রোহিঙ্গা আইলানঃ মানবিক সংকট না মুসলিম সংকট?
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০৯:০২ রাত
মুসলিম ইস্যু সামনে আসলে ব্রাহ্মণ্যবাদী কিছু লোক সুশীল সাঁজতে মানববাদী হয়ে ওঠেন। তাই তারা রোহিঙ্গাদেরকে মানবিক দিক থেকে দেখতে চায়, মুসলিম হিসাবে নয়, যদিও এরা বেশির ভাগ মুসলিম। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের মানবতাবোধ এতটা ভোঁতা যে তা রোহিঙ্গাদের প্রাণ রক্ষার জন্য শাহবাগে আন্দোলন করতে উৎসাহিত করতে পারে না। দেশের খ্যাতিমান মানবাধিকার সংঘঠনগুলোও রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারে সোচ্চার নয়। প্রভাবশালী দেশের বিদেশী নাগরিক হত্যার সময় নামধারী সুশীল সমাজ যতটা সরব ছিল, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে এখন তারা ততটা নীরব ভুমিকায়, তারা রোহিঙ্গাদেরকে দাবার গুটি বানিয়ে বরং রাজনীতি করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
তারা কি বলতে চায় মুসলিম পরিচয়টা মনুষ্যত্বের মধ্যে পড়ে না? মুসলিমদেরকে হত্যা করা জায়েজ? নাকি মুসলিমদের মানবাধিকার থাকতে নেই? নিজেকে মুসলিম হিসাবে পরিচয় দেওয়া যাবে না? বাংলাদেশ জনবহুল হওয়ায় রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করা যাবে না এটা মানবিকতার কোন সংজ্ঞায় পড়ে অহে মানবাবাদীরা?
হিন্দুদের গায়ে আঁচড় লাগলেও এরা বেশ উৎকন্ঠিত হয়ে সভা-সমাবেশ করে থাকে। হিন্দুদের সংকটকে মানবিক সংকট হিসাবে না দেখে, বরং এটিকে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর মৌলবাদিদের হামলা হিসাবে দেখে । হিন্দুদের জন্য এদের কান্না আসলে প্রকৃত মানবতাবোধ থেকে নয়, ররং তারা প্রভাবশালী হিন্দুপ্রধান রাষ্ট্র ভারত থেকে বাহবা পেতে অথবা তাদের ভয়ে মানবতাবাদী হয়ে ওঠেন, তাই দেখা যায় হামলাকারীরা প্রগতিশীল আওয়ামী লীগের কেউ হলেও দায়টা যথারীতি মৌলবাদিদের উপর চাপানো হয়।
প্রতিবেশী ভারতের কারণে হিন্দুরা ভাগ্যবান বলা যায়। কারণ ভারত এদেশে হিন্দুদের উপর হামলাকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসাবে দেখে ও তাঁর ব্যাপারে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে থাকে, যদিও ভারত নিজ দেশে মুসলিমদের উপর প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িক হামলাকে পশ্রয় দিচ্ছে। প্রতিবেশী মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ থাকলেও রোহিঙ্গারা এই দিক দিয়ে বেশ দুর্ভাগা, কারণ তাদেরকে বাংলাদেশ মানুষ হিসাবে দেখে, মুসলিম হিসাবে নয়।
ফান্সের নিছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমকামী ক্লাবে হামলায় নিহতদের জন্য সারা বিশ্ব শোকাহত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু অমানবিক গণহত্যায় নিহত রোহিঙ্গাদের জন্য এই একই বিশ্ব সম্প্রদায়ের কারো চোখে পানি আসেনি। সবাই মানুষ হয়েও কেন এই বৈপরিত্য আচরণ? কারণ কি নয় তাঁরা ছিল সভ্য খৃষ্টান, আর রোহিঙ্গারা অজ্ঞ, পশ্চাতপদ, দরিদ্র মুসলিম? আসলে এটাই।
সারা বিশ্বে রোহিঙ্গাদের জন্য রাজপথে যে প্রতিবাদ, সমাবেশ হয়েছে সবগুলো দাড়ি টুপি ওয়ালা মুসলিমরা করেছে। রোহিঙ্গাদেরকে যারা মুসলিম হিসাবে দেখছে তারাই প্রকৃত অর্থে তাদের জন্য আর্থ-চিৎকার করছে। এই মুসলিমদের প্রতিবাদের কারণে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে কথিত মানববাদীরা কিছুটা সোচ্চার হয়েছে মূখ রক্ষার জন্য, অন্তত বাধ্য হয়ে হলেও তাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে এখন, এই ব্যাপারে তারা যদিও কার্যকরভাবে সক্রিয় নয়।
বিষয়: বিবিধ
৯৩৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন