কাজী জাফর আহমদ, এক বর্ষীয়ান নেতার নাম।
লিখেছেন লিখেছেন মুজাহিদ হোসাইন সজিব ২৭ আগস্ট, ২০১৫, ০৩:০৭:১০ দুপুর
জন্ম ১৯৩৯ সালের ১ জুলাই। হঠাৎই চলে গেলেন (২৭ আগস্ট ২০১৫)। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনেক ঘটনার সাক্ষী ছিলেন তিনি। ৭৬তম জন্ম পালনের মাত্র ২ মাসের মধ্যেই চলে গেলেন। তার এ আকস্মিক মৃত্যুর খবরে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, আত্বীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্খীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
১৯৩৯ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কাজী জাফর আহমদ। ১৯৮৯-১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৮৬-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের উপনেতা ও ১৯৮৯-১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা ছিলেন। ১৯৮৬-১৯৯৬ পর্যন্ত পর পর তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
মেধাবী ছাত্র হিসেবে কাজী জাফর খুলনা জেলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হন। পরবর্তীকালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ. অনার্স ও এম.এ. (ইতিহাস) পাশ করেন তিনি। ভাষা আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়ে তিনি রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। রাজশাহী জেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক এবং রাজশাহী কলেজ সাহিত্য মজলিশের মুখপত্র, সাহিত্যিকীর সম্পাদক হিসেবে তার কর্মময় রাজনীতিতে পদচারণা শুরু।
কাজী জাফর আহমদ ১৯৫৯-১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কাজী জাফর ১৯৬২-১৯৬৩ সালে অবিভূক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন ও শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন তিনি।
১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২-১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তখন ছিলেন ন্যাপের চেয়ারম্যান। এরপর ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড পিপলস পার্টির (ইউপিপি) প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও পরে চেয়ারম্যান হিসেবে সক্রিয়ভাবে পার্টির সাংগঠনিক দায়িত্ব ও জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ কার্যকরি ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন তিনি। পরে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরুর পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এ রাজনৈতিক নেতা। ১৯৮৬-১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বন্দর-জাহাজ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক উপদেষ্টা, ১৯৮৯-১৯৯০ সালে বাংলাদেশের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬-১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের উপনেতা ও ১৯৮৯-১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা ছিলেন। ১৯৮৬-১৯৯৬ পর্যন্ত পরপর তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে এরশাদের সঙ্গ ত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিদক দল তৈরি করেন কাজী জাফর আহমদ।
বিষয়: বিবিধ
১০০৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ তায়লা তাকে ক্ষমা করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন