ইসলামকে অসহিষ্ণু ধর্ম হিসাবে তুলে ধরার ষড়যন্ত্র
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ আল রাহাত ০১ নভেম্বর, ২০১৬, ০৯:১১:১০ রাত
আগে জানতাম সিআইএ ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি করে। এখনো অনেকে বিশ্বাস করেন ৯/১১ এ টুইন টাওয়ার হামলা সিআইএ এর ষড়যন্ত্র। Project MKUltra, Operation Northwoods, COINTELPRO মত আরো অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি করা হয়েছিল নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের নানা অমানবিক লক্ষ্য হাসিলের জন্য। বিভিন্ন দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুগত সরকার প্রতিষ্টার জন্য সিআইএ সামরিক বেসামরিক ক্যু ঘটাত। এই কাজে সিআইএ ছিল সিদ্ধহস্ত। তুরুষ্কে ব্যর্থ সামরিক ক্যু সিআইএ এর সর্বশেষ ষড়যন্ত্র বলে মনে করা হচ্ছে। যার ফলে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান মার্কিনিদের থেকে মুখ ফিরিয়ে পুতিনের রাশিয়ার সাথে সেতুবন্ধ গড়তে কালক্ষেপন করেননি। তিনি বুঝতে পেরেছেন পশ্চিমারা তুরষ্কের বন্ধু হবে না যদিও তুরষ্ক ন্যাটোর প্রভাবশালী সদস্য। এই ব্যর্থ ক্যু এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরাজেয় ক্ষমতায় যে ছেদ পড়েছে তা স্পষ্ট লক্ষনীয়। সেই সাথে সিআইএ এর সক্ষমতা যে আগের মত নেই তাঁরও প্রমাণ পাওয়া গেল।
এখন আমাদের দেশেও নানা ঘটনায় ষড়যন্ত্রের আবাশ পাওয়া যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রগুলোর মধ্যে আছে বন্দুকযুদ্ধের নামে ক্রসফায়ার, জঙ্গিবাদ ও হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে দিনকে দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ও সহিষ্ণুতা কমে যাচ্ছে। সংখ্যালঘু হওয়া স্বর্থেও কিছু কিছু অতি উৎসাহী হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিমের ধর্ম ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে অবমাননা করে চলছে। এই অবমাননা ব্লগ থেকে ফেইসবুকের মাধ্যমে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে পড়ছে।
কিছু দিন আগে পবিত্র কাবা ঘরের ছবির উপর শিব মূর্তি ছবি জুড়ে দিয়ে ব্যঙ্গ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ষ্ট্যাটাস দেয় রসরাজ দাস নামক এক হিন্দু যুবক। পেশায় একজন জেলে এই নগন্য রসরাজ দাস কেন মুসলিমদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত দেওয়ার মত দুঃসাহস দেখালো তা প্রশ্নাতীত নয়। হতে পারে নানা লোভের টুপে ফেলে তাকে ব্যাবহার করা হয়েছে। লক্ষনীয় দিক হল, ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ হিন্দুদের বাড়ি-মন্দিরে হামলা ইসলাম সম্মত নয়, বরং ইসলামের মূল চেতনা বিরোধী। কুরআনে তো আল্লাহ বলেই দিয়েছেন,
"আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না; কারণ এতে তারাও সীমালংঘন করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিবে।" [সূরা আল-আন'আম, আয়াত ১০৮]
যেখানে গালি দিতে নিষেধ করা হয়েছে সেখানে সচেতন মুসলিমরা অমুসলিমের ঘরবাড়ি-মন্দিরে হামলা তো একেবারেই গর্হিত কাজ। প্রতিবাদকারীরা হিন্দু বাড়ি ও মন্দিরে হামলার করার বিষয় অস্বীকার করেছে। ইসলামের মূল চেতনা অনুযায়ী হামলা না কারারই কথা। তাহলে কারা হামলা করল? হামলাকারীদের মদদ দাতা কারা?
লক্ষনীয় ব্যাপার হল যারা এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছে তাঁরা টুপি দাড়িওয়ালা , কিন্তু যারা মন্দিরে হামলা করেছে তারা প্যান্ট শার্ট পড়া । তাই অনেকের ধারণা কোন স্বার্থোনেষী বিশেষ মহল রাজনৈতিক ফায়দা লুটার বা মুসলিম-হিন্দুদের মাধ্যে বিদ্যমান থাকা সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা জন্য হিন্দু বাড়ি ও মন্দিতে হামলা করেছে। এই সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দেয় যখন এর আগের এক ঘটনায় একজন হিন্দুকে "আল্লাহু আকবর" বলে মন্দিরে হামলা করতে গিয়ে আটক করা হয়। এদের সম্মিলিত উদ্দেশ্য হতে পারে ইসলামকে অসহিষ্ণু ধর্ম হিসাবে তুলে ধরা। যেমন প্রথম আলোসহ দেশের প্রধান ভারতপন্থী পত্রিকাগুলো মন্দিরে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে খবর প্রকাশ করলেও কাবা ঘরে শিব মূর্তি স্থাপন করে মুসলিমের ধর্মানুভুতিতে আঘাত দেওয়ার বিষয় সুকৌশলে এড়িয়ে গেছে।
বিষয়: বিবিধ
৯৬৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন