হাত দিয়ে খায়না, দারা দিয়ে খায় ( যৌতুক)
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ০৮ জুন, ২০১৪, ০৫:২৯:৩৩ সকাল
যৌবনে মরিচা ধরতেছে, সবাই বলে আইবুড়ো। একেতো কালো অথবা অসুন্দর, মনোকষ্ট আছেই, তার উপর মানুষের বাকা কথা বুকের শেলের মত বিঁধে। বিয়েতে দেরি হওয়ায় সবাই ভারী বোঝাই মনে করে।
বাপ ভাইয়ের সমাজে মুখ দেখানো যাচ্ছেনা, শুভাকাঙ্ক্ষীরা পরামর্শ দেয়, জলদি মেয়ের বিয়ে দাও, কলি যুগ, কখন কি আকাম করে বসে বলা যায়না। কিছু টাকা পয়াসা খরচ কর, যৌতুক দিয়ে বিদায় কর। মিয়া, মান সম্মান যদি না থাকে, টাকা কড়ি দিয়া কি করবা! মন দিয়ে শোন, জমি এক্ককান বিক্রি কইরা বিয়ের ব্যবস্থা কর, তোমার যা বেঢক মেয়ে , যৌতুক ছাড়া কেও নিবনা।
অভাবের সংসার, তাতে কি, ছেলে পক্ষের দাবী লাখ টাকা, শোনেই পেটে দেয় মোচর, এতো টাকা! কেমনে দিব, মনে মনে কয়, ছোট থাকলে মাইয়াডারে বিষ খাইয়ে মাইরা ফালাইতাম, হেইডা ভালা আছিল। বাধ্য হয়ে জায়গা জমিন বিক্রি করে বলা দূর করেছে।
সরাসরি যারা যৌতুক দাবী করে তাদের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিকরা প্রতিবাদে সোচ্চার, এটা করা যাবেনা, এটা দণ্ডনীয় অপরাধ।
আর অধিকাংশ মানুষ, যাদের অবস্থা মোটামুটি অথবা বেশ সচ্ছল, তারাও যৌতুক গ্রহণ করে, তবে পদ্ধতিটা আলাদা। সরাসরি চাইলে তাদের প্রেস্টেইজে লাগে। দেখুন তারা কেমন করে চায়-
ছেলের অভিভাবক, আমরা আপনাদের কাছে কিছু চাইনা, তবে ছেলে অনেক পড়াশোনা করেছে, একটা মটরচাইকেল না দিলে লোকের কাছে ইজ্জত বাঁচানো গেলনা।
ছেলেকে বিদেশে পাঠাবো ভাবছি, তাতে আপনার মেয়ে একটু বিলাসিতার সাথে চলতে পারব, তাই বলছি ছেলেকে মানে আপনাদের জামাইকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থাটা আপানারাই করেন।
এখন মেয়ে পক্ষই ছেলের ঘর সাজিয়ে দেয়, এই ধরেন একটা ফ্রিজ, বক্সখাট, আলমারি, সোকেচ,কালার টিভি, সোপা সেট হলেই চলবে মোটামুটি চলবে।
ছেলের ব্যবসার একটা উপায় করে দেন, বিয়ের পর তো আর বেকার থাকা যায়না, তাছাড়া আপনার মেয়ে সুখেই থাকবে।
বুঝেন অবস্থা, আপনারাই বলুন, এটা কি যৌতুক নয়? পিছন দিক দিয়ে হাতি গেলে টের পাইনা, সামনে দিয়ে মশা গেলেই কামান দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমার দৃষ্টিতে এটা অবশ্যই যৌতুক, তবে আধুনিক সংস্করণ। এই ডিমান্ডগুলো মেটাতে গিয়ে মেয়ের বাবাকে কি পরিমাণ ভোগান্তি ভুগতে হয়, তা শুধু ভুক্তভোগী পরিবারটিই জানে। সমাজে তাদের সবাই সচ্ছল বলেই জানে, তাই তারা কিছু বলতেও পারেনা, মান সম্মান রক্ষা করতেই হবে।
পরিশেষে এ কথাই বলব, যৌতুকের বিধান সবার জন্য একি রকম হওয়া উচিৎ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৭ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর রসূল(সাবলেছেন, যদি তোমার লজ্জা না থাকে তবে যা খুশী তা করতে পার...বুখারী
কারণ , একটা মেয়ে যার বয়স ২৩-২৪ বছর তার বাবা নিশ্চয়ই ২৭-২৮ বছর ধরে চাকরী/ব্যবসা করছে ।
এই ২৭-২৮ বছর ধরে যিনি চাকরি/ব্যবসা করছেন এবং তার মেয়েকে লালন পালন করে এখন যে স্ট্যাটাসে নিয়ে এসেছেন , যে পরিমান আবদার ও বিলাসিতা পূরণ করছেন - একজন ২৭-২৮ বছরের ছেলে যে কি না চাকরিই করছে বছর খানেক ধরে তার পক্ষে কি মেয়ের বাবা মেয়েকে যে স্ট্যাটাসে চালাচ্ছিল বিয়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই একই হারে চালানো সম্ভব ?
চরম আরাম আয়েশে জীবন যাপন করা মেয়েটি যখন ২-১ দিনের মধ্যেই চরম টানাটানির সংসারে এসে পড়বে তখন কি সে তা খুব সহজেই মানিয়ে চলতে পারবে ?
এমতাবস্থায় ছেলেটির কি করা উচিত ?
সে কি তার বৌয়ের পূর্বের আরাম আয়েশ ধরে রাখার জন্য বিপথে চলে যাবে ,নাকি
বউয়ের বাবার কাছ থেকে ''এটা স্পষ্ট যৌতুক। এটা হারাম এবং চরম ছোটলোকী '' জিনিসটি চাইবে ?
আরে ভাই চাইলেতো একটা সিমা আছে এতটুকু সে চায় আর যারা চায়না তাদের তো পাওনার শেষ নাই।
যে বিয়ে করবে আর যাকে বিয়ে করবে তারা দুজন একমত হলেই তো হল।
বিয়েকে সহজ করলেই হল।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
কাজ শেষ আমার কিছুটা হয়েছে, আপনারতো বাকী রয়েছেই! সেরে ফেলুন বাকি কাজটাও।
এই ক্ষুদ্র মাথায় ধারাবাহিক লিখা পারব সম্পাদন করতে? চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে, আপনার অনুরোধ অগ্রাধিকার পাবে আশা করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ পুরনো লিখা খুঁজে পড়েছেন, বিশ্বাস করি আমার লিখা আপনার ভালো লাগে বলেই....
মন্তব্য করতে লগইন করুন