিন তারা যুদ্ধ করেছিল বোধহয়!! এমন মুক্তিযোদ্ধা তো আজকাল পথে ঘাটে রেল স্টেশনে কিংবা ওভার ব্রীজের উপর-নিচে অহরহ দেখা যায়!
সেই কর্মকর্তার পরামর্শে কফিল নিজের জন্য একটি মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট গ্রহন করার চেষ্টা করে। ওর কাছে সেরকম কাগজপত্র কিছুই ছিল না। নদী ভাঙ্গনে ওর বাড়ি চলে যাবার সময় অন্য আরো কিছুর সাথে ঐ সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রও শেষ হয়ে যায়। তারপরও ওর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কাছে গিয়ে সে যে যুদ্ধ করেছিল তার প্রমাণস্বরুপ একটি সার্টিফিকেট নিয়ে আসে। সেখানে সে কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছে, ওর মুক্তি নাম্বার এসব কিছু উল্লেখ ছিল।
এরপর চলে আরো কিছু প্রহসন।
স্বাধীনতার আসল সুবিধাভোগী কিছু মানুষ নামের কুলাঙ্গারকে সে নিজের চোখে বড্ড স্পষ্ট দেখতে পায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওর মাসিক ভাতা পাবার জন্য সে মন্ত্রনালয়ে অনেকদিন ঘুরপাক খায়। সেখানে ঘাটে ঘাটে বসে আছে কিছু টাকার ক্ষাক্কস। এরা রাক্ষসের থেকেও অনেক ভয়ংকর। রাক্ষসেরা তো ক্ষুধা লাগলে কেবল খায়। কিন্তু এই ক্ষাক্কসেরা ক্ষুধা লাগুক আর নাই লাগুক, নিরবচ্ছিন্ন ভাবে খেতেই থাকে। কিন্তু কফিল বেঁকে বসে। সে বলে, ‘ আমি একজন আসল মুক্তিযোদ্ধা, আমি আমার সার্টিফিকেট নেবার জন্য কেন টাকা দেবো?’ যে অন্যায়-অবিচার আর শোষণের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে একদিন যুদ্ধ করেছিল, সেই যুদ্ধের একজন বীর যোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে তাকে অন্যায় ভাবে ঘুষ দিতে হবে? কফিলের এতগুলো বছর যখন এই সার্টিফিকেট লাগেনি, তবে এই বয়সে এসে ওভাবে নেয়ারও আর প্রয়োজন নেই।
পরবর্তীতে সেই কর্মকর্তার প্রশ্নের জবাবে কফিল জানিয়েছিল, ‘ আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধাই না। আমি কোনো যুদ্ধ করিনি। এ দেশে কখনোই কোনো যুদ্ধ হয়নি।‘ আসলে কফিলের যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার আটত্রিশ বছর পর। এরকম যুদ্ধ এ দেশের হাজার হাজার মানুষ করে চলেছে। খেয়ে পরে একটু বেঁচে থাকার যুদ্ধ!
যে দেশে দফায় দফায় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হালনাগাদ হয়, সে দেশে একজন কফিল- একজন টয়লেট ক্লীনার, যে নিজের নীতিতে অটল থেকে ঘুষ না দিয়ে নিজের সার্টিফিকেট পেতে চায়! কি দুঃসাহস ওর? কতটা অসম্ভব ওর এই চাওয়া!!
এভাবে সাতটি বছর ঐ ফ্যাক্টরীতে ক্লীনারের কাজ করেছে কফিল। এরপর ওর বয়স ষাট হয়ে যাওয়াতে চাকুরি থেকে অবসর নিতে হয় ওকে। সব মিলিয়ে বারো হাজার টাকার মতো পেয়েছিল সে চলে আসার সময়ে।
জীবনের সামনে অনিশ্চিত দিনগুলো। হাতে বারো হাজার টাকা। কিন্তু শহরে ভাড়া বাসায় থেকে চাকুরীহীন সময় কাটালে ঐ পরিমান টাকায় আর ক’দিন চলে? কাজ খোঁজে আর জমা টাকা ভাঙ্গে। একদিন সব টাকা শেষ হয়। কিন্তু কাজ আর কোথায়ও পায় না। শরীরে শক্তিও নাই যে কামলা খাটবে কিংবা রিক্সা চালানোর মত পরিশ্রমের কাজ করবে।
একদিন ভিক্ষা করার জন্য এক ওভারব্রীজের নিচে সিঁড়ির গোড়ায় বসে যায়। কিন্তু সেখানে ও যে চলে টাকার খেলা। দখলের মেলা। ভিক্ষাবৃত্তি এখন যদিও আয়ের একটি সহজ পথ, কিন্তু এখানেও রয়েছে প্রভাবশালীদের কালো হাত। এদেরকেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই সে ভিক্ষা ও করতে পারে না। ওকে পুরনো দখলদার ভিক্ষুকেরা দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়।
প্রচন্ড ক্ষুধায় কষ্টে লজ্জায় অপমানে হয়ত কফিল একা হলে মরেই যেতো। কিন্তু ওর এতোদিনের সুখ দুঃখের সাথী বউও যে সাথে রয়েছে। তাই জীবনের দিনগুলো পার করতে কফিল নিজেকে ভুলে যায়।
একজন কফিল কোনো সময়ে যে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিল- একথা বিস্মৃত হয়।
আপনি কি বাঙালি?
আপনি কি মুক্তিযোদ্ধা?
আপনি কি রাজাকার আলবদর?
আপনি কি পাকিস্তানী বর্বরতার শিকার?
এসব প্রশ্নের আজ আর কোনো দামই নাই। আপনার কি টাকা আছে? আপনার কি সঠিক রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে? আপনি কি ক্ষমতাসীন দলের লেজুড়বৃত্তি করতে ইচ্ছুক? এই প্রশ্নগুলোর হা-বোধক উত্তর হলে আপনি একজন মানুষ বলে গন্য হতে পারবেন এ সমাজে। নচেৎ আপনি কবে কোনকালে কি ছিলেন, সেগুলো ধুয়ে পানি খাওয়া ছাড়া আর কোনো কাজে আসবে না।
জীবনের প্রথম জুতো জোড়া সে চুরি করেছিল মাগরিবের নামাজের সময়ে। খুবই পরিচিত এক মসজিদে। সেই গুলো পায়ে দিয়ে কফিল যখন এক নতুন জীবনের দিকে পা পা আগাচ্ছিল, এক এক কদমে কি একজন মুক্তিযোদ্ধার পদস্খলন হচ্ছিল না?
কফিল কি টের পাচ্ছিল?
কফিল কি ওর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ অনুভব করছিল?
ওর চেতনায় কি এ কথা ভাসছিল, সে একজন মুক্তিযোদ্ধা? বা ছিল?
কিন্তু কফিল এখন আর মুক্তিযোদ্ধা নাই। কারণ তার সার্টিফিকেট নাই।
পতনের কি সেই শুরু ছিল?
কফিলের পতন কি আরো আগে থেকে হয়নি? স্বাধীনতার পরবর্তী সরকারগুলো কি এই পতনের জন্য দায়ী ছিল না? আজ তারা কি এর দায়ভার নেবে?
মুয়াজ্জিনের একামতের শব্দে একজন জুতো চোর কফিল দাঁড়িয়ে যায়। অন্য মুসল্লিদের পাশে একজন ঘৃন্য মানুষ যে একসময় সোনার মানুষ ছিল, নামাজের জন্য অপেক্ষা করে। আসলে সে অপেক্ষা করে নামাজ শেষ হবার। ঘৃন্য একটি কাজ চুপিসারে সমাধা করবার।
নামাজ শেষ হলে কফিল ওর টার্গেট করা স্যান্ডেল জোড়া হাতে নেয়। অতি স্বাভাবিক ভাবে বের হয়ে মসজিদের বারান্দা পর্যন্ত চলে আসে। সিঁড়ির প্রথম ধাপে পা রেখেই স্যান্ডেল জোড়া নামিয়ে রেখে সেখানে পা ঢোকাতে গিয়েও আর পারে না। পেছন থেকে একটি বলিষ্ঠ হাত ওর ঘাড় ধরে ফেলে। ওকে জোর করে টেনে বারান্দার উপরে তোলা হয়। কফিলের ভাগ্য আজ খারাপ ছিল। যে ভদ্রলোকের স্যান্ডেল সে টার্গেট করেছিল তিনি একা আসেননি এখানে। তার সাথে আরো দুজন ছিলো। যুবক বয়সী এরা। কফিলের পাশেই তারাও বসে ছিল। তাই নামাজ শেষ হতে মোনাজাত শেষ না করেই কফিল যখন ওদের মুরব্বির স্যান্ডেল জোড়া হাতে নিয়ে বের হতে যাচ্ছে, হাতেনাতে আজ তারা ওকে ধরে ফেলে।
মুহুর্তে অনেক মানুষের ভীড় জমে যায়।
একজন জুতো চোর ধরা পরেছে গুঞ্জনে ওকে ঘিরে অনেক মুসল্লি চলে আসে। এর ভেতরে যুবক কয়েকজন কফিলকে টেনে হিচড়ে মারধোর শুরু করে। কফিল কোনো বাঁধাই দেয় না। হঠাৎ জীবন ওর কাছে বড্ড ফালতু কিছু মনে হয়। মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হল কাউকে মারতে দেখলে আরো বেশী করে ঝাপিয়ে পড়া। আর যদি জানা যায় সে চোর তবে তো কথাই নাই। কয়েকজন মুরব্বী গোছের মুসল্লি অবশ্য না মারতে বললেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। অবশেষে যার স্যান্ডেল চুরির দায়ে কফিলকে মাটিতে ফেলে রক্তাক্ত করা হচ্ছিল, তিনি এলেন। সবাই ওনাকে দেখে কেমন সমীহ ভরা দৃষ্টিতে সরে যায়গা করে দিলো। তিনি সদ্য বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া একজন সচিব। সব শুনে কাছে এসে কফিলকে ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করেন। তার সোনালী ফ্রেমের দামী চশমার গ্লাস পাঞ্জাবির খুটে পরিষ্কার করে একজন ‘চোর’কে দেখতে কাছে এগিয়ে আসেন। কফিলের সাদা দাঁড়ি রক্তে রঞ্জিত। একটা চোখ ফুলে গেছে। সেই অবস্থায় কফিলও ওনাকে দেখার চেষ্টা করে। এবং এক চোখ নিয়েও কফিল তাকে দেখে চিনে ফেলে। টয়লেট ক্লীনারের চাকুরি করাকালীন এই লোকের ছবি সে পেপারে দেখেছে। অফিসের স্যারেরা ওনাকে নিয়েও অনেক আলোচনা করেছিলো। এই সচিব পর্যায়ের মানুষটি নিজের বয়স জালিয়াতি করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিতে চেয়েছিলেন। শেষে মিডিয়ায় অনেক আলোচনা সমালোচনার দ্বারা বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। নিজের পদমর্যাদা সব কিছু হারাতে হয়েছিল ওনাকে। ব্যাপারটা মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট সংক্রান্ত হওয়াতে কফিলের বেশ আগ্রহ ছিল এই ঘটনাটিতে। সে ঐ মানুষটিকে দেখতে চেয়েছিল। এজন্যই আজ কফিল তাকে পুর্বপরিচয় না থাকলেও আলোচনার জের ধরে আগে ছবি দেখাতে এখন চিনতে পারে।
সাবেক সচিব এসে রাগান্বিত স্বরে বললেন,’ এই বয়সে মসজিদ থেকে জুতো চুরি! ব্যাটা পাকা হারামি। কাজ করে খেতে পারিস না? অ্যাই, ওকে আরো কয়েক ঘা লাগা।‘ যুবকেরা ক্রোধান্বিত হয়ে মারতে উদ্যত হলে, নিচে পড়ে থাকা অবস্থায়ই কফিল হেসে উঠে। ধীরে ধীরে ওর হাসি অট্টহাসিতে পরিণত হয়। একজন চোর যেন তেতাল্লিশ বছর আগের সেই মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হয়। হাসি থামিয়ে সে সাবেক সচিবের চোখে চোখ রেখে বলে,
’ তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে।‘
এই কবিতাটি ওর সুদিনের সময়ে মেয়ে স্কুলে পড়াকালীন কফিলকে অনেকবার আবৃত্তি করে শুনিয়েছে। কবিতার এই লাইনটি কফিলের বড্ড ভালো লেগেছিল। সে আজ তা কাজে লাগালো।
এরপর কফিল ওর মুখের ভেতর থেকে রক্ত মেশানো থুথু সজোরে সাবেক সচিবের মুখ লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে। দামী পাঞ্জাবীসহ লোকটির মুখের একাংশ রক্ত ও কফে একাকার হয়ে যায়। এই ঘটনা দেখে উত্তেজিত যুবকেরা একযোগে সবাই কফিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পরে। একের পর এক আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকা কফিল অনুভূতিতে কোনো কষ্টই পায় না। সে চোর থেকে আবার একজন মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হয়। ওর মনে হয় সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। আর একজন মুক্তিযোদ্ধা আজীবনই মুক্তিযোদ্ধা। এজন্য তার কোনো কাগজের সার্টিফিকেট লাগে না।
একজন কফিলের নিক্ষিপ্ত ঐ ঘৃণার থুথু কি এ দেশের গলদ সিস্টেমের বেড়াজালে বন্দী রাষ্ট্রযন্ত্রের ততোধিক ঘৃণিত কিছু মুখোশধারী নেতৃত্বের ওপরে পড়ে নাই?
কিন্তু এতে কি তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া হবে? না কখনো হয়ে এসেছে?
কাগজের মুক্তিযোদ্ধারা মাস গেলে তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পেতে থাকবে। আর কফিলের মত দেশের সূর্যসন্তানেরা মাটিতে চোর হিসেবে গড়াগড়ি খেতে খেতে ক্ষতবিক্ষত হবে।
কিন্তু কেউ কি জানবে কখনো, কফিল একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিল??
'আগামীর গান'
ব্লগার বাকপ্রবাস
হাত রেখে হাতে কাঁধে কাঁধ রেখে
এসো করি গান
এই বাংলা আমার ধনী-গরিব, সাদা-কালোর
নাই ব্যবধান।
জানি ভঙ্গুর পথ নানাজনে নানা মত
তর্কের নাই শেষ
হোক ডানবাম গাই মিলনের গান
সাবাস বাংলাদেশ।
অনেক গড়েছে পানি কমেনি হানাহানি
লুটপাট বেড়েছে আরো
হোক শ্লোগান, চাই অবসান
দূর্বিত্তায়ন ছাড়ো।
যেতে হবে দূর সাতসমুদ্দুর
ক্ষুধা দারিদ্র যতো
দিতে হবে রুখে সাহস নিয়ে বুকে
একাত্তরের মতো।
এসো ধরি হাত রেখে কাঁধে কাঁধ
লালসবুজের গানে
আলোহাওয়া জলে শষ্য শ্যামলে
আলোড়িত হোক প্রাণে।
"স্বাধীনতা"
ব্লগার অভিমানী বালক
স্বাধীনতা তুমি
ধর্ষিত নারীর পত্রিকার শিরেনাম,
খুন হত্যা রাহাজানির রাজ্য
বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ এক নাম।
:
স্বাধীনতা তুমি
বিডিআর বিদ্রোহের এক নাম,
বিচারের নামে প্রহসনের খেলা
নিত্য চলে আদালত পাড়ায় গ্যাঞ্জাম।
:
স্বাধীনতা তুমি
শেয়ার বাজারের লুন্ঠিত সম্পদ,
তেমন কিছু নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া
লুটতরাজদের দেয়া হয় মদত।
:
স্বাধীনতা তুমি
হাজার কোটি টাকা গায়েবের রাজ্য,
সোনার ছেলেরা করেছে এহেন কাজ
প্রতিবাদ করার আছে কি কারো সাধ্য!
:
স্বাধীনতা তুমি
কলঙ্কিনীর গলায় ঝুলানো স্বাধীনতা পদক,
মুক্তিকামী মানুষদের মত
চেয়ে থেকে থেকে হয়ে যাই হতবাক।
'স্বাধীনতা'
ব্লগার শেখের পোলা
স্বাধীনতা, দোহাইরে তোর, সত্যি করে সত্যি বল,
কাউকে দিলি যাদুই চেরাগ, কাউকে দিলি চোখের জল।
দস্যুরা সব যুগে যুগে, অপহরণ করল তোকে,
আপন জীবন বাজী রেখে, মুক্ত করে আনল লোকে,
সেই লোকেদের পায়ে দলে, অট্টালিকায় উঠলি গিয়ে,
সোনার খাঁচায় বন্দী হলি, খিড়কী দিয়ে দেখিস চেয়ে।
সত্যি করে বলত দেখি, তুই কি হলি নিঠুর অতি,
চোখের জলে ভাঁসছে যারা, কিইবা তারা করল ক্ষতি?
স্বাধীনতা, দোহাইরে তোর, সত্যি করে সত্যিবল,
তুই নাকি সেই মরিচিকা? তৃষ্ণার্তের আশার জল!
দুষ্ট নারীর হাতছানি কি, ছলনাতে পাগল করা!
ঘর বাঁধল তোরে নিয়ে, তোর দেখাতো পাইনি তারা।
তুই কি তবে ডুমুর ফুল, অদৃশ্য এমন কিছু,
জীবন মরণ পন করে সব, ছুটছে দেখি তোরই পিছু।
সাপের মাথার মনি নাকি, রূপকথাতেই দেখা মেলে।
জানব এ সব সাক্ষাতে তোর, হঠাৎ কোথাও দেখাপেলে।
কেউবা হল আপন হারা, কেউবা শুভ্র বসনা।
চণ্ডালিনী মুণ্ডু খেলি, তাওকি ক্ষুধা মিটলনা।
চোদ্দ কোটি কাঙ্গাল হল, অল্প ক’টি ভাগ্য বান,
কাঙ্গাল করে ছাড়লি তবু গাইব কি তোর জয়গান।
'স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের করণীয়'
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সী
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। স্বাধীনতা অর্জন করা যে কোনো পরাধীন জাতির পক্ষে অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা আরো কঠিন কাজ। স্বাধীনতা অর্জন করতে শক্তি, সাহস, সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং বহু রক্তপাতের প্রয়োজন হতে পারে।
শক্তিমান শাসকগোষ্ঠী পদানত জাতিকে কখনোই স্বাধীনতা দান করে না; বহু ত্যাগ ও রক্তপাতের মাধ্যমেই তা অর্জন করতে হয়।
স্বাধীনতা অর্জিত হলেই চিরস্থায়ী হয় না। যে কোনো সময় হরণ হতে পারে। তাই স্বাধীনতা অর্জনই মূল উদ্দেশ্য নয়। একে সমুন্নত রাখাই মুখ্য উদ্দেশ্য। তাই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য বেশি সংগ্রাম ও শক্তির প্রয়োজন। এছাড়া স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে আরো প্রয়োজন প্রযুক্তি, কৌশল, ঐক্য ও ন্যায়বোধ।
সকলের হিংসাত্মক দৃষ্টি থেকে দেশকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ দেশের ভেতরে ও বাইরে শত্রুর অন্ত থাকে না।
পরাধীনতার গ্লানি মোচন করতে যেমন ত্যাগ ও আত্মদান অপরিহার্য। তেমনি স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে জ্ঞান, বুদ্ধি, শিক্ষা ও সদ্বিবেচনাকে কাজে লাগানো একান্ত অপরিহার্য। মূলত যথেষ্ট সচেতন ও সংঘবদ্ধ না হলে স্বাধীনতাকে রক্ষা করা যায় না।
স্বাধীনতাকে অর্জন করতে যেমন নির্ভীক যোদ্ধা হয়ে অস্ত্র হাতে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়।
তেমনি স্বাধীনতা রক্ষায় জ্ঞান ও বিবেককে কাজে লাগিয়ে একতাবদ্ধভাবে সর্তক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। তাই স্বাধীনতার মর্ম উপলব্ধি করে একে রক্ষা করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য মনে করা উচিত। -
আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনে যে শহীদেরা আত্মত্যাগ করেছেন, নিজেদের প্রাণ বাজি রেখেছিলেন যে মুক্তিযোদ্ধারা, গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের স্মরণ করি। যেসব দেশ ও গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সাহায্য করেছে তাঁদের জানাই কৃতজ্ঞতা।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা ছিল, যথা :
১। পরাধীনতার শৃক্মখল ছিঁড়ে শোষণমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
২। মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও কর্মসংস্থান প্রভৃতি নিশ্চিত করে সমাজের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা।
৩। সকল নাগরিকের জন্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪। ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারসমূহ নিশ্চিত করা।
৫। বাঙ্গালীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির আলোকে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
স্বাধীনতার ব্যাপারে কিছু বাণী চিরন্তণীঃ
১-“ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন ”
২-“ এই স্বাধীনতা তখনি আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলার কৃষক-মজুর ও দুঃখী মানুষের সকল দুঃখের অবসান হবে ”
৩-যখন তুমি কোন একজন মানুষকে ভিন্নভাবে বিচার করো সে কারো কী ক্ষতি করছে তা না দেখে বরং সে শুধু অন্যরকম এজন্যে, তখনই স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখীন হয় ।
৪“ যে মাঠ থেকে এসেছিল স্বাধীনতার ডাক, সেই মাঠে আজ বসে নেশার হাট ”
৫“ জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন ”
৬-স্বাধীনতা, সে আমার – স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন – স্বাধীনতা – আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
৭“ ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা ”
'দেশের জন্য ভালোবাসা'
ব্লগার আফরা(পনি)
আমরা এখানে এসেছিলাম রেডক্রসের সাহায্যে। তো এখানে আসার ২ মাস পর রেডক্রস আমাদের মত আরো ৯টা ফ্যামেলীকে নিয়ে একটা প্রোগ্রামের আয়োজন করে অন্য একটা শহরে। রেডক্রস মানুষকে কিভাবে হেল্প করছে, সেটা হাইলাইট করাই ছিল উনাদের উদ্দেশ্য। যাই হোক, এখানে আমরা তিনদিন থাকব। থাকা, খাওয়া, আসা-যাওয়ার সমস্ত খরচ তাদের। সব কয়টা ফ্যামেলীই নতুন হওয়াতে এখানকার ভাষা কেউই পারে না। সেই ক্যাম্পে পৌছাঁনোর পর আমার হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়।কাগজটা নিয়ে দেখি বাংলাতে লিখা কিছু ইনফরমেশন দেওয়া, এখানে আমরা কিভাবে থাকব, খাব, আমাদের কি করতে হবে এই সব ব্যাপারে। দুই মাস পর সেদিন সেই বাংলা লিখাটুকু দেখে এত বেশী আনন্দিত হয়েছিলাম যে, কিছু বুঝার আগেই চিৎকার দিয়ে বলেছিলাম, মামনি দেখ, কত সুন্দর আমার বাংলা লিখা !!
আরও কিছুদিন পর তখনও কোন বাংলাদেশীদের সাথে পরিচয় হয়নি। একদিন বাজারে গিয়েছি ভাইয়া ও মামনির সাথে। দোকানের সামনেই খালি জায়গা, সেখানে এক বুড়ি রুটি ছিড়ে ছিড়ে পাখিকে দিচ্ছে, অনেক পাখি সেগুলো খাচ্ছে একেবারে কাছে এসে। মামনি ও ভাইয়া দোকানে ঢুকলেও আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখছিলাম। হঠাৎ আমার কানে বাংলা কথা ভেসে আসে। কি কথা সেটা না বুঝলেও এটা বুঝতে পারি কথাটা বাংলা ।
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি দুইটা ছেলে দোকানের দিকে যাচ্ছে আমি দৌড়ে তাদের কাছে এসে বলি আপনারা বাংলাদেশী?
তারাও বেশ অবাক হয়ে আরে খুকী তুমি বাংলা জান ----- জী আমি তো বাংলাদেশী !!
তাদের দেখে এত বেশী খুশী আর ভাল লেগেছিল মনে হয়েছিল এরা আমার আপনজন, এরা আমার ভাই। আমি নিজেও বুঝতে পারিনি কখন কিভাবে তাদের হাত ধরে টানছি আর বলছি, আসেন আসেন, দোকানে আমার মামনি আর ভাইয়া আছে, তাদের সাথে দেখা করবেন।
প্রায় তিন বছর আগে আমি বাসে সুইডেন যাচ্ছি। আমার পাশের সীটে বসেছে এক সুইডিস মহিলা। প্রায় ৫ ঘণ্টার জার্নি তো, উনার সাথে কথা হচ্ছিল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। এক পর্যায়ে সে বলে, তুমি কোন দেশ থেকে এসেছ? আমি বাংলাদেশ থেকে।তখন সে খুশী হয়ে বলে আমি বাংলাদেশে দুই বছর ছিলাম। ( H & M Hennes & Mauritz AB বাংলাদেশ শাখায় চাকরী করত )
সে বলল, তোমার দেশের কিছু মানুষ খুব ভাল, এরা খুব ভাল সহজ সরল আর কঠিন পরিশ্রমী। এরা মানুষকে খাওয়াতে খুব পছন্দ করে, অনেক হেলপফুলও আছে।
আমি খুব খুশী হয়ে আর একটু প্রশংসা যেই করেছি অমনি মহিলা বলে, তবে বেশীরভাগ মানুষই দুই নাম্বার, এরা মানুষকে ঠকাতে পছন্দ করে, এরা খুব লোভী, অল্পতেই একজন আরেকজনকে খুন করে আর রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের কথা কি বলব। আর অর্থনৈতিক বৈসম্য, ওহ মাই গড!!না দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না।
উনার কথা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম আমার চেহারা অন্ধকার দেখে উনি বলেছিল তুমি মনে হয় আমার কথায় কষ্ট পেয়েছ কিন্তু আমি ২ বছর থেকে ওখানকার মানুষের সাথে মিশে নিজের চোখে যা দেখেছি, সেটাই বল্লাম। তাছাড়া তুমিতো আর ওখানকার নেই।
শুধু এটুকুই বলেছিলাম আমার জন্ম ওখানেই আর আমার পরিচয় আমি বাংলাদেশী।
২০১৫ ইর্টানী জবের জন্য ইন্টারভিওতে পাশ করার পর আমার সুপারভাইজার এলিসি, কাজ শুরুর আগেই একদিন আমার সাথে বলার জন্য সময় নিল। কাজের ব্যাপারে এই-সেই অনেক কথা বলার পরে আরে ---- তুমি কোথা থেকে এসেছ এটাই তো জানা হল না -- আমি বাংলাদেশ বলার পর উনি বল্ল ---- ও তুমি ডঃ ইউনুসের দেশের লোক -------- আমি আরে না আমি উনার দেশর লোক হব কেন!! আমি আমার দেশের লোক । আমার কথায় মনে হয় একটু ঝাঁজ ছিল, উনি খুব হেসেছিল আর বলেছিল, আফরা, তোমার ভিতর স্পিরিট আছে, সেটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে ।
দেশ বা দেশের মানুষকে কতটা ভালবাসি জানি না। কখনো আমার নিজের কাছেই মনে হয় দেশের প্রতি কোন মায়া বা ভালবাসা নেই। কারণ আমি কখনো দেশে যাবার টান অনুভব করি না দেশে যাবার জন্য আমার মন কখনো ব্যাকুল হয় না ।
তবে দেশের বা দেশের কোন মানুষের ভাল খবর শুনলে ভাল লাগে, মনে আনন্দ হয়, কোন খারাপ খবরে মন ব্যথিত হয় । তখন আমার মনে হয়, না, দেশের জন্য আমার ভালবাসা আছে।
আসলে এটাই কি দেশকে ভালবাসার মান দণ্ড!!! আমার মনে হয় না। দেশের প্রতি প্রতিটা নাগরিকের কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য আছে। কখনো দেশকে ভালবাসতে হবে আবেগ দিয়ে, কখনো দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে দেশের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে হবে ।
আমার একট বাড়ী আছে, আসলে আমার না, আমাদের। সেই বাড়ীতে আমি, মামনি, ভাইয়া, ভাবী থাকি। আমাদের আশেপাশে অনেক সুন্দর সুন্দর বাড়ী কিন্তু আমার কাছে আমার বাড়ীটাই সব চেয়ে প্রিয়।যখনই বাহির থেকে বাসার কাছে আসি, মনটা আনন্দে ভরে যায়, এইতো আমার বাড়ি।
এই বাড়িতে আমার একটা নিজস্ব রুম আছে, সেই রুমটা একান্তই আমার। এই রুম ছাড়া অন্য কোন রুমে আমার ঘুমই আসে না। এই রুমটাকে আমি মনের মত করে সাজাতে পারি ও খেয়াল রাখতে পারি। এই রুমের কখন কি প্রয়োজন, কি নষ্ট হল। কিন্তু পুরো বাড়িটা সুন্দর করে সাজানো বা সব দিক খেয়াল রাখা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। এখানে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, আবার মতামতেরও দরকার। সবার সহযোগিতা ও কখনো আমি আমার মতের স্যাক্রিফাইস করি আবার কখনো অন্যরা করে, এভাবেই আমারা সবাই মিলে আমাদের বাড়ির পরিবেশটাকে সুন্দর ও সাজানো গোছানো রাখার চেষ্টা করি ।
তেমনি আমার একটা দেশ আছে, আসলে আমার না আমাদের। ১৬ কোটি জনতার এই দেশ, বাংলাদেশ। এই দেশটা যেমন কারো একার না, তেমনি কারো একার পক্ষে এই দেশটাকে সুন্দর করে সাজানোও সম্ভব না। এখানে ১৬ কোটি জনতারই কোন না কোন ভাবে অংশগ্রহণ করা দরকার।
আমার সোনার বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক। চলছে ঘোর আমাবশ্যা । কিন্তু অবস্থাদৃষ্টি মনে হচ্ছে, এই আমাবস্যার আধাঁর কেটে আর কখনোই চাঁদের আলো প্রবেশ করবে না। এখন দেশের আবেগী ভালবাসার প্রয়োজন নেই।
কিন্তু আমাদের হতাশ হলে চলবে না (যে যে ভাবে পারে, কেউ জান দিয়ে, কেউ মাল দিয়ে) আমাদের ১৬ কোটি জনতাকে সব মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে দেশ বাঁচানোর জন্য ঐক্য বদ্ধ হয়ে শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে। দেশের ভিতবের বাহিরের সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে। তাহলেই চাঁদের আলো নয় একেবারে সূর্যের আলোয় আলোকিত হবে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ।
পরিচালকের কথা
আমার প্রচেষ্টা, মূল্যায়ন আপনাদের। হ্যাঁ, আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি, তবুও আমার কিছু সীমাবদ্ধতা থাকায় সম্ভবত আমি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারিনি। এই ধরণের আয়োজন ব্লগে আগেও হয়ে থাকবে, যেখানে আমার অংশগ্রহণ ছিলোনা অথবা আমি অংশ নিতে পারিনি। তাই অনভিজ্ঞতার কারণে ভুল-ত্রুটি, কোন অসঙ্গতি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমন কিছু হয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমি যখন পরিচালনা করছি, তখন সাথে সাথে অফিসে ডিউটিও করে যাচ্ছি। একদিকে আয়োজনটি পরিচালনা, অন্যদিকে ডিউটি, আমাকে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছিল। তবুও আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। জানিনা কতটুকু পেরেছি। আমি লেখা পাওয়ার সাথে সাথে পোস্ট করেছি, তার সাথে বারবার এডিটও করেছি লেখাগুলো, যাতে বানানে ভুল না থাকে। যেহেতু বানানে ভুল হলে এড়িয়ে যেতে পারিনা।
ব্লগের মৃত প্রায় অবস্থা, তখন আয়োজনটি নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী ছিলাম না। কিন্তু আপনারা আমাকে অবাক করে দিলেন!!!! এমন সময়ে পোস্টটা এতো বেশি সাড়া পাবে, যা ছিল আমার কাছে অকল্পনীয়। আলহামদুলিল্লাহ্। লোক বেশির দরকার, দরকার আওয়াজের। আপনারা সেটাই করেছেন।
আমি যখন পোস্ট জুড়ে দেয়া আর এডিট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি, তখন ঝটপট আসা মন্তব্যগুলোতে প্রতিমন্তব্য করে পরিচালকের অভাব ভুলিয়ে দিয়েছেন ব্লগার শেখের পোলা, প্যারিস থেকে আমি, প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন, আবু তাহের মিয়াজী প্রমুখ। আলহামদুলিল্লাহ্।
যারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের আল্লাহ্ উত্তম প্রতিদানে ধন্য করুন। আর যারা পারেন নি, তারাও এসে তাদের অপরাগতা জানিয়ে দু:খ প্রকাশ করেছেন এবং আগামীতে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আপনারা সবাই, ব্লগার ‘প্যারিস থেকে আমি’ ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন, তিনি যেন ভবিষ্যতেও এমন সুন্দর আয়োজনের আইডিয়া নিয়ে হাজির হয়ে ব্লগ বাড়িটাকে প্রাণবন্ত করে তুলতে পারেন।
ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ্ আপনাদের ভালো রাখুন।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্য
মাননীয় উপস্থাপক, পরিচালক ও উপস্থিত সূধীবৃন্দ। আপনাদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে, ধৈর্য ও শান্তিপূর্ণ আবহ বজায় রাখার কারণে এ উদ্যোগ সাফল্য মণ্ডিত হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস৷ বিশেষ করে জনাব গাজী সালাহ উদ্দীন, আজকের পরিচালক সাহেব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রত্যেকের মূল্যবান লেখনীগুলোকে মূল পোষ্টের সাথে সচিত্র সংজোযন করে পোষ্টটিকে প্রানবন্ত করে তুলেছেন৷ আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ৷
কোন বিষয়ে কারও অন্তরে আঘাত লেগে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে তা বিবেচনার অনুরোধ রইল। যদি কোন ত্রুটি বিচ্যুতি অজান্তে বা জানতে হয়ে গিয়ে থাকে তবে তা মন্তব্যের দ্বারা জানালে সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। আর পাঠক যারা এই আনন্দঘন পরিবেশে উপস্থিত হয়ে আমাদের মজলীশে সোভাবর্ধন করলেন, তাদেরকেও জানাই শুভেচ্ছা৷
আর যারা লেখায় বা আনন্দে শেয়ার করতে বা দিতে পারলেন না, তাদের হয়ত কোন অসুবিধা থেকে থাকবে, তাদের পরবর্তী এমন কোন আয়োজনে শামিল হওয়ার অনুরোধ রইল৷ আল্লাহ তাদের অসুবিধা দূর করুক। আজ এ পর্যন্তই।
মহান আল্লাহ আমাদের প্রকৃত ও কাঙ্খীত স্বাধীনতা উপভোগ করার তৌফিক দিন৷ সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে আজকের এ মহতী অধিবেশণের সমাপ্তি ঘোষণা করছি৷ আল্লা হাফেজ।
বিষয়: বিবিধ
৫৫৯৩ বার পঠিত, ১৯৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দেশকে পরিচিতি করানোর জন্য প্রবাসে দেশের বিভিন্ন দিবস উদযাপন অন্যতম মাধ্যম। এছাড়া দেশের ইতিহাস জেনে রাখার জন্য বা জানান দেওয়ার জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ দিবসে অনুষ্টান করা জরুরি। বিশেষ করে প্রবাসী শিশুদের নিজ দেশ সম্পর্কে জানান দেওয়া অতিব জরুরি। আর সে ক্ষেত্রে জাতিয় দিবস সমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রবাসে স্বাধীনতা দিবস পালনের ক্ষেত্রে এম্বেসি এবং কন্সুলেট অফিস নিরাপদ। প্রবাসে কমিউনিটি থেকে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। প্রবাসে শত শত কমিউনিটি রয়েছে আর সবাই নিজের করে পালন করে জাতিয় দিবস। পার্ক রেস্তুরা অডিটোরিয়াম যে যেরকম পারছেন পালন করে আসছেন স্বাধ্যিনতা দিবস। স্বাধীনতা দিবসে শিশুদের জন্য খেলাধুলোর আয়োজন করা হয়। বিনোদন মূলক অনেক কিছুই থাকে।
কিন্তু আফসুসের বিষয় হচ্ছে দেশের মত প্রবাসেও দেশীয় সংস্কৃতির পরিবর্তে, সঠিক ইতিহাসের পরিবর্তে সরকার দলীয় সংস্কৃতি এবং ইতিহাস প্রচার করা হয়। দেশের মত ইতিহাস বিকৃতির গল্প শুনানো হয়। সবচেয়ে বড় আফসুসের বিষয় হচ্ছে বিদেশী গান পরিবেশন করা হয় অনেক সময়। দেশের ইতিহাস বিকৃতি করে নতুন প্রজন্মকে যেমনটা দেশে ধুকা দেওয়া হচ্ছে তেমনটা প্রবাসেও।
তবে সাথে সাথে খারাপ লাগাও যোগ হয়েছে, এই যে বললেন, সেখানেও ইতিহাসকে বিকৃতি করে শোনানো হয়। বাংলাদেশের সংস্কৃতির বদলে ভিনদেশি সংস্কৃতির চর্চা হয়, এটা খুবই দু:খজনক।
আপনারা যারা প্রবাসে থাকেন, তারা যার যার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবেন, আমাদের নিজস্বতাকে সেখানে ছড়িয়ে দিতে। এটা আমার আশা নয়, আপনাদের নিকট প্রত্যাশাও বটে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন।
মিছে এক স্বাধীনতা
---------------
স্বাধীনতা তুমি দুঃস্বপ্ন বাবার মায়ের ছেড়া বস্ত্র
তুমি এখন দেশ গড়া নয় রাজনীতিরই অস্ত্র।
-
ছাত্রের হাতে পিস্তল তুমি রক্তে ভেজা ক্যাম্পাস
মানুষ গড়ার কারখানাটা আজ হয়েছে শুধুই ত্রাস।
-
মন্ত্রী এমপি আমলাদের তুমি পকেট ভর্তি টাকা
রাজনীতির ঐ ভাষন তুমি সকল বুলি ফাঁকা।
-
মধ্যরাতের টকশো তুমি জীবিকা বুদ্ধিজীবির
টিভি পত্রিকার খবর তুমি আহার সাংবাদিকের।
-
সুদ-ঘুষ স্বজনপ্রীতি তুমি দুর্নীতি প্রশাসনের
পুলিশের হাতের লাঠি তুমি বেচাকেনা আইনের।
-
আদালতের কাঠগড়ায় তুমি হাহাকার মজলুমের
ক্ষমতাবানদের অস্ত্র তুমি সেরা অস্ত্র জুলুমের।
-
জেলখানার ভেতরে তুমি কান্না নতুন শিশুর
কিংবা আবার পরীক্ষায় সেরা যুবা তরুন কিশোর।
-
সীমান্তে তুমি ঝুলন্ত লাশ যুবকের উলঙ্গ টর্চার
তুমি এখন বিজেপি সৈনিক নয় সাহসী বিডিয়ার।
-
ব্যবসায়ীদের বোবা কান্না তুমি চাঁদাবাজ সন্ত্রাস
দিন দুপুরে রাজপথে তুমি বিশ্বজিতের কুপিত লাশ।
-
কাবাব হওয়া একরাম তুমি বস্তাভরা লাশ নদীর
এমনতর স্বাধীনতায় আজ আমরা বোবা বধির।
-
রাজার হাতের মোয়া তুমি প্রজার লোভাতুর চোখ
গডফাদারের নেয়ামক শক্তি সাধারণের দুঃখ।
-
নির্যাতিত সম্পাদক তুমি টিভি দিগন্ত আমারদেশ
একাত্তরে পেলেও তোমায় পরাধীনতার কাটেনি রেশ।
-
ক্ষমতার পালাবদল তুমি ক্ষমতাবানের আশ্বাস
পয়তাল্লিশ পেরিয়ে গেলেও বাংলার কাটেনি দীর্ঘশ্বাস।
আল্লাহ্ আপনার হাতকে আরো প্রসারিত করুন। আমিন।
লিখে যান, কন্ঠে ঝরে পড়ুক প্রতিবাদ, অন্যায়ের বিরুদ্ধের বজ্র হুঙ্কার।
তবে আন্তরিক আবেদন পোস্ট স্টিকি করা হোক!!!!
মহান স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ বিলিয়ে সত্যিকারের স্বাধীণতা সংগ্রামের প্রত্যয়ে এগিয়ে আসার প্রত্যাশা রইল। আয়োজক পরিচালক ও সম্মানিত সভাপতিসহ সকলকে অভিনন্দন।
টুডে ব্লগের সম্মানীত ব্লগারদের আয়োজনে স্বাধীনতা উদযাপন পোষ্টে আমাকে "ভুলুন্ঠিত স্বাধীনতা" শিরোনামে কিছু লিখার আদেশ করা হয়েছে। বড়দের আদেশ শীরোধার্য্য, তাই সংক্ষিপ্ত আকারে নিজের বিনা পুজি থেকে কিছু লিখার চেষ্টা মাত্র।
সম্মানীত সভাপতি, আয়োজক, পরিচালক, লিখক ও পাঠকদের প্রতি রইল আন্তরীক সালাম।
যদিও মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, দেখিনি মাজলুমের ফরিয়াদ ও জালিমের উল্লাস। তবুও শুনেছি, জেনেছি বড়দের কাছ থেকে, কিভাবে কি হয়েছিল।
ইংরেজ শাষনের শেষ লগ্নে অনেক চড়াই উৎরাইয়ের পর ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশকে তারা ধর্মীয় ভিত্তিতে দুটি ভাগ করে গেলেন। হিন্দু সংখ্যা গরিষ্টের কারণে 'ভারত' আর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্টের কারণে পাকিস্তান। পুর্ব বাংলাকেও মুসলিম সংখ্যা গরিষ্টের কারণে পাকিস্তানের সাথেই থাকলে হলো, যদিও মুল পাকিস্তান থেকে দূর বহুদূর। তবুও বড়ভাই ও ছোট ভাইয়ের মত পশ্চিম পাকিস্তান আর পূর্ব পাকিস্তান হয়ে কিছু দিন ভালই কাটলো।
দূ-কুলে পাকিস্তান হওয়ায় ভারতবাসী হিংসুটে হিন্দুদের ঘুম হারাম হয়েগেল। ইস্রায়ীলী চক্ষু নিয়ে সর্বদা দু'পাকিস্তানকে টুকরো করার জন্য উঠেপড়ে লাগলো।
কিন্তু ভাইদের মাঝেতো পৃথক করা সম্ভব নয় যদি হিংসুটে রমনী জোগাড় না করা যায়। নিয়ম অনুযায়ী কিছু দালাল ও নিয়েজিত করলো।
বিভিন্ন ইস্যূতে দু'পাকিস্তানে অনেক আন্দোলন, অনেক দাওয়া দাবী ইত্যাদি পার হতে লাগলো। সময়ও তার গতিতে চলতে লাগলো। আরামে খেতে থাকলে নাকি গায়ে চর্বি জমে যায়। পশ্চিম পাকিস্তানেরও তাই হলো, পূর্বদের উপর ছোটখাটো জুলুম অত্যাচার শুরু করলো।
এদিকে হিংসুটে হিন্দুরা তিল কে তাল বানিয়ে পুর্ব পাকিস্তানের নেতা নেত্রীদের উস্কে দিতে থাকলো। আর এ কথাও বুঝিয়ে দিল যে, তোমরা গোলামীর শিকল পরে আছ। পশ্চিমারা তোমার মুনিব, তাই নিজেদের মুক্ত করতে এখনই আন্দোলনে নেমে পড়ো।
বাঙ্গালী জাতি এমনিতেই হুজুগে। ঢোলের বাড়িতে শুরু করলো পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন। এতেই পাকিস্তানী বাহিনী বাড়িয়ে দিল জুলুম অত্যাচার। অতঃপর কেন্দ্রিয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও পুর্ব পাকিস্তানের ব্যক্তিকে ক্ষমতা না দেওয়ার চুড়ান্ত যুদ্ধে রূপ নেয়। লক্ষাধিক তাজা প্রাণের বিনিময় এদেশ মক্ত হয়েছে ঠিক। কিন্তু বাঙ্গালী জাতিকে আবারো আবদ্ধ হতে হলো ভারতের গোলামীতে।
কতটুকু গোলামিতে নিমজ্জিত বাঙ্গালীজাতি তার আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তাদের দিকে তাকালেই বুঝাযায়ঃ দেশতো স্বাধীন হয়নি বরং মুনিবের বদল হয়েছে।
নতুন মুনিবদের চামচামি করে খুশি রাখলেই ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হয়। যাক না দেশ রসাতলে তাতে কি! মরুক না জনগন কাটাতারে তারে তাতে কি! ধর্ষিতা হোক না আমার বোন তাতে কি! লুটপাট হোক না রাজকোষ তাতে কি! প্রশাষনে জেঁকে বসুক হিন্দু শকুনরা তাতে কি! ফাঁসিতে ঝুলুম মজলুম তাতে কি! রাতের আঁধারে চলুক গনহত্যা তাতে কি!
প্রকৃত স্বাধীনতার জন্য প্রয়োজন আরেকটি যুদ্ধ। কথা লম্বা হয়ে যাচ্ছে। আজকের মত এখানে.............
হায়রে স্বাধীণতা! তুমি আজ চেতনা ব্যাপারিদের হাতিয়ার....................
'স্বাধীন হয়নি, শুধু মুনিবের বদল হয়েছে'।
অনেক অনেক ধন্যবাদ জান্নাতের বাপ।
ছেলে বেলায় স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারী এলে তা উদযাপনে নানা ভাবে ব্যাস্ত থাকতাম, দেয়াল পত্রিকা বের করা, কবিতা লিখা, কবিতা আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদী ছিল আনন্দ ও অনুপ্রেরণার উৎস্য। পরবর্তীতে পরিণত বয়সে স্বাধীনতা নিয়ে কিছু লিখা বা বলা তেমন কিছুই হয়নি, তার একটি কারন পেশাগত ব্যাস্ততা। তবে বড় কারণ সার্বজনীন স্বাধীনতা কারো কারো ব্যাবসায়িক পণ্যে পরিণত হওয়া, এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক মেরুকরণ। রাজনীতির সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই, তাই এই বিষয়ে নির্মোহ বিশ্লেষণ কোনো পক্ষকেই সন্তষ্ট করতে পারবেনা।
তবে আজ এক ভাই এর অনুরোধে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস, যা ক্ষুদ্র পরিসরেই সংক্ষিপ্ত করার তাগাদা আছে। আমি যেহেতু মুসলমান, তাই ইসলামই হবে আমার আলোচনার মান দন্ড।
পাকিস্তানের স্বপ্ন দ্রষ্টা আল্লামা ইকবালের প্রস্তাবনায় এই বাংলার কোনো অস্তিত্ব ছিলোনা। পাঞ্জাব, আফগানিস্তান ( উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ), কাশ্মীর ও বেলুচিস্তান এই নিয়ে তিনি পাকিস্তান নাম করণ করেন। ইকবালের আক্বীদাগত বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তিনি “Reconstruction of religious thought of Islam” নামে বই লিখেছিলেন। ইসলামের নির্মাণ ও তার পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়েছে আল্লাহর ওহীর আলোকে, রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর হাতে। এই ইসলামের ধ্যান-ধারণা কে ভেঙ্গে পুণর্নির্মান করার অধিকার কারো নেই।
মুসলিম লীগের জন্ম পূর্ব বঙ্গের মানুষের হাতে হলেও, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের নেতৃত্ব চলে আসে পরবর্তীতে কংগ্রেস থেকে আগত ইসমাইলিয়া শিয়া ধর্মালম্বী মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর হাতে। যিনি বিয়ে করেছিলেন একজন অগ্নি উপাসক পার্সী মহিলাকে এবং তাদের সন্তান সন্ততি পরবর্তীতে পার্সী ধর্মের অনুসারী হয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা ছিল এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর প্রাণের দাবী। কারণ তারা উচ্চ-বর্ণের হিন্দুদের দ্বারা সামাজিক ভাবে এমন ভাবে নির্যাতিত বা নিষ্পেষিত ছিলেন যে, একটি পৃথক মুসলমান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছিল। তাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন তাদের আশান্বিত করেছিল, তারা ইসলামের সাম্য ও ন্যায় বিচারের নীতির ভিত্তিতে সমাজ ও রাস্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই প্রকৃতির অসংখ্য মানুষের মধ্যে ছিলেন অনেক তরুন, যুবা, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ, এদেরই একজন ছিলেন হুমায়ুন আহমেদের নানা।
বিলেতি ধ্যান-ধারণায় লালিত নেতৃ বৃন্দের হাতে যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, তা তারা কিছুদিনের মধ্যেই উপলব্ধি করেন। বিশেষ করে পাকিস্তানের হুইস্কি পায়ী জেনারেলদের হাতে ব্যপারটি আরো খারাপ রূপ পরিগ্রহ করে।
প্রকৃত পক্ষে ইতিহাসের কোথাও শিয়া-সুন্নী মিলিত ভাবে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার নজীর নেই। আর এটা সম্ভবও নয়, কারণ উভয়ে বিশাসের দুই মেরুতে অবস্থান করেন। আর এর মধ্যে শুরু হয় নতুন ধরণের জুলুম নির্যাতন আর শোষন।
মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ হতে সময় লাগেনি। কিন্তু এর মধ্যে অনেক প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ রয়েছে যারা তখনো পাকিস্তান কাঠামোর মধ্য থেকেই পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতেন।
এরই মধ্যে ১৯৭০ সালের সাধারন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ, সময়ের পরিক্রমায় ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। যা এ জাতিকে এমন একটা অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়, যেখান থেকে আর ফিরে আসার আর কোন উপায় ছিলনা (Point of no return)।
আপামর জনসাধারণ অস্ত্র হাতে তুলে নেয় প্রতিরোধ সংগ্রামে, যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ বলি। জনসাধারণের এই প্রতিরোধে সেদিন ইসলাম বিরোধী চেতনা কাজ করেনি। চেতনা ছিল নিজেদের আত্মরক্ষা ও পাকিস্তানের ভন্ড শাসক গোষ্ঠীর হাত হতে নিস্কৃতি লাভ করে, নিজেদের স্বাধীন আবাসভুমি গঠন করা।
প্রকৃত পক্ষে ভারতের দুই প্রান্ত অবস্থিত দুই পাকিস্তানের এক থাকা কখনোই সম্ভব ছিলোনা।
জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে, ইসলাম পন্থী রাজনীতিবিদ দের একটি বড় অংশ এমন একটি ভুল করে বসেন, যার প্রভাব সুদুর প্রসারী।
প্রথমত ইসলামে যখন দুই গ্রুপ মুসলমানের মধ্যে বিবাদ হবে, তখন তাদের একত্রিত করে ন্যায় ভিত্তিক মিমাংসা করে দেয়া অপর মুসলমানের জন্য কর্তব্য। যদি তাদের একটি পক্ষ মিমাংসার পরো সীমা লংঘন করেন, তাহলে সকল মুসলমান এক্ত্রিত হয়ে সীমা লঙ্ঘন কারীকে প্রতিহত করবে।
দ্বিতীয়ত মজলুমের অধিকার আছে, নিজের জান-মালের রক্ষার, এক্ষেত্রে একজন মুসলমান মজলুমের পাশে দাঁড়াবে, এবং জালিমকে জুলুম থেকে নিবৃত্ত করবে।
উভয় ক্ষেত্রেই ইসলাম পন্থী নেতৃত্ব স্বঠিক অবস্থান গ্রহণে ব্যার্থ হন। তবে এটা ইসলামের ব্যার্থতা নয়।
পাকিস্তান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যার্থ হওয়ার জন্য কখনো ইসলাম দায়ী ছিলোনা। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষী একটি শ্রেণী এইটাকেই পুঁজি করেন। ১৯৭২ সালে ভারত ও রাশিয়ার প্রভাবে ধর্ম-নিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মুলনীতি হিসাবে গ্রহণ করা হয়। বাম পন্থি, নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষী চক্রটি এখনো ইসলামে বিরূদ্ধে তৎপর।
হুমায়ুন আহমেদের নানা ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির মেম্বার ছিলেন। হুমায়ুন আহমেদ তার এক বই এ লিখেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর মিশ্র অনুভুতি রয়েছে। তার বাবা মুক্তিযুদ্ধে নিহত হয়েছেন, অপরদিকে তার প্রিয় নানা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি তার নানার পক্ষে এই বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন যে, তারা ব্রিটিশ আমলে বর্ণ হিন্দুদের নিপীড়নে মসজিদের আজানও অনেক সময় দিতে পারতেননা। তাই তারা পাকিস্তান চেয়েছিলেন। কিন্তু যখন নিজেদের চোখের সামনে তাদের হাতে গড়া পাকিস্তান ভেঙ্গে যাচ্ছে, সেটা তারা সহ্য করতে পারেননি, তাই তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছেন।
যে নেতৃত্ব এই উভয় পক্ষের আবেগকে বুঝতে পারবেন এবং ইসলামকে আলোকবর্তিকা হিসাবে সাথে নেবেন, তারাই সফলকাম হবেন এবং সম্মুখে এগিয়ে যাবেন।
পরিশেষে স্বাধীনতা যুদ্ধের অগণিত নারী-পুরুষ যারা আত্নাহুতি দিয়েছেন, তাদের রূহের মাগফিরাত কামণা করছি।
আপনার এই কথায় শতভাগ সহমত। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন।
জাজাকিল্লাহ খায়রান।
মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তার নাম হল স্বাধীনতা। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার চার দশকেরও বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও আজও আমরা পাইনি প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ।
স্বাধীনতা মানে হল বাধাহীনভাবে চলতে পারা , বলতে পারা,লিখতে পারা,মত প্রকাশের সুযোগ পাওয়া ও মৌলিক সব অধিকারগুলোর সুবিধা ভোগ করতে পারা। কিন্তু আজকে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারিনা। বাধাহীনভাবে বলতে পারিনা। স্বাধীন হয়ে লিখতে পারিনা।
পাক গোলামীর জিন্জির ভেঙ্গে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান লাভ করে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
লাখো শহীদের রক্ত ও হাজারো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, লাল সবুজের পতাকা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও কি আমরা পেয়েছি প্রকৃত স্বাধীনতা?
আমরা তো চেয়েছিলাম একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। যার ওপর থাকবে না কারো কর্তৃত্ব। একে অন্যের উপর করবে না কোন অত্যাচার। পরস্পরের মাঝে ঘটবে না কোনো রক্তপাত। দেশে হবে না খুন, হত্যা,গুম , ধর্ষণ। কিন্তু এসব আজ অহরহ ঘটছে। তাহলে আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে কি পেলাম?
স্বাধীনতার অর্থ তো এটা নয় যে, কেউ সুরম্য অট্টালিকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঘুমাবে আর কেউ অনাহারে বিবস্ত্র হয়ে বাসস্থানের অভাবে ফুটপাতে মানবেতর জীবন কাটাবে ! মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী কিছু লোকের সুখ ও ঐশ্বর্যকে কোন দেশ বা জাতির স্বাধীনতা বলা যায় না।
স্বাধীনতা প্রতিটি জাতির জন্য সম্মান ও গৌরবের বিষয়। তবে স্বাধীনতার ফল যদি স্বাধীন দেশের মানুষ ভোগ না করতে পারে , তখন তা হয় অত্যন্ত বেদনা ও দুঃখের।
আমাদের স্বাধীনতা এক সাগর রক্ত আর অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। তাই তার মূল্য অনেক।
কবি শেখ ফজলুল করিম বলেন-
স্বাধীনতা স্পর্শমণি সবাই ভালোবাসে
সুখের আলো জ্বালে বুকে দুঃখের ছায়া নাশে,
স্বাধীনতা সোনার কাঠি,খোদার সুধা দান
স্পর্শে তাহার নেচে ওঠে শূণ্য দেহে প্রাণ।
বায়ান্ন আর একাত্তরে আমরা ভাষার জন্য লড়েছি,দেশের জন্য মরেছি। একসময় গাদ্দারের হাজার অপচেষ্টার পরও বাংলার পূর্বাকাশে উদিত হয়েছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য। বাংলার মানুষ দেখা পেয়েছিল নতুন ভোরের।
কিন্তু জালিমের নির্মম ছোবল থেকে দেশকে বাঁচানোর গৌরব আজ চাপা পড়ে গেছে শত মাজলুমের আহাজারি আর আর্তচিৎকারের নিচে।
তবুও তারা আশার আলো দেখার প্রতিক্ষা করছে। বাংলার অজস্র নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ উষাপানে তাকিয়ে আছে - অশ্রুসজল চোখ নিয়ে এবং বেদনাহত বুক নিয়ে সুবহে সাদেকের অপেক্ষায়য়তার নাম হল স্বাধীনতা। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার চার দশকেরও বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও আজও আমরা পাইনি প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ।
স্বাধীনতা মানে হল বাধাহীনভাবে চলতে পারা , বলতে পারা,লিখতে পারা,মত প্রকাশের সুযোগ পাওয়া ও মৌলিক সব অধিকারগুলোর সুবিধা ভোগ করতে পারা। কিন্তু আজকে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারিনা। বাধাহীনভাবে বলতে পারিনা। স্বাধীন হয়ে লিখতে পারিনা।
পাক গোলামীর জিন্জির ভেঙ্গে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান লাভ করে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
লাখো শহীদের রক্ত ও হাজারো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, লাল সবুজের পতাকা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও কি আমরা পেয়েছি প্রকৃত স্বাধীনতা?
আমরা তো চেয়েছিলাম একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। যার ওপর থাকবে না কারো কর্তৃত্ব। একে অন্যের উপর করবে না কোন অত্যাচার। পরস্পরের মাঝে ঘটবে না কোনো রক্তপাত। দেশে হবে না খুন, হত্যা,গুম , ধর্ষণ। কিন্তু এসব আজ অহরহ ঘটছে। তাহলে আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে কি পেলাম?
স্বাধীনতার অর্থ তো এটা নয় যে, কেউ সুরম্য অট্টালিকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঘুমাবে আর কেউ অনাহারে বিবস্ত্র হয়ে বাসস্থানের অভাবে ফুটপাতে মানবেতর জীবন কাটাবে ! মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী কিছু লোকের সুখ ও ঐশ্বর্যকে কোন দেশ বা জাতির স্বাধীনতা বলা যায় না।
স্বাধীনতা প্রতিটি জাতির জন্য সম্মান ও গৌরবের বিষয়। তবে স্বাধীনতার ফল যদি স্বাধীন দেশের মানুষ ভোগ না করতে পারে , তখন তা হয় অত্যন্ত বেদনা ও দুঃখের।
আমাদের স্বাধীনতা এক সাগর রক্ত আর অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। তাই তার মূল্য অনেক।
কবি শেখ ফজলুল করিম বলেন-
স্বাধীনতা স্পর্শমণি সবাই ভালোবাসে
সুখের আলো জ্বালে বুকে দুঃখের ছায়া নাশে,
স্বাধীনতা সোনার কাঠি,খোদার সুধা দান
স্পর্শে তাহার নেচে ওঠে শূণ্য দেহে প্রাণ।
বায়ান্ন আর একাত্তরে আমরা ভাষার জন্য লড়েছি,দেশের জন্য মরেছি। একসময় গাদ্দারের হাজার অপচেষ্টার পরও বাংলার পূর্বাকাশে উদিত হয়েছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য। বাংলার মানুষ দেখা পেয়েছিল নতুন ভোরের।
কিন্তু জালিমের নির্মম ছোবল থেকে দেশকে বাঁচানোর গৌরব আজ চাপা পড়ে গেছে শত মাজলুমের আহাজারি আর আর্তচিৎকারের নিচে।
তবুও তারা আশার আলো দেখার প্রতিক্ষা করছে। বাংলার অজস্র নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ উষাপানে তাকিয়ে আছে - অশ্রুসজল চোখ নিয়ে এবং বেদনাহত বুক নিয়ে সুবহে সাদেকের অপেক্ষায়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই ইশতিয়াক আমাদের আকজের আয়োজনে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য।
জী, আমরা সত্যিকার স্বাধীনতা চাই। স্বাধীন হওয়ার পরেও কারও অধীনতা চাইনা।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ব্লগ আয়োজনে অংশগ্রহণ করার জন্য।
আবু তাহের মিয়াজী
স্বাধীনতা আমার গ্রীষ্মকালের শীতল বৃষ্টিপাতা
সোহাগ করা আমার মায়ের শীতের নকশী খাতা
স্বাধীনতা আমার বাগানের গোলাপ চড়ান ঘ্রাণ
স্বাধীনতা মানে দুঃখী মানুষেরা জুড়াইবে প্রাণ।
স্বাধীনতা মানে কৃষক চাষির হাসি মাখা মুখ
ধনী-গরীব জেলে-তাতির রঙিলা সুখ।
স্বাধীনতা আমার লাল পতাকা রক্ত ঝরানো স্মৃতি
একাত্তরের মুক্তি-লড়াই সকল শহীদের কৃতি।
স্বাধীনতা মানে ভোরের পাখির কিচিরমিচির ডাক।
স্বাধীনতা মানে হৃদয় জুড়ে সেই স্মৃতি থাক।
স্বপ্ন গুলো বুকে পোষে নয়ন জোড়ে আশা
তিক্ত জ্বালা দেখতে চাইনা দেশের সর্বনাশা।
সবার মুখে হাসি ফুটবে, এটাইতো স্বাধীনতা। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা তা পাইনি।
আপনাকে আন্তরিক মোবারকবাদ ব্লগীয় আয়োজনে সুন্দর লেখাটি পোস্ট করে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য।
স্বাধীন হয়েছি ৭১এ
সাক্ষী বাংলার পথ প্রান্তর,
স্বাধীনতার জন্য প্রিয়জন হারিয়ে
শোকে ভেসে ছিলো অগনিত অন্তর।
স্বাধীন ভাবে বলে স্বাধীন-
ভাবে চলার ছিলো অঙ্গিকার,
আজ আমরা স্বাধীন, আছে স্বাধীন পতাকা
নামে স্বাধীন বুকে স্বাধীনতার হাহাকার!
সময়ের পরিক্রমায় স্বাধীনতার স্বাদ
অনুভব করা যায় ছোঁয়া যায়না,
বুড়ো, যুব, শিশুর মাঝেও আছে
স্বাধীন অধিকার একমাত্র কান্না।
কান্নার স্বাধীনতা চাইনা
চাই হূদয় উদ্ভেলিত হাসির স্বাধীনতা,
কেন থাকবে হিংসা বিদ্ধেষ
পাড়া প্রতিবেশীদের মনে ব্যথা?
স্বদেশকে এগিয়ে নিতে হিংসা-
বিদ্ধেষ ত্যাগ করা একান্ত প্রয়োজন,
সুস্থ চিন্তার মাধ্যমে সবার স্বাধীনতা
নিশ্চিত করার জন্য চাই নিবেদিত প্রাণ।
সবার মাঝে সামাজিক ভাবে
ফিরে এলে নৈতিক স্বাধীনতা,
সমাজ হবে সুস্থ, মানুষের মাঝে
ফিরবে আন্তরিকতা মায়া মমতা।
আন্তরিকতা মায়া মমতাই তৈরি
করে দেবে স্বাধীনতার মূল চরিত্র,
স্বদেশকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলার জন্য
একতা চাই একতা, নেই অন্য কোন মন্ত্র।
ঠিক সময়ে আপনার ইলেকট্রিসিটি চলে আসায় ব্লগীয় আয়োজনে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে আমি খুবই খুশি হয়েছি।
আপনার মত উপলব্দি সবার হোক, এটাই কামনা করছি।
আল্লাহ্ আপনাদের মঙ্গল করুন।
"স্বাধীনতা নয়"
অমর একুশে ভাষা দিবসে
ইংলিশে গাই গান।
একদিনেই অ আ ক খ বলে
উজার করি প্রাণ।
একেই বলে বাঙালি আর
ভাষার প্রতি টাণ।
বাংলা ছেড়ে বছর ধরে
ইংলিশে হই মর্ডাণ।
পাজ্ঞাবী আর লাল শাড়িতে
একদিনই হই বাঙালি।
সারা বছর টু পিস পরে
বৈশাখে হই পান্তা ভাতের কাঙালি।
এতো খাঁটি বাঙালি নয়
বাঙালি সাজার ঢং।
বহু রঙে বহু রুপে
একদিনে সাজে সং।
ছাব্বিশে মার্চে মনে পড়ে
দিবস স্বাধীনতার।
তিনশত চৌষট্টি দিনেই
শিঁকল পরাধীনতার।
একদিনে আর স্বাধীনতার শ্লোগানে
লাভ কি বলো তাতে?
বাংলা ভাষা, স্বাধীনতা পাইনি
আড়াই যুগের জীবনে।
ষোলোই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
হয়েছে কি বাস্তবে বিজয়?
নাকি শুধু লক্ষ প্রাণের
হয়েছিলো রক্ত ক্ষয়?
লক্ষ প্রাণের বিনিময়েও
পাইনি স্বাধীনতা।
আড়াই যুগ পরেও তাই
ঘুচেনি মনের ব্যথা।
ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস
বিজয়-দিবস বলে।
রাজনীতিবিদদের রাজনীতি নয়
পেটনীতি যে চলে।
মুক্তি যোদ্ধারা পায়না ভাত
নকলে পায় সুবিধা।
তবো বলো কেমন করে
পেলাম স্বাধীনতা?
শশুর আমার মুক্তিযোদ্ধা
সুবিধা পাবার আশে।
যুগে যুগে পালা-বদলের
ছিলো সদাই পাশে।
সবেই বলে দেব দিচ্ছি
শুধুই কথায় শান্তনা।
আড়াই যুগ পরেও তারা
পেলোনা আসল সম্মাননা।
কতরাজা এলো গেলো
শুধুই চাপার জোরে।
দলীয়রা ধনী হয় তব
গরীব না খেয়ে মরে।
দুঃখ মনে শুধুই ভাবি
পাইনি স্বাধীনতা।
পাকি থেকে মুক্তি পেলেও
চলছে ভারত অধীনতা।
২৭ শে মার্চ ২০১৬
মদিনা মনোয়ারা সৌদি আরব।
হাত রেখে হাতে কাঁধে কাঁধ রেখে
এসো করি গান
এই বাংলা আমার ধনী-গরিব, সাদা-কালোর
নাই ব্যবধান।
জানি ভঙ্গুর পথ নানাজনে নানা মত
তর্কের নাই শেষ
হোক ডানবাম গাই মিলনের গান
সাবাস বাংলাদেশ।
অনেক গড়েছে পানি কমেনি হানাহানি
লুটপাট বেড়েছে আরো
হোক শ্লোগান, চাই অবসান
দূর্বিত্তায়ন ছাড়ো।
যেতে হবে দূর সাতসমুদ্দুর
ক্ষুধা দারিদ্র যতো
দিতে হবে রুখে সাহস নিয়ে বুকে
একাত্তরের মতো।
এসো ধরি হাত রেখে কাঁধে কাঁধ
লালসবুজের গানে
আলোহাওয়া জলে শষ্য শ্যামলে
আলোড়িত হোক প্রাণে।
তর্কের নাই শেষ
হোক ডানবাম গাই মিলনের গান
সাবাস বাংলাদেশ।
যথার্থই বলেছেন।
তোমার হাতে রজনীগন্ধা ফুল
আর দিক্ষিণা হাওয়ায় ওড়ছে তোমার চুল
তোমার সাথে পায়ে পায়ে যাচ্ছে আমার ভুল
কোথায় যাচ্ছো কারসাথে ভেবেই মশগুল
খুব সুন্দর আয়োজন,কিছু লিখার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু শারীরিক অক্ষমতা, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিন দিনে এই মাত্র হাসপাতালের বেড থেকে মুক্তি পেলাম। তাই উপস্থিতি জানিয়ে গেলাম।
আয়োজক পরিচালক ও সম্মানিত সভাপতিসহ সকলকে অভিনন্দন।
সম্পূর্ণ সুস্থতায় আল্লাহ্র নিকট দোয়া করে দিলাম।
খুব অল্প সময়ের ভেতরে জানার পরেও আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণ খুবি ভালো লেগেছে। শুকরিয়া
সভাপতির সমাপণী ভাষণ,-
মাননীয় উপস্থাপক, পরিচালক ও উপস্থিত সূধী বৃন্দ, আপনাদের সতস্ফুর্ত অংশ গ্রহনে, ধৈর্য ও শান্তিপূর্ণ আবহ বজায় রাখার কারণে এ উদ্যোগ সাফল্য মণ্ডিত হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস৷ বিশেষ করে জনাব গাজী সালাহ উদ্দীন, আজকের পরিচালক সাহেব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রত্যেকের মূল্যবান লেখনীগুলোকে মূল পোষ্টের সাথে সচিত্র সংজোযন করে পোষ্টটিকে প্রানবন্ত করে তুলেছেন৷ আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ৷ কোন বিষয়ে কারও অন্তরে আঘাত লেগে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে তা বিবেচনার অনুরোধ রইল। যদি কোন ত্রুটি বিচ্যুতি অজান্তে বা জানতে হয়ে গিয়ে থাকে তবে তা মন্তব্যের দ্বারা জানা্লে শংষোধনের চেষ্টা করা হবে। আর পাঠক যারা এই আনন্দঘণ পরিবেশে উপস্থিত হয়ে আমাদের মজলীশে সোভাবর্ধন করলেন, তাদেরকেও জানাই শুভেচ্ছা৷ আর যারা লেখায় বা আনন্দে শেয়ার করতে বা দিতে পারলেন না, তাদের হয়ত কোন অসুবিধা থেকে থাকবে, তাদের পরবর্তী এমন কোন আয়োজনে শামিল হওয়ার অনুরোধ রইল৷ আল্লাহ তাদের অসুবিধা দূর করুক। আজ এ পর্যন্তই। মহান আল্লাহ আমাদের প্রকৃত ও কাঙ্খীত স্বাধীনতা উপভোগ করার তৌফিক দিন৷ সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে আজকের এ মহতী অধিবেশণের সমাপ্তি ঘোষণা করছি৷ আল্লা হাফেজ।
- স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে সবাই তাদের বীরত্বের কাহিনী বলাবলি করছিল। এমনই এক আলোচনায় একজন বলল, আমি এক পাকিস্তানী সৈন্যের পা কেটে দিয়েছি। আরেকজন বলল, আমি একজন রাজাকারের হাত কেটে দিয়েছি। এসব শুনে অন্যেরা জিজ্ঞেস করল, তোরা দুজনের কেউই গলা কাটতে পারলি না? দুজনেই উত্তর দিল, কিভাবে কাটব? গলা তো আগেই কাটা ছিল।
- এক রাজাকার পরিবারের একজন ছেলে মুক্তি বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এটা ওই পরিবারের জন্য বড়ই অপমান জনক। রাজাকার বাবা, মুক্তিযোদ্ধা ছেলেকে ঘাড় ধরে উঠানের মাঝে নিয়ে এসে বলছে –তোর মত ছেলের বাবার আত্মহত্যা করা উচিত। এই বলে লোকটি নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকালো। ছেলেটি বলছে, বাবা আপনি আত্মহত্যা করবেন না। বাবার উত্তর “চুপ কর হতভাগা। এর পরের গুলিটা তোকে করব”।
- পাকিস্থানী সেনা অফিসারদের স্ত্রী যারা পাকিস্থানে অবস্থান করছিল তারা স্বভাবত কারনেই একটা মানষিক অশান্তির মধ্যে থাকতো। স্বামী, অন্য নারী নিয়ে রঙ্গলীলায় মত্ত এটা নিশ্চয়ই স্ত্রীর জন্য সুখকর নয়। এমনই এক স্ত্রী পাকিস্থান থেকে ফোন করেছে স্বামীর অবস্থা জানতে।
মহিলাঃ হ্যাল, কে বলছ, আসলাম?
কন্ঠঃ না, আমি নতুন কাজের ছেলে, মদন।
মহিলাঃ আচ্ছা, তোমার সাহেবকে দাও।
মদনঃ সাহেব এখন ব্যাস্ত
মহিলাঃ ব্যাস্ত মানে, কোথায় সে?
মদনঃ আজ্ঞে, তিনি তিনজন মেয়েকে ধরে নিয়ে এসে এইমাত্র রুমে ঢুকেছেন
মহিলাঃ আচ্ছা, তাই বুঝি, দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা। এই মদন, তোমাকে অনেক টাকা দিব, একটা কাজ করতে পারব? এক্ষুনি, বন্দুক নিয়ে তোমার সাহেবকে একেবারে যায়গামতন গুলি করতে পারবে?
মদনঃ সত্যই টাকা দিবেন? আচ্ছা দাঁড়ান, লাইনে থাকেন।
(এর পরে গুলি আর চিৎকার এর শব্দ পাওয়া গেল। মদন ফিরে এসে আবার ফোন ধরল)
মদনঃ হ্যা, ম্যাডাম একেবারে যায়গা মতন গুলি করেছি , স্যার মারা গেছেন
মহিলাঃ খুব ভালো, এবার তার লাশটা পেছনের সুমিং পুলে ফেলে দাও
মদনঃ এই বাড়িতে তো কোন সুমিং পুল নেই ম্যাডাম
মহিলাঃ হ্যা, বল কি? এটা কত নম্বর বাড়ি? এর ফোন নম্বর কত?
- পাকিস্থানের সেনারা তো নারীভোগ করে অস্থির। এক পর্যায়ে এই নিয়ে গবেষনা শুরু হল। দুজন উচ্চ পদস্থ অফিসার বলাবলি এ নিয়ে আলোচনা করছে। একজন বলছে সেক্স খুব আনন্দের, আরকজন বলছে না, এতে শারিরিক পরিশ্রমই বেশী। এই নিয়ে তাদের বিতর্ক তুঙ্গে। বিতর্ক দেখে একজন রাজাকার এগিয়ে এলো।, বলল, হুজুর, কি হয়ছে? ওরা একই প্রশ্ন রাজাকারকে জিজ্ঞেস করে বলল – এবার তুমিই বল কোনটা সঠিক। রাজাকার কিছুক্ষন ভেবে উত্তর দিল, স্যার – সেক্স পুরোটাই আনন্দের, একটুও কস্ট নেই। ওরা জিজ্ঞেস করল, সেটা কিভাবে? রাজাকার উত্তর দিল, কস্টের কাজ হলে তো সবসময় আমাগো দিয়াই করাইতেন, নিজে কখনো করতেন না।
- এক গ্রামে পাকিস্থানের সৈন্যের একটা গ্রুপ প্রতি সপ্তাহে মোরগ লড়াই দেখতে চাইতো। এজন্য তাদের ক্যাম্পেই এর আয়োজন হোত। মোরগ লড়াই দেখায় যে তার ছোট ছেলেটিকে নিয়ে পাকিস্থানী সেনারা মজা করে। একটি ৫০ পয়সা ও একটি এক টাকার নোট পাশাপাশি রেখে ছেলেটিকে বলে – কোনটা নিবে? ছেলেটি ৫০ পয়সা নিয়ে দৌড় দেয়। এভাবে মজা করতে করতেই ছেলেটি ক্যাম্পে পরিচিত হয়ে গেল। নতুন কোন অফিসার ওখানে এলেই তাকে ছেলেটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। বলে যে এটা আস্ত এক গাধা। বড়টা রেখে ছোট টাকাটা নিয়ে দৌড় দেয়। নিজের ছেলের নাম গাধা শুনে ছেলের বাবা খুবই আহত হল। ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কি আসলেই টাকা ছোট বড় চিন না? ছেলেটি বলল, চিনি। তাহলে কেন সবসময় ছোট টাকাটি বেছে নাও? ছেলেটি উত্তর দিল – এটা করি বলেই তো ওদের কাছে আমার এত কদর। দেখছো না, ওদেরকে বোকা বানিয়ে কত টাকা নিয়ে নিয়েছি।
- যুদ্ধের শেষের দিকে, দুইজন পাক সেনা আর একজন রাজাকার একসাথে পালিয়ে এক নদীর চরে আটকা পড়ে গেল। হটাত তারা একটা পুরাতন বোতল দেখতে পেল। সেই পুরাতন বোতল খুলতেই বেরিয়ে এলো বোতলের দৈত্য। দৈত্য বলল, এই বোতলের ভেতরে হাজার বছরের বন্দীদশা থেকে তোমরা তিনজন আমাকে মুক্ত করেছ। তোমাদের প্রত্যেকেরই একটি করে ইচ্ছা পুরন করা হবে।
১ম পাক সেনাঃ আমরা এখন খুব অসহায় অবস্থায় আছি। যুদ্ধের দরকার নেই, আমি পাকিস্থানে ফিরে যেতে চাই। (সঙ্গে সঙ্গে এক তুড়িতেই তাকে পাকিস্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।)
২য় পাক সেনাঃ আমিও পাকিস্তানে যাতে চাই। (যাদু দিয়ে করে তাকেও পাঠিয়ে দেওয়া হল)
রাজাকারঃ ওরে বাবা, আমি লোকালয়ে গেলে মানুষ আমাকে মেরে ফেলবে, আর এখানে একা একা আমি থাকতেও পারব না। ওদের দুজনকে ফিরিয়ে নিয়ে এস।
- কয়েকজন পাক সেনা আর একজন রাজাকার একটা গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে গেছে। চাবিও পাওয়া যাচ্ছে না খুলতেও পারছে না। এখন বের হবে কিভাবে? একেকজন একেক বুদ্ধি দিচ্ছে। কেউ বলছে, সামনে কাচ ভেঙ্গে বের হবে, কেউ বলছে ইঞ্জিন ভেঙ্গে বের হবে, কেউ বলছে দরজা ভেঙ্গে বের হবে। এত কিছু শুনে, রাজাকারটি বলে উঠল – আরে ভাই যা করার তারাতারি করেন। বৃস্টি শুরু হচ্ছে, ভিজে যেতে হবে, গাড়ির ছাদ নাই।
- পাক সেনার দুস্টু ছেলেকে কে যেন শিখিয়ে দিয়েছে, বড়দের কাছে সব সময় গোপন কথা থাকে। কাজেই সেটা তুমি যেনে গেছো, এই ভয় দেখালে তারা তোমাকে টাকা দিবে। ছেলেটি বাবাকে গিয়ে বলল, বাবা আমি তোমার গোপন কথা জেনে গেছি। বাবা তাকে ধমক দিলেন বটে কিন্তু চক্লেট কেনার কেনার জন্য ১০ টাকা দিলেন। এরপরে ছেলেটি মাকে গিয়ে একই কথা বলল। মা তাকে চুপ চুপ বলে হাতে ২০ টাকা ধরিয়ে দিল। ছেলেটি তো মহা খুশি। কৌশলে ভালো কাজ হচ্ছে। ঠিক সেই সময় দুধওয়ালা এলো। ছেলেটড়ি তাকে দেখে বলল – আমি তোমার গোপন কথা জানি। দুধওয়ালা আবেগপ্রবন হয়ে বলল, হ্যা, জেনে গেছিস। আয় বাবা, তোর আসল বাবার বুকে আয়।
- মুক্তিযোদ্ধারা দুইজন রাজাকারকে নৌকায় করে নিয়ে যাচ্ছিল। রাজাকারেরা তো অনেক সম্পদ কামিয়েছে। তাই তাদেরকে ছেড়ে দেবার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদেরকে টাকার লোভ দেখালো। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা কিছুতেই তাদেরকে ছাড়বে না। শেষে এক পর্যায়ে শেষ চেস্টা হিসাবে তারা তাদের টাকার বাহার দেখাতে লাগল। একজনের তার দামী চশমাটা নদীতে ফেলে দিয়ে বলল, এমন চশমা আমার অনেক আছে। আরেকজন তার দামী ঘড়িটি ফেলে দিয়ে বলল, এমন ঘডি আমার অনেক আছে। এই দেখে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার দুইটাকে হাত পা বেধে নদিতে ফেলে দিতে দিতে বলল – বিশ্বাসঘাতক আমাদের অনেক আছে।
- বাংলাদেশের একজন নেতা নরকের গেটে গিয়েই হইচই শুরু করে দিলেন। তার সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে, প্রহসনের রায় হয়েছে, ইত্যাদি বলতে লাগলেন। নরকের প্রহরীরা বলল, আপনার রায়টি পুনঃবিবেচনার পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুতই সেটা আমাদের হাতে আসবে। এর আগ পর্যন্ত আপনাকে এখানেই থাকতে হবে। কি আর করবে, নেতা নরকের ভেতরে ঢুকলেন। ভেতরে দেখলেন কি সুন্দর পরিবেশ। ফুল, পাখি, ঝরনা, খাবার,নারী, আনন্দ সবই আছে এখানে। তাহলে কি তাকে ভুল করে স্বর্গে পাঠানো হয়েছে? না, ভুল হতে পারে না, হয়ত ইচ্ছে করেই তাকে স্বর্গে পাঠানো হয়েছে আর প্রথমে মজা করে একটু ভয় দেওয়া হয়েছে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, সেখানেই থাকবেন। এর মধ্যে, মুল গেট হতে, নেতার ডাক এলো। বলা হল, আপনার রায়ের ফলাফল চলে এসেছে। তাকে থামিয়ে দিয়ে নেতা বললেন, ওসবের দরকার নেই, আমি এখানেই থাকব। ও আচ্ছা, বলে নরকের প্রহরী হলে গেল। নেতা আবার ভেতরে প্রবেশ করলেন। ভেতরে গিয়ে দেখেন, সেটা যেন অন্য এক যায়গা, চারিদিকে ঘন কালো মেঘ, আগুনের ঝড় বইছে, বড় দৈত্য আগুনের মুগুর নিয়ে সবাইকে তাড়া করছে। নেতা দৌড়ে আবার গেটে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এক মিনিট আগেও তো এখানে সবকিছু সুন্দর দেখেছি, এখন এমন কেন হল? নরকের প্রহরী বলল, ওটা ছিল “স্বপ্ন”। তার মানে? নেতা জিজ্ঞেস করল। নরকের প্রহরী বললেন, তোমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের আগে এক রকম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছ আর পরে বাংলাদেশকে বানিয়েছ আরেক রকম। আমরাও তেমন করলাম।
বান্দা হাজির!!!
আমি খুবই খুশি হয়েছি আপনাকে এই আসরে দেখতে পেয়ে। আলহামদুলিল্লাহ্
স্বাধীনতা তুমি
ধর্ষিত নারীর পত্রিকার শিরেনাম,
খুন হত্যা রাহাজানির রাজ্য
বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ এক নাম।
:
স্বাধীনতা তুমি
বিডিআর বিদ্রোহের এক নাম,
বিচারের নামে প্রহসনের খেলা
নিত্য চলে আদালত পাড়ায় গ্যাঞ্জাম।
:
স্বাধীনতা তুমি
শেয়ার বাজারের লুন্ঠিত সম্পদ,
তেমন কিছু নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া
লুটতরাজদের দেয়া হয় মদত।
:
স্বাধীনতা তুমি
হাজার কোটি টাকা গায়েবের রাজ্য,
সোনার ছেলেরা করেছে এহেন কাজ
প্রতিবাদ করার আছে কি কারো সাধ্য!
:
স্বাধীনতা তুমি
কলঙ্কিনীর গলায় ঝুলানো স্বাধীনতা পদক,
মুক্তিকামী মানুষদের মত
চেয়ে থেকে থেকে হয়ে যাই হতবাক।
তবে আক্ষেপটা হচ্ছে, এই স্বাধীনতা সবার জন্য, বিশেষ কারও জন্য।
তাহলে সব কথার শেষ কথা এটাই, স্বাধীনতা, সবাই তোমার হলেও
তুমি সবার হতে পারোনি
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইজান, শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও স্বতুস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
নিয়মিত হওয়ার অনুরধ থাকল।
আপনার সুস্থতার জন্য আন্তরিক দোওয়া রইল৷
বলেন, আমি শুনতে কান পেতে আছি। আপনাকে সরাসরি পেলাম নাতো কি হয়েছে, আপনার উৎসাহ তো পেলাম, এটাই বা কম কিসে।
এখানে নো সরি!!! সবাই সবকিছুতে অংশগ্রহণ করতে পারেনা, সে সুযোগ, সময়, সার্বিক সুস্থতা সবার হয়েও ওঠেনা। এইস সময়ে অনেক নিয়মিত ব্লগারকে আমরা পাচ্ছিনা, এটা আমরা মেনে নিয়েছি। মানবিক দিকগুলোকে সবসময়ই মাথায় নিয়ে কাজ করা উচিৎ। আমরাও তাই করছি।
আপনার অসুস্থতা কিংবা ব্যস্ততা, শিগগিরই কম্পোর্টেবল পর্যায়ে নেমে আসুক, খুব করে এটাই কামনা করছি।
হয়তো ছোট মুখে বড় কথাই বলছি, কর্ম ব্যস্ততা অনেক পাপ পংকিলতা, অহেতুক কাজ থেকে বিরত রেখে স্বচ্ছ সুন্দর হতে সাহায্য করে, কিন্তু কাজের পেছনে ছুটতে গিয়ে আমি মানুষটাকে যন্ত্রে পরিণত করা কোনোভাবেই মানতে পারিনা। তাই কাজ এবং আমার কিছু করার ইচ্ছে স্বাধীনতার মাঝে ব্যালেন্স রেখেই চলা উচিৎ।
আপনাকে প্রায় বলতে শুনি, খুব পরিশ্রম করে, অনেক লম্বা ডিউটি, হতে পারে অতিরিক্ত কাজের চাপেই... আল্লাহ্ আপনাকে সুস্থতা দান করুন, এবং সদা সর্বদা মঙ্গল করুন।
স্বাধীনতা, দোহাইরে তোর, সত্যি করে সত্যি বল,
কাউকে দিলি যাদুই চেরাগ, কাউকে দিলি চোখের জল।
দস্যুরা সব যুগে যুগে, অপহরণ করল তোকে,
আপন জীবন বাজী রেখে, মুক্ত করে আনল লোকে,
সেই লোকেদের পায়ে দলে, অট্টালিকায় উঠলি গিয়ে,
সোনার খাঁচায় বন্দী হলি, খিড়কী দিয়ে দেখিস চেয়ে।
সত্যি করে বলত দেখি, তুই কি হলি নিঠুর অতি,
চোখের জলে ভাঁসছে যারা, কিইবা তারা করল ক্ষতি?
স্বাধীনতা, দোহাইরে তোর, সত্যি করে সত্যিবল,
তুই নাকি সেই মরিচিকা? তৃষ্ণার্তের আশার জল!
দুষ্ট নারীর হাতছানি কি, ছলনাতে পাগল করা!
ঘর বাঁধল তোরে নিয়ে, তোর দেখাতো পাইনি তারা।
তুই কি তবে ডুমুর ফুল, অদৃশ্য এমন কিছু,
জীবন মরণ পন করে সব, ছুটছে দেখি তোরই পিছু।
সাপের মাথার মনি নাকি, রূপকথাতেই দেখা মেলে।
জানব এ সব সাক্ষাতে তোর, হঠাৎ কোথাও দেখাপেলে।
কেউবা হল আপন হারা, কেউবা শুভ্র বসনা।
চণ্ডালিনী মুণ্ডু খেলি, তাওকি ক্ষুধা মিটলনা।
চোদ্দ কোটি কাঙ্গাল হল, অল্প ক’টি ভাগ্য বান,
কাঙ্গাল করে ছাড়লি তবু গাইব কি তোর জয়গান।
এইরকম লোভ আপনার বারবার হোক, এটাই কাম্য।
আসলেই তাই, স্বাধীনতা এখন অমাবশ্যার চাঁদ, ডুমুরের, মরীচিকা ইত্যাদি।
মিছে জয়গান গেয়ে কি লাভ? যৌক্তিক প্রশ্ন। স্বাধীনতা নামেই হয়েছে, কামে তার অস্তিত্ব ধরা না পড়লে কিভাবে জয়গান গান গাই।
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। স্বাধীনতা অর্জন করা যে কোনো পরাধীন জাতির পক্ষে অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা আরো কঠিন কাজ। স্বাধীনতা অর্জন করতে শক্তি, সাহস, সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং বহু রক্তপাতের প্রয়োজন হতে পারে।
শক্তিমান শাসকগোষ্ঠী পদানত জাতিকে কখনোই স্বাধীনতা দান করে না; বহু ত্যাগ ও রক্তপাতের মাধ্যমেই তা অর্জন করতে হয়।
স্বাধীনতা অর্জিত হলেই চিরস্থায়ী হয় না। যে কোনো সময় হরণ হতে পারে। তাই স্বাধীনতা অর্জনই মূল উদ্দেশ্য নয়। একে সমুন্নত রাখাই মুখ্য উদ্দেশ্য। তাই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য বেশি সংগ্রাম ও শক্তির প্রয়োজন। এছাড়া স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে আরো প্রয়োজন প্রযুক্তি, কৌশল, ঐক্য ও ন্যায়বোধ।
সকলের হিংসাত্মক দৃষ্টি থেকে দেশকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ দেশের ভেতরে ও বাইরে শত্রুর অন্ত থাকে না।
পরাধীনতার গ্লানি মোচন করতে যেমন ত্যাগ ও আত্মদান অপরিহার্য। তেমনি স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে জ্ঞান, বুদ্ধি, শিক্ষা ও সদ্বিবেচনাকে কাজে লাগানো একান্ত অপরিহার্য। মূলত যথেষ্ট সচেতন ও সংঘবদ্ধ না হলে স্বাধীনতাকে রক্ষা করা যায় না।
স্বাধীনতাকে অর্জন করতে যেমন নির্ভীক যোদ্ধা হয়ে অস্ত্র হাতে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়।
তেমনি স্বাধীনতা রক্ষায় জ্ঞান ও বিবেককে কাজে লাগিয়ে একতাবদ্ধভাবে সর্তক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। তাই স্বাধীনতার মর্ম উপলব্ধি করে একে রক্ষা করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য মনে করা উচিত। -
আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনে যে শহীদেরা আত্মত্যাগ করেছেন, নিজেদের প্রাণ বাজি রেখেছিলেন যে মুক্তিযোদ্ধারা, গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের স্মরণ করি। যেসব দেশ ও গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সাহায্য করেছে তাঁদের জানাই কৃতজ্ঞতা।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা ছিল, যথা :
১। পরাধীনতার শৃক্মখল ছিঁড়ে শোষণমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
২। মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও কর্মসংস্থান প্রভৃতি নিশ্চিত করে সমাজের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা।
৩। সকল নাগরিকের জন্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪। ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারসমূহ নিশ্চিত করা।
৫। বাঙ্গালীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির আলোকে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
স্বাধীনতার ব্যাপারে কিছু বাণী চিরন্তণীঃ
১-“ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন ”
২-“ এই স্বাধীনতা তখনি আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলার কৃষক-মজুর ও দুঃখী মানুষের সকল দুঃখের অবসান হবে ”
৩-যখন তুমি কোন একজন মানুষকে ভিন্নভাবে বিচার করো সে কারো কী ক্ষতি করছে তা না দেখে বরং সে শুধু অন্যরকম এজন্যে, তখনই স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখীন হয় ।
৪“ যে মাঠ থেকে এসেছিল স্বাধীনতার ডাক, সেই মাঠে আজ বসে নেশার হাট ”
৫“ জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন ”
৬-স্বাধীনতা, সে আমার – স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন – স্বাধীনতা – আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
৭“ ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা ”
আপনি স্বাধীনতা রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন, তার সাথে আমি একাত্মতা ঘোষণা করছি।
শুকরিয়া ভাই আব্দুল মতিন মুন্সী। আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন।
ধন্যবাদ আপু
হাত বাড়িয়ে নিন! পরে ঠান্ডা হয়ে গেলে খেয়ে মাজা পাবেন নাহ্!!!
আমি আর প্যারিস না হয়, ক্ষমা করে দিয়েছি কিন্তু মেহমানরা কি ক্ষমা করবে? আচ্ছা, দেখি আপনার হয়ে না হয় আমিই ক্ষমা চেয়ে নেব।
আপনাকে অনেক অনেক ফুলেল শুভেচ্ছা
আর স্পেসাল খাবার
অনেক অনেক ধন্যবাদ সাকা ভাইয়া
আমার প্রচেষ্টা, আর সবার আন্তরিকত সহযোগিতা ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। আমার সীমাবদ্ধতা বক্তব্য আসছে পরে।
কবিরা অধিকাংশ সময়ই নীরব থাকে, তাই ঝামেলা যে হয়েছিল, বুঝতে পারিনি।
যাক, ঝামেলা সারিয়ে এসেছেন, এতেই আমি অনেক বেশি আনন্দিত। আমি আপনাকে বেশ কয়েকবার নক করেছিলাম, যার মানে বুঝতেই পারছেন, আপনার আগমন কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এখানে নো সরি। সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি। নতুন অথবা আগের যেকোনো একটা লেখা পোস্ট করুন, আমি আমারটায় যোগ করে নেবো। এবং অবশ্যই তা আড়াইটার আগে হতে হবে।
সময়গুলোকে ভাগ করে নিন, অবশ্যই পাবেন। আমার এতো গরম লাগছেনা। বাতাস করতে হবেনা। পরে আসছে, কিছমতে কাটা আপনার। দেখেন, পনি কিছু খেতে দেয় কিনা।
প্রিয়তে রেখে সঠিক কাজটিই করেছেন।
উনার সঠিক মুগুর চালনা শিবিরকে লাইনে আনতে বাধ্য করেছে ।
এটাত হাসিনার বিপক্ষেই যাওয়ার কথা, নাকি? হতচ্ছাড়া!
আর হা, আমিও দেখেছি। তার মধ্যেই আমাদের থাকতে হবে।
মনের মাঝে প্রশ্ন জাগে, আসলেই কি আমরা স্বাধীন! ১৯৭১ সালের ভারতের পার্লামেন্ট এ দাঁড়িয়ে মহাত্বা গান্ধি গর্ব করে বলেছিল "হাজার সাল কা বদলা লিয়া" কিন্তু ৪৭ থেকে ৭১ হাজার সাল হয়না। সে বুঝিয়েছিল, ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিমদের আগমন সময় কালকে। তখন বাংলার মুসলিমেরা বুঝেছিল, আজ থেকে মুসলিমেরা আবার রাম রাজত্বের অধিন হলো!!!
টিভির টকশোতে কিছু জ্ঞান পাপী যখন বলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক, তখন মুসলিমেরা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিতে তাকিয়ে আফসোস করে!!
আজ জানতে বড় ইচ্ছে করে, ৯৩ হাজার সৈন্য সেরেন্ডার করেছিল, তাদের ৯৩ হাজার অস্র ও জমা দিয়েছিল, যেই অস্র দিয়ে লক্ষ লক্ষ বাংগালীকে হত্যা করা হয়েছিল, আজ ঐ অস্র গুলো কোথায়?? নতুন প্রজন্মকে দেখানোর জন্য একটা অস্র ও যাদুঘরে নাই কেন? কোথায় গেল সেই ট্যাংক, কামান গুলো? কোথায় গেলো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিনা কোটি কোটি টাকার অস্র???
তাই আজ বলতে হয়,আমরা স্বাধীনতা অর্জন করিনি, আমরা পুকুর থেকে মুক্তি পেয়ে সাগরে বন্ধী হয়েছি। আজ আমার প্রাণ প্রিয় মাতৃভুমিতে রাম রাজত্ব চলতেছে। বাক স্বাধীনতা নাই, জান-মালের নিরাপত্তা নাই।
তাইতো শিল্পী হায়দার হোসেন আক্ষেপ করে বলেছিলেন,
কি দেখার কথা, কি দেখেছি!
কি শোনার কথা, কি শুনেছি!!
৩০ বছর পরেও আজ স্বাধীনতা টাকেই খুজছি।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ইভেন্ট মিছ করেছি বলে খুব খুব কষ্ট লাগতেছে। আয়োজকদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।
, কেন অস্ত্রগুলো মুকযুদ্ধ যাদুঘরে নেই!? আপনি গিয়েছেন সেখানে?
ভবিষ্যত এ এমন আয়োজনে আপনাকে পাব, এমনটাই কামনা করছি।
অশেষ ধন্যবাদ খুব কষ্ট হয়েছে এতো বড় একটি লেখা পড়তে!
সুন্দর মূল্যায়ন করায় ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন