জীব হত্যা পাপ, মানব হত্যা মহা সওয়াবের কাজ!
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০৭ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৭:৪১:১২ সন্ধ্যা
সুন্দরবনে ট্যাংকার ডুবিতে জীববৈচিত্র ধ্বংসে বিশ্বমানবের বুক থর থর কেঁপে উঠে। কাঁকড়া, মাছ, ব্যাঙ, কাশিমের বিয়োগ বেদনায় ব্যথিত। জীব হত্যা মহাপাপ, জীবে দয়া কর, ইশ্বরের সান্নিধ্য মিলবে। মানব হত্যা কি জীব হত্যার পর্যায়ে পড়েনা? যদি মানব হত্যার জীব হত্যার অংশ হয়ে থাকে, মানুষের মৃত্যুতে বেদনা জাগায় না কেন?
পাখি হত্যা দন্ডনীয় অপরাধ, মানুষ হত্যা কি সওয়াবের কাজ? এখন খুব দেখা যায় না, শৌখিন লোকদের পাখি শিকার করতে, হয়ত পাখির সংখ্যা কমে গেছে, জন্মে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেও জনসংখ্যার হার কমানো যাচ্ছেনা বলেই কি পাখি মারা বাদ দিয়ে মানুষ মারায় মত্ত হয়েছে? যে বুলেট পাখির ছোট্ট শরীর বিদ্ধ করত, এখন মানুষের শরীর ঝাঁঝরা করছে, তাও আবার অনেকটা শখের বশেই!
পাখি হত্যা, সমূদ্রের মাছের পোনা ধরায় জরিমানা হয়, মানব হত্যার বিচার হয় না! ইটের বদলে পাটকেল, ঢিলের জবাবে রাবার বুলেট, জল কামান, টিয়ার গ্যাস না হয় মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু ইট পাটকেলের জবাবে সরাসরি গুলি কেমন করে মানি! পাখি গাছের উপর বসে আমার মাথায় প্রাকৃতিক কাজের জবাব কি ঢিল মারা কিংবা হাতের গুলি ছোঁড়া হতে পারে? তবু আজকাল পাখি হত্যা আইনত নিষিদ্ধ! কিন্তু মানব হত্যা নিষিদ্ধ কাগজে কলমে, বাস্তবে সওয়াবের কাজই! মায়ের চাইতে মাসীর দরদ বেশি, মানুষের জন্য মায়া হয় না, অন্যান্য জীবের জন্যো দরদ উথলায়ে উঠে।
এক সময় গুলি চালানোতে পুলিশ কে কঠিন জবাবদিহি করতে হত, আত্মরক্ষার্থেই কেবল গুলি চালাতো। এখন আর সে দিন নেই, পুলিশ র্যাকব মানেই সকল জবাবদিহিতার উর্ধ্বে, আবার বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে হুকুমের গোলাম, পা চাটা পোষ্য প্রাণি। সে গোষ্ঠীর জন্যো সাত খুন মাপ, বিরোধীদের একটু নুন চুন হলেই আগ্রাসী মনোভাবে ঝাপিয়ে পড়ে।
আজ এক ভাইকে রক্ত দান করতে যাই, অন্যায় অপশাসনের প্রতিবাদে কিছু যুবক রাস্তায় নেমে পড়ে, তিনিও তাদের একজন। পুলিশ গুলি চালায়, গুলিবিদ্ধ হয় অনেকে। আহতদের দ্রুত হসপিটালে নেওয়া হয়, পুলিশ গুলি করেই ক্ষান্ত হয়নি, গুলিবিদ্ধদের অবস্থান সন্ধানে বেড়িয়ে যায়। খুব গোপনীয়তা রক্ষা করেই ডাক্তাররা গুলি বাহির করে, এখানেই পুলিশ হাজির, উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনের পথ দিয়ে রোগীকে আই সি ইউতে লুকিয়ে রাখে। আল্লাহর রহমতে গুলিবিদ্ধ শরীরে পুলিশের দলিত মথিত হওয়ার চাইতে হসপিটালের বেডে কাতড়ানোর ব্যবস্থা হয়।
ভাইটির শরীরে তিনটি গুলি লাগে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। বাঁচবার আশা ক্ষীণ। তবু সর্বোচ্ছ চেষ্টা চলছে, দশ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে, তবু আশংকা কাটেনি, আরো মুশকিল হল, শরীরে রক্ত পৌছলে পানি হয়ে যায়, এখনো নিয়মিত রক্ত দেয়া হচ্ছে। আল্লাহ না করুক, যেকোন সময় জীবন প্রদীপ নিভে যেতে পারে, আল্লাহ চাহেতো সুস্থ হয়ে আমাদের ভ্রাতিত্বের বন্ধন কে আরো সুদৃঢ় করে তোলবেন। তাঁর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সবার দোয়া কামনা করছি।
ক্ষণিকের জন্য হলেও তিনিসহ দেশের নানা প্রান্তে প্রতিহিংসা বর্বতার স্বীকার আহতদের জন্য সুস্থতা কামনায় মহান প্রভূর দরবারে ফরিয়াদ করুন। মুমিনের দাবীইতো হচ্ছে, এক মুমিনের ব্যাথায় সকল মুমিন সমানভাবে ব্যাথিত হবে, যেমন শরীরের একটি অঙ্গের ব্যাথায় সমস্ত শ্রীরে ব্যাথা অনুভূত হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যেখানে দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধেও কখনও মেডিকেল এইড না দিয়ে আহত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি সেখানে আমরা এখন কত নিচ।
আজ যখন শুনি, আমাদের দেশের অভিভাবক ভাষণে বলেন, "আমি বঙ্গ বন্ধুর কন্যা, ক্ষমতা চাই না, মানুষের ভালবাসা চাই", তখন হাসব নাকি কাঁদব বুঝে উঠতে পারছিলাম না, প্রতিনিয়ত আমাডের সাথে পরিহাস করে যাচ্ছে!
মনে করে দেশের মানুষ ভাজা মাছটি উলটে খেতে জানেনা, তাই ভুলবাল যাই বুঝাবে তাই মেনে নেবে। কিন্তু সত্য হচ্ছে মানুষ বুঝে, কিছু করার ক্ষমতা রাখেনা, মনে মনে ঠিকি ঘৃণা ছুড়ে দেয়, যা ইমানের তৃতীয় ধাপ।
সেজন্যই সব কিছু নিজে একা পেতেই মানুষ হত্যা এখন জীব হত্যার চেয়ে কম পাপের।
হয়ত এই পৃথিবীতে মানুষ হত্যা করা(দ্বীনি ভাইদের বিনা কারণেই হত্যা)কম পাপের কাজ, কিন্তু শেষ বিচারের দিন তাই হবে জাহান্নামে যাওয়ার সবচেয়ে কারণ, এই কথা তাদের বুঝাবে কে!!!!
একটি প্রাণিও যদি অকালে মারা যায়, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে জবাদিহী করতে হবে। কিন্তু মানুষের প্রতি অবহেলা নিষ্ঠুরতা দেখিয়ে অন্যান্য জীবের প্রতি আদিখ্যেতা দেখানোও কাম্য নয়।
পশ্চিমা মুসলমানের বিরুদ্ধে করে, তারা মানুষ, তবে মুসলিম ধর্মের অসিত্বে অসহ্য, কিন্তু আমাদের মুসলমান ভাইয়েরা কিভাবে নিজেদের ভাইদের বিনাশে ঝাপিয়ে পড়ে!
সুন্দর মন্তব্যের জন্যো অশেষ ধন্যবাদ।
এই পুলিশ জনগনের জন্য নয়।
বাকশালী পুলিশ গোলাপী বেগমদের রক্ষা করার জন্য।
তাই তাদের কাছে পাপ আর সাওয়াব কিছু না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন