হতভাগা নিরুত্তাপ!
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ২১ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:১৭:০৫ দুপুর
তার যুক্তিপূর্ণ, আবেগ বিবর্জিত বাস্তবভিত্তিক কথা, শাণিত মন্তব্য থেকে কারো রেহাই পাওয়ার কথা না। অতি পরিচিত ব্যক্তিত্ত্ব। যেদিন থেকে ব্লগে আসি সেদিন থেকে লিখা পোস্ট করে ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতাম কখন এই গুরুগম্ভীর মানুষটি, আসবেন, কথার মার প্যাচে কুপোকাত করে ছাড়বেন। শুরুতে রহস্যময়তা বজায়ে রেখে এমন কঠিন করে কোর পয়েন্ট ধরে প্রশ্ন অথবা মন্তব্য করবেন যে, উত্তর দেয়া অথবা পালটা মন্তব্য করতে হিমশিম খেতে হত। শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, সবার লিখাই তিনি মন্তব্য করতেন, একিভাবে সবাইকে নাস্তানুবাদ করে ছাড়তেন বাক্যবাণে, তবে তিনি এমন করতেন কাওকে অপমানের উদ্দেশ্যে নয় বরং মেধার গভীরতা পরখ করতে, ভাসা ভাসা জ্ঞানকে গভিরতায় পরিচালিত করতে। মাঝে মাঝে ভেবে কুল পেতাম না, জ্ঞান বুদ্ধির আধার এই মানুষটা এতো বুদ্ধি মাথায় রেখে ঘুমায় কেমন করে! অবশ্যই কখন যে ঘুমাতো তা নিয়েও ভাবনায় পড়ে যেতাম , রাতে বিরাতে সবসময় মন্তব্যের ঢালি নিয়ে হাজির থাকতেন!
আজ আমি লিখছি, আমার লিখায় কম বেশি মন্তব্য আসছে, যতটুকু জানাচ্ছি, তার চেয়ে হাজারগুন বেশি জানতে পারছি প্রতিষ্ঠিত ব্লগারদের মন্তব্য থেকে। সুযোগ পেলে সবার লিখা পড়ছি এবং নিজের অযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও মন্তব্য প্রতি মন্তব্য করে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছি। কারো কারো লিখা পড়ে এতো বেশি ভাল লাগে যে, (তাদের নাম উল্লেখ করছিনা, কাদের কথা বলছি তারা নিশ্চই বুঝে নেবে তাদের লিখায় আমার করা মন্তব্য দেখে) চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারিনা, ইর্ষান্বিত হই, আমি কেন লিখতে পারিনা তাদের মত মাধুর্যতা দিয়ে! আবার কিছু জানার ইচ্ছে হলেই হুট করে প্রশ্নসমেত পোস্ট করে বসি। আমার লিখার মান যথেষ্ট খারাপ, তবু ভাইয়া আপুদের উতসাহ কৃতজ্ঞতায় মন ভয়ে দেয়, প্রেরণা খুঁজে পাই ভাল লিখায়, বিশ্বাস করি ভাইয়া আপুদের উতসাহ পরামর্শ একদিন ভাল লিখায় খুব খুব সহায়তা করবে। বিডি টুডে পরিবারের সদস্য হতে পেরে আমি সত্যি গর্বিত, এইখানে যতক্ষণ সময় ব্যায় করি ঠিক ততক্ষণ আর সবকিছুকে ভুলে যাই।
এতো এতো ভাললাগার মাঝেও একটা শূন্যতা বেশ কিছু দিন ধরেই অনুভব করছি। সবাই আসে, ভালবাসে,ভাললাগে, কিন্তু সে আসেনা! ব্লগে পড়ার ব্যস্ততার মাঝেও কিছু সময় তার ভাবনায় কাটে। প্রশ্ন জাগে, সে কেন নিরুদ্দেশ! কেন নিরুত্তাপ? আশংকা জাগে, তার কিছু হয়নিতো, অসুখ বিসুখ করেনিতো! ভাল আছে কি মন্দ আছে তাও জানার সুযোগ নেই, তাই হা হুতাশ করেই বেশ কিছু সময় তার ভাবনাই কাটে। সে আর কেউ নন, আমাদের অনেক অনেক প্রিয় ( তাকে যে বুঝতে পারে তার কাছেই প্রিয়) ব্লগার হতভাগা! অদ্ভূত নাম, প্রোফাইল ছবিতে হিটলার, তবু সে হতবাগা, আল্লাহ ভাল জানেন, হতবাগা হওয়ার কি কারণ। কারণ যাই হোক, তাকে খুব মিস করছি। সর্বশেষ পোস্ট করেছে ৯ সেপ্টেম্বর, তার পর থেকে নাই হয়ে আছে! তিনি সবসময় ছবির পার্থক্য দিয়ে কিসব পোস্ট করতেন আমি যার আগা মাথা কিছুই বুঝতাম না, কিন্তু একজন বুঝত্, আমাদের সবার প্রিয় পিচ্ছিটি আফরামনি! পিচ্ছিটি হলেও মাথাটা কিন্তু বেশ বড়। ইছড়ে পাকা! কিন্তু আফরার কি তার কথা মনে পড়েনা? যদিই পড়েই থাকে তাহলে কেন সে হতবাগা ডাকছেনা? একজন হতবাগা না থাকলে হয়ত ব্লগ থেমে থাকবে না, কিন্তু মন্তব্যের জাহাজ চালিয়ে কথার ঝাজে সবাকে ব্যাতিব্যস্ত রেখে ব্লগ কে সচল রাখা মানুষটির হঠাত উধাও হয়ে যাওয়া কি কাম্য হতে পারে? আমি ডাকলে শোনবে কিনা জানিনা, তবু যদি শোনতে পায়, এই আশায়-
“ ভাইয়া, আর কেও আপনাকে ফীল করুক বা না করুক আমি করি, আপনার অনুপস্থিতি আমাকে যথেষ্ঠ ভাবায়, আপনার অনুপস্থিতি আমাকে অনেক অনেক কিছু জানা থেকে নিষ্ঠুরভাবে বঞ্চিত করছে। তাই খুব করে অনুরোধ করছি আপনি আসুন, আমার শূন্যতা দূর করুন। আল্লাহ না করুক, আল্লাহ না করুক, আর যদি কোন বিপদ আপদে থাকেন, তবে ঐ অবস্থার জানান দিন, সরাসরি হয়ত আপনার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারবনা, কিন্তু দূর থেকে আল্লাহর কাছে প্রাণভরে দোয়া করব”।
যেখানে যে অবস্থায় আছেন, আল্লাহর আপনার মঙ্গল করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১২৭৭ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ এমন লেখনীর জন্য।
আমিও 'শ্রদ্ধেয় হতভাগা'ভাইয়ের অভাব তীব্র ভাবে অনুভব করছি। উনার ঝাঝালো কিছু মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য ব্লগে আমার পঠন-মন্তব্যে পথচলায় শক্তি যুগিয়েছে।
মহান আল্লাহর কাছে বিনীত প্রার্থনা- 'ব্লগার হতভাগা'কে আবার পুর্ণ আগের মত আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন, আমিন।
আপনার সুরেই বলছি-
মহান আল্লাহর কাছে বিনীত প্রার্থনা- 'ব্লগার হতভাগা'কে আবার পুর্ণ আগের মত আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন, আমিন।
আপনাকে অনেক ধন্যোবাদ ভাই মন্তব্যের জন্য।
আপনার কাজটাই আমি করেছি, আপনি ঠাকুর মার ঝুলি লিখায় ব্যস্ত ছিলান কিনা তাই।
অন্তস্থলের ধন্যবাদ পেয়ে আমি মহাখুশি।
আপ্নিও তাকে মিস করছেন শোনে অসম্ভব ভাল লেগেছে।
আপনার সুরেই বলছি-
আশা করি হতভাগা ভাইয়া ফিরে আসবেন আমরা সবাই উনাকে অনেক অনেক মিস করছি । প্রবাসি আবদুল্লাহ শাহীন ভাইয়া অবশ্য দেশে মনে উনি ও তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে আমাদের মাঝে ।ইনশা আল্লাহ !
ছবির পার্থক্যো আমার ক্ষুদ্র মাথায় বুঝা কুলায় না, তাই খালি হাতেই ফিরে আসুন, আমি সাদরে গ্রহণ করব।
ধন্যোবাদ , শীত এখনো আসেনি, তবু শিশির ভিজেই যাচ্ছে, অশ্রু জলে ভিজছেনাতো?
আবদুল্লাহ শাহিন ভাই সম্ভবত এখন দেশে আছেন। তাই লিখছেন কম! হতাভাগা ভাই এর কি ভাগ্য তা জানার ইচ্ছা।
হতভাগার কি হল যে, এইভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে হবে!!!!
হতভাগার কি হল যে, এইভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে হবে!!!!
সত্য বলেছেন বলে ধন্যবাদ দিলাম।
ধন্যবাদ ভাই শেখের পোলা।
পোস্টের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
আমিও সবার লিখায় যখন যেমন মন্তব্য দরকার, হোক তার সাথে আমার সম্পর্ক ভালো, তবুও উপযুক্ত মন্তব্যটি করেই যাই, যার কারণে অনেক ব্লগারের কাছে আমি মনোবেদনার কারণ হয়ে যায় মাঝে মাঝে!
আর আপনি বলে দিন না, আমি ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন