"বখতিয়ারের ঘোড়া" আল মাহমুদ
লিখেছেন লিখেছেন মুজাহিদ হোসাইন সজিব ১০ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৩৭:৫৫ দুপুর
(যারা কবিতাটি পড়েন নাই একবার পড়ে কি বুঝলেন মন্তব্য করে জানান)
মাঝে মাঝে হৃদয় যুদ্ধের জন্য হাহাকার করে ওঠে।
মনে হয় রক্তই সমাধান, বারুদই অন্তিম তৃপ্তি;
আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ, জেহাদ বলে জেগে উঠি।
জেগেই দেখি কৈশোর আমাকে ঘিরে ধরেছে।
যেন বালিশে মাথা রাখতে চায় না এ বালক,
যেন ফুৎকারে উড়িয়ে দেবে মশারি,
মাতৃস্তনের পাশে দু'চোখ কচলে উঠে দাঁড়াবে এখুনি;
বাইরে তার ঘোড়া অস্থির, বাতাসে কেশর কাঁপছে।
আর সময়ের গতির ওপর লাফিয়ে উঠেছে সে।
না, এখনও সে শিশু। মা তাকে ছেলে ভোলানো ছড়া শোনায়।
বলে, বালিশে মাথা রাখো তো বেটা। শোনো
বখতিয়ারের ঘোড়া আসছে।
আসছে আমাদের সতেরো সোয়ারি
হাতে নাংগা তলোয়ার।
মায়ের ছড়াগানে কৌতূহলী কানপাতে বালিশে
নিজের দিলের শব্দ বালিশের সিনার ভিতর।
সে ভাবে সে শুনতে পাচ্ছে ঘোড়দৌড়। বলে, কে মা বখতিয়ার?
আমি বখতিয়ারের ঘোড়া দেখবো।
মা পাখা ঘোরাতে ঘোরাতে হাসেন,
আল্লার সেপাই তিনি, দুঃখীদের রাজা।
যেখানে আজান দিতে ভয় পান মোমেনেরা,
আর মানুষ করে মানুষের পূজা,
সেখানেই আসেন তিনি। খিলজীদের শাদা ঘোড়ার সোয়ারি।
দ্যাখো দ্যাখো জালিম পালায় খিড়কি দিয়ে
দ্যাখো, দ্যাখো।
মায়ের কেচ্ছায় ঘুমিয়ে পড়ে বালক
তুলোর ভেতর অশ্বখুরের শব্দে স্বপ্ন তার
নিশেন ওড়ায়।
কোথায় সে বালক?
আজ আবার হৃদয়ে কেবল যুদ্ধের দামামা
মনে হয় রক্তেই ফয়সালা।
বারুদই বিচারক। আর
স্বপ্নের ভেতর জেহাদ জেহাদ বলে জেগে ওঠা।
বিষয়: বিবিধ
৬৬২০ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কল্পনায় বিচরনের সম্রাট কবিরাই বিজ্ঝানীদের মত আবিস্কাকারের নেশায় কান পেতে ওত পেতে তুলে নিয়ে আসে অবিশ্বাস্য রহস্যকে। অক্ষর দিয়ে শব্দ বুনতে বুনতে কবিরাও একদিন তাই করে বসে। কিন্তু তখন কবি হয়ে যায় পরোলোকগত।
কবি আল মাহমুদ সেই বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন। মদীনা রাস্ট্রের স্বপ্ন দ্রষ্টারা আজও বিভোর হয় সেই সোনালী দিন নিয়ে। গর্ভে ফেটে পড়ে। রাসুল ও সাহাবাদের ইস্পাতসম কাহীনি শুনে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে দেয় শ্রোতাদের। কিন্তু বাস্তবতা যেন যোজন যোজন দুরে। আজ আমরাও সেই বখতিয়ারের ঘোড়ার মতই। কিন্তু বাস্তবতা হল, এ যেন নিজেই নিজেকে ঘুম পাড়ানো গল্প শোনানোর মত।
অনুশীলনবিহীন তাকে বন্দী কোরানকে জীবন থেকে দুরে রেখে মদীনার সোনালী রাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বখতিয়ারের ঘোড়ার গল্পের মতই।
মনে হয় রক্তই সমাধান, বারুদই অন্তিম তৃপ্তি;
আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ, জেহাদ বলে জেগে উঠি।
ফররুখ বিদায় নিতেই 'পান্জেরী' নিয়ে সে কী মাতামাতি।
আজ আল মাহমুদ আছে, চলে গেলেই মরনোত্তর পদক দেয়ার ধুম পড়ে যাবে।
গুণীদের কদর করতে আমরা কবে শিখবো? জীবদ্দশায় আমরা মুক্তা গুলো চিনতে পারিনা কেন?
জাগ্রত কবি মুহিব খানকেও আমরা এখন চিনিনা, চিনব। তবে তখন তিনি আর থাকবেন না আমাদের মাঝে
তার একটা কবিতা দেন, পড়ে দেখি
মন্তব্য করতে লগইন করুন