জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া বিভীষিকাময় এক রাত
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ২০ মার্চ, ২০১৫, ০৭:৫৪:০০ সন্ধ্যা
ঘটনা শুধুই ঘটনা নয়, সব ঘটনা বিস্মৃত হয়ে যাবারও নয়। একটি ঘটনাই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে যথেষ্ট। আমি যার প্রমাণ। একটি বিভীষিকাময় রাত, আমার সাথে ঘটে যাওয়া ভয়ানক ঘটনা, যা আমার জীবনে এনে দিয়েছে আমূল পরিবর্তন। এমন একটি রাত আসা খুব প্রয়োজন ছিল, নয়ত আমি হতাম অসংখ্য মানুষের জন্য একটি ত্রাসের নাম!
সেই রাতে যমের হাত থেকে যেন পালিয়ে আসা। বিভীষিকাময় তো বটেই! লাঠির আঘাত এসে পড়ল পিঠে, আঘাতের ভারে মুখ থুবরে জমিনে পড়ে যাই। এই বুঝি জীবন প্রদীপ নিভে যায়! শেষ চেষ্টা করে দেখা যাক বাঁচা যায় কি না। অন্ধকার থাকায় আমার পড়ে যাওয়া সম্ভবত দেখতে পায় নি। পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি আর হাতের তালুতে শরীরের সমস্ত শক্তি এক করে লাফ দিয়ে উঠে পা বাড়াই সামনে, শুকনো পাতায় পিছলা খেয়ে আবার পড়ে যাই, শংকা পেয়ে বসে এইবার আর রক্ষা নাই! চেয়ে দেখি ‘ওরা’ কিছুটা দূরে, উঠে নিজেকে ভিকটিম প্রমাণ করতে চোর চোর বলে উর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াই।
পা দুটি চলছে না। তবু দৌড়াচ্ছি। চিরচেনা উদ্যান, কিন্তু এমন কেন? গেইট খুঁজে পাচ্ছি না। অনেক ছূটাছুটির পর গেইট চোখে পড়ে। গেইট, উদ্যান সবি আগের জায়গাতেই আছে, তবু ঘটনার আকস্মিকতায় গেইট ভুলে যাওয়া। গেইট দিয়ে বের হয়ে মানুষের সাথে মিশে যাই। ভয় হয়, পিঠের রক্তমাখা শার্ট কেউ দেখে ফেললে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। দ্রুত রাস্তা পার হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। সেখানে আমার দুজন সাথী ব্যথায় কাতরাচ্ছে। তারাও মার খেয়ে কোন রকমে পালিয়ে এসেছে। শংকায় বুক কেঁপে উঠে, মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে যায় নিতো? মসজিদের সামনে আরো তিন চার জন আসে ল্যাংরাতে ল্যাংড়াতে। একজন কে গাছের সাথে বেধে বেধরক মেরে পুলিশে দিয়েছে। সাথে থাকা ল্যাপটপ ওরা নিয়ে গেছে। ‘হলে’ ফোন করলে বড় ভাই এবং বন্ধুরা লাঠি সোটা নিয়ে উদ্যান এবং শহবাগ মোড়ে মহড়া দেয়, কিন্তু আক্রমণকারীরা ততক্ষণে পগারপার। আমাকে আচ্ছামত ধমক লাগায়, কেন ভাইদের না জানিয়ে উদ্যানে আসলাম!
পাঠক, কারা, কেন মেরেছে, তা আজ ও আমার কাছে রহস্য। মার খেয়েছি, মারতেও দেখেছি, কিন্তু কারা মেরেছে তা দেখলেও তাদের চিনতে পারি নি। অন্ধকারে উদ্যানের পথ ধরে এগোচ্ছি আমরা ১০জন। ফিস ফিস শব্দ কানে আসায় থমকে দাঁড়াই। দেখি দুই যুগল, বয়স হবে ৩৫/৪০। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু, ‘এতো রাতে এখানে কি করছে?’ এরি মাঝে শুকনো পাতার মরমর শব্দে পিছন ফিরে তাকাই। লাঠি হাতে কতগুলো ভয়ংকর মূর্তী আমাদের কিছু বুঝতে না দিয়েই অতর্কিত হামলা চালায়। পড়ি কি মরি, যে যে দিকে সম্ভব, দেই দৌড়। তার আগেই বিশাল ওজনের একটা লাঠির আঘাত হজম করতে হয়।
পাঠক, এতোক্ষণ শুধু ঘটনার বিবরণ দিয়ে গেলাম, কিন্তু কি কারণে এমন আক্রমণ, তা নিয়ে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। শুনুন তাহলে- কি কারণ? তা আমার কাছেও পরিষ্কার নয়, তবে অনুমানের উপর ভিত্তি করে কিছু কারণ দাঁড় করানো যেতে পারে। অনুমান বলে, আমাদের কৃত কর্মের ফল এটি। পাপ বাপকেও ছাড়ে না, আমাদের কেও ছাড়ে নি। দশ দিন চোরের, একদিন গৃহস্থের। বেশি বাড় বেড়ে গেলে পতন অবসম্ভাবী হয়ে উঠে। আমরা চোর নই, ডাকাতও নই, তবে ছিলাম কিছু মানুষের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক। একবার যে আমাদের হাতে ধোলাই খেয়েছে, সে দ্বিতীয়বার উদ্যানের নাম মুখে নিবে না কখনো । এইবার ছোট করে কৃতকর্মসমূহের বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করি।
ফার্স্ট ইয়ারে তখন। ক্লাস শুরু আগেই হলে উঠে পড়ি। বড় ভাইয়েরা প্রতি সপ্তাহে নতুনদের একটি রুমে জমায়েত করে নিয়ম-কানুন বলে দেয় ‘হলে’ থাকতে চাইলে কিভাবে চলতে হবে। যে ম্যানারগুলো মেনে চলতে হবেঃ ‘বড়দের দেখলে সালাম বিনিময়, এক হাতে হেন্ড শেইক, প্রোগ্রামের ডাক পাওয়া মাত্রই প্রোগ্রামস্থলে হাজির, কেউ মারলে পাল্টা আঘাত হানার সক্ষমতা অর্জন, বিড়ি সিগারেট খেতে পারবে তবে বড় ভাইদের সামনে নয়, বন্ধুদের মাঝে তুই তুকারি সম্পর্ক স্থাপন, হলে বুক ফুলিয়ে হাঁটার সাহস ইত্যাদি’।
একদিন সন্ধায় এক বড় ভাই বলে, “সালাউদ্দিন চল, বই মেলায় যাই”। আমরা ১০-১২জন কে ভাই কিছুক্ষণ বই মেলায় ঘুরিয়ে নিয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। অন্ধকারাচ্ছন পরিবেশ, যতই সামনে এগোচ্ছি, ততই চোখ গিয়ে পড়ছে উদ্যাম আদিমতায় মেতে থাকা যুবক যুবতীদের ওপর। অজপাড়া গাঁ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে আসি ঢাকায়, এমন নোংরা দৃশ্য ছিল আমার কাছে কল্পনাতীত। মনে হল, শরীরিয় বিনোদনের জন্য উদ্যানটি লাইসেন্স করে দেয়া।
চলতে চলতে ভাই দাঁড়িয়ে যায়, অন্ধকারে গাছের গুঁড়িতে দুজন অপকর্মে লিপ্ত। আমাদের আগমনে কাপড় ঠিক করাতে ব্যস্ত। দুটোকে দাঁড় করিয়ে সবাই কে মারার নির্দেশ দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি ঠায় দাঁড়িয়ে। ভাই বলে উঠে, “সালাউদ্দিন, মারছিস না কেন? লুইচ্ছা দুইটারে মেরে হাড় ভেঙ্গে দে”। ১৮/১৯বছরের টগবগে তরুণ, ভাল মন্দের বিচার পরে হবে, কথামত কাজ, জীবনে প্রথম কোন মেয়ের গালে কষায়ে থাপ্পর মারি। সেদিন আরো দশ বারো জন কে মেরে তবেই উদ্যান থেকে ভাইসহ বেরিয়ে আসি। ভাই আমাকে উৎসাহ দিয়ে বলে, “সাব্বাস! এইভাবে মাঝে মাঝে আসবি, আর মেরে মুরে হাত সুখ করে যাবি”। তারপর ডাস’র(ফাস্ট ফুডের দোকান) সামনে এসে ‘রোল’, ‘স্যান্ডউইচ’, লাচ্ছিসহ আরো কিছু খাবার খাইয়ে বলে চল। বিল দিবে কে? জিজ্ঞেস করলে বলে, দেয়া লাগবেনা। মাঝে মাঝে এসে ফ্রী খেয়ে যাবি! ক্যাম্পাসের বড় ভাইদের কাছ থেকে এর চেয়ে উত্তম শিক্ষা আর কি হতে পারে!!!!!
সপ্তাহে দুই তিন আমরা দলবেঁধে উদ্যানে যেতাম। যাকে যেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ, আর ব্যাভিচারে লিপ্ত দেখতাম। তার ওপর চড়াও হতাম। কিছু মজার ব্যপার ঘটত। যখন কাউকে জিজ্ঞেস করতাম, “ভাই, আপনি কি করেন?” পড়াশোনা। “কোথায় এবং কোন ডিপার্টমেন্টে?”। “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিবিএ”। পাঠক, আপনারা জানেন, সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ আলাদা কোন সাবজেক্ট নয়, এটা একটা ফ্যাকাল্টি। মিথ্যা বলায় শুরু হত বেদম মাইর। আবার কাউকে, “ভাই, আপনি কি করেন, কোথায় থাকেন?” জবাবে, “পড়াশোনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কার্জন হলে!!!” অথচ কার্জন হল থাকার কোন জায়গা নয়। সাইন্স অনুষদের ক্লাসরুমরুম অবস্থিত সেখানে। এমন মিথ্যাবাদীদের জন্য মাইর হল সর্বতকৃষ্ট ঔষধ। আবার কাউকে জিজ্ঞেস করি, “ভাই এবং আপু, আপনাদের মধ্যে সম্পর্ক কি?” জবাবে, “খালাতো ভাই বোন! ঘুরতে এসেছি’। “এতো রাতে ঘুরতে এসেছেন কেন? আমরা দেখেছি আপনারা স্বামী স্ত্রীর মতই সম্ভোগে লিপ্ত, আব্বু আম্মু কি বলে দিয়েছে এইসব করতে?” লা জবাব। আর তখনি ধুপধাপ মাইর। ভাসমান পতিতাদের মারতে গেলে জোরে জোরে চিল্লাবাল্লা শুরু করে দিত, মারব কি, আমরাই ভয়ে পালাতাম।
সব কিছুর একটা লিমিট থাকে, থাকা উচিত। লিমিট ক্রস করলেই মুশকিল। আমরা ভুলে যাই, যে দুহাত দিয়ে মারি, তার বিপরীতে আরো শত হাত উদ্যত হয় পালটা আঘাত হানার জন্য, সুযোগ পেলেই কাজে লাগায়। একদিন আসে সুযোগ। উদ্যানে নোংরামীতে লিপ্ত সমস্ত কপোত কপোতিদের মেরে মুরে বাহির করে ফিরছি। তখনি একদল লোক আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারপরের ঘটনা আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন যা আমি উপরে উল্লেখ করেছি।
সেই থেকে আর কখনো উদ্যানে যাই নি। একদিন বন্ধুরা উচ্ছেদ অভিযানে যাবে, আমাকে জোর করে কাদে করে নিয়ে চলল। গিয়ে দম বন্ধ হয়ে আসে, অনেক অনুনয় বিনয় করে দ্রুত চলে এসে হাঁপ ছেড়ে বাঁচি। একদিকে মার খাওয়ার ভয়, অন্যদিকে অনুশোচনায় দগ্ধ হচ্ছি প্রতিনিয়ত। এই একটি ঘটনা আমার চিন্তা চেতনার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ভাবতে শেখায়, অন্যায় উপায়ে অন্যায় দূরীকরণ সম্ভব নয়। চারিত্রিক অধপতনে নিজেই নিজের কাছে লজ্জা পাই। অনুতাপের অনলে পুড়ে পুড়ে বোধোদয় হয় কর্দমাক্ত মন কে পরিচ্ছন্ন করা চাই, উশৃংখল জীবন আর নয়, উশৃংখলতায় সাময়ীক সুখ থাকে সত্য, কৃতপাপের জন্য অনুশোচনায় অন্তর্দাহ হয় তার চাইতে অনেক বেশি। ন্যায়নীতি অগ্রাহ্য করাতে সুখ নয়, সুখ থাকে ন্যায়নীতি মেনে চলাতে।
এক সময় ভাবনাগুলো ছিল এলোমেলো, মন ছিল বাতিকগ্রস্ত। পাখি হয়ে উড়ে বেড়ানোতেই ভাবতাম সমস্ত সুখ, ধরা বাধা নিয়ম ছিল আমার কাছে অসহ্য। প্রাইমারি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুইবছর পর্যন্ত আমি ছিলাম অগোছালো, উশৃংখল এক যুবক। কেউ পারে নি সরল সঠিক পথে চালিত করতে। সেই রাতের ঘটনা সাময়ীক ক্ষতি বয়ে আনলেও গতিপথ পরিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
‘হলে’ ছিল এক ভাল বন্ধু, যার আদর্শ সম্পর্কে আগেই সম্যক ধারণা ছিল। সুন্দর সুশৃংখল জীবন যাপনে তাকে উত্তম সহযোগী ভেবে এক রাতে মেসেজ করি, “আমি ভাল হতে চাই, যেখানে তোর সহযোগিতা কামনা করছি”। ফিরতি মেসেজ, “আলহামদুলিল্লাহ্! তোর কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি, জানি, ভাল মানুষ হওয়ার সব সম্ভাবনা তোর মাঝে রয়েছে। আমার থেকে সব রকমের সহায়তা তুই পাবি। ইনশাআল্লাহ”।
তখন থেকে আজ অবধি পরিচ্ছন্নতার পথে...... শেষ বেলায় বিপথগামী হয়ে না যাই, মালিকের কাছে এই প্রার্থণা।
আর হা, ইট মারলে পাটকেলটিও যে খেতে হয়! স্বতঃসিদ্ধ সত্যটি বুঝেছি হাড়ে হাড়ে।
বিষয়: বিবিধ
২৩৯৭ বার পঠিত, ৪৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার যে কি ভাল লাগছে, বলে বুঝাতে পারব না। আপনাদের মত লোক আমার লিখায় কমেন্ট করলে সত্যি অনেক বেশি উৎসাহ পাই।
প্রথম কমেন্টের বিশেষ ধন্যবাদ।
আমিও অপেক্ষায় রইলাম।
কমেন্টে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করায় আন্তরিক ধন্যবাদ।
এ পথের বাধা কে মেনে নিয়েই মনঃস্থির করি এ পথ ও মতের সঙ্গে চিরদিন থাকার। আমি একমাত্র ব্যক্তি, এই পথে আসার মাত্র এক সপ্তাহ পর ময়দানী ডাকে সাড়া দিয়ে সবার আগে শ্রী ঘরে চলে যাই এবং সবার চাইতে বেশি দিন অতিবাহিত করতে হয়য়।
হা, আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, একজন অপরাধীর ভুল বুঝে সরল পথে আসার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা যদি সুযোগ না দেই, ঘৃণায় তুচ্ছ করি, তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের ছাড়বেন না!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, গঠনমূলক মন্তব্যটি করার জন্য।
দরজায় বন্ধই করে দিলাম। নক করলেই কেবল খুলব।
তাহলে কথা দেন কেন?
মন্তব্য আসছে.....
ঘটনার মুখোমুখি দাড়িয়ে বাস্তবতার নিরিখে উপরের কথা গুলো মানতে আপনি বা আপনারা বাধ্য হয়েছেন! যদিও কি কর্মের কারনে আপনার জীবন হুমকির মুখে পড়েছিল তা স্পষ্ট করে বুঝতে পারিনি!
যে কর্মের কারনেই হোক ঘটনার বর্ননা গুলো ভালো লেগেছে। আসলে মানুষের জীবন এভাবেই সময়ের হাত ধরে বদলে যায়। কেউ সুপথে কেউ কুপথে!!! আপনি সুপথ পাবার জন্য মহান আল্লাহকে ধন্যবাদ।
ঠিক কোন পাপের কারণে বা কোন কারণে বান্দা শাস্তি পেয়েছে তা আল্লাহ ছাড়া বোধ হয়য় আর কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমিও নিশ্চিত করে বলি নি। শুধু অনুমা করেছি মাত্র, হয়ত আমার পাপের ফল এটা।
ঐ যে উদ্যানে গিয়ে মাঝে মাঝে ছেলে মেয়েদের নোংরা কাজ করতে দেখে গায়ে তুলতাম! এটাই কারণ হিসেবে অনুমান করেছি। আপনার কাছে মনে হতে পারে, ব্যভিচারে লিপ্ত মানুষদের মেরে বাহির দিয়ে আমরাতো ভাল কাজই করেছি তাহলে কেমন করে? আসলে আমাদের উদ্দেশ্যে ঝামেলা ছিল! প্রেমিক যুগল কে মারা ব্যভিচার কমানো উদ্দেশ্য ছিল না, জাস্ট মানুষ কে মেরে এক রকম জোর জবরদস্তি আর ক্যাম্পাসটা আমাদের, আমারা যা চাই তাই করতে পারি এই ভয় সবার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে নিজেদের বড়ত্ব জাহির করা। তাছাড়া যখন অসামাজিক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের ধরে মারতাম তখন কারো মোবাইল বা টাকা পয়সা খোয়া যেত, আমি প্রথম বিশ্বাস করতাম না, ভাবতাম হয়ত প্রেমিক প্রেমিকা আমাদের ফাঁসানোর জন্য মোবাইল হারানর ভান করছে, কিন্তু কিছু দিন পর দেখতাম আমাদের কোন বন্ধুর হাতে নতুন নতুন মোবাইল!!!
এইসব দেখে জেনেও তাদের সংগ দিয়েছি, তাই ভাব্লাম, এই পাপের কারণেই সেদিন মার খেলাম কি না!
এতো লম্বা পথে ধরে কোথায় যাচ্ছেন?
এইবার ক্ষান্ত দেন!
লোকমান ভাইয়ের সাথে সহমত পোষণ এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
হা, সমাজ ব্যবস্থাপনার দায়তো অবশ্যই। তারা সমাজ এই ধরণের কাজ কে ব্যভিচার বলে না, বলে অসামাজিক কাজ! মানে জিনিসটাকে আর দশটা জিনিসের মতই হালকাভাবে দেখানো হয়য়।
চমৎকার মনতব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আর শেষের তথ্যের জন্যও ধন্যবাদ।
ওরে বা.......ছ, বিশাল কাহিনী। এক সময় আমিও এমন মনমানসিকতার ছিলাম, আমরা কয়জন বন্ধু মিলে "মাইরের উপর ওষুধ নেই" এই শ্লোগান সামনে রেখে অনেক এগিয়ে ছিলাম, পরবর্তিতে উপলদ্ধি করলাম এভাবে চলতে থাকলে বাতিল গোষ্টি আস্তে আস্তে শক্তিশালী হয়ে আমাদের বারোটা বাজাবে। তাই ভিন্ন পথ অবলম্বন করলাম। আপনার সংগ্রামী জিবন পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমার আর কি এমন সংগ্রামী জীবন! ভুল পথ থেকে সরল পথে এসেছি, কিন্তু সরল পথ কে খুব ভাল কিছুই দিতে পারি নি! এ আমার অক্ষমতা।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য না করলেও কিছু বলব না। আপনার উপস্থতিটাই আমার কাছে অনেক কিছু।
তবুও বোনের মন্তব্যের অপেক্ষায়----
আপনার সহজ সরল স্বীকারোক্তি এবং পরিসমাপ্তির ভাবনা, গতিপথ নির্ধারণ, সদিচ্ছা এবং খোদা ভিরুতার লক্ষণ সবকিছু মুগ্ধ করলো।
পরম করুণাময় আপনার সহি নিয়্যত কবুল করে তাঁর পথে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপনাকে অবিচলিত রাখুন। আমীন।
এর অপেক্ষায় ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। আমার এই বোনটা সবসময় আমাকে এতো প্রেরণা দেয়, যা পাওয়ার যোগ্য আমি নই। তবুও যখন প্রেরনা খুঁজে পাই, নিঃসন্দেহে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত।
আপনার মুগ্ধতা আমার হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়, সত্যি আমি এতো ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য নই। নিতান্তই অযোগ্য একজন মানুষ।
ভেবে ছিলাম আমার এই লিখা পরে আপনারা আমাকে ঘেন্না করবেন কিন্তু না, পরিবর্তে সবার কাছে ভালবাসাই পেয়ে যাচ্ছি, আর আপনার কাছ থেকে পাচ্ছি তা বিশেষ কিছু।
আমিন।
আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের অভিভাবক (সূরা আল ‘ইমরানঃ ৬৮)।
তিনি যাকে ইচ্ছা নিজের দয়ায় বেছে নেন। আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল (সূরা আল ‘ইমরানঃ ৭৪)।
ভুল স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক কষ্টের! তবু এগিয়ে যেতে হয়.......।
শুভকামনা ও দোআ রইলো!
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
আপনার অতি মূল্যবান পরামর্শ আমার প্রতিটি পদক্ষেপে অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকার মাঝেই বীরত্ব, যদিও কাজটা ভর্তা দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার মত সহজ নয়, তবুও দমে যাওয়াতো আমাদের কাজ নয়। আমরা চেষ্টা করব আল্লাহ সাহায্যের হাত বাড়াবেন। কতটুকু পারলাম, তা দেখবেন না, দেখবেন না, দেখবেন আমাদের চেষ্টাটা।
বুঝাই যাচ্ছে অনেক ব্যস্ততার মাঝে ব্লগে এসে কমেন্ট প্রতিকমেন্ট করার সুযোগ খুব একটা হয়ে উঠছে না, তবুও আসেন, সময় দেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
আপনার প্রতিও শুভকামনা ও দোয়া রইল।
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী@ ওউয়ালাইকুম সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করুন, আমিও কায়মনোবাক্যে সেই দোয়া করি।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
আপনাদের প্রেরণাদায়ক কমেন্টগুলো অনেক অনেক অনেক বেশি উৎসাহ প্রেরণা দেয় মনে। আসবেন, ছোট ভাইটিকে পরামর্শ দিয়ে, গঠনমূলক সমালোচনা করে, ভুল ত্রুটি ধরিয়ে লিখার হাত কে সচল রাখতে সহায়তা করবেন, এইটুকু চাওয়া, তার বেশি নয়।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
আমিন।
মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপ্নারা আসবেন, আসলে খুব ভাল লাগে।
আল্লাহ যাকে চান সেই হেদায়াত পান ।মানে আল্লাহ যাকে ভালবাসেন তাকেই হেদায়াত । নিশ্চয় আল্লাহ আপনাকে ভাল বাসেন তাই আপনাকে ফিরিয়ে এনেছেন আলোর পথে ।
আল্লাহ আপনাকে এই পথে বাকী জীবন টিকিয়ে রাখুন । আমীন
ধন্যবাদ সাকা ভাইয়া ।
আল্লাহ এমনি দয়ার সাগর, ক্ষমার গুনে গুণান্বিত। দুনিয়ার কোন মানুষ অন্য মানুষ কে কষ্ট দিলে তার ক্ষমা সহজে পায় না, দেখা যায়, এই কষ্ট দেয়াই হয়ে যায় চিরতরে সম্পর্ক ভাঙ্গার কারণ, অথচ আল্লাহ রাব্বুল, মাশরিক থেকে মাগরিব পর্যন্ত ক্ষমার দরজা খুলে রাখেন। অনেক বড় অপরাধ করেও দ্বিতিয়বার সে অপরাধ না করার প্রতিশ্রুতি রেখে আল্লাহর কাছে কায়ম্মনো বাক্যে ক্ষমা ভিক্ষা চাইলে তিনি খুশিতে বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ আমাকে ভালবেসেছেন বলেই সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন, যা আপনি বললেন।
আমার জন্য আপনার দোয়া আল্লাহ কবুল করুন। ছুম্মা আমিন।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ 'পনি'।
আপনাদের ভাল লাগলেই আমার লিখার স্বার্থকতা।
আপ্নিও আমার অতিত জীবনের পংকিলতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে বর্তমান অবস্থান কে প্রাধান্য দিয়েছনে, তাতে হাজার শোকরিয়া।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই।
মনে রাখা উচিত যে এটা পৃথিবীর আদিমতম ব্যবসা এবং এই ব্যবসায় যারা পুঁজি খাটিয়েছে তারা তো চাইবে না যে তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাক আপনাদের কারণে ।
আপনারা আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে , এদের ব্যবসায় টাং না লাগালেই হয় । আবার দেখবেন যে আপনাদেরও কেউ কেউ এই ব্যবসার খরিদদার।
সেদিন যদি বড় কোন ক্ষতি হয়ে যেত তাহলে আপনাকে কষ্ট করে এতদূর আনা বাবা মাকে কি বলে ম্যানেজ করতেন ?
বর্তমানে আমাদের সমাজ এমনই হয়ে গেছে যে ভাল কাজ করতে গেলে যে বিপদ আসে তাতে নিজেদের লোকদেরই ভর্তসনা শুনতে হয় এসব ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর জন্য ।
আপনি ঠিক বলেছেন, অন্যায়ের প্রতিবাদকারীরা যতোটা না শক্তিশালি, তাঁর চাইতে হাজারগুন বেশি শক্তিশালী অন্যায় অন্যায় উপায় সরবরাহকারী।
হা, লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যেতো, বাবা মায়ের সামনে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল না যদি বড় দূর্ঘটনা ঘটে যেতো।
বর্তমানে আমাদের সমাজ এমনই হয়ে গেছে যে ভাল কাজ করতে গেলে যে বিপদ আসে তাতে নিজেদের লোকদেরই ভর্তসনা শুনতে হয় এসব ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর জন্য ।
বাস্তব কথা।
আর দোয়া রইলো.........মহান আল্লাহ যেন জীবনের বাকি সময় আপনাকে তার প্রিয় বান্দা-বান্দিদের পথে পরিচালিত করে, আপনার সকল ভুলকে ক্ষমা করে, আপনার নেক কাজকে কবুল করে নিন! আর সব সময় আপনার সহায় হোন! আমিন!
শুকরিয়া।
আমিন আমিন আমিন। বোন, দেরিতে মন্তব্যের জবাব দেয়ার জন্য দু:খিত
জাযাকাল্লাহ খায়ের
মন্তব্য করতে লগইন করুন