নড়বড়ে নৈতিকতা, লুকোচুরি চলে হরদম, কে কাকে শোধরাবে?
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০৯ আগস্ট, ২০১৫, ০৭:২৩:৪২ সন্ধ্যা
চরম হতাশা আর শঙ্কায় ঘুম আসে না!
আপন জনের নষ্ট হয়ে যাওয়া দেখে
সমাধান খুঁজে ফিরি, তবু ফেরাতে পারিনা।
কে কাকে শোধরাবে, প্রতিষেধক দিয়ে সারিয়ে তুলবে? যখন অধিকাংশ মানুষই মহামারিতে আক্রান্ত! প্রযুক্তির আশীর্বাদ অথবা অভিশাপের কল্যাণে অর্থাৎ ইন্টারনেট এক্সেসের কারণে গার্ডিয়ানরা সন্তানদের অপকর্মের শতভাগের ৯৮ভাগই জানে না, তেমনি করে স্বামী/স্ত্রী, ভাই-বোন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের পরস্পরের সিকিভাগ অপকর্মই জানতে পারে না, জানলেইতো ফিরাবে।
এক সময় প্রেমে চিঠি বিনিময় হতো, সময়সাপেক্ষ এবং বেশ কষ্ট সাধ্য কাজ ছিল, দেখা করা, লুকিয়ে কথা বলা ছিল আরো বেশ কঠিন। তারপর আসল মোবাইল, যার মাধ্যমে অবৈধ প্রেম ভালবাসার সুযোগ বেড়ে গেলো, অন্যগামী বহুগামী হওয়া অনেকাংশে সহজ হল কিন্তু ধরা পড়ে যাবার ভয় ও কম ছিল না। বেশি সময় কানে মোবাইল ধরে রাখা, অথবা ওয়াইটিংয়ে থাকা অনেকের মনে সন্দেহের উদ্রেক করতো, তারপর মোবাইলে টাকা খরচের হিসাবও লাগত, তাতে করে গার্ডিয়ানদের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হতো বখে যাওয়ার আগেই পীরিতের দেওয়ানাদের অধঃপতন ঠেকাতে।
আর এখন, ইন্টানেটে এক্সেস তথা সোস্যাল মিডিয়ায় সর্বজনার সহজ প্রবেশাধিকার সন্তানদের মতিগতি, স্বামী/স্ত্রীর লাইনচ্যুত হয়ে যাওয়া অথবা স্বজনদের ভাবসাব সম্পর্কে মহা ধোঁয়াশায় ফেলে দিচ্ছে! একজনকে পাশে ঘুম পাড়িয়ে সারারাত তৃতীয় জনের সাথে ‘অফলাইনে’ চ্যাটিং বা ভিডিও চ্যাটিং করলেও ঘুণাক্ষরেও টের পাচ্ছে না। এভাবেই ছেলেসন্তান বাবা মাকে, ভাই বোনকে, বোন ভাইকে, শিক্ষক শিক্ষার্থীকে, শিক্ষার্থী শিক্ষককে প্রতিনিয়ত ঘুমে রেখে অবলীলায় অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে কিন্তু সামনে সবাই সাধু মহা সজ্জন!
এ অবস্থায় আপনার নিকটাত্মীয়ের নষ্ট হয়ে যাওয়ার একশভাগের মাত্র দুইভাগ আলামত দেখতে পেয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেও ফেরাতে না পেরে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠবেন না অথবা খুব দুঃখ পেয়ে সম্পর্ক শেষ করে দিবেন না। দোষটা শুধু তার একার নয় বরং সে বহমান নষ্ট, কলুষিত সমাজের দোষে দূষ্ট, তাই দোষ বর্তমান সময়ের, সমাজেরও। অন্যায়কাজে চতুর্মুখী হাতছানিতে সে বেশামাল, অপকর্মের উপাদান সহজলভ্যতায় সে বেদিশা। এতসবের পরে তাকে ফেরানো সহজ কথা নয়, নষ্ট সমাজের বিষ বাষ্পে তার পেট ভরে আছে, তাই আপনার আদেশ, উপদেশ, নীতিকথা তার এক কান দিয়ে ঢুকে, অন্য কান দিয়ে ফুড়ুৎ করে বেরিয়ে যায়।
তবুও আপনার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন, সাথে সাথে এটাও মনে রাখুন, 'চতুর্দিকে অন্যায় অপকর্ম মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, অধিকাংশই যাতে আক্রান্ত, তাছাড়া ভুল মানুষেরই হয়', তাই কাউকে বিপথে গমন করতে দেখলেই তাকে দূরে ঠেলে দেবেন না! এমন গো ধরে থাকবেন না যে, 'সে আমার ছোট ভাই/বোন, অথবা সন্তান হয়ে এমন করবে, তা আমি কিছুতেই বরদাশত করব না!। তার মানে এও নয় যে, আপনি শাসন করবেন না। আপনার এখতিয়ার অনুযায়ী শাসন অবশ্যই করতে হবে। আর ‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’।
তাই তার কৃত অপরাধের জন্য যতনাটা বকা বা শাস্তি দেবেন, তার চেয়ে বেশি বেশি করে সাধারণভাবে ন্যায় অন্যায়ের বিষয়গুলো এবং দুজাহানে তার আশু পরিণতি তার মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে, যাতে করে দুচারবার অন্যায়ে মিশে গেলেও নিশ্চয় সঠিক পথে ফিরে আসবে এবং ধীরে ধীরে ব্যক্তির মাঝে পরিবর্তন আসবে, সর্বোপরি সমাজটাকেই পরিবর্তন করতে পারলে তবেই আপনার উপদেশ তার কান আমলে নেবে, বখে যাওয়া ফেরাতে ঘাম ঝরাতে হবে না।
স্যোশাল মিডিয়ায় ছোট বড় সকলের প্রবেশাধিকার এবং ব্যবহার বিধি জানার আবশ্যকতা অনস্বীকার্য কিন্তু ব্যবহারের উপকরন হাতে দিয়েই দায়িত্ব শেষ মনে করবেন না। হতে পারে সে আপনার সন্তান, আপনার স্ত্রী/স্বামী, ছোট/বোন, স্যোশাল মিডিয়ায় তার কাজ সম্পর্কে খোঁজ নিন, উপকারী জিনিসগুলোর সাথে পরিচয় করি দিন, পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়ে বেশি বেশি উদ্বুদ্ধ করুন, প্রযুক্তির সদ্বব্যবহার করতে শেখান, আর সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম, সদা সৎসঙ্গ এবং উত্তম পরিবেশের ব্যবস্থা করুন। তাহলে স্যোশাল মিডিয়া তার জীবনে অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ হয়েই দেখা দেবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৬৮ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি যথার্থই বলেছেন, বর্তমান সময়ে যতটানা আশীর্বাদ, তার চেয়ে বেশি অভিশাপ।
এখন বেহায়াপনায় ভালো পারফরমেন্সে করতে পারলেই সবাই বিশাল কৃতিত্বের অধিকারী হয়ে যায়, যারা এসবে জড়ায় না তারা খ্যাতি লাভ করে অথর্ব হিসেবে।
আমাদের চেষ্টা থাকবে ফেরানোর, না পারলেই ক্ষতিতো নেই, আল্লাহ্ আমাদের চেষ্টার জায়গাটা দেখবেন।
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপনি বোধ হয় আমার ব্লগ পাড়ায় এই প্রথম, আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন।
আল্লাহ্র রাসূল (স) শেষ জামানা সম্পর্কে অনেক ভবিষ্যৎবাণী করে গেছে, সেগুলোই ঘটতেছে, তাই এসবকে পরীক্ষা জ্ঞান করে দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করতে হবে।
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
‘শাসন করাতো তাকেই সাজে, আদর করে যে’
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
জাযাকাল্লাহ খাইর
একি! আপনিতো আদর আর শাসনের বন্যা বইয়ে দিলেন!
সুন্দর বলে মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকে স্পেইশাল ধন্যবাদ, নেবেন কিন্তু।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
সাদিয়া মুকিম, সন্ধ্যাতারা, মাহবুবা সুলতানা লায়লা কৈ?????? তাদের ছাড়া ভালো লাগছে না রে!
নুহ (আঃ) ও লুত (আঃ) এর সময় এরকম কিছু হয়েছিল যে কওমের ম্যাক্সিমাম লোকই ছিল বিপথে । তাই ডেস্ট্রাকশন হয়ে গিয়েছিল অনিবার্য ।
ডেস্ট্রাকশনের পর কাজ শুরু করতে হবে ।
আমার কাছে মনে নূহ ও লুত (আঃ) এর সময় থেকেও খুব জঘন্য সময় আমরা ফেইস করছি।
আমি হতাশ নই!!
আপনি(হতভাগা) বলেছেন
"ডেস্ট্রাকশনের পর কাজ শুরু করতে হবে"
কিন্তু নুহ(আঃ)ও লুতআঃ)এর সময়ের মত ডেস্ট্রাকশন আর হবেনা..
এ জঙ্গল কেটেই ফসল ফলাতে হবে!!
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন