হিজাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, হেতু কি যৌক্তিক নাকি শুধুই এলার্জিগত সমস্যা?

লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০১ নভেম্বর, ২০১৫, ০৭:২৪:৫৫ সন্ধ্যা



বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ড্রেস কোডের প্রয়োজন আদৌ আছে কিনা? স্কুল-কলেজের মত বিশ্ববিদ্যালয়েও ড্রেসকোড চালু এবং তা মানতে বাধ্য করা বাড়াবাড়ি নয় কি?

যার যার রুচিমাফিক ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সেলোয়ার কামিজ, জিন্স প্যান্ট, টি শার্ট পরা যদি পোশাকের স্বাধীনতা হয়ে থাকে এবং তাতে বাধা দেয়ার এখতিয়ার কেউ না রাখে তাহলে বোরখাওয়ালীরা হিজাব, নিকাব এবং ছেলেরা পাঞ্জাবী, পায়জামা পরিধান করে ক্লাসে আসলে ক্ষতি কি এবং কেন ইসলামী পোশাক ছেড়ে আসতে বাধ্য করবেন?

কেন দুদিন পর পর হিজাব-নিকাব পরিহিতা ছাত্রীদের অপমান করা হবে? তারাতো কারো ক্ষতি করছে না, পরিশীলিত পোশাক পরে ক্লাসে আসা কি অমার্জনীয় অপরাধ?

আপনি বলেন, তাদের দেখলে চেনা যায় না, অপরিচিত মনে হয় কিন্তু তাদের শরীর, মুখ ঢাকা, থাকলেও চোখতো অন্ধ নয়, তারাতো আপনাকে দেখছে, কখনো কি এমন হয়েছে আপনাকে দেখেও সম্মান করেনি? তাহলে কেন বোরখার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা?

আপনি বলেন, বোরখা পরে নকল করতে সুবিধা, তাই পরীক্ষার হলে হিজাবধারীদের নানানভাবে নাজেহাল করেন, আসলে কি নকল তারাই শুধু করে? বিশবিদ্যালয় জীবনে অনেক পরীক্ষা দিলাম, সাধারণ পোশাকে মেয়েদেরকেও নকল করার হিরিক দেখেছি, তাহলে দোষটা কেন এক পেশে হবে?

আপনি যেমন বোরখা, দাঁড়ি,টুপি, পাঞ্জাবী সহ্য করতে পারেন না, তাই আপনার স্টাইল মত পোশাক পরেন, তাতে তারা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না, জোরে গেলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আপনাকে শালিন পোশাক পরার কথা বলে, তারাও তেমনি টাইট পিট জিন্স শার্ট অথবা এ জাতীয় পোশাক পছন্দ করে না, তাদের মর্জিমত পোশাক পরে, তাতে আপনি বাধ সাধেন কেন?

আপনি শিক্ষক, সব ছাত্র-ছাত্রী আপনার কাছে সমান, সে যে দল, মত বা পথের হোক, আপনি কেন পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে শুধু হিজাব পরার কারণে সন্তানতূল্য মেয়েদের সাথে এমন বর্বর আচরণ করেন?

শুধু কি বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে এমন করছেন, নাকি যৌক্তিক কারণও আছে? বোরখা পরে ক্লাসে আসে বলে আপনি তাদের বেয়াদব, বেহায়া, নির্লজ্জ বলে গালি দেন, তাহলেতো দেখছি আপনার কাছে ভালো হওয়ার জন্য নগ্ন হয়ে চলতে হবে! কারণ যাই হোক, বেয়াদবি নেবেন না, তারা আপনার মেয়ের মতই, তাদের সাথে এমন জঘন্য আচরণ মোটেও উচিত নয়।

উল্লেখ্য যে, গত ২৫ অক্টোবর থেকে ইটারন্যাশনাল ইউনিবার্সিটি অব বিজনেস এ্যান্ড টেকনোলজি তে (আইইউবিএটি) বোরকা, নেকাব, পাঞ্জাবী, পায়জামা, টুপি, পাগড়ী পড়িহিত সমস্ত ছাত্র- ছাত্রীদের ভার্সিটিতে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।

এর প্রতিবাদে গত ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটে মানববন্ধন করেন।

এছাড়া গত ২৯ অক্টোবর শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ধর্মীয় পোশাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করার দাবিতে মানববন্ধন করে আইইউবিএটি এর শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ইসলামী পোশাকের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। পাঞ্জাবি টুপিওয়ালা বা বোরকায় আবৃত নারীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

সূত্রঃ নয়াদিগন্ত

কিছুদিন আগে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়েও এক ম্যাডাম হিজাব পরিহিতা কয়েক জন বোনকে নির্লজ্জ, বেয়াদব, বেহায়া ইত্যাদি গালি দিয়ে বের দেয়। অন্য এক ডিপার্টমেন্টে এক ম্যাডাম একজন বোরকা পরিহিতা মেয়েকে ক্লাসে সবার সামনে ডেকে এনে তার বোরখা খুলে ফেলে!

তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, যতই বোরকার বিশোদগার করা হচ্ছে, দিনকে দিন বোরকার সংখ্যা ততই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে, যদিও তার সঠিক ব্যবহার নিয়ে যথেষ্ঠ প্রশ্ন আছে, তবুও বোরখা দেখলেই যাদের শরীরে জ্বালা ধরে যায়, নিশ্চয় তা তাদের চুলকানি আরো বাড়িয়ে দেবে।

আজ দুপুরে অপরাজেয় বাঙলার পাদদেশে বসে আট দশ ক্লাসমেইট বসে আড্ডা দিচ্ছি, তখন আড্ডার বিষয়বস্তু ছিল হিজাব এবং নিকাব। মেয়েদের সুরক্ষার জন্য বোরকা পরিধানের আবশ্যকতা এবং এর ইতিবাচক দিকগুলোই

তুলে ধরেছেন। অভিভাবকদের মধ্যেও মেয়েকে বোরকা পরাতে শুভবুদ্ধির উদয় ঘটছে।

যা কিছু ভালো তা মানুষ গ্রহণ করবেই, হয় আজ নয়ত কাল। পরিশেষে হিজাব বিদ্বেষী শিক্ষক শিক্ষিকাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এবং আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে তাদের জন্য হেদায়াত কামনা করছি।

বিষয়: বিবিধ

১৪৬০ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348116
০১ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৯
রক্তলাল লিখেছেন : যারা এসব করছে (হিজাব বিরোধীতা) তারা মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করছে।

অথচ তারাই ব্যাক্তি স্বাধীনতা এসবের ব্যাপারে বুলি আওড়ায়।

০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:৫৬
289209
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : রক্তলাল, আপনি ঠিক বলেছেন। আপনার সাথে সহমৎ পষণ করছি।
348120
০১ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ধন্যবাদ
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:৫৭
289210
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
348129
০১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৯
হতভাগা লিখেছেন : বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপর মহলের চাপে এসব কাহিনী করে ব্যবসা বাতিল হয়ে যাবার ভয়ে আর উপর মহলকে মেয়েদের ব্যাপারে লুলায়িত করে তোলে সুশীলরা ।
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:৫৭
289211
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : উচিত কথা হতভাগার কন্ঠেই মানায়।
348143
০২ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১২:১৯
শেখের পোলা লিখেছেন : ইসলামকে দেশ ছাড়া করার জন্য এটিও তাদের দরকার৷ তারাযে এখনও মুসলীমদের লেখাপড়া বন্ধ করনি তাইতো অনেক৷
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:৫৯
289212
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : করেনি, কিন্তু যে হারে ইংরেজী বাঙলা, প্রযুক্তি আরো কি সব ঢুকিয়ে ইসলামী শিক্কাহকে এতো সংকুচিত করছে, কদিন পরে এটার স্বকীয়তায় খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।
348176
০২ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:২০
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : হিজাব ছিলো হিজাব থাকবে...ইনশাআল্লাহ। তবে কলেজের মাইয়াদের ফিটিং হিজাব দেখলে মেজর জিয়া বেচে থাকলে নিশ্চয়ই বেত্রাঘাত করতেন, তাই হিজাব হবে ঢিলেঢালা...টিলাটালা না। অনেক ধন্যবাদ
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:৫৯
289213
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : তাই যেন।

মেজর জিয়া এমন করতেন নাকি, বেশ তো।

আপনাকেও ধন্যবাদ ব্রাদার।
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩৯
289226
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : আমি সুনেছি যে মেজর জিয়াউর রহমান নাকি তার আমলে পেট খোলা রেখে কাপড় পড়া মহিলাদের পেটে আলকাতরা লাগিয়ে দিতেন...বিস্তারিত জানতে কোন সিনিয়র বি এন পি নেতা থেকে জেনে নিতে পারেন ধন্যবাদ।
348202
০২ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : গায়ের জোড়ে ধর্মনিরপেক্ষতা কায়েম করার মাধ্যমে নারিদের পন্য বানানর বুদ্ধি!!
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:০১
289214
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : নারীরাও পন্য হতে এক পা খাড়া। মানুষের স্বকীয়তা তাদের সয় না।
348215
০২ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৩১
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : এলার্জির দোষ আছে দ্রুত চিকিতসা দরকার
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
০৪ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:০১
289215
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : যথার্থই বলেছেন। ধন্যবাদ মুন্সি ভাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File