শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনা যায়, মানবতার নয়
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:১৮:০৮ রাত
স্যাকুলার চেতনা দ্বারা প্রকৃত মানবাধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয়। এই চেতনায় উজ্জীবিত মানবতা সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে না। এদেশের স্যাকুলাররা সীমাহীন অমানবিক নির্যাতনের স্বীকার রোহিঙ্গাদের জন্য এই ভুখণ্ডে কোন সাময়িক আশ্রয় দিতেও রাজি নয়। পাছে তাদের নিরাপত্তার ভয়!
রোহিঙ্গাদের সাথে এই দেশের মানুষের ধর্মীয় ও ভাষাগত দীর্ঘ ও নীবিড় ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকা স্বর্থেও তারা মিয়ানমারের বর্বর সেনাবাহিনী দ্বারা কিংবা সাগরে ডুবে মরলেও এতে স্যাকুলাররা মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজন মনে করছে না। কম্যুনিষ্ট নাস্তিকদের কথা বাদই দিলাম, ওরা তো কসাই, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন তার প্রমাণ বহন করে, সমাজতন্ত্রের নাম করে এদের ইসলামের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা ছাড়া আর কোন এজেন্ডাই ছিল না। ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দূরে থাক বাক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতারও অধিকার এদের কাছে মূল্যহীন। ইতিহাসের কুখ্যাত হিটলার-মুসিলিনি সৃষ্টি হয়েছিল সমাজতন্ত্রের হাত ধরেই।
প্রথম আলোর মত সুশীল বান্দব সংবাদ মাধ্যম অল্প কিছু রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে না পেরে চরম হতাশ! কিন্তু নিজেদের স্বার্থে বন্য গাছপালা রক্ষায়ও এদের কেউ থামাতে পারে না। বাংলাদেশের কোথাও হিন্দুদের বাড়িতে ভাংচুর হল , আর তাতে মৌলবাদের গন্ধ খোঁজায় এরা বেশী ব্যস্ত। মৌলবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতার নামে ইসলামের বিরুদ্ধে শাগবাগে আন্দোলন হয় দিবা-রাত্রি । এদের আঠারো নেমে আসে কেবল ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য, হিন্দুত্ববাদের দেবদাস হওয়ার জন্য। ভারতের কোথায় ট্রেন দূর্ঘটনায় কে আহত হল, তাঁর জন্য এদের সমাবেদনার শেষ নেই, কিন্তু কচু কাটার স্বীকার রোহিঙ্গাদের জন্য এদের অন্তর পাথরের মত শক্ত হয়ে যায়!
সিরীয় শরানার্থীদের কাছে ভিড়তে না দিয়ে স্যাকুলার ইউরোপ তাদের মানবাধিকারের মূকোশ খুলে ফেলেছে। আইলান তার উদাহরণ হয়ে থাকবে। এক শরনার্থী ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার অবস্থায় আছে। সেখানে অভিবাসন ও শরনার্থী বিরোধী ডানপন্থী দলগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বের হয়ে যাওয়ার কারণও একসুত্রে গাঁথা। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাজনৈতিক ভুমিকম্প হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তানও মুলত অভিবাসন ও উদার অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে। এখন তাঁরা আর অন্যের বুঝা বহন করতে চাচ্ছে না। নিজের চরকায় তেল দাও। শরনার্থী ঢল ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তড়িঘড়ি করে তুরষ্কের সাথে চুক্তি করে। কিন্তু সেই চুক্তি তাঁরা মানছে না। বরঞ্চ এরদোগানের সমালোচনা করছে। এরদোগানও সীমান্ত খুলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
প্রকৃত কথা হল স্যাকুলাররা সমাজের বৃত্তবান, প্রভাবশালী, সুশীল, সুশ্রীদের জন্য মানবাধিকার খোঁজে বেড়ায়, এই ক্ষেত্রে তাঁরা যা ইচ্ছা তা বলার স্বাধীনতাও হারাতে চায় না! কিন্তু সীমান্ত পার হয়ে দুর্বল মলিন, অসহায় মুসলিম জনগোষ্ঠির জীবন রক্ষার অধিকারও এদের কাছে ছাই এর মত মূল্যহীন। তাই তারা পারে না রোহিঙ্গাদের জন্য মিছিল করতে, সমাবেশ করতে, তাদের এই ভুখণ্ডে আশ্রয় দেওয়ার জোরালো দাবি জানাতে! অং সন সূচি এখনো তাদের কাছে শান্তির পায়রা!
বিষয়: বিবিধ
১৩২০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন