তারপরও বেকার যুবকেরা একটি সুন্দর স্বপ্ন দেখে......
লিখেছেন লিখেছেন মুজাহিদ হোসাইন সজিব ২০ জুলাই, ২০১৪, ০৭:৪৪:২৪ সন্ধ্যা
বাংলাদেশের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনালে ভীড় জমায় একদল তরুন। তাদের লক্ষ্য ঢাকা; কারন এদেশে ঝাড়ুদার নিয়োগ করলেও তার নিয়োগ পরীক্ষা হয় ঢাকা থেকে। তারা কেউ প্রিলি দেবে; কেউ রিটেন; কেউ ভাইভা। কারো প্রথম, কারো পঞ্চাশতম; কারো বয়স শেষের শেষ পরীক্ষা।
মা ফোন দেয়- 'বাবা পাশ করেছিস দুই বছর হল; একটা কিছু কর। তোর বাবার পক্ষে আর সম্ভব না। মা তোর জন্য আশীর্বাদ করছি। এবার তোর চাকরি হবেই হবে' বাবা ফোন দেয়- 'বাবা আমাদের জন্য না; তোর জন্য একটা চাকরি ঠিক কর; বয়স কত হয়েছে খেয়াল আছে তোর।
কথা দেয়া প্রিয়তমার ফোন বাজে - 'তুমি বিসিএস ক্যাডার হও; ব্যাংকার হও এইটা আমি চাই না; একটা ছোটখাট চাকরি যোগাড় করো প্লিজ। বড় জব পরে দেখা যাবে।
শুধুমাত্র একটি চাকুরির জন্য যুবকটি অনার্স ফাস্ট ইয়ার থেকে মুখস্ত করে আসছে - কারেন্ট নিউজ, কারেন্ট ওয়ার্ল্ডয়ের সব সংখ্যা; জবের সকল গাইড। পৃথিবীর ২১৫ টি দেশের রাজধানী, মুদ্রা, আয়তন, জনসংখ্যা, রাষ্ট্রনায়কের নাম সবই তার মুখস্থ। যমুনা সেতুর পিলার কয়টা? চর্যাপদের কোন লাইন কে লিখেছেন? কোন জেলায় কি আছে? পৃথিবীর কোন নদী, শহর, প্রনালী, বাঁধ কোথায়? .. .... ... সবই তার মুখস্থ।
যুবকটি একটি সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে রাতভর পাড়ি দিয়ে ঢাকা পোঁছায়। সকালে পরীক্ষা। ঢাকায় নেমে হাতমুখ ধুয়ে ২টা পরটা গিলে এক্সাম হলে দৌড় দেয়।
পরীক্ষা ভালোই দেয়; হল থেকে বের হওয়ার পরপরই পর্যায়ক্রমে- মা, বাবা, প্রিয়তমা, বন্ধুদের ফোন। বাসে ওঠে যখন শুনে তার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেছে; মন ভেঙ্গে যায় বেশিরভাগ যুবকেরাই বার বার ভাইভা দেয়, কিন্তু চাকরি মিলে না। ফিজিক্স থেকে পাস করে চাকরি মিলে হয়ত কৃষি ব্যাংকে; সারাজীবন রসায়ন পড়ে হয়ত ঢুকে পুলিশ বিভাগে; প্রানীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা পড়ে তাকে ঢুকতে হয় মার্কেটিং জবে!কেউ পুরো বেকার; কেউ অর্ধেক বেকার; কেউ কোনমতে পড়ে থাকে পেটচালানোর জন্য।
স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও আমাদের যুবকদের জন্য চাকরির নিশ্চয়তা নেই। রাষ্ট্র ডিজিটাল হয়; জিডিপি বাড়ে; বাজেটের আকার বাড়ে; শতশত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি দেশে ঢুকে; কেবল উন্নয়নের চুক্তি হয়; বৈঠক হয়; ঝাঁকে ঝাঁকে সেমিনার সিম্পজিয়াম হয় ......
কেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাড়ে না, কর্মসংস্থান বাড়ে না। বেকারের ভীড় বাড়তে থাকে; ১টি পোস্টের বিপরীতে উপচে পড়ে হাজার হাজার প্রতিযোগী ।
তারপরও যুবকেরা একটি সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছুটে; কোন এক শুক্রবারে তার স্বপ্ন পূরণ হবে।
মাকে ফোন করে বলবে- 'মারে আমার চাকরি হয়েছে' বাবাকে বলবে- 'বাবা তুমি এবার বিশ্রাম নাও; শুধু বাজার করবে; পত্রিকা পড়বে আর টিভি দেখবে'।
প্রিয়তমাকে বলবে- 'আগামী মাসেই তোমার বাবার সামনে আমি দাঁড়াবো; দেখি কে ঠেকায়' !!
বিষয়: বিবিধ
২৯৭০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর ইক্যুইটেবল সোশ্যাল বেনিফিট এর জন্য রাষ্ট্র পরিচালকদের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া কোন উপায় নাই। তবে এক্ষেত্রে প্রায় সব রাষ্ট্রই উদাসীন।
আর বেকার মানুষগুলোও নিজেরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগীতা করে থাকে – তাদেরও কোন সম্মিলিত প্রচেষ্টার কোন চেষ্টাই তারা করে না।
কিভাবে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে তার অনেক মতবাদ অনেক যুক্তিবাদীরাই দিয়ে গেছেন, তবে কেউ আমলে নেয় না!
তবে দোয়া করি – সে বেকার যদি আপনি হয়ে থাকেন তবে শীঘ্রই আপনার চাকরী হয়ে যাক।
আমি নিজেও অবশ্য বেকার ...
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 9368
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
বেকার যুবেকেরা যতদিন যোগ্যতার চাকরি না পায় ততদিন এই ধরণের কাজে উদ্যগি হলে নিজে এবং দেশ উভয় বদলে যাবে--
আমাদের স্বাধীনতা আজও অরক্ষিত :(
তাই আমাদের উন্নতি নেই :(
মন্তব্য করতে লগইন করুন