মাঝে মধ্যে মনে মনে ভাবি আসলে আমরা কি চাই........?
লিখেছেন লিখেছেন পরিচিত ২৫ মে, ২০১৪, ০৫:৫৮:২৮ বিকাল
আমার এক বন্ধুকে দেখলাম আমাদের কে পাশ কাটিয়ে চলছে -- খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলাম সে আমাদের পাড়ার সুন্দরী মেয়েটির প্রেমে পড়েছ তাই তার নির্দেশে আমাদের এড়িয়ে চলছে -- আমাদের সবার কাছে তাই এই সম্পর্কটা ছিল ঈর্ষার মত-- মেয়েটির ধারণা ছিল আমরা আমাদের বন্ধুকে খারাপ পথে নিয়ে যেতে পারি তাই তার নিষেধ ছিল আমাদের সাথে না মিশার-- সময়ের তালে আমরাও যার যার মত মফস্বল ছেড়ে শহর মুখি হওয়াতে বন্ধুটির খোঁজ নেওয়া হয়নি-- হঠাৎ একদিন বন্ধুটির সাথে দেখা হওয়াতে জানতে চেয়েছিলাম কিরে কেমন আছিস --তার বান্ধবীর কথা! সাথে সাথে বন্ধুটির চোখে টলমল চোখের জল দেখে বুঝতে পারলাম ভালবাসা তার পিঞ্জর ছেড়ে উড়ে গেছে। জানতে পারলাম আরেকটি ছেলে মেয়েটিকে প্রোপজ করে এবং তার বান্ধবী সেই ছেলেকে বেশি পটেনশিয়াল (!) মনে করে আমার বন্ধুকে ছেড়ে দেয়। আমার বন্ধু এখন ডাক্তার।ভাল আছে। জানিনা ঐ ছেলে কি দিতে পেরেছে, আর আমার বন্ধু বা কি দিতে পারত। প্রশ্ন হল মানুষের ভালবাসা কি পটেনশিয়ালিটি দেখে হয়?
@@আমার আরেক বান্ধবী ছিল স্বামী থাকত দেশের বাহিরে। আর এই দিকে আমাদের এই বান্ধবী একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ছেলেটি তখন মাত্র ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র, আর আমার বান্ধবী তার থেকে সিনিয়র আমরা প্রথমে বিষয়টা ধরতেও পারিনি, যতদিন না বান্ধবি এসে বলল যে আমাদের পাড়ার একটা ছেলে তাকে প্রচন্ড ডিস্টার্ব করছে। আমরা এতই ডাই হার্ড ফ্রেন্ড ছিলাম যে দ্বিতীয় পক্ষের থেকে কোন কিছু না শুনেই তাকে প্রচন্ড মার দেবার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। যখনই মারতে গেলাম, ছেলেটাকে দেখে কেন যে হঠাৎ আমার কথা বলতে ইচ্ছা করল বিষয় টি নিয়ে। ছেলেটিকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলাম যে বিষয় কি?ছেলেটা যা বলল তাতে আমাদের ত্রাহী ত্রাহী অব্স্থা। তার দাবী যে তারা একসাথে অনেক কিছু করেছে, এখন তার স্বামী দেশে আসছে দেখে তাকে দূরে সরাতে চাচ্ছে। প্রথমটাতে তাকে বিশ্বাস না করলেও আমি সিদ্ধান্ত দিলাম যে দুইজনকে মুখোমুখি করান হবে। মুখোমুখি করাবার পর মনে হল বান্ধবী টাকে একাটা কষে থাপ্পর দিতে পারতাম। ছেলেটাকে প্রায় জোর করেই সে এই সম্পর্কে এনেছে। পরে অবশ্য তাই আমাদের মাঝে বন্ধুত্ব সম্পর্ক টা ছিল না শুধু ভুল ইনফোর্মশন দেওয়ার জন্য- বান্ধবী টির সাথে--
@@পরের কথা অনেক বললাম, নিজেই এই বিপদের স্বীকার। একজনকে জীবনের সবটুকু বিশ্বাস দিয়ে দিয়েছিলাম। মনে আছে সে একদিন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে কতটুকু বিশ্বাস করি তাকে। উদাহরণ দিয়ে বলেছিলাম, "যদি একটা ছুরি আমার হাতে দিয়ে বলা হয় এটা আমার নিজের কাছে রাখলে এই ছুরিতে আমার মৃত্যুর সম্ভাবনা ১০%, আর তোমার হাতে রাখলে এই ছুরিতে আমার মৃত্যুর সম্ভাবনা ৯০%, তাও আমি তোমার হাতেই রাখব।" সেদিন তার চোখের কোন একফোঁটা পানি দেখে ভেবেছিলাম আর যাই হোক, এই মেয়ে কোনদিন আমাকে ছাড়বে না। সবটুকু বিশ্বাস দিয়ে দেবার পরও আরও বেশি বিশ্বাস তাকে আমি দিয়েছিলাম। আমার এক বন্ধু চ্যলেন্ঞ্ঝ ছুড়ে বলেছিল যে আমাদের সম্পর্ক টা হেপি এন্ডিং হয়, তাহলে সে নিজের নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম রাখবে, দরকার হলে এফিডেভিড করবে। আজও মনে পড়ে আমার বন্ধুটির কথা । বিদেশ পাড়ি দেওয়ার কয়েক বছরের পর এক টেলিফোনে জানতে পারলাম আমার নিত্যদিনের অনুপুস্তিতে আমার জায়গা দখল করে নিয়েছে আরেকজন -- তাই মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখি আমার জায়গা দখল করা ছেলিটি আমাকে নিয়ে অট্ট হাসি হাসছে---
@@যে কারণে আসলে আমার এই পোষ্ট। আমার খুব কাছের এক বন্ধু, সে এবং তার বৌ এক সাথেই চাকরী করে। উদাহরণ দেবার মত একটি জুটি। এত কথা কাটাকাটি, এত রাগারাগি, তারপরও তাদের মত জুটি হয় না। পৃথিবীর কোন শক্তিই যেন নেই এই সম্পর্ক ভাঙ্গে। সমস্যা হল আমার বন্ধুটি তার জব নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট না। আর তার বৌ খুবই সন্তুষ্ট এই জব নিয়েই। আমার বন্ধু অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরী খুজছে, আর এই ফাঁকেই কোপ বসিয়েছে ঐ অফিসের ডিরেক্ট বস। আমার এক বন্দ্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল সকালে সে বল্ল আমার বন্ধুর বৌ বিভিন্ন জায়গায় মেয়েটির বসের সাথে ঘুরে বেড়াতে দেখেছে। এখন যদি আমি বলি আমার বন্ধুকে কি হবে তাদেরর ভবিষ্যত? আবার না বল্লে আমার বন্ধুর জীবন কেমন হবে ? কি করব? প্রচন্ড একটা চাপা ব্যাথ্যা সেই সকাল থেক বুকের উপরে চেপে আছে। শুধু আমার নিজের কষ্টের দিন গুলির কথা মনে পড়ছে।
মানুষ কেন এমন হয়? মানুষ কি করে পারে সত্যিকারের ভালবাসাকে ত্যাগ করতে?
আমার ছোট বোনের একটি বিড়াল ছিল, প্রচন্ড ভালবাসত তাকে, একটা কারণে বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে অনেক দূরে ফেলে দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু ১ দিন পরে যখন দেখলাম বিড়াল আমাদের দরজায়, তখন তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম, কতসময় মনে নেই, সেও গররর গররর আওয়াজ করে তার ভালবাসার জানান দিয়েছিল। আমি যে তাকে নিজে হাতে ফেলে দিয়ে এসেছিলাম, তার জন্য সে এতটুকুও ক্ষোভ দেখায় নি।
মাঝে মধ্যে মনে মনে ভাবি আসলে আমরা কি চাই........?
বিষয়: বিবিধ
২৫৭৫ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপনার মত প্রকাশের জন্য---
জানতে চাওয়ার জন্য ধন্যবাদ---
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ--
মন্তব্য করতে লগইন করুন