চারদিকে ভালবাসার বড়ই অভাব!
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০১:৫৮:৪৬ রাত
ভালবাসার অন্যতম বৈশিষ্ট্যগুলো হল ক্ষমাশীলতা কোমলতা, সহনশীলতা ও মহানুভবতা। কিন্তু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আজ সুদূর যুক্তরাষ্ট্রেও নিষ্ঠুরতার জয়জয়কার। ট্রাম্প মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ বন্ধে নির্বাহী আদেশ দিল, অভিবাসী ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার অঙ্গিকার করল, মুসলিম ও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ করছে।
ভালবাসা দিবসে যা দেখা যাচ্ছে তা কেবল যৌনতা। ভালবাসার নামে এই দিবসের সুযোগ নিয়ে বেহায়াপনার চর্চা করছে কিছু তরুণ-তরুণী। কিন্তু এই কেন্দ্রিক ভালবাসার অবস্থাও আজ-কাল ভাল যাচ্ছে না।ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে না পেরে বিবাহ বিচ্ছেদের হার দিন দিন বেড়ে চলছে। ভালবাসার দোহায় দিয়ে হত্যা, কুপাকুপির মত ঘটনা ঘটছে তনু, আফসানা, খাদিজা তার প্রমাণ। সাস্প্রতিক কালে নিষ্ঠুর নির্যাতনের মাধ্যমে শিশু হত্যার মত ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গি সন্দেহে সরাসরি গুলি করে যেভাবে নানা জায়গায় অল্প বয়সী কিছু বিপদগামী তরুণ-তরুণীদের হত্যা করা হচ্ছে তাও নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু নয়। আইন-আদালত থাকতে ঠান্ডা মাথায় কোন অপরাধীকে হত্যার আইনি ও নৈতিকভিত্তি নেই। বন্দুকযুদ্ধের নামে ক্রসফায়ারে হত্যা ও গুম করা মানবিকতার বড় পরাজয়।
রাজনীতিতেও ভালবাসার এতটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে যে, খালেদা-হাসিনার পরস্পর চেহারা দেখা মহাপাপ! জাতি ধ্বংস হয়ে যাক তবুও সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে সংলাপ-সমঝোতা হতে নয়। সরকারী দল ঘটা করে নিজেদের সভা-সমাবেশ করতে পারে, কিন্তু বিরোধীদের জন্য সভা-সমাবেশ দূরে থাক সত্য কথা বলাও পাপ!
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে কোন ভূমিকা রাখছে না গনমাধ্যম। বরং এরা পীঠ বাঁচিয়ে চলছে। সম্ভবত কথিত স্যকুলার মিড়িয়াগুলোর সাথে সরকারের আদর্শগত মিল রয়েছে। তাই সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণে তাদের আপত্তি নেই। মিড়িয়ার খবরের উপর জনগণের আস্থার সংকটও রয়েছে। সবাই প্রকৃত খবর জানতে সোশ্যাল মিড়িয়ার দিকে ঝুকছে। সংবাদপত্রগুলো চাঞ্চল্যকর সব খবর ফেচবুক থেকে সংগ্রহ করে থাকে। সরকারের মন্ত্রী বা উচ্চপদস্থ আমলা বা আইনশৃংখলাবাহিনীর ব্যাপারে অনুসন্ধানি প্রতিবেদন চোখে পড়ে না। কয়েক বছর আগেও মন্ত্রী -এমপিদের নানা দূর্নীতির খবর পাওয়া যেত। এখন সব খবর ফরমায়েশী। ডেইলি স্টারের সম্পাদকের বিরুদ্ধে সরকার পরিকল্পিতভাবে শত মামলা দিয়ে মূলত ঝিকে মেরে বৌকে শিক্ষা দেওয়া। গনমাধ্যমগুলোও শিক্ষা নিয়েছে। এখন এমনভাবে সংবাদ প্রকাশ পায় যাতে লাঠিও না ভাংগে সাপও না মরে। সরকারও এখন সংবাদপত্রকে ভয় করে না। তাই মেয়র মিরু প্রকাশ্যে এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করেছে। কয়েকজন সাংবাদিককে থানায় নিয়ে পিঠিয়েছে পুলিশ।আসলে গনমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার ইচ্ছাও বর্তমান সংবাদমাধ্যমগুলোর নেই। সেই সাথে গনমাধ্যমগুলো নিজেদের মধ্যে বিভক্ত। আমারদেশ , দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি, পিচ টিভি বন্ধ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে তথাকথিত মুক্তমনা মিড়িয়ার কোন আপত্তি নেই। সত্য বলার জন্য আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান যখন চার-বছর জেলে কাঠিয়েছেন তখন ৮০-৯০ টা মামলা হওয়া মাহফুজ আনামকে একদিনও জেলে যেতে হয়নি। সরকারের সাথে আপোস ছাড়া কি তা সম্ভব? সরকারের সাথে আপোস করে কি গনমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা যায়?
বিষয়: বিবিধ
১২২৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এভাবে তো কখনো ভাবিনি! চমৎকার ভাবনা। সত্য এটাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন