আমাদের পুনর্মিলনী
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ২০ মার্চ, ২০১৬, ০৮:৫২:৪৯ রাত
আমাদের মাঝে নেই কোন আত্মীয়তার বন্ধন। একে অপরের পূর্ব পরিচতও নই। একজনের বাড়ি বাংলাদেশের পূর্ব প্রান্তে তো, অন্য জনের বাড়ি পশ্চিম প্রান্তে। তবুও আমাদের মাঝে রয়েছে এমন এক সুদৃঢ় সম্পর্ক, দুনিয়াতে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েতো থাকবোই, আল্লাহ্ চাহেতো আখেরাতেও হবো না কেউ কারো থেকে বিচ্ছিন্ন। মাত্র কিছু কাল, একে অপরের বিপদে সাথী হয়ে থাকার যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, তা কেবল সম্ভব হয়েছে খোদা তায়ালার পথে পথচলায় একীভূত অংশগ্রহণের ফলে।
একবার যারা মামলার বেড়াজালে আটকা পড়েছে, তারাই বুঝেছে, জীবনে কতটা বিড়ম্বনা তার নিত্য সঙ্গী হয়েছে। শুধু কি নিজে? ব্যক্তির সাথে বিড়ম্বনায় যুক্ত হয়েছে পরিবারের প্রতিটা সদস্য। প্রতি মাসে দুইবার তিনবার করে আদালতে হাজিরা দিতে যেতে হয়, তাতে করে শিকার হতে হয় অবর্ণনীয় বিড়ম্বনার, তবুও যখন সবাই সবার সঙ্গে মিলিত হই, এ যেনো এক আনন্দমুখর মিলন মেলায় পরিণত হয়। দু:খ-কষ্টের মাঝেও আমাদের পুনির্মিলনীর সুবাধে দু:খের স্থলে মনে জায়গা করে নেয় অনাবিল আনন্দ।
খুব সকালে আরামের ঘুম হারাম করে, ক্লাস মিস, জরুরী কাজ ফেলে ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছুটে যাই আদালত প্রাঙ্গণে। মাসে দুইবার, কখনো তিনবার, এভাবেই চলছে হাজিরা। চাইলেই হাজিরা মিস দেওয়া যায়, কিন্তু ওয়ারেন্ট জারির শঙ্কায় তা আর করা হয়ে ওঠেনা। সাধারণত ওয়ারেন্ট হয়না, কিন্তু হতেই বা কতক্ষণ।
অসংখ্য দিন ভরেছিল লোহার খাঁচার ভিতরে, যদি পালিয়ে যাই! কি অদ্ভূত ব্যাপার! এমন নয় যে, জেল থেকে নিয়ে এসে গারদে ঢেলেছে, পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় খাঁচায় ভরতে হবে!
এইসব বিড়ম্বনা আদালতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং বাড়ি পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। আমার দু:খ-কষ্ট আমি হজম করতে পারি, সে ধৈর্য আল্লাহ্ আমাদের দিয়েছেন। কিন্তু এর ভোগান্তি যখন বাবা-মা, ভাই-বোনের উপর গিয়ে পড়ে, তখন নিজেকে স্থির রাখা অনেক কঠিন।
কিছুদিন পর পর পুলিশ গ্রামের বাড়ি গিয়ে হুমকী-ধমকী দিয়ে টাকা-পয়সা দিতে বাবা-মাকে চাপ দেওয়ার খবর যখন কানে আসে, তখন মুচড়ে পড়ি। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়, আমার জন্যই কিনা বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকে এমন অপমান-লাঞ্ছনা হজম করতে হয়!
আরো যখন শুনি, এই বলে চাপ দেয়, ‘টাকা পয়সা কিছু খরচ করেন, নয়তো আপনার ছেলে যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারে, এবং সারাজীবন জেলে পচে মরবে। বউ, নাতী-নাতনীর মুখ আর দেখা হবেনা’।
গ্রামের সহজ-সরল বাবা-মায়েরা ধরেই নেয়, তাদের সোনামানিককে জনমের তরে হারাতে বসেছে, যেকোনো মূল্যে হোক, যত টাকা লাগুক, ছেলেকে বাঁচানো চাই। তাই পুলিশের কথামতো কিছু টাকা হাতে দিয়ে সে যাত্রায় ছেলের মামলা খালাসের আশ্বাস পায়। আসলে কিছুইনা, সবই টাকা খাওয়ার ফন্দি।
কিন্তু অভাবনীয়ভাবে ছেলের জেল-জুলুম-নির্যাতন দেখে বাবা-মায়ের হৃদয় যখন ভেঙ্গে যায়, তখন ‘চিন্তা করোনা, তোমাদের ছেলের কিছু হবেনা, পুলিশ টাকা খাওয়ার জন্যই এমন করছে। আল্লাহ্ উত্তম হেফাজতকারী’ বলে সান্তনার বাণীতে তাদের অশান্ত হৃদয় শান্ত হয়না।
আদালত প্রাঙ্গণে সবাই যখন একত্র হই, শুরু হয়ে যায় স্মৃতিচারণ। যদিও অধিকাংশ স্মৃতিগুলোই তিক্ততায় ভরা, বেদনা বিধুর, তবুও টুকিটাকি কিছু মজার স্মৃতি আছে, যা গল্পে ওঠে আসলে একে অপরকে খোঁচা খুঁচি শুরু হয়ে যায়। আজতো এক ভাই আমাকে বলেই ফেললো, “কি সালাউদ্দিন, জেলে বসে সকাল বেলা পান্তা ভাত খুঁজে খুঁজে খেয়েও আমার নামটি মনে রাখতে পারলেনা!”
যখন কাউকে আসতে দেখি, দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি। এ ভালোলাগার যেন অন্ত নেই! বুকের সাথে বুক মিলিয়ে প্রশান্তিতে দু চোখ বুজে আসে। এক নিঃশ্বাসে ‘কেমন আছেন, এমন শুকিয়ে গেলেন কেন, খুব মোটা হয়ে গেছেন দেখছি, আমাকে ভুল গেলেন, কোথায় থাকায় থাকা হয়, কি করছেন এখন, আবার জেলে যাইতে হয়নিতো, বাসায় সবাই ভালো আছে, জব পেয়েছেন, মাঝে মাঝে মিস দেন কেন?” ইত্যাদি প্রশ্নের পর প্রশ্ন করতেই থাকি, উত্তর দেওয়ার সুযোগ আর হয়না।
যখন শুনি কেউ চাকুরী পেয়েছে, কেউ করেছে বিয়ে, তখন ভালোলাগায় যোগ হয় নতুন মাত্রা। আমাদের সুমন ভাই, নোয়াখাইল্যা, শ্রীঘরে বসে উনার সাথে কত যে মজা করেছি, সুখ-দু:খের গল্প করে বন্দিত্বের কষ্ট ভুলেছি, চুল পেঁকে যাওয়ায় বিয়ে করছেনা বলে কত যে খুঁচিয়েছি, সে ভাইটি এক বছর হলো বিয়ে করেছে। উকালতি পেশাকেই বেঁচে নিয়েছে। সপ্তাহ পার হলেই বাড়িতে দৌড়!
বেশ কিছু ভাই শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকুরীতে যোগ দিয়েছে। এমন খুশির খবরে ছেদ পড়ে যখন শুনি, মামলার কারণে অনেক ভাইয়ের চাকুরীটাই চলে গেছে। একদিকে পুলিশি হয়রানি, স্বাভাবিক চলাফেরায় চরম প্রতিবন্ধকতা, তার উপর চাকুরী হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে, ভাবতেই চোখের কোণে জল এসে পড়ে।
কয়েক দিন আগে এক ভাইয়ের সাথে দেখা হলো কমলাপুর রেল স্টেশনে। কারাগারে শেষের আড়াই মাস এক নাগাড়ে যার পিছনে নামাজ আদায় করেছি। মামা বাড়ি যাওয়ার আগে ছিলেন উত্তরার এক জামে মসজিদের খতিব। মুসল্লিরা অনেকবার এসেছে তাকে দেখতে, কিন্তু বের হওয়ার পর ইমামতি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়। সেদিনও খুব মন খারাপ হয়েছিল।
আবু ইউছুপ। ষাটোর্ধ্ব বয়স, নানান রোগে আক্রান্ত। এমন অবস্থাতেই গ্রেফতার হয় আবু ইউছুপ ভাই। জেল গেইটে রিএরেস্ট হয়ে যখন থানায় আসি, তখন উনার সাথে পরিচয়। নামাজের ব্যাপারে ছিলেন খুবই সিরিয়াস। আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। একই মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় বেশ কিছুদিন হাজিরাও দিয়েছেন। কিন্তু এখন আর দেখিনা। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি বিদেশ পাড়ি জমিয়েছেন। আল্লাহ্ উনার মঙ্গল করুন।
দেখিনা বহুদিন বিপ্লব ভাইকে। আস্ত পাজির পাজি। দুষ্টামি-বাঁদরামি করে সবাইকে মাতিয়ে রাখতো। বেশি বাদাবাদি আমার সাথে। বেত্তমিজের একশের! বিয়ে করেছে, সুন্দরী বউ আছে, অথচ প্রেম করে বেড়াচ্ছে অন্য একজনের সাথে। যখন আমাদের আদালতের গারদে উঠানো হতো, দুইজনই খাবার নিয়ে আসতো, আর আমরা মজা করে খেতাম। কেন জানি আজকাল বিপ্লব ভাইয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিনা। সে কোন দলীয় লোক ছিলোনা। তার অপরাধ ছিল হাত তালি দেওয়া। পুলিশ দৌড়াচ্ছে, আর সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাত তালি দিচ্ছিল, তাই তাকেও ভরল জেলে।
মিস করছি রনি ছেলেটাকেও। চা দোকানে কাজ করতো। সেও বিপ্লবের মত মজা নিতে গিয়ে এরেস্ট হয়ে দীর্ঘ দিন কারাভোগ করেছে। এ ছিল আরো বেশি বদ। প্রেমিকে পাঁচশত টাকার এক নোট হাতে ধরিয়ে দিলে সেটা শার্টের কলারে পেঁচিয়ে জেলে ঢুকে পড়ল। তবে বিপ্লব আর রনি আমাদের সাথে এসে অনেক বদলে নিয়েছে নিজেদের, এমন পরিবর্তন দেখে কার না ভালো লাগবে। দোয়া করি, তারা যেখানেই থাকুক, আল্লাহ্ তাদের ভালো রাখুন, এবং ইসলামের পথে অবিচল রাখুন।
পরস্পরের সাথে সাক্ষাতে একে একে স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে আমাদের থাকা-খাওয়া, একজনের বিপদে সবাই সাহায্য সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া, হতাশায় আশার বাণী, আল্লাহ্কে স্মরণ করিয়ে দেওয়া, ধৈর্যের শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা, পাহাড়সম বিষণ্ণতাকে লুকিয়ে রেখে অন্যের বিষণ্ণতা দূর করায় আপ্রাণ চেষ্টা করে যাওয়া, নিজে কম খেয়ে অন্যেকে বেশি খাইয়ে পরিতৃপ্ত করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আবার কেউ কেউ ছাড়া পেয়েও আবার গিয়েছে মামা বাড়ি। অনেকে ছাড়া পেয়েছে, কেউ অনেক এখনও কারাভোগ করছে। আল্লাহ্ তাঁদের সবাইকে হেফাজত করুন।
অনেকেই অনেক কথা বলে, করে অনেক সমালোচনা। করুক না। দোষ-ত্রুটি নিয়েইতো মানুষ। আর এই ত্রুটিযুক্ত মানুষগুলো যখন একত্রে কিছু করবে, তখন ভালোর মাঝে কিছু ভুল অবশ্যই হবে। আমি কারও অন্ধ সমালোচক নই, আবার অন্ধ অনুসারীও নই। আমার কাছের মানুষজন জানে, আমি বিভিন্ন বৈঠকে কিভাবে লোকজনকে জবাবদিহিতা মূলক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতাম।
যে যাই বলুক, আমি বাস্তব অভিজ্ঞতায় বিশ্বাসী। এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদের আমি কাছ থেকে দেখিনি, হয়নি সৌভাগ্য তাদের পাশাপাশি থাকার। এই মানুষগুলোকে নিয়ে অন্যেরা সমালোচনায় মেতে ওঠে, আমি তখন শুনে থাকি। না জেনে সমালোনার জবাব দেওয়া যায়না, দেওয়া উচিতও নয়। তাই ভালো মন্দ নিরূপণে সেসব সম্পর্কে উত্তমরূপে জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাই।
কিন্তু যাদের খুব কাছ থেকে দেখেছি, বুঝেছি, পিঠাপিঠি থেকেছি, তাদের আমল আখলাক বাহ্যিক বিশুদ্ধতা আমার কাছে অনুকরণীয় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই মানুষগুলো এক একজন যেন ধৈর্যের পাহাড়। সবর কি জিনিস, সাক্ষাৎ শিক্ষা নিয়েছি উনাদের কাছ থেকেই।
ওহ! নিজের এবং পরিবারের, সর্বোপরি দেশের করুণ পরিস্থিতিতে কিভাবে যে নিজেদের এমন স্থির রাখতে পারেন, সাথে না থাকলে বোধ হয় বিশ্বাসই হতোনা। আল্লাহ্ সবাইকে উত্তম প্রতিদানে ধন্য করুন।
সত্যিই আমাদের সম্পর্কটা অন্য সব সম্পর্ক থেকে যেন খুবই আলাদা। এখানে ব্যক্তিগত দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টা অনুপস্থিত। তাই সম্পর্ক সহজে যেমন গড়ে ওঠেনা, তেমনি একবার গড়ে ওঠলে ঠুনকো আঘাতে তা ভেঙ্গেও যায়না। আসলে সম্পর্কটা পার্থিব সম্পর্ককে কেন্দ্র করে নয়, এই সম্পর্কটার শুরুই আল্লাহ্কে ভালোবেসে, এবং যদি শেষ হয়, তাও আল্লাহ্কে ভালোবেসেই।
বাস, এইটুকুই।
কষ্টের মাঝেও আমাদের মত ভুক্তভোগীদের জন্য প্রতিটা পুনির্মিলন যে ভালোলাগার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, এমনকি আজকেও আমরা আদালত প্রাঙ্গণে এক সাথে মিলিত হওয়ায় ভালোলাগা থেকেই দুচারটি কথা বলা। একটু লেংদি করে ফেলছি সম্ভবত। বিরক্তি নেবেন না যেন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৫ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে লিখাটা পড়ে খারাপ লাগেনি বরং ভালই লেগেছে ।
বার বার আপনাদের পূর্ণমিলন হোক ।
পড়তে পড়তে একেবারে অতল গহ্বরে চলে গেছেন! তার উপর আবার টায়ার্ড! এখন কি করি! দিলেন তো মহা টেনশনে ফেলে। পনা পড়ে গেছে, আমার যে কি অস্থির লাগছে, তা কি করে বুঝাই!
আপনার ভালোলাগা জেনে আমি খুবই প্রীত হলাম।
বারবার হোক, তবে এইভাবে নয়। হয় যেন অন্যভাবে।
আ
আন্ডা মজা করি কায়াম
সত্যিই আপনার মত দুঃখি মানুষের সংখ্যা আমাদের সমাজে কম নয়। যারাই মামলায় জড়িয়েছে, তারাই বুঝে যেন নিজের দেশেই রিপুজি হয়ে আছি। আল্লাহ আপনার সহায় হোক। জাযাকাল্লাহ খাইর
আমি নিজের জন্য দুখী নই। সবার কথা ভেবে নিজের দুঃখগুলোকে খুব তুচ্ছ মনে হয়।
যথার্থ বলেছেন, আমরা নিজ দেশেই পরবাসী।
আল্লাহ্ উত্তম হেফাজতকারী।
আল্লাহ্ আপনাকে সদা সুস্থ রাখুন।
জান্নাতকে নিয়ে একটা লেখা দিয়েন।
কত আগে একটা লেখায় তার সম্পর্কে জেনেছ.
জাযাকাল্লাহু খাইরান
হয়তো কেউ খবর রাখবেনা, তাই বলে আমাকে গাল ফুলিয়ে বসে থাকাও শোভা পায়না। কে কতটুকু আমার খবর নিল, তা দেখার বিষয় নয়, বরং আমি কতটুকু তাদের খবর রাখলাম, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের বাকী জীবনে হয়তো আর একবারও দেখা হবেনা, তবুও আত্মার আত্মার যে সম্মিলন ঘটেছে, তা যে অটুট থাকে।
আমার পাড়ায় আপনি নতুন মেহমান। শুভেচ্ছা নেবেন।
কেমন করে যেন আপনার লিখাটি আমার চোখের সামনে থেকে মুহূর্তেই অদৃশ্য হয়ে গেল। কিছু বুঝে উঠার আগেই। যাক অবশেষে খুঁজে পেলাম।
আপনার বেদনাবিঁধুর স্মৃতিগুলো আসলেই অনেক যাতনাময়। এসব আমাদের দেশের খণ্ডিত একটু চিত্র মাত্র।
নিশ্চয়ই মহান রাব্বুল আলামিন এভাবেই আপনার ঈমানের পরীক্ষা নিয়েছেন। পুনর্মিলনী কিনা জানিনা। তবে আমার তো মনে হয় আসলেই এটি একটি ব্যতিক্রমী অন্তরমিলনী মুহূর্ত। যা কেবল একজন ভুক্তভোগীই অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতে পারেন। অন্য কেউ নয়।
প্রথম যেদিন এই বিষয়ে আপনার একটি লিখা পড়েছিলাম সেদিন মনের অজান্তেই চোখ দুটো ভিজে গিয়েছিলো। আজো তার ব্যতিক্রম হয়নি!
জাজাকাল্লাহু খাইর।
বুঝেছি, বয়স হয়েছেতো, তাই চোখে একটু দেখেন আরকি। যাক, এটা বয়সের দোষ, আপনার না।
যথার্থই বলেছেন, একটি খণ্ডিত চিত্র মাত্র। আমাদের সাথে যা হয়েছে বা হচ্ছে, তা খুবই সামান্য। এর চেয়ে ভয়াবহ নিদারুণ যন্ত্রণা, হয়রানী, সীমাহীন জুলুম নির্যাতন অবলীলায় সয়ে গেছে বা যাচ্ছে অগুনতি পরিবার, শুধু আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে।
তবে আমার তো মনে হয় আসলেই এটি একটি ব্যতিক্রমী অন্তরমিলনী মুহূর্ত। যা কেবল একজন ভুক্তভোগীই অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতে পারেন। অন্য কেউ নয়।
সত্যি এটাই।
আপনি আমার তখনকার লেখা এখনও মনে রেখেছেন! সেই মন্তব্যটি আমারও খুব মনে আছে, সবসময় থাকেও।
আল্লাহ্ সর্বাবস্থায় আপনাকে সুস্থ রাখুন।
সম্পর্কগুলো ভালোলাগার কারণ হয়ে থাক, মনে প্রাণে এটাই চাওয়া।
আপনার ঐ পুনর্মীলন সংক্ষেপ হোক কিন্তু ভাল লাগার সম্পর্ক চিরস্থায়ী হোক৷
তাই যেন হয়। আমাদের সেই আগেকার মিলন মেলাগুলো দিনকে দিন খুব সংকীর্ণ হয়ে আসছে।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ শেখ ভাই
শিরোনাম পড়ে ভেবেছিলাম স্কুল বা কলেজ লাইফের পুনর্মিলনী, যতটুকু ভেবছিলাম তার চাইতে অনেক গভীর সম্পর্কের আকুলতা, ভালোলাগা, ত্যাগ আর মহত্ত্বের পরশ পেয়েছি প্রতিটি লাইনে !
আমাদের আজকের মহিলা প্রোগ্রামে সবর নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আপনার পোস্ট পড়ে শুধু এটুকুই বলবো - মুমিন জীবনের দাবী ঈমানের পরীক্ষায় সবরের পদক্ষেপে অটল থাকা । আর আপনারা তো সেই সৌভাগ্যবানদের অংশীদার যাদের আল্লাহ বেহিসাবী প্রতিদানের কথা উল্লেখ করেছেন, যাদের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত- সুবহানাল্লাহ !
আপনারা যারাই দূর্ভোগের শিকার হয়েছেন, হচ্ছেন আপনারা কখনোই একা নন বরং এই আসমান-জমীনের একচ্ছত্র প্রভু স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সাথেই আছেন!
{وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ.}
‘আর তোমরা ধৈর্য ধর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন’ (সূরা আনফাল: ৪৬)।
আপনাদের সকলের জীবনের উপর ছেঁয়ে থাকা দুশ্চিন্তার কালো মেঘের অপসারণ ঘটুক, জীবনে স্বাচ্ছন্দ এবং স্বস্থি ফিরে আসুক , প্রতিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হোন এই দোআ রইলো!
জাযাাকাল্লাহু খাইর।
আপনিও মূল্যায়ন করেছেন অনেক সুন্দর করে। বানু আপা ঠিকই বলছেন, "তবে হৃদয়ছোঁয়া মন্তব্যের জন্য আমি সাদিয়া মুকিম ছোট আপুকে বেশী নম্বর দিতে চাই আমার চেয়ে। আমার তো মনে হয় আমি যা বলতে চাই তা সময়াভাবে প্রকাশ করতে পারিনা। কিন্তু সাদিয়া অতুলনীয় এ ব্যাপারে"।
আপনারা আপনাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এটা জেনে যে কত্তো ভালো লেগেছে, তা কি বলে বুঝানো যাবে! আর এখানকার মেয়েরা ক'দিন পর পরই গ্রেফতার হয়। এইতো ক'দিন আগে লক্ষীপুরে আট জনকে গ্রেফতার করলো। আল্লাহ্ সবাইকে হেফাজত করুন।
"আপনারা যারাই দূর্ভোগের শিকার হয়েছেন, হচ্ছেন আপনারা কখনোই একা নন বরং এই আসমান-জমীনের একচ্ছত্র প্রভু স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সাথেই আছেন"!
এই ভরসাতেই তো সব বাঁধা বিপত্তি সত্ত্বেও টিকে আছি, থাকার চেষ্টা করছি।
আপনার দোয়া আল্লাহ্র দরবারে কবুল হয়ে যাক, মনে প্রাণে তাই কামনা করছি।
জাযাকাল্লাহু খাইর
বেশ কষ্ট লাগলো ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে। দোয়া করি আল্লাহ সবকিছু সহজ করে দিন। আমীন।
তবে এই জুলুমের প্রতিদান জালিমরা অবশ্যই পাবে ইনশাআল্লাহ।
হায় আল্লাহ পোস্টটি ভাবালো অনেক!!
বিশেষ করে মা-বাবাকে এভাবে কষ্ট দেয়ার কোন মানে হয় পুলিশের!?
ইয়া আল্লাহ মজলুমের সহায় হোন। আমীন।
এটাই ইমানের লক্ষণ। এক মুমিন অন্য মুমিনের ব্যথায় ব্যথিত হবে।
আমাদের উদ্দেশ্যে আপনার দোয়া আল্লাহ্ কবুল করুন। ছুম্মা আমিন
ইনশা আল্লাহ্। এই আশাতেই তো জুলুম নির্যাতন সহ্য করে যাওয়া।
আসলে ভাই, আমরা তো খারাপ কিছু করছিনা, আর বাবা-মাও বদ সন্তান জন্ম দেননি, তবুও কেন আমাদেরই কারণে তাদের লাঞ্ছিত হতে হবে!
ছুম্মা আমিন
আপনার উপস্থিতি জানান দেয়ার জন্য আবারও ধন্যবাদ। আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন
উপস্থিতি এবং সুন্দর মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ জানাই কুয়েত প্রবাসী ভাই
যে দু:সহ সময় গত হয়েছে, তার পুরনাবৃত্তি আর কখনোই আপনাদের জীবনে না আসুক, এমনটাই কামনা করছি খুব করে।
আপনার সালাম, সহমর্মিতা ও শ্রদ্ধা আমি এবং আমরা আন্তরিকতার সাথেই নিলাম।
আল্লাহ সব সময় আপনাদের হেফাজতে রাখুন।
জালেমের জুলুম থেকে আল্লাহর সাহায্য কামনা করছি।
এই দ্বিগ্নতা খুব দুর্বল করে দেয়।
আমিন।
আমিন
লিখাটা একটু বড় তবে খুব একটা বড় না কিন্তু কত্ত বারে যে পড়ে শেষ করলাম, যখন ই পড়তে আসি, তখন ই কোন না কোন বাধা আসে
বললেন মামার বাড়ি, আমি জানতাম শশুর বাড়ি, যেখানে জামায় আদর করা হয়
বার বার মিলন হোক, তবে ঠিক এই ভাবে নয়, অন্য কোথাও অন্য কোন ভাবে
পুলিশি হয়রানিটা এখন সব জায়গাতে ই ছড়িয়ে পরেছে
বুচ্ছি, ছোট্ট আব্বা খালি ঝামেলা করে।
যাক, এতো বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আপনি যে পড়েছেন, তাতে আমি কৃতজ্ঞ।
পুলিশ যদি মামা হয়, থানা তাহলে মামার বাড়ি। জেলখানা শ্বশুর বাড়ি ঠিকই আছে। তবে বউয়েরে সাথে থাকবার দেয়না।
তাই যেন হয়রে।
জী ঠিকই বলেছেন।
তাহলে ধন্যবাদ, কেমন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন