নারীর পোষাক স্বাধীনতা
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৬:৪১:২৬ সন্ধ্যা
পোষাক পড়া যদি যার যার ব্যক্তিগত অধিকার হয় তাহলে হিজাবধারীদের হিজাব অথবা মুখ খোলা রাখতে বাধ্য করা অন্যদিকে স্বল্পবসনাদের আরো বেশি আট শাট টাই ফিট পড়তে উতসাহিত করা হয় কেন? কোন বাবা তার মেয়েকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার ছাত্রীদেরকে হিজাব পড়তে বাধ্য করলে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। রব উঠে পুরুষতান্ত্রিকতার কবলে নারীর জীবন সংকটাপন্ন। দেশ ফিরে গেছে ১৪০০ বছর আগের সেকেলে নারী বিদ্বেষী নিয়মের দিকে। স্লোগান উঠে, পোষাক যার, যেমন খুশি পড়ার অধিকার তার। একজন মেয়ে টেডি পড়বে নাকি মাছাক্কালি পড়বে, পাখি পড়বে নাকি টপ, টি শার্ট পড়বে একান্তই ব্যক্তিগত তার ব্যাপার। অন্য খারো খবরদারী চলবে না!
কিন্তু কোন মেয়ে যদি স্বেচ্ছায় বোরখা পড়ে, এটা তার ব্যক্তি বা পোষাকের স্বাধীনতা, তখন কেন ক্লাসে, পরীক্ষার হলে, ভাইভা বোর্ডে, প্রেসেন্টেইশনে বোরখা খোলা রেখে অথবা মুখ খোলা রাখতে বাধ্য করা হবে? শিক্ষকরা বলে থাকেন, “আমরা শিক্ষক, বাবার তূল্য, ছাত্ররা তোমাদের ভাইয়ের মত, আমাদের সামনে মুখ খোলা রাখতে সমস্যা কোথায়?”। আমি বলি, শিক্ষক বাবার তূল্য কিন্তু বাবা নয়, তাইতো প্রায় শোনা যায় শিক্ষকের হাতে ছাত্রী লাঞ্চিত, যৌন নিপীড়িত, ধর্ষিত। বাবা হলে এমন করতেন না! ক্লাসমেইট ভাইয়ের মত কিন্তু ভাই নয়। তাইত সপাঠী দ্বারা অনেক ছাত্রীকে ইভটিজিং, ধর্ষণের স্বীকার হতে দেখা যায়। মেয়েটি মুখ ঢেকে রাখলে শিক্ষক অথবা ছাত্রদের কি অধিকার আছে তাকে মুখ খুলে আসতে বাধ্য করা?
পরীক্ষার হলে ভাইভা বোর্ডে মুখ দেখা নাকি জরুরী তাদেরই ছাত্রী কিনা তা শনাক্ত করার জন্য। ভাল কথা। যে মেয়ে হিজাব পড়েই বেগানা পুরুষ(শিক্ষক, ক্লাস্মেইট, বন্ধু বেগানা পুরুষদের অন্তর্ভূক্ত ) থেকে পর্দা করার জন্য, তাহলে কেন তাদের মুখ দেখাবে, কান খোলা রাখবে? মুখ দেখা যখন জরুরী, সবার সামনে জোরাজুরি না করে আলাদা রুমে ডেকে নিয়ে মহিলা শিক্ষক দিয়ে শনাক্ত করা কি খুব কঠিন কাজ? অবশ্যইনা, তাই করা হোক! এটা ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয় কি? যখন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেয়েদের বের করে দেয়া হয়, অপমান অপদস্থ কপরা হয় বোরখা পড়ার জন্য, নারীবাদীরা কোথায় থাকে তখন? কেন আওয়াজ তুলেনা, বোরখা একটি পোষাক, তার মত করেই পড়তে দেয়া হোক?
তারা বল্বেনা, কারণ পোষাকের স্বাধীনতা মানে তাদের কাছে নারীর ইচ্ছাকে প্রতিষ্ঠিত করা নয়। যদি তাই হত বোরখার অপমান সহ্য হতনা প্রতিবাদে সোচ্ছার হত। তাদের উদ্দেশ্য হল, বিজাতীয় সংস্কৃতি, বেয়াপনা আদর্শের ধারক, প্রচারক তথা পশ্চিমা এবং প্রতিবেশিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পরিচালিত কলুষিত সমাজ ব্যবস্থার চাহিদা বা উলংগপনার কামনা বাসনাকে প্রতিষ্ঠিত করা। তাইতো তাদের ভূমিকা দুমুখো সাপের মত। অশালীন পোষাক নিয়ে কেও কথা বল্ললেই মাঠে ময়দানে রাজপথে নেমে পড়ে, নারীর পোষাক নিয়ে কথা বলার অধিকার কারো নেই। তেমনিভাবে বোরখা পড়ার কারণে কোন মেয়ে অপমানিত হলে মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে।
বোনদের উদ্দেশ্যে বলছি, কথিত নারীবাদীরা যে পোষাকের বা নারী স্বাধীনতার কথা বলে নগ্নতাকে ছড়িয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে পরিকল্পিতভাবে নরকের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের স্লোগানে শামিল হওয়ার আগে অন্তত এক্টিবার তা ভেবে দেখুন, আপনার জন্য তা স্বাধীনতা, নাকি নগ্নতার অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ!
বিষয়: বিবিধ
১২২৪ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো বলেছেন ও লিখেছেন ধন্যবাদ।
নারী স্বাধীনতার নামে উলংগতা-বেহায়াপনা সমাজে ছড়িয়ে দেয়াই উদ্দেশ্য ঐ সব লুচ্চাদের!
শালীনতা কে ধ্বংশ করে স্বীয় কামনা চরিতার্থ করাই মুললক্ষ্য ওদের!
ভালো লাগলো লেখনী! অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!!
আফসোস ! এটা রোধের জন্য মেয়েরা এতটা সোচ্চার না যতটা ছেলেরা ।
ভাল থাকুন ভাল রাখুন।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন