জঙ্গি নাটকের শেষ কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ২২ মার্চ, ২০১৭, ১০:১৮:১০ রাত
একটা প্রভাবশালী কুচক্রী মহল দেশকে যে কোন মূল্যে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে চায়। তারা জঙ্গিদের গ্রেপ্তার না করে গুলি করে হত্যার পথ বেচে নিয়েছে যাতে গোমর ফাঁস হয়ে না পড়ে। জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ফেরাতে তারা জঙ্গি নাটকের মাধ্যমে আগে গ্রেপ্তার করা কোন কোন নিরাপরাধ নাগরিককেও হত্যা করছে।
সরকার র্যাবের এহেন সন্ত্রাসী কর্মেও নির্বিকার! হয়ত তারা সরকারকে এই পরামর্শ দিচ্ছে জঙ্গিবাদের মাধ্যমে জনগণের দৃষ্টি ফেরানো সহজ। র্যাবও তাদের কুকর্ম ঢাকতে হর হামেশা এক একটা জঙ্গি নাটক জাতির সামনে মঞ্চস্থ করছে সুনিপুণ দক্ষতায়। এমন সন্দেহ তো করায় যায় কারণ এখন জঙ্গিদের এতটা নির্মমভাবে হত্যার পরেও তাদের কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষণীয় নয়। প্রকৃত জঙ্গিরা হত্যার প্রতিশোধ নিতে পাল্টা হামলা-হত্যাযজ্ঞ চালানো কথা! মনে হচ্ছে জঙ্গি ও সরকার এক, মাঝে জনগণ ভোক্তভোগী।
গনমাধ্যমও র্যাবের বিবৃতি গিলে খাচ্ছে। লক্ষনীয় বিষয় হল যে, র্যাব প্রায় সকল গনমাধ্যমে একই ধরণের বিবৃতি পাঠাচ্ছে যাতে করে কোন গনমাধ্যমের অনুসন্ধান করে রিপোর্ট করার প্রয়োজন না পড়ে। গনমাধ্যমগুলোও সরকারের রক্তচক্ষুওকে উপেক্ষা করে ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন ও প্রকাশ করার সাহস দেখাচ্ছে না। র্যাব যা বলছে তা চাপানোকে আর যাই হউক সাংবাদিকতা বলা যায়।
আফগানিস্তান কিংবা ইরাক সিরিয়ায় আত্মঘাতী হামলা একটা নিয়মিত ব্যাপারে পরিনত হলেও বাংলাদেশে এমন হামলা এখনো ঘটেনি। হয়ত বাংলাদেশের জঙ্গিরা এতটা দক্ষ নয় বা তারা আত্মঘাতী হামলা করতে চায় না। কিন্তু বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে এই গনহত্যার পদ্ধতি চালুর চক্রান্ত করছে একটি বিশেষ মহল। সম্প্রতি হানিফ মৃধাকে রাজধানীর আশকোনায় র্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্পে সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হিসাবে দাবি করে র্যাব। হাস্যকর বিষয় হল, হানিফ যদি আত্মঘাতী হত তাহলে র্যাবের গাড়ি দেখে পালিয়ে যাবে কেন? বরং হামলা করতে র্যাবের গাড়ির দিকে দৌড়ে যাওয়ার কথা। এ কেমন আত্মঘাতী? র্যাবের সাজানো আত্মঘাতীরা কেবল দৌড়ে পালাতে পারে!
র্যাবের জঙ্গি নাটক আরো স্পষ্ট হয় যখন হানিফ মৃধার পরিবার দাবি করছে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া হয় তাকে। হানিফের নিখোঁজের ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল ৪ মার্চ। হানিফের ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার চেকে সই নিয়ে নেয়। এছাড়া এখনো নিখোঁজ আছেন হানিফের সঙ্গে থাকা বন্ধু সোহেল হোসেন মন্টু। র্যাব মিথ্যা বলছে হানিফের পরিবার? নারায়নগঞ্জের সাত খুনের মত এই সব ঘটনার তদন্ত কেন করা হচ্ছে না? জঙ্গি ট্যাগ দিতে পারলে কি বিচার-তদন্তের দরকার নেই?
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, “বেলা দেড়াটর দিকে আশকোনা হাজি ক্যাম্পের পাশে র্যাব সদর দপ্তরের সীমানা প্রাচীর পার হয়ে ওই যুবক ভেতরে ঢুকতে গেল সেখানে উপস্থিত র্যাবের কয়েকজন সদস্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে। একপর্যায়ে সে সেখান থেকে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন তার শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফারণ ঘটায়।”
আত্মঘাতীরা যে পালিয়ে নিরাপদ দুরুত্বে গিয়ে বোমা ফাটায় এই ফতুয়া কেবল র্যাবের মুফতির পক্ষে দেওয়া সম্ভব! আর কত নাটক হবে জঙ্গি নামে দেশে? সাধারণ মানুষ কি কিছুই বুঝে না? এরপরও না হয় বিশ্বাস করলাম, কিন্তু নিহত আত্মঘাতী জঙ্গি জুয়েল যখন একটি পত্রিকা অফিসে স্বশরীরে হাজির হয়ে বললেন, ‘আমি মরিনি। আমি জঙ্গি না’ তখন নিজেকে জোর করে বুঝানো যায় না।
আত্মঘাতী দাবি করা আশকোনা র্যাব ক্যাম্পে নিহত ব্যক্তি হানিফ মৃধার মত অন্য কেউ নয় তো যার পরিবারের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি?
বিষয়: বিবিধ
১০৪২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন