ইসালামিক অনলাইন এক্টিভিস্টদের আড্ডায় একদিন
লিখেছেন লিখেছেন ওবাইদুল্লাহ ওবাইদ ২৪ মে, ২০১৪, ০২:২৭:৪৯ দুপুর
কাল হাটহাজারী জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তালায় হাটহাজারীস্থ ইসলামি অনলাইন এক্টিভিস্টদের উদ্যোগে আয়োজিত "ইসলামিক অনলাইন এক্টিভিস্ট মিলনমেলা ও 'প্রয়াসের' শুভ উদ্বোধনী" অনুষ্ঠানে নিজেকে উপস্থিত করতে পেরে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। দেখা হয়েছে অনেক অনলাইন বন্ধুদের সাথে। এট পাস্ট ভেবেছিলাম হয়তো পঞ্চাশ ষাট জনের একটি আড্ডা হবে। কিন্তু একি! রীতিমত চমকে ওঠি ইসলামিক অনলাইন যুদ্ধাদের ব্যাপক অংশ গ্রহণ ও আয়োজকদের বিশাল আয়োজন দেখে। প্রায় চার শতাধীক ইসলামিক অনলাইন এক্টিভিস্টদের সমাবেশ। অনেকে তো সেখানে তাদের অনলাইন যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত ল্যাপটপ নিয়ে হাজির। এ যেন এক, রাণাঙ্গনে যুদ্ধরত সৈনেকের আড্ডা। আয়োজক মহলের শুকরিয়া আদায় করে শেষ করা যাবে না। শেষ করা যাবে না ওই দুজন মূল্যবান মেহমানেরও যাঁরা শত ব্যস্ততার পরও তাঁদের অতি মূল্যবান সময় আমাদের সাথে ব্যয় করেছেন। একজন হলেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবীদ, অনলাইন অফলাইন লেখক, মাওলানা জাকারিয়া নুমান ফয়েজী সাহেব। অন্য জন হলেন হাটহাজারী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব। আমি মুগ্ধ হয়েছি অনলাইন বন্ধুদের তথ্য নির্ভর ও দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্যে। আহ! কি সুন্দর তাদের বচন ভঙ্গি! কত'ই না চমত্কার তাদের শব্দ চয়ন! এমন একটি গুরুত্ববাহ মজমায় নস্যি নগণ্য অধমেরও কিছু বলার সুযোগ হয়েছিল। অধমের বক্তব্যটি প্রায় এরকম...
ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলে। কোন যুগ কোন কাল নেই যা ইসলামের বিপরীত। বা সাংঘর্ষিক। ইসলামে আধুনিকতা আছে। মডার্ণ আছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে অশ্লীলতা মানে আধুনীকতা নয়। ইসলাম ধর্মের প্রচার প্রসার ঘটেছে তাবলিগের মাধ্যমে। তাবলিগ মানে হচ্ছে পৌঁছে দেয়া। দ্বীনের বানী দাওয়াত মানব জাতির কাছে পৌঁছে দেয়ার নাম'ই হচ্ছে ইসলামের তাবলিগ। আর এ তাবলিগের কাজ ফেসবুক, ব্লগের মাধ্যমে করাটা অতি ফল দায়ক। যেমন ধরুন টাউনে একটি দশ তালা বিল্ডিং আছে। প্রত্যেক তালাতে চারটি করে প্লট আছে। আর আমাদের অবশ্য জানা আছে প্রত্যেক প্লটে একটি করে পরিবার থাকে। তাহলে ওই ভবনে মোট চল্লিশটি পরিবার থাকে। এবার একটু ভেবে দেখুন, চল্লিশটি পরিবার দিয়ে আমাদের দেশে একটি গ্রাম হয়ে যায়। তো এখন কি দাড়ালো? একটি ভবনে একটি গ্রাম। আমি দশ তালা বলেছি মাঝারি সাইজের হিসেবে।
শহরে কিন্তু এর চাইতে বড় ভবনও আছে। একটি শহরে কয়টি ভবন আছে? আপনি কি পারবেন তাদের প্রত্যেকের দরজায় গিয়ে দ্বীনের দাওয়াত দিতে? নাকি গার্ড আপনাকে পাস্ট গেইটেই আটকে দেবে? তাদের কাছে কিভাবে দ্বীন পৌঁছাবেন? তারা তো মাহফিলেও আসে না মসজিদেও আসে না।
ধর্ম থেকে দূরে থাকতে থাকতে একদিন তারা ধর্ম বিমুখ হয়ে যায়। তখন ধর্মের কোন কথা তাদের কাছে আর ভালো লাগে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য কি? যেহেতু তারা টিভি, ইন্টারনেট ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ত তাই আমাদেরকে দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে সেখানটা দখলে নিতে হবে। এ জন্য ইসলামিক টিভি চ্যানাল প্রয়োজন। অনলাইনেও আলেম ওলামা ও ইসলামি চেতনাধারিদের উপস্থিতি দরকার। অনেকে ভাবে অনলাইন ইন্টারনেট হচ্ছে অশ্লীলতার আঁখড়া।
এটি একটি ভুল ধারণা। ইন্টারনেট হচ্ছে একটি নিরীহ মাধ্যম। তাকে আপনি যেভাবে ব্যবহার করবেন সে সেভাবেই ব্যবহৃত হবে। যেমন একটি ছুরি-চাকু। এটি একটি নিরীহ বস্তু। যা দিয়ে আপনি কোরবানির গরু জবাই করতে পারবেন। আবার অন্যায় ভাবে মানুষও খুন করতে পারবেন। এখন কথা হচ্ছে ইন্টারনেট আঙ্গনকে অশ্লীতায় দখলে নেয়ার আগে আপনারা সভ্য জাতিরা কেন দখলে নিতে পারলেন না? কিছু জন-গোষ্ঠি এমন আছে যা হঠাত্ করে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এর কারণ কি? করণ হচ্ছে তারা মিডিয়া দখল করে নিয়েছে। একটি প্লেটে যদি সাতটি কালো আঙ্গুর এবং তিনটি নীল আঙ্গুর থাকে। তখন মনে হবে যেন সব গুলোই কালো আঙ্গুর। আর যদি সাতটি নীল আঙ্গুর এবং তিনটি কালো আঙ্গুর হয়। তখন তার উল্টোটা মনে হবে। সুতরাং আমরা যারা ইসলামি চেতনায় বিশ্বাসী, তাদের উপস্থিতিও এসব ক্ষেত্রে বাড়াতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুক। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাল্লাগছে ভাই-ইয়া ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন