ইসরাইলি পন্য বর্জন সম্ভব কি????
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ১২ জুলাই, ২০১৪, ১২:৫৫:২২ দুপুর
গত কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চলেছে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের জন্য। কেউ কেউ ইসরাইলি বিশাল পণ্যের বিশাল লিস্ট নিয়ে হাজির হচ্ছেন। লিস্ট দেখে পুরাই মাথা খারাপ। পণ্যতো একটা দুইটা নয়! এতো দিনে এইসব পেটে গিয়ে আমাদের রন্দ্রে রন্দ্রে মিশে গেছে। তবু যা নিয়েছি, আর নিতে চাইনা, এখন থেকে বর্জনের সাথে আমিও সম্পূর্ণভাবে একমত।
কিন্তু আমার প্রশ্ন, ইসরাইলের হামলা ফিলিস্তিনিদের উপর নতুন কিছু নয়, যা ১৯৪৮ সালে শুরু হয়ে আজ অবধি চলছে। এতোসব অত্যাচার নির্যাতন দেখেও বাংলাদেশে তাদের পণ্য প্রবেশ করতে দেয়া হল কেন? একমাত্র দেশ ইসরাইল, যাদের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তারপরেও বিশাল সংখ্যক পণ্যের প্রবেশ, অতঃপর শক্ত অবস্থান তৈরি করে নেয়া, কেমন করে হল? আপনি আমি ফেসবুকে বর্জনের ডাক দিতে পারি, আদৌ সব মানুষকে বর্জনে শামিল করা সম্ভব হবে কি? হ্যাঁ সম্ভব, তবে অনেক কঠিন কাজ বটে। কিন্তু এই কাজটি যদি পণ্য প্রবেশের সময় করা হতো, তাহলে অনেক বেশি সহজ হতো বলেই মনে করি।
লিস্টে যেসব পানীয় দেখতে পাই, তা আমি আপনি কয়টাই বা খাই বা খেতে পারি। বিভিন্ন দিবস, অনুষ্ঠান অথবা বিশেষ সময়কে ঘিরে খাওয়া হয়, নিয়মিত খেতে পারিনা, তাই আমাদের পক্ষে বর্জন সহজ। যেসব বয়লার মুরগী মুরগরা নিয়মিত খেয়ে থাকে, আমাদের চিল্লাচিল্লি কি তাদের কানে পৌঁছাবে, নাকি ফেসবুকে কান পেতে রয়েছে আমাদের বর্জনে শামিল হতে? তাদের ফেসবুকে বসার সময় কোথায়? আর অন্যান্য পণ্যগুলোও লাক্সারিয়াস পণ্য, যা আমরা খুব কম ব্যবহার করি, করে এলিট শ্রেণীর লোকেরাই, তাদের ঐ সব পণ্য ব্যবহার ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব কি? সম্ভব নয়। প্রতিবাদ করে আমি আপনি পণ্য গ্রহণে বিরত থাকতে পারি, সবাইকে বিরত রাখা সম্ভব নয়।
তবে সম্ভব তখনি হবে, যখন সরকারিভাবে ঐ সব পণ্যগুলো বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হবে। অন্যথায় সম্ভব নয়। তাই আমাদের প্রধান কাজ হবে, নিজেরা বর্জন করব, প্রচার অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে ইস্রাইলি পণ্য বাংলাদশে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য। যদি তা করা যায় তবে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।
আর হ্যাঁ, শুধু বসে বসে ফেসবুকে 'আল্লাহ ফিলিস্তিনিদের বাঁচাও বাঁচাও', 'মা বোনদের বাঁচাও', 'ইসরাইলের হামলার উচিৎ জবাব দাও' বলে চিৎকার করার পাশাপাশি জায়নামাজে দাঁড়িয়ে দু'রাকায়াত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে বলেন, কোরআন মাজিদ তিলোয়াত করে আল্লাহর কাছে ফিলিস্তিনিদের জন্য সাহায্য প্রার্থণা করেন, আল্লাহ নিরাশ করবেন না, আল্লাহ কোরআনে স্পস্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন----
হে ইমানদারগণ, তোমরা নামাজ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থণা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সূরা- বাকারা ১৫৩)।
আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য যোগ্যতা লাগে, আর সে যোগ্যতা হল নামাজ রোজাসহ আল্লাহ প্রদত্ত যাবতীয় বিধানের অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে খাটি ইমানদারে পরিণত করা, আল্লাহর উপর ভরসা করে জুলুমবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমে পড়া। চেষ্টা আপনার, সফল করার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের।
-------সালাউদ্দিন
বিষয়: বিবিধ
১৯৭১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন