গাউসুল আজম এবং বড়পির আব্দুল কাদির জিলানী (র)-প্রসঙ্গে সমাজে প্রচলিত ঈমান বিধ্বংসী আকিদা। ( কপিপেস্ট)
লিখেছেন লিখেছেন মুজাহিদ হোসাইন সজিব ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০২:৩৮:২৬ দুপুর
গাউসুল আজম-এর আভিধানিক অর্থ হলো সর্বশ্রেষ্ট ত্রাণকর্তা বা সর্বশ্রেষ্ট রক্ষাকারী। আর এটা কেবলমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাক ছাড়া আর কেউই হতে পারেন না। কোন পীর-আউলিয়া বা নবী-বসুলের নামের সাথে এটা বলা মানেই হলো মহান আল্লাহপাকের সাথে জঘন্য শিরক করা। আমাদের দেশে কিছু লোক না বুঝেই বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী ও সুফী সাধক মাইজভান্ডারীকে গাউসুল আজম বলে সম্বোধন করে থাকেন। এটা সরাসরি শিরক, এতে কোন সন্দেহ নেই।
১০৭৭ খৃষ্টাব্দে ইরানের তাবারিস্তানের জিলান নগরীতে জন্মগ্রহণকারী আবদুল কাদের জিলানী (র) বাল্যকাল থেকেই কুরআন-হাদীস সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ করেছিলেন। ইবনুল আছীর, ইমাম যাহাবী, সাম‘আনী প্রমুখ মনীষীগণ তাঁকে সৎ, পরহেযগার, ফক্বীহ, যাহেদ ও হাম্বলী মাযহাবের ইমাম হিসাবে অভিহিত করেছেন (আল-কামেল ৯/৩২৬; যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ৩৯/৮৯; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ২০/৪৩৯-৪১)। কেউ কখনোই তাকে গাউসুল আজম নামে অভিহিত করেননি এবং তা কেউই তাকে এই নাসে অভিহিত করেননি এবং করার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু আমাদের এই উপমহাদেশের ধর্মীয় জ্ঞানহীন কিছু সুবিধাবাদী ধর্ম ব্যবসায়ী এই মহান ব্যক্তির নামের সাথে ‘গাউসুল আজম’ উপাধী লাগিয়ে মুসলমানদের ঈমান আকিদা ধ্বংস করে আসছেন।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ)-কে আব্দুল কাদের জিলানীর কবরে শিরকী কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘নিঃসন্দেহে শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী এসব কর্মকান্ড করতে বলেননি এবং তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশও দেননি। তার ব্যাপারে যারা এ সব কথা বলেন তারা মিথ্যাবাদী। বরং শিরকী ও চরমপন্থী একদল লোক এসব বিদ‘আত আবিষ্কার করেছে। (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ ২৭/১২৭)]
আবদুল কাদের জিলানী সম্পর্কে আমাদের এই উপমহাদেশে বেশ কিছু মুখরোচক গাল গল্পও প্রচলিত আছে। তারমধ্যে একটা হলো, আবদুল কাদের জিলানী নাকি মায়ের পেট থেকে ১৮ পারা কুরআন মুখুস্থ করে এসেছেন। এটি স্পষ্ট কুরআন বিরোধী কথা।
আল্লাহ বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করেছেন। তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর দিয়েছেন, যাতে তোমরা অনুগ্রহ স্বীকার কর। (16 সুরা নাহল: ৭৮)
আল্লাহ বলছেন “তোমরা কিছুই জানতে না” আর আমরা বলছি “১৮পারা কুরানের হাফেজ হয়েছিলেন”।
আরো একটা কথা প্রচলিত আছে যে, তিনি নাকি বাঘ হয়ে তার মাকে রক্ষা করেছেন। তা-ই যদি হয়, তাহলে তিনি তো মানুষ ছিলেন না। আর মানুষ না হলে ইমাম বা পীর (শিক্ষক) হবার যোগ্যতাও থাকে না। কিছু মূর্খ আলেম ও পীর জাতীয় লোকজন এমন গাঁজাখুরি কেচ্ছাকাহিনী প্রচার করে বাহাবা কুড়িয়েছেন। আচ্ছা বলুন তো, এমন গাঁজাখুরি কিচ্ছা-কাহিনী কোন মুসলমান বিশ্বাস করতে পারেন?
বিষয়: বিবিধ
১৭৭০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন